বাড়ছে পরকীয়া, বাড়ছে তালাক। দ্বীনী মূল্যবোধের অবক্ষয় এবং সম্মানিত ইসলাম বৈরিতাই এর মুখ্য কারণ। সরকারের উচিত- জাতীয়ভাবে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার আদর্শ ও শিক্ষা চার ও প্রসার করে এই সামাজিক সমস্যাটি দূর করা।

সংখ্যা: ২৭৯তম সংখ্যা | বিভাগ:

দেশে ভয়ানকভাবে বেড়ে গিয়েছে পরকীয়া। স্বামীকে খুন-গুম করছে স্ত্রী, কোথাও স্ত্রীকে স্বামী। পরকীয়ার কারনে আপন মাকে হত্যা করছে সন্তান। ক্ষোভে-অপমানে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করছে অনেকে। কেউ আবার সবকিছু জেনেই সামাজিক মর্যাদা আর সংসার টিকিয়ে রাখতে নীরব থাকছে। এসবের মূলেই রয়েছে পরকীয়া। দাম্পত্য সম্পর্কগুলোকে ভেঙে খান খান করে দিচ্ছে এই অনৈতিক সম্পর্ক। উচ্চ বিত্ত থেকে শুরু করে দরিদ্র পরিবারেও আঘাত হানছে সর্বনাশা পরকীয়া।

সম্প্রতি প্রকাশিত এক জরীপে জানা গেছে, রাজধানীর ২ সিটিতে প্রতিদিন প্রায় ৫১ টি তালাকের ঘটনা ঘটছে। সমাজ বিজ্ঞানীরা বলছেন, মূলত সম্মানিত ইসলামি শিক্ষার অভাব ও নৈতিক মূল্যবোধের অবক্ষয়ে এমন হচ্ছে। পারিবারিক বন্ধন শিথিল হয়ে পড়া, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অপব্যবহার এবং আকাশ সংস্কৃতিও এ জন্য দায়ী। অনৈতিক সম্পর্কের ফলে পরিবার ও সমাজে কলহ-বিরোধ বাড়ছে। মনোবিজ্ঞানীদের মতে পিতামাতার পরকীয়া সন্তানের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা সন্তানের মানসিক বিষন্নতার ও আগ্রাসী মনোভাবের জন্ম দেয়।

পরকীয়ার কারণে তৈরী হচ্ছে নানান সামাজিক অপরাধ। এর পরিণতিতে খুন-খারাবি হচ্ছে নিয়মিত। প্রায় প্রতিদিনই পরকীয়ার খুন হচ্ছে মানুষ। এছাড়াও পারিবারিক কলহ বাড়ছে। পারিবারিক নির্যাতন বাড়ছে। সেই সাথে বাড়ছে বিবাহ বিচ্ছেদও।

পরকীয়ার কারনে মানুষ এখন শুধু ঘরের বাইরেই নয়, তার আপন মানুষটির কাছেও নিরাপদ নয়। সরকারের নীতি-নির্ধারক মহলের অবহেলায় পরকীয়ার কারনে প্রাণহানীর ঘটনা ক্রমেই বাড়ছে। বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ বিভাগের তথ্যানুযায়ী বছরে মোট হত্যাকান্ডের প্রায় ৪০% হয় পারিবারিক কলহ তথা পরকীয়ার কারণে। সেইসাথে পরকীয়ার কারনে বাড়ছে তালাকের সংখ্যাও। গত ছয় বছরে ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে অর্ধলাখের বেশি তালাকের আবেদন জমা পড়েছে। এ হিসাবে মাসে গড়ে ৭৩৬ টি, দিনে ৫১টির বেশি এবং ঘণ্টায় একটি তালাকের আবেদন করা হচ্ছে।

