প্রসঙ্গ: গণপরিবহন ভাড়া ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি সরকার সৃষ্ট লকডাউন পরিস্থিতিতে শ্রমিক-মালিকদের ক্ষতির দায়ভার কেন জনগনের কাধে চাপানো হবে? জনগনের উপর ভাড়ার খড়গ না চাপিয়ে পরিবহন খাতে প্রণোদনা ও বাজেট বিশেষত শৃঙ্খলা তৈরী করে এর সুফল জনগনকে দিতে হবে।

সংখ্যা: ২৭৮তম সংখ্যা | বিভাগ:

টানা ২ মাস সারাদেশে বিধ্বংসী লকডাউন। ৬৬ দিনে এই দেশের সাধারণ জনগন কোনোই উপার্জন করতে পারেনি। দেশের সিংহভাগ জনগনেরই ক্রয়ক্ষমতা একেবারেই নিঃশেষ হয়ে গিয়েছে। এমন পরিস্থিতির পর যখন সাধারণ জনগন নিজেদের আর্থিক উন্নতির প্রচেষ্টা করছে ঠিক তখনই আবার জনগনের ঘাড়ে চাপানো হলো ৬০ শতাংশ বাস ভাড়া। বাসে কম যাত্রী তোলার অজুহাত দেখিয়ে  আন্তঃজেলা ও দূরপাল্লা এবং নগর পরিবহনের বাস ও মিনিবাসের ভাড়া ৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়িয়েছে সরকার। লকডাউন পরবর্তী এই সময়ে ভাড়া না বাড়াতে বিভিন্ন সংগঠন ও সাধারণ মানুষ আপত্তি জানালেও জনগনের স্বার্থের কথা বিবেচনা না করেই শেষ পর্যন্ত ভাড়া বাড়ানো হলো। আন্তঃজেলা ও দূরপাল্লার চলাচলকারী বাস ও মিনিবাসের প্রতি কিলোমিটারের সর্বোচ্চ ভাড়া ছিল এক টাকা ৪২ পয়সা। ৬০ শতাংশ বাড়ায় তা ২ টাকা ২৭ পয়সা করা হয়েছে। ঢাকা মহানগরীতে বাস ও মিনিবাসের চলাচলের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ভাড়া নির্ধারণ করা ছিল এক টাকা ৭০ পয়সা এবং চট্টগ্রামে ও এক টাকা ৬০ পয়সা। ৬০ শতাংশ বাড়ায় এখন তা যথাক্রমে ২ টাকা ৭২ পয়সা এবং ২ টাকা ৫৬ পয়সা করা হলো। এতে করে দেখা যাচ্ছে, বাস ভাড়া প্রায় বিমান ভাড়ার কাছাকাছিই চলে যাচ্ছে।

উল্লেখ্য, বাস-মিনিবাসের ভাড়া নির্ধারণের ক্ষেত্রে বাস ক্রয়, ব্যাংক ঋণ, জ্বালানি খরচসহ ২০ ধরনের ব্যয় বিশ্লেষণ করা হয়। কোনো একটা উপকরণের ব্যয় বাড়লেই ভাড়া বাড়ানোর প্রশ্ন আসে। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে ডিজেলসহ কোনো কিছুর ব্যয় বাড়েনি বরংচ কমেছে। অন্যদিকে, যে হিসেব করে ৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়ানো হলো তাতে বিদ্যমান বাস-মিনিবাসের ৫০ শতাংশ ফাঁকা রাখলেও লোকসান হওয়ার কথা নয়। কারণ ঢাকাসহ বড় শহরগুলোতে পরিবহন মালিকেরা ‘সিটিং সার্ভিস সহ নানা নামে আগে থেকেই শতভাগ বা এরও বেশি ভাড়া আদায় করে আসছে। পাশাপাশি দূরপাল্লার বাসের মধ্যে সরকার শুধু শীতাতপ নিয়ন্ত্রণবিহীন (নন-এসি) বাসের ভাড়া নির্ধারণ করে। বিলাসবহুল ও এসি বাসের ভাড়া মালিকেরা নিজেরাই ঠিক করে থাকেন। অর্থাৎ বাজারে চাহিদা-জোগানের ওপর ভাড়া নির্ভরশীল। এসব বাসের ভাড়া আগে থেকেই এত বেশি যে কখনো কখনো ২০-৩০ শতাংশ আসন ফাঁকা থাকলেও তাঁদের লোকসান গুনতে হয় না। এক্ষেত্রে সবক্ষেত্রে ৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়িয়ে দেওয়া অযৌক্তিক।

