মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, সম্মানিত ইজমা শরীফ এবং সম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের আলোকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক উনার ও উনার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে এবং বিশেষ করে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক যারা ভাঙবে, ভাঙ্গার কাজে সাহায্য-সহযোগিতা করবে বা সমর্থন করবে তাদের প্রত্যেকের একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদণ্ড ও তৎসংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া- (পর্ব-৫)

সংখ্যা: ২৬৯তম সংখ্যা | বিভাগ:

৩৬তম ফতওয়া হিসেবে

“মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, সম্মানিত ইজমা শরীফ এবং সম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের আলোকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক উনার ও উনার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে এবং বিশেষ করে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক যারা ভাঙবে, ভাঙ্গার কাজে সাহায্য-সহযোগিতা করবে বা সমর্থন করবে তাদের প্রত্যেকের একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদণ্ড ও তৎসংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” পেশ করতে পারায় মহান আল্লাহ পাক উনার, উনার মাহবূব হাবীব, নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ বেশুমার শুকরিয়া আদায় করছি। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক উনার গুরুত্ব-তাৎপর্য, ফাযায়িল-ফযীলত

ও বুযূর্গী-সম্মান মুবারক

(২) সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিজ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মাগফিরাহ মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাত মুবারক)-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক নির্মাণ:

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদে নববী শরীফ:

(পূর্বপ্রকাশিতের পর)

নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত নির্দেশ মুবারক অনুযায়ী ঝাউ গাছের কাঠ দ্বারা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মিম্বর শরীফ তৈরী করা হয়। সুবহানাল্লাহ! মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মিম্বর শরীফ উনার দৈর্ঘ্য ছিলেন ২ হাত, প্রস্থ ১ হাত, উচ্চতা দেড় হাত, প্রতি সিঁড়ি ১ বিঘত উঁচু। সুবহানাল্লাহ! মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মিম্বর শরীফ তিন থাক বিশিষ্ট ছিলেন। সুবহানাল্লাহ!

নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত নির্দেশ মুবারক অনুযায়ী খেজুর গাছের কাঠ দ্বারা সম্মানিত ও পবিত্র লাঠি মুবারক তৈরী করা হয়। সুবহানাল্লাহ! নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত ও পবিত্র লাঠি মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মাগফিরহ্ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাত) মুবারক-এ নিয়ে সম্মানিত ও পবিত্র লাঠি মুবারক উনার উপর ভর করে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খুৎবা মুবারক দিতেন। সুবহানাল্লাহ!

উল্লেখ্য যে, মুত্বহ্হার, মুত্বহহির, আছ ছমাদ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি হচ্ছেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অদ্বিতীয় হাক্বীক্বী ক্বায়িম মাক্বাম। সুবহানাল্লাহ! যার কারণে পৃথিবীর ইতিহাসে তিনিই একমাত্র সেই সুমহান ব্যক্তিত্ব মুবারক যিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদে নববী শরীফ উনার হুবহু অনুকরণে সম্মানিত ঢাকা রাজারবাগ দরবার শরীফ-এ ‘মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নতী জামে’ মসজিদ মুবারক’ নির্মাণ করেন। সুবহানাল্লাহ! শুধু তাই নয়, উনার সম্মানিত নির্দেশ মুবারক অনুযায়ী ঝাউ গাছের কাঠ দ্বারা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মিম্বর শরীফ তৈরী করা হয়। সুবহানাল্লাহ! মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মিম্বর শরীফ উনার দৈর্ঘ্য ২ হাত, প্রস্থ ১ হাত, উচ্চতা দেড় হাত, প্রতি সিঁড়ি ১ বিঘত উঁচু। সুবহানাল্লাহ! মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মিম্বর শরীফ তিন থাক বিশিষ্ট। সুবহানাল্লাহ! এবং উনার সম্মানিত নির্দেশ মুবারক অনুযায়ী খেজুর গাছের কাঠ দ্বারা সম্মানিত ও পবিত্র লাঠি মুবারক তৈরী করা হয়। সুবহানাল্লাহ! তিনি উক্ত সম্মানিত ও পবিত্র লাঠি মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মাগফিরহ্ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাত) মুবারক-এ নিয়ে সম্মানিত ও পবিত্র লাঠি মুবারক উনার উপর ভর করে সম্মানিত ও পবিত্র খুৎবা মুবারক দিয়ে থাকেন। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদে নববী শরীফ নির্মাণ কাজ মুবারক সমাপ্ত হলে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদে নববী শরীফ উনার পূর্বপাশে হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের জন্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হুজরা শরীফ নির্মাণ করা হয়। সুবহানাল্লাহ! আর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদে নববী শরীফ উনার পশ্চিমপাশে ছুফ্ফাহ খানা নির্মাণ করা হয়। সুবহানাল্লাহ! মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হুজরা শরীফগুলো কাঁচা ইট এবং খেজুর গাছ দ্বারা নির্মিত ছিলেন। এগুলো ছিলেন ছয়-সাত হাত করে চওড়া এবং দশ হাত করে লম্বা। ছাদ এতটুকু উঁচু ছিলেন যে, স্বাভাবিকভাবে একজন লোক দাঁড়ালে হাত মুবারক দিয়ে তা স্পর্শ করতে পারতেন। সম্মানিত ও পবিত্র দরজা মুবারক-এ কম্বলের পর্দা মুবারক ঝুলানো ছিলো। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হুজরা শরীফ উনার নিকটে যে সকল হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা বসবাস করতেন, উনারা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ বিভিন্ন খাদ্য, ফলমূল এবং তরকারী মুবারক হাদিয়া মুবারক হিসেবে পাঠাতেন। সুবহানাল্লাহ!

