‘বার্ড ফ্লু’, ‘সোয়াইন ফ্লু’, সব ফ্লুতেই রয়েছে আন্তর্জাতিক ইসলাম বিদ্বেষী ও সাম্রাজ্যবাদীদের দ্বারা মুসলমান শোষণ ও নিপীড়নের-‘ক্লু’ ‘বার্ড ফ্লু’র নামে বাংলাদেশের পোল্ট্রি শিল্প ধ্বংস করা হয়েছে আর ‘সোয়াইন ফ্লু’র নামে ধ্বংস করা হয়েছে সউদীর হজ্জ ভিত্তিক অর্থনীতি তারপরেও আন্তর্জাতিক ইসলাম বিদ্বেষী ও সাম্রাজ্যবাদীদের অপতৎপরতা উপলব্ধির প্রবণতা এবং রোধ করার চেতনা দুঃখজনকভাবে মুসলমানদের মাঝে আদৌ তৈরি হচ্ছে না

সংখ্যা: ১৯৩তম সংখ্যা | বিভাগ:

 

বিশ্বের সবচেয়ে বেশি তেল মজুদ সউদী আরবে থাকলেও সউদী অর্থনীতিতে অবদান রাখা মাঝারি, ক্ষুদ্র ও ভারী শিল্পের বেশিরভাগই হজ্জকেন্দ্রিক।

এয়ারলাইনস, খেজুরসহ অন্যান্য খাদ্যদ্রব্য, জায়নামায, তসবিহ, কুরআন শরীফ বা অন্যান্য ধর্মীয় গ্রন্থ, ছাতা, পোশাক ইত্যাদি অনেক কিছুই দরকার হয় হাজীদের। আর এ চাহিদাকে পুঁজি করেই দিন দিন শক্তিশালী হয়েছে সউদীর অর্থনৈতিক বুনিয়াদ। দেশটির বাজেট তেলনির্ভর হলেও দিন দিন ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারে তেলের উপর নির্ভরশীলতা কমেছে।

এ ছাড়া শুধু হজ্জই নয়, দেশটির ঐতিহ্যবাহী মুসলিম স্থাপনা দেখতে প্রতিবছর লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসল্লী সউদী আরবে আসেন। এতে দিন দিন শক্তিশালী হয়েছে দেশটির পর্যটন খাত। এ ছাড়া সারা বছর উমরাহ করতে আসা লাখো লাখো মানুষ দেশের অর্থনীতি বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

বাংলাদেশে খুব কম সামর্থ্যবান হাজীই পাওয়া যাবে, যিনি হজ্জ থেকে স্বর্ণের অলঙ্কার আনেননি। মক্কা শরীফ-মদীনা শরীফ থেকে স্বর্ণের অলঙ্কার কেনার এ ঐতিহ্য হাজার বছরের। পরিবারের যে সদস্য হজ্জে যান, সাধারণত তাকে তার পরিবারের মেয়েদের জন্য বিবাহের অলঙ্কার কিনতে বলা হয়। মক্কা-মদীনা থেকে কেনা স্বর্ণের এ অলঙ্কারগুলোকে সৌভাগ্য ও পবিত্রতার প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আর এর উপর ভিত্তি করেই সউদী আরবে গড়ে উঠেছে মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে বড় স্বর্ণব্যবসা। বিকশিত হয়েছে ছোট-বড় নানা শিল্প।

২০০৮ সালে সউদী আরবে ৭ দশমিক ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের স্বর্ণ বেচাকেনা হয়েছে। সউদী আরবে স্বর্ণ ও স্বর্ণালঙ্কারের বাজার বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় অত্যন্ত দ্রুত গতিতে বিকাশ লাভ করেছে। যার অন্যতম কারণ মুসলিম বিশ্বের বৃহৎ গণজমায়েত ও সউদী ধনীদের স্বর্ণের প্রতি আগ্রহ। বাহরাইন ট্রিবিউন-এ এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০০৮ সালের বিশ্বের যে পরিমাণ স্বর্ণ বেচাকেনা হয়েছে তার ৭০ শতাংশই হয়েছে সউদী আরবের বাজারে।

বলাবাহুল্য, মুসলিম বিশ্বের প্রাণকেন্দ্র সউদী আরবের প্রতি ইহুদী-নাছারাদের কালো হাত দেশটির শাসক মহল থেকে সংস্কৃতি পর্যন্ত অনেক আগেই গড়িয়েছে।