মূলত, মানুষের দ্বীনী মূল্যবোধের অবক্ষয়, সহনশীলতা কমে যাওয়া ও পারিবারিক বন্ধন দুর্বল হয়ে যাওয়ায় এই পরকীয়া বাড়ছে, ফলে পাশাপাশি বাড়ছে নৃশংসতা। সেইসাথে আকাশপথে বিদেশী অপসংস্কৃতির আমদানি এবং প্রযুক্তির অপব্যবহারও অনেকাংশে দায়ী। বর্তমানে বাংলাদেশে ভারতীয় সিরিয়ালের পাশাপাশি বিদেশী বিভিন্ন সিরিয়ালের ব্যাপক প্রচার ও প্রসার হয়েছে। এইসব সিরিয়ালগুলোতে প্রকাশ্যভাবে পরকীয়াকে একটি বিনোদনের মাধ্যমে হিসেবে দেখা হচ্ছে। ঘরে ঘরে এখন ডিস পৌঁছে যাওয়ার কারনে ঘরে ঘরেই এসব সিরিয়ালের প্রভাবে দেশের নারীসমাজ ইচ্ছা-অনিচ্ছায় পরকীয়ার সবক নিচ্ছে। এরই পাশাপাশি দেশের শিক্ষা সিলেবাসে পরকীয়ার বিরুদ্ধাচারণ তো নয়ই বরং পরকীয়াকে বৈধ হিসেবে ঢোকানো হচ্ছে সিলেবাসে।

প্রসঙ্গত, পরকীয়ার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন নানা মনগড়া কর্মসূচি গ্রহণ করে সেগুলো মাঠপর্যায়ে বাস্তবায়ন করার চেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু বলার বিষয় হলো, কোনো কার্যক্রমই কাজে আসবে না, যতক্ষণ না পর্যন্ত একটি পারিবারিক জীবন পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার আলোকে বাস্তবায়িত না হবে। পারিবারিক কলহ দূর করার জন্য প্রতিটি পরিবার হতে হবে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার চর্চাকেন্দ্র। পারিবারিক কলহ ও বিবাদ দূর করতে সর্বপ্রথম প্রতিটি পরিবারে সম্মানিত ইসলাম ও দ্বীনচর্চার দিকে নজর দিতে হবে। সমাজ ও পরিবারের প্রতিটি সদস্যকে সম্মানিত ইসলামী শিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুমহান মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক অনুসরণ ও অনুকরণ করতে হবে। কেননা পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে একমাত্র এ বিষয়টির দিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দৃষ্টি দিয়েছে। পারিবারিক সম্পর্ক রক্ষা ও এর স্থিতিশীলতায় বলিষ্ঠ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। পারিবারিক বন্ধন যেন অটুট থাকে সে ব্যাপারে অসংখ্য দিক-নির্দেশনা প্রদান করেছে। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে- “তোমাদের মধ্যে উত্তম সে ব্যক্তি, যে তার পরিবারের কাছে উত্তম।” তাই পরিবারের প্রতিটি সদস্য যেন ইসলামিক রীতি-নীতির অনুসরণ করে- রাষ্ট্রযন্ত্রকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

সেইসাথে বিশেষ করে সম্মানিত পর্দা পালনের মাধ্যমেই পরকীয়া সম্পূর্ণরূপে দূর করা সম্ভব। পর্দাপ্রথা প্রগতি ও উন্নতির স্বর্ণসিঁড়ি। সঠিক গবেষণা করলে দেখা যাবে, সম্মানিত ইসলামী পর্দার বিধান না মানা পরকীয়ার প্রধানতম কারণ। যদি ইসলামী পর্দাপ্রথা সঠিকভাবে মানা হতো, পবিত্র কুরআন শরীফ উনার ভাষ্যমতে- মাহরাম ব্যতীত অন্য কারও সামনে খোলামেলা চলাচল না করা হতো, তাহলে পরকীয়া নামক এ ঘৃণ্য কর্মকান্ডের মাধ্যমে মর্মান্তিক দুর্ঘটনাগুলো ঘটতো না। তাই শালীনতা ও শুচি-শুভ্রতার প্রতীক পর্দার বিধান মেনে চলতে স্বামী-স্ত্রী সবাইকেই উৎসাহ প্রদান করতে হবে। রাষ্ট্রযন্ত্রকে তথা সরকারকে সে ব্যবস্থা করতে কবে।