এ ছাড়া দূরপাল্লার পথের নন-এসি বাসগুলোও সব সময় সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি আদায় করে থাকে। ফলে এখন ৬০ শতাংশ বাড়তি মানে হচ্ছে আগের বাড়তি ভাড়ার ওপর আরও ভাড়া বাড়ানো। অর্থাৎ ‘মরার উপর খাড়ার ঘা’।

বিশেষভাবে বলতে হয়, এই ৬০ শতাংশ বাস ভাড়া বাড়ানোর মুখ্য কারণ হিসেবে দেখানো হচ্ছে শ্রমিকদের দুরবস্থা ও বাস মালিকদের উপার্জনহীনতাকে। বলা হচ্ছে, বাস ভাড়া বাড়িয়ে লভ্যাংশ দিয়ে শ্রমিকদের উন্নয়ন করা হবে। অথচ প্রতি বছর শ্রমিক কল্যাণ তহবিলে ৩ হাজার কোটি টাকারও বেশি টাকা জমা হচ্ছে। এই অর্থ দিয়েই লকডাউনের কারণে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবহন শ্রমিকদের উন্নয়ন করা যেত। কিন্তু অর্থ শ্রমিকদের কল্যানে খরচ না হয়ে তহবিলেই পড়ে থাকছে। রাষ্ট্রীয় আইনি বাধার কারণে এই তহবিলের অর্থ খরচও করা যাচ্ছেনা। ফলস্বরূপ তহবিলের অর্থ বেহাত হয়ে যাবারও শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। আর এদিকে, জনগনের পকেট কাটা হচ্ছে। সঙ্গতকারণেই প্রশ্ন দাড়ায় আগের জমাকৃত হাজার হাজার কোটি টাকা যদি কাজে না আসে তবে এখন নতুন করে জমাকৃত টাকা শুধু শুধু তহবিল ভারী করবে। পরিবহন শ্রমিকদের কোনো কল্যানে আসবেনা। অপরদিকে শ্রমিকদের নামে সাধারণ মানুষ চরমভাবে নিষ্পেষিত হবে। অর্থাৎ জুলুমের স্বীকার হবে সাধারণ সবাই।

প্রসঙ্গত, লকডাউন দিয়েছে সরকার। বাস ও গণপরিবহন বন্ধ করেছে সরকার। সরকারের লকডাউনের কারণেই বাস মালিক-শ্রমিকদের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। তাহলে এর দায়ভার কেন জনগনের উপর পড়বে? কেন ৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়িয়ে জনগনকে শোষণ করা হবে?

শ্রমিকদের মতো সাধারণ জনগনও তো উপার্জনহীনভাবে ছিলো এই ২ মাস। তাহলে জনগন এই বাড়তি অর্থ কিভাবে যোগাবে? কোথায় পাবে এই অর্থ? সরকার তো জনগনকে লকডাউন পরবর্তী ক্ষতি কাটাতে কোনোই প্রণোদনা দেয়নি, আসন্ন বাজেটেও জনগনের অর্থনৈতিক উন্নতি সাধনের জন্য কোনোই কার্যক্রম নেই। এখানে বাস মালিক-শ্রমিকদের ক্ষতি কাটাতে ব্যবস্থা নিবে সরকার। সরকারের উচিত হবে বাস মালিক-শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণস্বরূপ তাদের জন্য প্রণোদনার ব্যবস্থা করা, বাজেট বরাদ্দ করা। কিন্তু কোন যুক্তিতে কেবল জনগনেরই পকেট কাটা হচ্ছে? এই সকল প্রশ্নের উত্তর চায় দেশের ২৫ কোটি জনগন।