সউদী আরবে মদের অবাধ ব্যবহার থেকে এখন অহরহ সুন্দরী প্রতিযোগিতা হচ্ছে। এমনকি খোদ সউদী আরবে সিনেমা পর্যন্ত তৈরি হচ্ছে। নাঊযুবিল্লাহ! আর এ পর্যন্ত সফল হবার পরই ইহুদী-খ্রিস্টান চক্র এখন সউদী আরবে আরো দুটি বিষয় ঢুকিয়ে দিতে চাচ্ছে।

এক. অর্থনৈতিক মন্দা। দুই. গণতন্ত্র। বলাবাহুল্য, অর্থনৈতিক মন্দা তৈরিতে ইরাক-কুয়েত যুদ্ধে সউদীর ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন ডলার হজমের পর এখন ‘সোয়াইন ফ্লু’ আতঙ্ক দিয়ে সউদীর প্রধান অর্থনৈতিক অনুষঙ্গ হজ্জযাত্রীদের সংখ্যা কমিয়ে আনা হয়েছে।

সোয়াইন ফ্লু আক্রমণের আতঙ্কে হাজীদের সংখ্যা ১০ লাখ কম হয়েছে। আর এতে প্রায় ৪০০ মিলিয়ন সউদী রিয়াল কম ব্যবসা হয়েছে।

বলাবাহুল্য, সোয়াইন ফ্লু সাম্প্রতিক সময়ের ব্যাপক আলোচিত রোগ। মিডিয়ার কল্যাণে প্রতিদিন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কি পরিমাণ লোক আক্রান্ত হচ্ছে তা তাৎক্ষণিক জানা যাচ্ছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং প্রচার মাধ্যম অনেকটা জেহাদই ঘোষণা করে এ রোগের মূলোৎপাটন করার জন্য। স্বাভাবিকভাবে এই হাক-ডাকের কারণে অনেকের মন সন্দিগ্ধ হয়ে উঠে প্রকৃত পরিস্থিতি সম্পর্কে জানার জন্য।

সোয়াইন ফ্লু নিয়ে চারপাশে এত তোড়জোড় দেখা গেলও অন্যান্য রোগের বিষয় নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার  কর্তা ব্যক্তিদের মাথা ঘামাতে খুব একটা দেখা যায় না।

অথচ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, প্রতিদিন শুধুমাত্র ম্যালেরিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বে হাজার লোক মারা যায়, বছরে মারা যায় ১ থেকে ৩ মিলিয়ন লোক। সাধারণ ইনফ্লুয়েঞ্জায় প্রতিবছর মারা যায় আড়াই থেকে পাঁচ লাখ মানুষ। ভারতের দারিদ্র্যপীড়িত অঞ্চলে বছরে হাজার হাজার লোক সেই প্রাচীন কলেরায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে।

বিস্ময়কর হলেও সত্য, বিষয়গুলো নিয়ে খুব একটা আলোচনা করতে স্বাস্থ্যব্যবস্থার বৈশ্বিক কর্তা ব্যক্তিদের দেখা যায়নি। অন্যদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যান মোতাবেক, সোয়াইন ফ্লুতে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী আক্রান্তের সংখ্যা ৪ লাখ ৪০ হাজার হলেও মৃতের সংখ্যা হচ্ছে ৫ হাজার ৭০০ জন। বাংলাদেশে ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৬০৪ জন, বিপরীতে মৃতের সংখ্যা বলা হয়েছিল ৪।

এ সময় বাংলাদেশের বিভিন্ন সংবাদপত্র এবং মিডিয়ার কল্যাণে রোগী নিয়ে আতঙ্ক সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। কথিত রোগ থেকে রক্ষা পেতে মাস্ক ব্যবহারের প্রবণতার ব্যাপক আকার লক্ষ্য করা যায়। কিন্তু এসময়ে মুজাদ্দিদে আ’যম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর তরফ থেকে সোয়াইন ফ্লু বিরোধী ব্যাপক প্রচারণা এবং দৈনিক আল ইহসান-এর নিয়মিত লেখালেখির তোড়ে অনেকটা আকস্মিকভাবে সোয়াইন ফ্লু বাংলাদেশ থেকে উধাও হয়ে যায়।

আরো উল্লেখ্য, যে চার জন এইচ১এন১ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছিল বলে উল্লেখ করা হয়, মৃত্যুর ব্যাপারে পরবর্তিতে পর্যালোচনা করে দেখা যায়, তাদের কেউ সুনির্দিষ্টভাবে সোয়াইন ফ্লুতে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়নি বলে

