ভারতীয় জুয়ার আসর আইপিএল জুয়ায় শিশু কিশোর থেকে শুরু করে ভিক্ষুক-দিনমজুর পর্যন্ত বুদ হচ্ছে। দেশের শত শত কোটি টাকা পাচার হচ্ছে বিদেশে। ভারতীয় জুয়াড়ীদের কিছু ডিলার বাংলাদেশে এই জুয়ার বিস্তৃতি ঘটাচ্ছে। সরকারের উচিত- এই জুয়ার বিরুদ্ধে শক্ত আইন প্রণয়ন করে হারাম ও আত্মঘাতী সংস্কৃতি জুয়ার মূল্যোৎপাটন করা।

সংখ্যা: ২৭৩তম সংখ্যা | বিভাগ:

গত ২৩ এপ্রিল ২০১৯ ঈসায়ী প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, ভারতের অন্যতম জুয়ার আসর আইপিএলের জুয়ার ভয়াবহ প্রভাব পড়ছে বাংলাদেশে। আইপিএলের জুয়ায় ভাসছে দেশের যুবসমাজ। বাংলাদেশের চায়ের স্টল থেকে পাঁচ তারকা হোটেলেও চলছে হরদম জুয়ার আসর। বোলিং ও ব্যাটিংয়ের আগ মুহূর্তে কোন বলে কী হতে পারে, এমন ধারণা নিয়ে চলছে শত থেকে লাখ টাকা বাজি। কোন খেলোয়াড় কত উইকেট নিতে পারে, কোন খেলোয়াড় কত রান করবে, কে সেঞ্চুরি করবে- এমন সব নিয়ে চলছে জুয়া। আর এই জুয়ার ফাঁদে পড়ে সর্বশান্ত হচ্ছে কিশোর, যুব থেকে শুরু করে বৃদ্ধ পর্যন্ত। এই জুয়ায় ভিক্ষুক থেকে শুরু করে দিনমজুর শ্রমিকরাও অংশগ্রহণ করে সর্বশান্ত হচ্ছে। ঘটছে খুনের মতো অনাকাঙ্খিত ঘটনা।

উল্লেখ্য, গত বছর ভারতের জুয়ার আসর আইপিএল চলাকালে ঢাকার বাইরে সৈয়দপুর, ডোমার, নালিতাবাড়ি, ময়মনসিংহসহ বিভিন্ন স্থানে শতাধিক জুয়াড়িকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এর আগে বাড্ডায় ক্রিকেট বাজিতে খুন হয়েছে এক যুবক। ২০১৪ সালের ১৩ এপ্রিল ভারতীয় এক জুয়াড়িকে ঢাকার গ্রেপ্তার করা হয়। আইপিএল জুয়া চলাকালে রাস্তার মোড়ের দোকানগুলোতে ভালোভাবে চোখ রাখলেই দেখা যায়, সেখানে চলছে বাজির দর কষাকষি। তবে যারা বাজি ধরে তাদের বেশিরভাগেরই বয়স ১৫ থেকে ২৫ বছর। রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে এই জুয়ারীদের আনাগোনা। রাজধানীর পাশাপাশি গ্রাম-গঞ্জেও গড়ে উঠেছে জুয়ার বাজির ডিলার। যাদেরকে আবার নিয়ন্ত্রন করে ভারতীয় জুয়ারীরা। সারাদেশে এদের নেটওয়ার্ক বিস্কৃত। এ ডিলাররাই মূলত সারাদেশে জুয়ার আসর নিয়ন্ত্রণ করে। এই ডিলাররা সারাদেশে ক্রিকেট খেলার মৌসুমে জুয়ার আসর বসায় এবং টার্গেট করে ১৫-২৫ বছর বয়সীদের। আর এদের ফাঁদে আটকায় শিশু-কিশোর, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও। কৌশলে এই শিক্ষার্থীদের জুয়ায় বুদ করে দিয়ে তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ লুটে নেয় জুয়ার ডিলাররা। পাশাপাশি এই ক্রিকেট জুয়া চলছে অনলাইনেও। এককথায় অফলাইনের চেয়েও বেশি গতিতে বসছে অনলাইনে জুয়ার আসর। বর্তমানে বাংলাদেশে বেশ প্রভাব বিস্তার করেছে কুখ্যাত জুয়ার সাইট ‘বেট ৩৬৫’। ভারতীয় এই আইপিএল জুয়ার সময়ে এই সাইটটি ভিজিট হচ্ছে লাখ লাখ বার।

এই সাইটে আইপিএল জুয়ায় অংশ নিয়ে কম সময়ে বড়লোকের স্বপ্ন দেখে সর্বস্ব হারাচ্ছে অনেকে। বিপিএল ও আইপিএল জুয়া নিয়ে প্রতিরাতে কোটি কোটি টাকার হাতবদল হয়ে চলেছে। আবার রাতারাতি নিঃস্ব হচ্ছে অসংখ্য মানুষ। খুন খারাবি থেকে শুরু করে হামলা সংঘর্ষ পর্যন্ত গড়াচ্ছে। এই অবৈধ জুয়া চর্চার প্রথা আমাদের দেশের নাগরিকদের নৈতিক মূল্যবোধ ভয়াবহভাবে ধ্বংস করছে যেহেতু তারা শুধুমাত্র অর্থহানির শিকার হচ্ছে তা নয় বরং একই সঙ্গে তারা শান্তিপূর্ণ পরিবারের মানসিক শান্তি খর্ব করছে, টেনশন বাড়িয়ে দিচ্ছে। জুয়া সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা প্রাণঘাতী সহিংসতায় জড়িয়ে পড়েছে। এছাড়াও প্রকাশিত বিভিন্ন সংবাদপত্র হতে জানা যায়, বিভিন্ন দেশ থেকে বিশেষ হিং¯্র জুয়াড়ি চক্র আমাদের দেশে এসে জুয়ার মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ টাকা অবৈধভাবে দেশের বাইরে পাচার করছে। এক হিসেবে যার পরিমাণ প্রায় ৩০০ কোটি টাকা।