উল্লেখ্য, লকডাউনের কারণে লাখ লাখ মানুষ বর্তমানে বেকার অবস্থায় রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বাস ভাড়া বাড়ালে জনগন চোখেমুখে আরো অন্ধকার দেখবে। চরম ক্ষতিগ্রস্থ ও বাধাগ্রস্থ হবে নিম্ন আয়ের মানুষেরা। ধরা যাক, যে শ্রমিক বা রিকশাচালক গ্রামের বাড়িতে রয়েছে এবং ঢাকায় আসতে তার ভাড়া লাগত ৫০০ টাকা এখন তাকে ৮০০ টাকা দিতে হবে। এই টাকা দেওয়ার সামর্থ্য তার রয়েছে কিনা। যদি না থাকে তা হলে সে কীভাবে কাজের জন্য ঢাকায় আসবে?

সঙ্গতকারণেই, আমরা মনে করি-সরকারের জন্য উচিত হবে অবিলম্বে এই ৬০ শতাংশ ভাড়া না বাড়িয়ে মালিক-শ্রমিকদের ক্ষতি কাটাতে দোসরা পথ অবলম্বন করা। ভাড়া না বাড়িয়ে বাসের পরিচালন ব্যয় ঘাটতির অর্থ প্রণোদনা হিসেবে দেওয়া। পরিবহন খাতে চাঁদাবাজি বন্ধ করা। গণপরিবহন খাতে ঋণ ও বাজেটের ব্যবস্থা করা। জনগনের চলাচলের প্রক্রিয়া সুলভ ও সহজ করা।

-মুহম্মদ মাহবুবুল্লাহ, ঢাকা।

 

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২২ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস

‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’ সম্পর্কিত ‘দৈনিক যুগান্তর’ পত্রিকার মন্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিস্ময় প্রকাশ গোয়েন্দা শীর্ষ কর্মকর্তারাও অবহিত নয় খোদ যুগান্তর সম্পাদকের দুঃখ প্রকাশ

‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’কে নিয়ে – মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নামে দৈনিক জনকণ্ঠের মিথ্যাচার ‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’ নিষিদ্ধ হচ্ছে- এ কথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শুধু অস্বীকারই করলেন না, বললেন: ‘সম্পূর্ণ বাজে কথা।’ প্রসঙ্গতঃ সোহেল তাজ বিবৃত কালো তালিকা অসম্পূর্ণ ও আংশিক ভুল। এর সংশোধন আশু দরকার

মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সমীপে- সোহেল তাজ বিবৃত ১২টি জঙ্গি সংগঠন তালিকা যথার্থ নয় এর মধ্যে যেমন অনেক জঙ্গি সংগঠনের নাম আসেনি তেমনি জঙ্গিবাদ বিরোধী সংগঠনের (উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত) নামও জামাত-জোট ভূতের কারণে এসেছে। সঙ্গতঃ কারণেই বে-হেড সোহেল তাজের বেফাঁস মন্তব্য থেকে বেরিয়ে এসে বর্তমানের যোগ্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে প্রকৃত জঙ্গি সংখ্যা যেমন নির্ধারণ করতে হবে, প্রকৃত জঙ্গিদের যেমন চিহ্নিত করতে হবে পাশাপাশি জঙ্গিবাদী, মৌলবাদী ও ধর্মব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে একান্ত নিবেদিত ‘আল বাইয়্যিনাত’কে মূল্যায়ন করতে হবে।