সংবাদপত্রে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসলেও সোয়াইন ফ্লু নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এখনো বিরাজ করছে নিরাপত্তাহীনতা। এইচ১এন১ ভাইরাসের প্রসারের বিষয়টি নিয়ে একাধিক বিতর্কও ইতোমধ্যে তৈরি হয়েছে। তাছাড়া, যারা আক্রান্ত হয়েছে তারা আদৌ আক্রান্ত কিনা বা ল্যাব টেস্টের ফলাফলের মাধ্যমে তা নির্ণয় করা হয়েছে কিনা সে বিষয়েও রয়েছে মতবিরোধ। রোগ যা হোক না কেন, তা নিয়ে অবশ্যই সচেতনতা এবং প্রতিকারের উদ্যোগ নেয়া একান্ত জরুরী। কিন্তু সমস্যাটা অন্য জায়গায়। সোয়াইন ফ্লু’র অতীত ইতিহাস এবং প্রতিষেধক বিক্রির আয়োজন লক্ষ্য করলে প্রসঙ্গটি অনেকাংশে উন্মোচিত হয়।

২৪ অক্টোবর মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা সোয়াইন ফ্লু সর্বত্র ছড়িয়ে যাওয়ার দরুন সে দেশে ন্যাশনাল ইমারজেন্সি ঘোষণা করেছেন। কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, দেশের ৫০টি রাজ্যের মধ্যে ৪৬ রাজ্যে এ রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। মৃতের সংখ্যা এক হাজার অতিক্রান্ত, তন্মধ্যে আবার ১শ’ জন শিশু। ফলে পরিস্থিতি সত্যিকার অর্থেই ভয়াবহ।

কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অন্যান্য কারণে মৃতের হার কেমন? এ বিষয়টি একটু খতিয়ে দেখা যাক। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর হৃদরোগ আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে গড়ে ৬ লাখের উপর,

ক্যান্সারে ৫৯ হাজার, ডায়াবেটিসে ৭২ হাজার, স্ট্রোকে ১ লাখ ৩৭ হাজার।

এছাড়া গাড়ি অ্যাকসিডেন্ট, এইডস, আত্মহত্যা বা খুনের মাধ্যমেও মৃতের সংখ্যা নেহায়েত কম নয়।

এখন প্রশ্ন উঠে, প্রায় এক বছরে মাত্র সহ¯্রাধিক লোক মারা যাওয়ার কারণে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ন্যাশনাল ইমারজেন্সি জারির মাধ্যমে কার স্বার্থ রক্ষা হচ্ছে?

ইতোমধ্যে সনোফি অ্যাভেন্টিসহ অন্যান্য বহুজাতিক কোম্পানির নিকট থেকে সরকার বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের ভ্যাকসিন ক্রয় করেছে।

সোয়াইন ফ্লু ছড়িয়ে পড়ার প্রথম দিকে তা মোকাবেলা করার জন্য বাজেট ঘোষণা হয়েছিল ৪শ’ কোটি ডলারের, বর্তমানে তা আরো বাড়ানো হয়েছে।

পরিস্থিতি উত্তরণের জন্য চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যেই ৫০ মিলিয়ন ডোজ সোয়াইন ফ্লু ভ্যাকসিন এবং ডিসেম্বরের মধ্যে আরো ১৫০ মিলিয়ন ডোজের অর্ডার দেয়া হয়েছে।

ভারতে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত এইচ১এন১ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যায় ৪৫৬ জন। অন্যদিকে আক্রান্তের সংখ্যা হচ্ছে ১৩ হাজার ৭শ’ ৮৪ জন। রোগ প্রতিরোধের জন্য ভারত ঘোষণা করেছে ১শ’ কোটি রুপির বাজেট।

কানাডায় সাধারণ ইনফ্লুয়েঞ্জায় বছরে যেখানে ২ হাজার থেকে ৮ হাজার লোক মৃত্যুবরণ করে, সেখানে গত ৩ নভেম্বর পর্যন্ত এইচ১এন১ প্রতিরোধের জন্য সে দেশের সরকার ইতোমধ্যে ৪০০ মিলিয়ন ডলারের কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।

জার্মানি এ খাতে ব্যয় করছে ২.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বিপরীতে গত ৮ অক্টোবর পর্যন্ত এখানকার মৃত্যুর সংখ্যা মাত্র ১ জন।