প্রসঙ্গত, জুয়া বন্ধে দেশে যথোপযুক্ত আইনও নেই। প্রায় ২শ’ বছরের পুরনো আইনে লঘু দন্ডের কথা বলা আছে। এ সংক্রান্ত আইন (১৮৬৭) অনুযায়ী যে কোনো ঘর, স্থান বা তাঁবু জুয়ার আসর হিসেবে ব্যবহৃত হলে তার মালিক বা রক্ষণাবেক্ষণকারী, জুয়ার ব্যবস্থাপক বা এতে কোনো সাহায্যকারী তিন মাসের কারাদন্ড বা অনূর্ধ্ব ২০০ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হতে পারে। এ রকম কোনো ঘরে তাস, পাশা, কাউন্টার বা যে কোনো সরঞ্জামসহ কোনো ব্যক্তিকে ক্রীড়ারত (জুয়ারত) বা উপস্থিত দেখতে পাওয়া গেলে তাকে এক মাস পর্যন্ত কারাদ- অথবা ১০০ টাকা অর্থদ- বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হতে পারে।

গত পাঁচ বছরে উচ্চ আদালতে জুয়া নিয়ে অন্তত দেড়শ’ রিট হয়েছে। কিন্তু কোনো সমাধান হয়নি। জুয়া খেলার সময় বিভিন্ন সময়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অভিযান চালিয়ে জুয়াড়িদের গ্রেফতার করা হলেও আদালতে তাকে জুয়াড়ি হিসেবে প্রমাণ করা দুরূহ। জুয়াড়ি আদালতে দাঁড়িয়ে জুয়া খেলার বিষয়টি পুরোপুরি অস্বীকার করে। ২-১টি ক্ষেত্রে প্রমাণ করা গেলেও ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই আপরাধী জামিনে বেরিয়ে যেতে সক্ষম হয়।

আইনের দুর্বলতা থাকার কারনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও অবহেলার পরিচয় দেয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে জুয়া নিয়ে প্রশ্ন করলে তাদের একটা বক্তব্য ‘আমাদের কাছে কোনো অভিযোগ আসে নাই’। অথচ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্ব হচ্ছে এসব দেশবিরোধী কর্মকান্ডের উৎস্য ও মূল হোতাদের খুজে বের করে আইনে আওতায় নিয়ে আসা। যুব সমাজকে এই ঘৃণ্য ও নোংরা সংস্কৃতি থেকে বের করে নিয়ে আসা।

উল্লেখ্য, এই জুয়ার সংস্কৃতি একটি ইহুদী কুটকৌশল। এই জুয়ার ধোঁকায় ইহুদীরা বিশ্বের প্রভাবশালী দেশগুলোর ধনীদের ভিক্ষুকে পরিণত করে থাকে। আর এই ষড়যন্ত্রের ভাগিদার হচ্ছে বাংলাদেশ। অথচ বাংলাদেশ ৯৮ ভাগ মুসলমানদের দেশ। আর পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে জুয়াকে স্পষ্টভাবে হারাম হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। সংবিধানে ১৮(২) অনুচ্ছেদে জুয়াকে নিরুৎসাহিত ও প্রতিরোধ করার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। কিন্তু আইনে তার প্রয়োগ নেই। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাঝেও তার প্রতিফলন নেই। কাজেই সংবিধানকে সামনে রেখে বিশেষ সাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্রদ্বীন পবিত্র দ্বীন ইসলামের দেশ তথা ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমানের দেশ বাংলাদেশে জুয়ার সম্পৃতি নির্মুল করা।

মুহম্মদ মাহবুবুর রহমান, ঢাকা।

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২২ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস

‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’ সম্পর্কিত ‘দৈনিক যুগান্তর’ পত্রিকার মন্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিস্ময় প্রকাশ গোয়েন্দা শীর্ষ কর্মকর্তারাও অবহিত নয় খোদ যুগান্তর সম্পাদকের দুঃখ প্রকাশ

‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’কে নিয়ে – মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নামে দৈনিক জনকণ্ঠের মিথ্যাচার ‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’ নিষিদ্ধ হচ্ছে- এ কথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শুধু অস্বীকারই করলেন না, বললেন: ‘সম্পূর্ণ বাজে কথা।’ প্রসঙ্গতঃ সোহেল তাজ বিবৃত কালো তালিকা অসম্পূর্ণ ও আংশিক ভুল। এর সংশোধন আশু দরকার

মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সমীপে- সোহেল তাজ বিবৃত ১২টি জঙ্গি সংগঠন তালিকা যথার্থ নয় এর মধ্যে যেমন অনেক জঙ্গি সংগঠনের নাম আসেনি তেমনি জঙ্গিবাদ বিরোধী সংগঠনের (উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত) নামও জামাত-জোট ভূতের কারণে এসেছে। সঙ্গতঃ কারণেই বে-হেড সোহেল তাজের বেফাঁস মন্তব্য থেকে বেরিয়ে এসে বর্তমানের যোগ্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে প্রকৃত জঙ্গি সংখ্যা যেমন নির্ধারণ করতে হবে, প্রকৃত জঙ্গিদের যেমন চিহ্নিত করতে হবে পাশাপাশি জঙ্গিবাদী, মৌলবাদী ও ধর্মব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে একান্ত নিবেদিত ‘আল বাইয়্যিনাত’কে মূল্যায়ন করতে হবে।