মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম, হুমড়ি খেয়ে পড়ছে বাংলাদেশীরা সরকারের কাছে নেই কোনো তালিকা সেকেন্ড হোমের জন্য মালয়েশিয়াসহ অন্যান্য দেশে লাখ লাখ টাকা পাচার হচ্ছে সরকারের অবগতিও নেই, মাথাব্যথাও নেই

সংখ্যা: ২২৭তম সংখ্যা | বিভাগ:

সব প্রশংসা মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত দুরূদ মুবারক ও সালাম মুবারক।

গত দুই দশকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক একটি সংস্কৃতি দাঁড়িয়ে গেছে যে, সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গেই সুবিধাভোগী কিছু রাজনীতিক, ব্যবসায়ী এবং সরকারি আমলা দেশ থেকে সটকে পড়ে। আর এ জন্য তারা সরকারের মেয়াদের শেষ দিকটায় দেশ ছাড়ার আয়োজন করে। এর আগে যতভাবে সম্ভব বৈধ-অবৈধভাবে টাকা-কড়ি ‘টার্গেট’ করা দেশটিতে পাঠিয়ে দেয়। এবারো এর ব্যতিক্রম নেই। এক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ইংল্যান্ড ও অন্যান্য ইউরোপীয় দেশগুলো থাকে ‘হট টার্গেট’। তবে আওয়ামী লীগের সঙ্গে বৈরী সম্পর্কের কারণে আমেরিকান দেশগুলো পাড়ি জমানো কঠিন হবে সরকারি আমলাদের জন্য। একই আশঙ্কা থাকছে ইউরোপীয় দেশগুলোর ক্ষেত্রেও। আবার বিএনপি-জামাত লবির কারণে আওয়ামী আমলারা মধ্যপ্রাচ্যেও তেমন সুবিধা করতে পারছে না। অন্যদিকে ড. ইউনূসের সাম্প্রতিক রাশিয়া সফর ক্রমেই যেন ‘বাঘবন্দী ছকে’ ফেলে দিয়েছে এই আমলাদের। ফলে বর্তমান সরকারের মেয়াদ কমার সঙ্গে সঙ্গে দুর্নীতিবাজদের বিদেশ পাড়ি জমানোর জন্য নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য দেশের তালিকায় এক নম্বরে রয়েছে মালয়েশিয়া এবং পরবর্তীতে সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও সবশেষে ভারত।

জানা গেছে, গত ১০ বছরে ২৩৭০ জন বাংলাদেশী মালয়েশিয়ার ‘সেকেন্ড হোম’ সুবিধা নিয়েছে। এ সুবিধা পেতে মালয়েশিয়ার ব্যাংকে মোটা অঙ্কের অর্থ জমা রাখতে হয়েছে। এরপরও বাংলাদেশের সুযোগ গ্রহণকারীদের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। বয়স ৫০ বছরের নিচে এমন কোনো ব্যক্তির এ সুবিধা নিতে লাগছে পাঁচ লাখ রিঙ্গিট বা এক কোটি টাকার বেশি। বয়স ৫০ বছরের বেশি হলে সাড়ে তিন লাখ রিঙ্গিট বা ৮০ লাখ টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংক মানি-লন্ডারিং সংক্রান্ত এক অনুসন্ধানে দেখেছে, এসব অর্থ হুন্ডির মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় নিয়ে গেছে সুবিধা গ্রহণকারীরা। এর বাইরেও কোটি কোটি টাকা মালয়েশিয়ায় পাচার করে নিয়ে গেছে তারা। এ কারণে গত কয়েক বছরে মালয়েশিয়ায় পাচার হয়ে গেছে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা। মালয়েশিয়ার পর্যটন মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে গত ১০ বছরের পরিসংখ্যান ঘেঁটে দেখা যায়, সেকেন্ড হোম সুবিধা গ্রহণের দিক দিয়ে গত ১০ বছর ধরে বাংলাদেশীরা রয়েছে দ্বিতীয় অবস্থানে।