ফ্রান্স সরকার এ খাতে ১ বিলিয়ন ডলারের উপরে বাজেট ইতোমধ্যে ঘোষণা করেছ। পরিকল্পনা অনুযায়ী তাদের ৯৪ মিলিয়ন ডোজের ভ্যাকসিন ক্রয়ের প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। এখানকার রোগের সম্পর্কে সাম্প্রতিক পরিস্থিতি জানা না গেলেও ২২ আগস্ট পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা হচ্ছে ৩ জন, আক্রান্ত ১০ হাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের রাষ্ট্র কুয়েত এ খাতে বাজেট নির্ধারণ করেছে ১৩.৯ মিলিয়ন ডলারের, এ দেশে ১ নভেম্বর পর্যন্ত সোয়াইন ফ্লুতে আক্রান্ত হয়েছে মারা গেছে ১৯ জন।

উপরোক্ত আলোচনায় মাত্র কয়েকটি দেশের চিত্র দেয়া হয়েছে। বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশে এ রকম বিশাল অঙ্কের বাজেট সোয়াইন ফ্লু প্রতিরোধের জন্য প্রণয়ন করা হয়েছে।

উল্লিখিত তথ্য থেকে স্পষ্ট হয়েছে, রোগের যত না বিস্তৃতি তার থেকে প্রচার

এবং ব্যয়ের হার অনেক বেশি।

প্রসঙ্গত বিশ্বের অন্যান্য রোগের প্রকোপ সম্পর্কে একটু আলোচনা করা যাক। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০০৮ সালে শুধুমাত্র হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায় ৭.২০ মিলিয়ন লোক, স্ট্রোক করে মারা যায় ৫.৭১ মিলিয়ন, শ্বাসকষ্টে ৪.১৮ মিলিয়ন, ডায়রিয়ায় ২.১৬ মিরিয়ন, যক্ষ্মায় ১.৪৬ মিলিয়ন রোড অ্যাকসিডেন্টে ১.২৭ মিলিয়ন।

মৃত্যুর পরিসংখ্যান ডাটা অনুযায়ী, অন্যান্য রোগের তুলনায় এইচ১এন১ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা অনেক কম। সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন নিবন্ধ হয়- সোয়াইন ফ্লু নিয়ে কেন এত তোড়জোড়?

উল্লেখ্য যে, বিশ্ব এখন অর্থনৈতিক মহামন্দায় আক্রান্ত। মার্কিন মুল্লুকে শত বছরের পুরনো লেহম্যান ব্রাদার্স, ফ্রেড্ডি ম্যাক, ফেনি মে, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল গ্রুপসহ অসংখ্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মন্দার কবলে পড়ে ইতিমধ্যে দেউলিয়া হয়ে পড়েছে। আরো বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান রক্ষার্থে রাষ্ট্রায়ত্তও করা হচ্ছে। বহুজাতিক ওষুধ কোম্পানিগুলোও এই অবস্থায় পতিত হওয়া ছিল স্বাভাবিক।

কিন্তু সোয়াইন ফ্লু বা বার্ড ফ্লু’র ভ্যাকসিন

বিক্রির মাধ্যমে বাক্সটার, অ্যাভেন্টিস, গ্লাক্সোসহ সনোফি নানা কম বহুজাতিক কোম্পানিগুলো ইতোমধ্যে বিশাল অঙ্কের অর্থ ব্যয় করেছে এবং ৩০’র দশক পরবর্তী বড় মহামন্দার সময়ও তাদের লাভের পরিমাণ যথেষ্ট।

গত মে মাসের প্রথমদিকে ডব্লিউএইচও সোয়াইন ফ্লু’র মহামারির লেভেল ৫ থেকে ৬-এর পর্যায়ে নিয়ে আসে। এই সঙ্কেতের মানে হচ্ছে মহামারী চরম আকার ধারণ করছে।

এর মাত্র কয়েকদিন আগে ১ মে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানায়, ১১টি দেশে ৩৩১ জন আক্রান্ত হয়েছে, তš§ধ্যে মারা গেছে ৯ জন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১০৯ জন আক্রান্তের মধ্যে মারা যায় ১ জন। কিন্তু ৩৩১ জনের মধ্যে কতজনের ক্ষেত্রে ল্যাব পরীক্ষায় প্রমাণিত, আর কতজনের ক্ষেত্রে সন্দেহের ভিত্তিতে, তা জানানো হয়নি।

পরবর্তিতে যখন বিশ্বব্যাপী বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ঘোষণা করল আক্রান্তের সংখ্যা লক্ষাধিক ছাড়িয়ে গেছে, তখন ল্যাব পরীক্ষার বিষয়টি চলে গেল আড়ালে।

