ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-১৪ -আল্লামা আবুল বাশার মুহম্মদ রুহুল হাসান

সংখ্যা: ১৯২তম সংখ্যা | বিভাগ:

শয়তান যে মানুষকে নেক সুরতে ধোঁকা দেয়, এ বিষয়টি ভালোভাবে অনুধাবন করেছিলো শয়তানের অনুচর ইহুদী এবং খ্রিস্টানরা। মুসলমানদের সোনালী যুগ এসেছিল শুধু ইসলামের পরিপূর্ণ অনুসরণের ফলে। শয়তানের চর ইহুদী খ্রিস্টানরা বুঝতে পেরেছিল মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ, অনৈক্য, সংঘাত সৃষ্টি করতে পারলেই ইসলামের জাগরণ এবং বিশ্বশক্তি হিসেবে মুসলমানদের উত্থান ঠেকানো যাবে। আর তা করতে হবে- ইসলামের মধ্যে ইসলামের নামে নতুন মতবাদ প্রবেশ করিয়ে। শুরু হয় দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা; যার মূলে থাকে খ্রিস্টীয় ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ। জন্ম হয় ওহাবী মতবাদের। ওহাবী মতবাদ সৃষ্টির মূলে থাকে একজন ব্রিটিশ গুপ্তচর- হেমপার। সে মিসর, ইরাক, ইরান, হেজাজ ও তুরস্কে তার গোয়েন্দা তৎপরতা চালায় মুসলমানদের বিভ্রান্ত করার জন্য। ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদের উপর তুর্কি ভাষায় রচিত হযরত মুহম্মদ আইয়ূব সাবরী পাশা রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর æমিরাত আল হারামাইন” কিতাবের ইংরেজি অনুবাদ থেকে বাংলায় ধারাবাহিকভাবে অনুবাদ প্রকাশ করা হচ্ছে ইনশাআল্লাহ।

(ধারাবাহিক)

এই ওহাবী দস্যুরা মক্কা শরীফ-এর পর মদীনা শরীফ দখল করে এবং পৃথিবীর অত্যন্ত মূল্যবান ঐতিহাসিক সম্পদ নষ্ট করে ফেলে। এ সকল সম্পদ শত সহস্র বছর ধরে খাজিনাতে নববী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম” হিসেবে সংরক্ষিত ছিল। তারা মুসলমানদের সাথে এমন নিষ্ঠুর আচরণ করে; যা প্রকাশ করার মত ভাষা নেই।

অতঃপর তারা মুবারক ইবনে মাগিয়ান নামক এক ব্যক্তিকে মদীনা শরীফ-এর গভর্নর নিয়োগ করে দরিয়াতে প্রত্যাবর্তন করে। এই ওহাবীরা মক্কা শরীফ এবং মদীনা শরীফ-এ অবস্থান করতে থাকে এবং সাত বছর পর্যন্ত আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদার কোন হাজীকে সেখানে প্রবেশ করতে দেয়নি। তারা কাইলান নামক দুটি কালো চাদর দিয়ে কা’বা শরীফকে ঢেকে দেয়।

১৩০১ হিজরীতে (১৮৮৩) প্রকাশিত হযরত মুহম্মদ আইয়ূব সাবরী পাশা রহমতুল্লাহি আলাইহি লিখিত æমিরাত আল হারামাইন” কিতাবের প্রথম খ-ে মক্কাবাসী মুসলমানগণের উপর যে নির্যাতন চালানো হয়েছিলো তা তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, প্রতি বছর হজ্জ যাত্রীদের উপর এবং মক্কা শরীফ-এর মুসলমানগণের উপর পবিত্র শহরে যে কঠোর নির্যাতন চালানো হত তা বিস্তারিত বলা মুশকিল। মক্কা শরীফ-এর হযরত আমির শরীফ গালিভ আফিন্দী রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর নিকট দস্যুদের সর্দার সউদ বিন আব্দুল আজিজ ঘন ঘন হুমকি দিয়ে চিঠি পাঠাতো। যদিও সউদ বিন আব্দুল আজিজ কয়েকবার মক্কা শরীফ অবরোধ করে কিন্তু ১২১৮ হিজরীর (১৮০২) পূর্ব পর্যন্ত সেখানে প্রবেশ করতে সক্ষম হয়নি। ১২১৭ হিজরী সনে মক্কা শরীফ-এর হযরত আমির শরীফ গালিভ আফিন্দি রহমতুল্লাহি আলাইহি এবং জিদ্দার গভর্নর, দামেস্ক এবং মিশরের সকল হজ্জ কাফেলার প্রধানদের একত্রিত করে বলেন, æদস্যুরা পবিত্র মক্কা শরীফ আক্রমণ করার পরিকল্পনায় রয়েছে যদি আপনারা সহযোগিতা করেন তবে সবাই মিলে দস্যুদের সর্দার সউদ বিন আব্দুল আজিজকে গ্রেফতার করা যেতে পারে।” কিন্তু উনার প্রস্তাব গৃহীত হয়নি। তখন হযরত শরীফ গালিভ আফিন্দি রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ভাই হযরত শরীফ আবদাল মুয়িন আফিন্দি রহমতুল্লাহি আলাইহিকে তাঁর ডেপুটি হিসেবে নিয়োগ দিয়ে তিনি জিদ্দায় চলে যান। হযরত শরীফ আবদাল মুয়িন আফিন্দি রহমতুল্লাহি আলাইহি মক্কা শরীফ-এর গভর্নর হিসেবে ১২১৮ হিজরী সনে আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের পাঁচজন আলিম নিয়ে একটি কমিটি করে সউদ বিন আব্দুল আজিজকে ক্ষমা করার উদ্দেশ্যে পাঠান। সেই পাঁচজন বিশিষ্ট আলিম-এর নাম ছিল যথাক্রমে হযরত মুহম্মদ তাহির রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত সাইয়্যিদ মুহম্মদ আবু বকর রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত মীর গণি রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত মুহম্মদ আক্কাস রহমতুল্লাহি আলাইহি এবং হযরত আব্দুল হাফিয আল আজমী রহমতুল্লাহি আলাইহিম।