সেকেন্ড হোম সুবিধা গ্রহণের হার পর্যালোচনা করে দেখা যায়, রাজনৈতিক পরিস্থিতি যত উত্তপ্ত হতে থাকে তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম সুবিধা গ্রহণকারীদের সংখ্যাও বেড়ে যায়। মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, যে কোনো দেশের নাগরিক মালয়েশিয়ার মাই সেকেন্ড হোম প্রোগ্রামের জন্য আবেদন করতে পারবে। এজেন্সি মারফত বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে সরাসরি এ প্রোগ্রামের সুবিধার জন্য আবেদন করা যাবে। শুধু মালয়েশিয়া নয়, অস্ট্রেলিয়া, ইউরোপ, আমেরিকার দেশগুলোতেও আশ্রয় খুঁজছে অনেকে। আর এর আড়ালে ঘুরছে মুদ্রা পাচার। এর বেশির ভাগেরই কোনো হিসাব পাওয়া যায় না। ওদিকে বছরে কত টাকা দেশের বাইরে পাচার হচ্ছে, তার কোনো সঠিক হিসাব পাওয়া যাবে না। তবে বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া খবরগুলো পাঠ করলে এ সম্বন্ধে একটা ধারণা করা যায়। সম্প্রতি ‘গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি’ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যার নাম ‘ইলিসিট ফিন্যান্সিয়াল ফ্লোজ ফ্রম ডেভেলপিং কান্ট্রিজ ২০০১-২০১০’। এতে বলা হয়েছে, ২০০১ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে সর্বমোট ১৪ দশমিক ৫৯ বিলিয়ন ডলার বিদেশে পাচার হয়েছে। টাকার অংকে এর পরিমাণ দাঁড়ায় ১ লাখ ১২ হাজার কোটি টাকা।

জানা যায়, মালয়েশিয়ার অভিবাসন আইন মোতাবেক মাই সেকেন্ড হোম প্রকল্পে প্রাথমিক বাছাইয়ের পর আগ্রহী ব্যক্তিদের মালয়েশিয়ার একটি ব্যাংকে ফিক্সড ডিপোজিট হিসেবে তিন লাখ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিট বা ৮৯ হাজার মার্কিন ডলার (বর্তমানে ৭২ লাখ টাকা) জমা করতে হয়। এর মাধ্যমে সেখানে ১০ বছর বসবাসের অনুমোদন পাওয়া যায়। আরো ডিপোজিটে দীর্ঘমেয়াদে এ অনুমোদন বাড়ানো যায়। ফিক্সড ডিপোজিটের পাশাপাশি ৫০ হাজার মার্কিন ডলার জীবন যাপন ব্যয় ধরে প্রত্যেক ব্যক্তির মালয়েশিয়ায় বিনিয়োগ হয় দেড় লাখ মার্কিন ডলার বা এক কোটি ২৩ লাখ টাকা।

প্রবাসী শ্রমিকদের কষ্টার্জিত বৈদেশিক অর্থ নিজেদের ভোগ-বিলাসের জন্য পাচার করছে কিছু সংখ্যক লোক। আইনগত কোনো বৈধতা না থাকলেও তা ঠেকাতে পারছে না বাংলাদেশ ব্যাংক। এমনকি কারা দেশের বাইরে বাড়ি কিনছে, সেই তথ্যও নেই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে। মালয়েশিয়ার কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল যে, আমাদের দেশ থেকে কারা টাকা নিয়ে গেছে সেকেন্ড হোম করার জন্য এবং কি পরিমাণ টাকা নিয়েছে, কিন্তু মালয়েশিয়া সেসব তথ্য দেয়নি।