সম্মানিত ও পবিত্র ক্বিবলাহ মুবারক পরিবর্তন:

সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত বাইতুল মুক্বাদ্দাস শরীফ উনার দিকে ফিরে সম্মানিত ছলাত বা নামায মুবারক আদায় করতেন। সুবহানাল্লাহ! ইহুদীরা এ বিষয়টিকে কেন্দ্র করে নানা চূ-চেরা, ক্বীল-ক্বাল করতে থাকলো। না‘ঊযুবিল্লাহ! তারা বলাবলি করতে লাগলো যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি দাবী করে থাকেন যে, তিনি আলাদা একটি সম্মানিত ও পবিত্র মুবারক শরীয়ত এনেছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত উনার ক্বিবলা সেই ইয়াহুদীদের ক্বিবলাই রয়ে গেছে।” না‘ঊযুবিল্লাহ!

আর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট সম্মানিত দো‘আ মুবারক করতেন- মহান আল্লাহ পাক তিনি যেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ক্বা’বা শরীফ উনাকে সম্মানিত ও পবিত্র ক্বিবলাহ মুবারক হিসেবে নির্ধারণ করেন এবং তিনি সম্মানিত ও পবিত্র ওহী মুবারক উনার অপেক্ষায় আসমানের দিকে তাকিয়ে থাকতেন। সুবহানাল্লাহ! তখন সম্মানিত ও পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ উনার ১৪৪ নং সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ নাযিল হন এবং তাতে পবিত্র বাইতুল মুকাদ্দাস শরীফ থেকে ক্বিবলা পরিবর্তন করে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কা’বা শরীফ উনাকে সম্মানিত ও পবিত্র ক্বিবলাহ মুবারক হিসেবে নির্দিষ্ট করার বিষয়ে সম্মানিত ও পবিত্র ওহী মুবারক করা হয়। সুবহানাল্লাহ!

দ্বিতীয় হিজরী শরীফ উনার ১৫ই রজবুল হারাম শরীফ সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ (ইয়াওমুল ইছনাইনিল ‘আযীম শরীফ) নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ‘বনী সালামাহ’ গোত্রে একটি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র  মসজিদ মুবারক-এ হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহুম উনাদেরকে নিয়ে সম্মানিত জামা‘য়াত মুবারক উনার সাথে সম্মানিত ‘আছরের নামায মুবারক আদায় করছিলেন। এমন সময় দুই রাক‘আত নামায মুবারক আদায় শেষে সম্মানিত ও পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ উনার ১৪৪ নং সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফখানা নাযিল হন। সুবহানাল্লাহ! সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফখানা হচ্ছেন-

(৯৬)

قَدْ نَرٰى تَقَلُّبَ وَجْهِكَ فِـى السَّمَاءِ فَلَنُوَلِّيَنَّكَ قِبْلَةً تَرْضٰىهَا فَوَلِّ وَجْهَكَ شَطْرَ الْمَسْجِدِ الْـحَرَامِ وَحَيْثُ مَا كُنْتُمْ فَوَلُّوْا وُجُوْهَكُمْ شَطْرَهٗ وَاِنَّ الَّذِيْنَ اُوْتُوا الْكِتٰبَ لَيَعْلَمُوْنَ اَنَّهُ الْـحَقُّ مِنْ رَّبّـِهِمْ وَمَا اللّٰهُ بِغَافِلٍ عَمَّا يَعْمَلُوْنَ.

অর্থ: “নিশ্চয়ই আমি আপনার আকাশের দিকে বারবার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুর রহমত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মুখ মুবারক) ফিরিয়ে দেখাকে লক্ষ্য করেছি। যে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ক্বিবলাহ মুবারক আপনি পছন্দ করেন, আমি আপনাকে সেদিকে ফিরে যেতে সম্মানিত ও পবিত্র ওহী মুবারক করছি। আপনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাসজিদুল হারাম শরীফ তথা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কা’বা শরীফ উনার দিকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুর রহমত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মুখ মুবারক) ফিরান। আপনারা যেখানেই থাকুন, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কা’বা শরীফ উনার দিকে মুখ ফিরান। মূলত, যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে, তাদের জানা আছে যে, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ক্বিবলাহ মুবারক পরিবর্তন তাদের প্রতিপালকের পক্ষ হতে প্রকৃত সত্য এবং তারা যা করে মহান আল্লাহ পাক তিনি সে সম্পর্কে পরিপূর্ণ অবগত রয়েছেন।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা বাকারা শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ১৪৪)

সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ নাযিল হওয়ার সাথে সাথে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত নামায মুবারক আদায়রত অবস্থাতেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কা’বা শরীফ উনার দিকে ঘুরে যান এবং উনার সাথে সাথে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা যাঁরা পিছনে নামায পড়ছিলেন উনারাও ঘুরে গেলেন। আর এভাবেই সম্মানিত ‘আছরের নামায মুবারক উনার পরবর্তী দুই রাক‘আত নামায মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কা’বা শরীফ উনার দিকে ফিরে আদায় করে শেষ করেন। সেজন্যেই এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক উনাকে ‘মসজিদে যুল ক্বিবলাতাইন’ অর্থাৎ দুই ক্বিবলাহ বিশিষ্ট মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক বলা হয়। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার দক্ষিণ দিকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ অবস্থিত। দ্বিতীয় হিজরী শরীফ উনার ১৫ই রজবুল হারাম শরীফ-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ক্বিবলাহ মুবারক পরিবর্তিত হওয়ায় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদে নববী শরীফ উনার উত্তর দেওয়ালের বদলে দক্ষিণ দেওয়ালের দিকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ক্বিবলাহ মুবারক ঘুরে যায়। যার কারণে পিছনে যে সম্মানিত ও পবিত্র দরজা মুবারকটি ছিলো এখন তা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ক্বিবলাহ মুবারক বরাবর হয়েছে। সুবহানাল্লাহ!

একবার বৃষ্টিতে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদে নববী শরীফ উনার মেঝ মুবারক কর্দমাক্ত হয়ে যায়। এই অবস্থায় সম্মানিত ছলাত (নামায) মুবারক আদায় করায় সবার শরীর মুবারক-এ কাদা মুবারক লেগে যায়। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিইয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মালাহাহ্ মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কপাল মুবারক) এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুন নি‘য়ামত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দাঁড়ি মুবারক) উনাদের মধ্যেও কাদা মুবারক লেগে যায়। পরবর্তীতে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক অনুমতিতে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদে নববী শরীফ উনার মেঝ মুবারক-এ পাথরের নূরী ঢেলে দেন। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

(৯৭-১০১)

عَنْ حَضْرَتْ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ اَنَّ الْاَنْصَارَ جَمَعُوْا مَالًا فَاَتَوْا بِهِ النَّبِىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالُوْا يَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِبْنِ بِـهٰذَا الْمَسْجِدَ وَزَيِّنْهٗ اِلـٰى مَتٰى نُصَلِّىْ تَـحْتَ هٰذَا الْـجَرِيْدِ فَقَالَ مَا بِـىْ رَغْبَةٌ عَنْ اَخِىْ حَضْرَتْ مُوْسٰى عَلَيْهِ السَّلَامُ عَرِيْشٌ كَعَرِيْشِ حَضْرَتْ مُوْسٰى عَلَيْهِ السَّلَامُ.

অর্থ: “হযরত ‘উবাদাহ ইবনে ছামিত রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নিশ্চয়ই হযরত আনছার ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহুম উনারা মাল-সম্পদ জমা করে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ এসে বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! জমাকৃত অর্থ দিয়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদে নববী শরীফ যদি আরও সুন্দরভাবে নির্মাণ করা যায় তাহলে আরও উত্তম হত। কতদিন আমরা এই ছাপড়ার নীচে সম্মানিত ছলাত আদায় করব! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ মুবারক করেন-

مَا بِـىْ رَغْبَةٌ عَنْ اَخِىْ حَضْرَتْ مُوْسٰى عَلَيْهِ السَّلَامُ عَرِيْشٌ كَعَرِيْشِ حَضْرَتْ مُوْسٰى عَلَيْهِ السَّلَامُ.

‘সম্মানিত নবী-রসূল হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার ছাপড়ার ন্যায় ছাপড়া থেকে ফিরে আসতে আমার কোন আগ্রহ নেই।’ সুবহানাল্লাহ! (দালায়িলুন নুবুওওয়াহ ২/৫৪২, বিদায়া-নিহায়াহ ৪/৫৩৩, শরফুল মুস্ত¡ফা শরীফ ২/৩৮৮, তারীখুল ইসলাম লিয যাহাবী ২/৩৭, খুলাছাতুল ওয়াফা ২/১৫ ইত্যাদী)

সপ্তম হিজরী হিজরী শরীফ-এ সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদে নববী শরীফ পুনর্নির্মাণ মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা প্রত্যেকেই উনাদের সাধ্য-সামর্থ মুবারক অনুযায়ী আর্থিকভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদে নববী শরীফ পুননির্মাণ মুবারক করার কাজে শরীক থাকেন। সুবহানাল্লাহ!

অসমাপ্ত- পরবর্তী সংখ্যার অপেক্ষায় থাকুন

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম-নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-৩০

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান বা শবে বরাত-এর আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-৩

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম-নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-৩১

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান বা শবে বরাত-এর আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-৪

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁ, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম-নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-৩২