এর কারণ হলো, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রধান মার্গারেট চ্যান সদস্য রাষ্ট্রগুলোর ল্যাব পরীক্ষার ইস্যুটি নিয়ে তেমন কোন গুরুত্ব দেননি।

ল্যাব পরীক্ষা ছাড়াই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা’র পরোক্ষ মদদে সোয়াইন ফ্লু নিয়ে হইচই শুরু হয়ে গেল। বর্তমানে ইংল্যান্ডে সম্ভাব্য আক্রান্তের হিসাবে ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত মারা গেছে ১২৮ জন। আর স্কটলান্ডে ২ নভেম্বর পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ২৯ জন। এই দেশগুলোতে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, প্রথম দিকে আক্রান্তের হিসাব ইন্টারনেট বা দৈনিকগুলোতে প্রকাশ করলেও বর্তমানে তার সুনির্দিষ্ট পরিসংখ্যান আর হাজির করছে না।

তাদের অভিমত লক্ষ্য করলে মনে হয়- রোগের এই ব্যাপ্তি এত বেশি যে, তা আর কোনভাবেই ডাটার মাধ্যমে হিসাব করা সম্ভব নয়। তাছাড়া ইংল্যান্ড বা অন্যান্য দেশে অধিকাংশ তথ্য স্বাস্থ্যকর্মী দ্বারা সংগৃহীত নয়।

সেখানে অন লাইনে ও মোবাইলের মাধ্যমেও ট্রিটমেন্ট দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। আর যারা ফোন করেছে তাদেরকে রোগী হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে।

বাংলাদেশেও একই রকম পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছিল। বিভিন্ন সংবাদপত্রের খবরে দেখা যায়, ওষুধ ব্যবসায়ীরা সোয়াইন ফ্লু’র আতঙ্ক ছড়িয়ে ব্যবসা করার জন্য ওৎ পেতে ছিল। ওষুধও মহাসমারোহে দেশীয় বাজারেও চলে আসে। কোর্স হিসেবে দশটা ট্যাবলেটের দাম নির্ধারণ করা হয় ১৫শ’ টাকা। কিন্তু বাংলাদেশে ওষুধ কারবারীরা খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি।

আবারো বলতে হয় যে, মূলত মুজাদ্দিদে আ’যম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর তরফ থেকে সোয়াইন ফ্লু বিরোধী ব্যাপক প্রচারণা এবং দৈনিক আল ইহসানের নিয়মিত লেখালেখির তোড়েই বলতে গেলে বাংলাদেশে সোয়াইন ফ্লু ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন হয়নি।

সোয়াইন ফ্লু প্রতিরোধে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কোটি কোটি টাকার বাজেটের বিপরীতে ওষুধ নির্মাণ করছে মাত্র গুটিকয়েক কোম্পানি। তš§ধ্যে বাক্সটার, গ্ল্যাক্সো, নভার্টিস এবং সনোফি পাসটিউর উল্লেখযোগ্য।

প্রসঙ্গত বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর সোয়াইন ফ্লু’র ভ্যাকসিন বিক্রির কিছু উদাহরণ দেয়া যায়, ২৮ অক্টোবর যুক্তরাজ্যের গার্ডিয়ান পত্রিকায় বহুজাতিক ওষুধ কোম্পানি গ্ল্যাক্সের সোয়াইন ফ্লু ভ্যাকসিন ব্যবসা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, চতুর্থ দফায় ইতোমধ্যেই ২২০ মিলিয়ন ডোজের ওষুধ গ্ল্যাক্সো বিক্রি করতে সক্ষম হয়েছে, যার পরিমাণ প্রায় ১ বিলিয়ন ইউরো। তৃতীয় দফায় বিক্রির সময় গ্ল্যাক্সোর রাজস্ব বৃদ্ধির হার ছিল ১৫ শতাংশ। অন্যদিকে তাদের প্রতি শেয়ারের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছিল ১৩%। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক আরেক জায়ান্ট ওষুধ কোম্পানি নভার্টিস জুলাইয়ের মধ্যেই ৬৯০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের ভ্যাকসিন বিক্রির অর্ডার পেয়ে যায়। বর্তমানে ওই কোম্পানি চতুর্থ দফায় ৪শ’ থেকে ৭শ’ মিলিয়ন ডলারের সোয়াইন ফ্লুর ভ্যাকসিন বিক্রির প্রত্যাশা করছে।