পরকীয়া পারিবারিক কলহের মূল কারণ হলো- কাফিরদের অপসংস্কৃতির ঘৃণ্য আগ্রাসন; তা বন্ধ করতে হবে। রোধ করতে হবে অপসংস্কৃতির স্রোত। বিজাতীয় ভিনদেশী অপসংস্কৃতি অরুচিকর সংস্কৃতির কুপ্রভাবেই মূলত বর্তমানে ভয়ঙ্করভাবে পারিবারিক কলহ ও সামাজিক অবক্ষয় বাড়ছে। খুন, গুম, আত্মহত্যা ও পরকীয়া দিন দিন রেড়েই চলেছে। দ্বীনচর্চা ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম পালন থেকে বিরত থাকতে ইন্ধন যোগায়। আক্বীদা বিশ্বাসে সন্দেহ-সংশয় সৃষ্টি করে। বিশেষ করে পারিবারিক সম্পর্কের ভিত নাড়িয়ে দেয়। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে বিরোধ ও সমস্যা তৈরি করে। অতএব, সমাজ-দেশকে বাঁচাতে, বিশেষত পরিবারগুলোকে কলহমুক্ত রাখতে কাফিরদের অপসংস্কৃতির স্রোত রোধ করতে হবে। জাতীয়ভাবে সরকারের জন্য আর প্রতিটি পরিবারের ক্ষেত্রে পারিবারিক কর্তাব্যক্তিদের জন্য অপরিহার্য কর্তব্য। তাহলেই সন্তান ও পরিবার এর কুপ্রভাব থেকে বাঁচতে পারবে। সার্বিকভাবে সব ধরনের কলহ দূর হবে।

-মুহম্মদ মাহবুবুল্লাহ, ঢাকা

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২২ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস

‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’ সম্পর্কিত ‘দৈনিক যুগান্তর’ পত্রিকার মন্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিস্ময় প্রকাশ গোয়েন্দা শীর্ষ কর্মকর্তারাও অবহিত নয় খোদ যুগান্তর সম্পাদকের দুঃখ প্রকাশ

‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’কে নিয়ে – মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নামে দৈনিক জনকণ্ঠের মিথ্যাচার ‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’ নিষিদ্ধ হচ্ছে- এ কথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শুধু অস্বীকারই করলেন না, বললেন: ‘সম্পূর্ণ বাজে কথা।’ প্রসঙ্গতঃ সোহেল তাজ বিবৃত কালো তালিকা অসম্পূর্ণ ও আংশিক ভুল। এর সংশোধন আশু দরকার

মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সমীপে- সোহেল তাজ বিবৃত ১২টি জঙ্গি সংগঠন তালিকা যথার্থ নয় এর মধ্যে যেমন অনেক জঙ্গি সংগঠনের নাম আসেনি তেমনি জঙ্গিবাদ বিরোধী সংগঠনের (উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত) নামও জামাত-জোট ভূতের কারণে এসেছে। সঙ্গতঃ কারণেই বে-হেড সোহেল তাজের বেফাঁস মন্তব্য থেকে বেরিয়ে এসে বর্তমানের যোগ্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে প্রকৃত জঙ্গি সংখ্যা যেমন নির্ধারণ করতে হবে, প্রকৃত জঙ্গিদের যেমন চিহ্নিত করতে হবে পাশাপাশি জঙ্গিবাদী, মৌলবাদী ও ধর্মব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে একান্ত নিবেদিত ‘আল বাইয়্যিনাত’কে মূল্যায়ন করতে হবে।