সউদ বিন আব্দুল আজিজ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে সৈন্যবাহিনী নিয়ে মক্কা শরীফ গমন করে। সে হযরত শরীফ আবদাল মুয়িন আফিন্দি রহমতুল্লাহি আলাইহিকে জেলার প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেয় এবং সকল মাযার শরীফ-এর গম্বুজ এবং কবর গুঁড়িয়ে ফেলতে বলে। কেননা ওহাবীদের বিশ্বাস অনুযায়ী, মক্কা শরীফ এবং মদীনা শরীফ বাসীরা নাকি আল্লাহ তায়ালার পরিবর্তে এ সকল গম্বুজের ইবাদত করতো (নাঊযুবিল্লাহ)।

তারা বলে এ সকল জিনিস ভেঙে ফেলা হলে মানুষ তখন আল্লাহ পাক উনার ইবাদত করবে। আব্দুল ওহাব নজদীর ভাষ্যানুযায়ী ৫০০ হিজরী সনের (১১০৬) কাছাকাছি সময়ে সকল মুসলমান নাকি কাফির অথবা মুশরিক হিসেবে মারা গিয়েছে এবং সে আরো বলতো তার কাছে সঠিক ইসলাম প্রকাশিত হয়েছে এবং যারা ওহাবী হয়েছিলো তাদেরকে মুসলমানদের কবরের পাশে কবরস্থ করা জায়িয নয়। যেহেতু মুসলমানরা কাফির এবং মুশরিকে পরিণত হয়েছে (নাঊযুবিল্লাহ)

সউদ বিন আব্দুল আজিজ জিদ্দা আক্রমণ করে হযরত শরীফ গালিভ আফিন্দি রহমতুল্লাহি আলাইহিকে বন্দি করার চেষ্টা করে এবং জিদ্দা দখল করার চেষ্টা চালায়। কিন্তু জিদ্দাবাসীরা অটোম্যান সৈনিকদের সাথে হাত মিলিয়ে সাহসিকতার সাথে শত্রুদের পরাস্ত করে এবং ভয়ানক পরিস্থিতিতে ফেলে দেয়। সউদ বিন আব্দুল আজিজ পালিয়ে যাওয়া সৈনিকদের নিয়ে আবার মক্কা শরীফ-এ ফিরে আসে।

যদিও হযরত আবদাল মুয়িন আফিন্দি রহমতুল্লাহি আলাইহি ওহাবীদের সাথে বন্ধুসুলভ আচরণ করেছিলো যাতে মক্কা শরীফ-এর মুসলমানদের লুন্ঠন, হত্যা থেকে রক্ষা করা যায়। কিন্তু ওহাবীরা দিনে দিনে তাদের অত্যাচারের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে থাকে। যখন ওহাবীদের সাথে চলা প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠে তখন তিনি হযরত শরীফ গালিভ আফিন্দি রহমতুল্লাহি আলাইহিকে একটি বার্তা পাঠান এই বলে যে, সউদ বিন আব্দুল আজিজ এখন তার কিছু সৈন্যবাহিনীসহ মুলা নামক স্থানে জড়ো হয়েছে যদি কিছু সৈন্যের সাহায্য পাওয়া যায় তবে তাদের গ্রেফতার করা সম্ভব হবে। (চলবে)

খতমে নুবুওওয়াত প্রচার কেন্দ্র খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারীরা কাফির “ইসলামী শরীয়তের হুকুম মুতাবিক যারা মুসলমান থেকে খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত হয় যেমন-  কাদিয়ানী, বাহাই ইত্যাদি তাদের তওবার জন্য নির্ধারিত সময় ৩ দিন এরপর তওবা না করলে তাদের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।”

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৬২

ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-১১

চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-৩০

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২০ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস ওহাবী ফিরক্বাসহ সবগুলো বাতিল ফিরক্বা ইহুদী-নাছারাদের আবিষ্কার! তাদের এক নম্বর দালাল