মূলত ফ্লু বাণিজ্য নিয়ে তাদের আয়ের খ- চিত্র এখানে উল্লেখ করা হয়েছে। বিভিন্ন দেশের যে সব বাজেট সোয়াইন ফ্লু’কে প্রতিরোধের জন্য ঘোষণা করা হয়েছে, তা এসব কোম্পানির মাধ্যমেই বাস্তবায়িত হবে। এইচ১এন১ ভাইরাসের অদ্যাবধি যে ক্রমপ্রসারমান দেখা যাচ্ছে, তাতে ভবিষ্যতেও এসব কোম্পানির আয় এবং লভ্যাংশ দুটোই বাড়বে। অর্থাৎ তথ্যের মাধ্যমে ধোঁকা দিয়ে মানুষের জীবন নিয়েই এসব কোম্পানি বাণিজ্য করে যাবে।

কিন্তু বাংলাদেশসহ কোন মুসলমান দেশেই এ বাণিজ্য আদৌ হবার নয়। কারণ কুরআন শরীফ-এ আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, “তোমরা যালিমও হয়ো না আর মজলুমও হয়ো না।” কাজেই মুসলমান দেশে ধোকাবাজি আর মিথ্যা প্রচারণা দ্বারা ইহুদী খ্রিস্টানরা হাজার হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য করে যাবে সেরকম মজলুম মুসলমানদের হওয়া উচিত নয়।

বলাবাহুল্য, সংশ্লিষ্ট বিষয়ে জ্ঞানের ঘাটতির কারণেই এরূপ মজলুম হতে হয়।

সেক্ষেত্রে সব মুসলমানেরই উচিত দৈনিক আল ইহসান নিয়মিত পাঠ করা।

তাহলে ধর্মব্যবসায়ীসহ সব ধুরন্ধর ব্যবসায়ীদের অপতৎপরতা মুসলমান জানতে পারবে। জানতে পারবে কথিত সোয়াইন ফ্লুর বিপরীতে ইসলাম পালনই সবচেয়ে বড় প্রতিষেধক। মুসলমান দিনে কমপক্ষে পাঁচবার ওজু করে। ওজুর শুরুতেই হাত ধোয় আবার প্রতিবারই খাওয়ার আগেও মুসলমান সুন্নত হিসেবে হাত ধোয়।

আর সোয়াইন ফ্লুসহ সব ধরনের ইনফুয়েঞ্জা প্রতিরোধে নিজের হাত ধোয়াই সহজতম ও সবচেয়ে কার্যকর পন্থা বলে স্বীকার করেছেন স্বাস্থ্যবিজ্ঞানীরা। জিসিঙ্গার হেলথ সিস্টেমের ইনফেকশন কন্ট্রোলের পরিচালক লিসা এসোলেন এইচ১এন১ ও অন্যান্য মৌসুমি ইনফ্লুয়েঞ্জা প্রতিরোধে হাত ধোয়ার উপকারিতা বর্ণনা করে বলেন, হাতের মাধ্যমেই চোখ, নাক ও মুখে ভাইরাস প্রবেশ করে। খাবারেও হাতের মাধ্যমে জীবাণূদূষিত হতে পারে।

তিনি বলেন, এক্ষেত্রে হাত ধোয়াই এককভাবে সবচেয়ে কার্যকর পন্থা।

মূলত বিজ্ঞানীরা এখন যা স্বীকার করছেন ইসলামে পনেরশ বছর আগেই তা বলা হয়েছে। এবং বর্তমানে দৈনিক আল ইহসানই তা যথাযথভাবে প্রমাণ করে যাচ্ছে।

মহান আল্লাহ পাক পৃথিবীর সব মুসলমানকে দৈনিক আল ইহসান-এর নিয়ামত নসীব করুন। (আমীন)

-মুহম্মদ নিয়ামাতুল্লাহ

খতমে নুবুওওয়াত প্রচার কেন্দ্র খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারীরা কাফির “ইসলামী শরীয়তের হুকুম মুতাবিক যারা মুসলমান থেকে খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত হয় যেমন-  কাদিয়ানী, বাহাই ইত্যাদি তাদের তওবার জন্য নির্ধারিত সময় ৩ দিন এরপর তওবা না করলে তাদের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।”

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৬২

ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-১১

চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-৩০

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২০ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস ওহাবী ফিরক্বাসহ সবগুলো বাতিল ফিরক্বা ইহুদী-নাছারাদের আবিষ্কার! তাদের এক নম্বর দালাল