এটা বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির চরম গাফিলতি ও দুর্বলতা। পাশাপাশি এও সত্য যে শুধুমাত্র দুর্নীতিবাজ রাজনীতিক, আমলা ও ব্যবসায়ীরাই মালয়েশিয়াকে সেকেন্ড হোম হিসেবে বেছে নিচ্ছে না, অনেক নিরপেক্ষ সচ্ছল ব্যক্তিও মালয়েশিয়াকে সেকেন্ড হোম হিসেবে গ্রহণ করছে। এক্ষেত্রে তাদের যুক্তি হলো বিদ্যমান দুই রাজনৈতিক দল ও দুই নেত্রীর দ্বন্দ্ব। দেশে নাগরিক সুবিধার অভাব। ব্যবসা-বাণিজ্যে, শিল্পে সবক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতার চূড়ান্ত অভাব বরং চরম বৈরিতা ও হয়রানি। সত্যিকার অর্থে রাজনৈতিক অস্থিরতায় এদেশ এখন নাগরিকদের জন্য স্বস্তির দেশ নয়। বরং চরম অস্তিরতা, অনিশ্চয়তা ও অনিরাপদ দেশ।

বলাবাহুল্য, নাগরিকদের এ অনুভূতি বিরোধী রাজনৈতিক দল তথা সরকার উভয়ের জন্য চরম লজ্জাজনক। কিন্তু এ লজ্জা তারা গায়ে মাখেনা তারা চায় যেনতেন প্রকারে ক্ষমতা আর লুটপাট। দেশের কোটি কোটি চরম দারিদ্র্যপীড়িত লোকের জন্য কারো বিন্দুমাত্র দরদবোধ নেই। মালয়েশিয়া তথা অন্যান্য দেশে যদি লাখ লাখ কোটি কোটি টাকা পাচার না হতো বরং দেশেই বিনিয়োগ হতো তাহলে দেশ থেকে দারিদ্র্য দূর হতো। কিন্তু সরকার তাতে আন্তরিক নয়। মালয়েশিয়ায় তথা বিদেশে অর্থ পাচার নিয়ন্ত্রণ না করাই তার প্রমাণ। এক্ষেত্রে এদেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীরই সচেতন ও প্রতিবাদী হওয়ার কোনো বিকল্প নেই।

মূলত এসব অনুভূতি ও দায়িত্ববোধ আসে পবিত্র ঈমান ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাদের অনুভূতি ও প্রজ্ঞা থেকে। আর তার জন্য চাই নেক ছোহবত তথা মুবারক ফয়েজ-তাওয়াজ্জুহ।

যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, যামানার মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারকে সে মহান ও অমূল্য নিয়ামত মুবারক হাছিল সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের তা নছীব করুন। (আমীন)

-মুহম্মদ তা’রীফুর রহমান

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২২ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস

‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’ সম্পর্কিত ‘দৈনিক যুগান্তর’ পত্রিকার মন্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিস্ময় প্রকাশ গোয়েন্দা শীর্ষ কর্মকর্তারাও অবহিত নয় খোদ যুগান্তর সম্পাদকের দুঃখ প্রকাশ

‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’কে নিয়ে – মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নামে দৈনিক জনকণ্ঠের মিথ্যাচার ‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’ নিষিদ্ধ হচ্ছে- এ কথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শুধু অস্বীকারই করলেন না, বললেন: ‘সম্পূর্ণ বাজে কথা।’ প্রসঙ্গতঃ সোহেল তাজ বিবৃত কালো তালিকা অসম্পূর্ণ ও আংশিক ভুল। এর সংশোধন আশু দরকার

মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সমীপে- সোহেল তাজ বিবৃত ১২টি জঙ্গি সংগঠন তালিকা যথার্থ নয় এর মধ্যে যেমন অনেক জঙ্গি সংগঠনের নাম আসেনি তেমনি জঙ্গিবাদ বিরোধী সংগঠনের (উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত) নামও জামাত-জোট ভূতের কারণে এসেছে। সঙ্গতঃ কারণেই বে-হেড সোহেল তাজের বেফাঁস মন্তব্য থেকে বেরিয়ে এসে বর্তমানের যোগ্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে প্রকৃত জঙ্গি সংখ্যা যেমন নির্ধারণ করতে হবে, প্রকৃত জঙ্গিদের যেমন চিহ্নিত করতে হবে পাশাপাশি জঙ্গিবাদী, মৌলবাদী ও ধর্মব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে একান্ত নিবেদিত ‘আল বাইয়্যিনাত’কে মূল্যায়ন করতে হবে।