মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে (১৮৪)

সংখ্যা: ২২৫তম সংখ্যা | বিভাগ:

অতি প্রিয় ও পছন্দনীয় বস্তু কুরবান বা বিসর্জন না দেয়া পর্যন্ত শায়েখ বা মুর্শিদ ক্বিবলা উনার গভীর নিছবত, তায়াল্লুক, মুহব্বত, নৈকট্য হাছিল হয় না।

শায়েখ বা মুর্শিদ ক্বিবলা উনার তায়াল্লুক, নিছবত, মুহব্বত, নৈকট্যই যে মহান আল্লাহ পাক এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের তায়াল্লুক, নিছবত, মুহব্বত, নৈকট্য তা অনেকেই জানেন না, মানেননা। যার কারণে একেকজন একেক স্থানে, একেকভাবে মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের তায়াল্লুক, নিছবত, মুহব্বত, মা’রিফাত ও নেকট্য তালাশ করে থাকে। কিন্তু তা পান না। ফলে অক্লান্ত ও অবিরাম চেষ্টা-কোশেশ করেও তা হাছিল করতে না পেরে নিরাশ হয়ে কুফরীর অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়। আবার যারা বিষয়টি উপলব্ধি করতে পেরেছেন তারা শায়েখ বা মুর্শিদ ক্বিবলা উনার তায়াল্লুক-নিছবত, মুহব্বত, নৈকট্য কিভাবে হাছিল করা যায় তা জানেনা।
শায়েখ বা মুর্শিদ ক্বিবলা উনার নিকট যা প্রিয় ও পছন্দনীয় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকটও তা প্রিয় পছন্দনীয়। একইভাবে মহান আল্লাহ পাক উনার নিকটও তা প্রিয় পছন্দনীয়। আর মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক ফরমান-
لن تنالوا البر حتى تنفقوا من ما تحبون وما تنفقوا من شى فان الله به عليم
অর্থ : তোমরা ততক্ষণ পর্যন্ত কল্যাণ লাভ (মহান আল্লাহ পাক ও উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং শায়েখ উনাদের মা’রিফাত-মুহব্বত, তায়াল্লুক, নিছবত, নৈকট্য) লাভ করতে পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত তোমাদের প্রিয় ও পছন্দনীয় বিষয়-বস্তু খরচ তথা কুরবান বা বিসর্জন না দিবে। আর তোমরা যা ব্যয় করো সে সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি ভালো জানেন। (পবিত্র সূরা আলে ইমরান : পবিত্র আয়াত শরীফ ৯২)
প্রত্যেকের জন্যই প্রিয় বা একান্ত পছন্দনীয় বিষয়বস্তুগুলোকে বিসর্জন দেয়া আবশ্যক। নফস বা প্রবৃত্তির কামনা-বাসনা পূর্ণ করে কখনোই মহান আল্লাহ পাক উনার, উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মা’রিফাত, মুহব্বত, তায়াল্লুক, নিছবত, নৈকট্য পাওয়ার আশা করা যায়না। নফস বা প্রবৃত্তির অনুসরণ আর মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের তায়াল্লুক, নিসবত, মুহব্বত, নৈকট্য দু’টি বিপরীতমুখী বিষয়।
একজন ব্যক্তির প্রিয় ও পছন্দনীয় বিষয় বা বস্তু একটিও হতে পারে আবার একাধিক থাকতে পারে। সবই বিসর্জন দিতে হবে। ছেড়ে দিতে হবে। তবেই মা’রিফাত-মুহব্বত, তায়াল্লুক, নিছবত, নৈকট্য লাভ করা সহজ ও সম্ভব হবে।
এই আকর্ষনীয়, প্রিয় বা পছন্দনীয় বিষয় ও বস্তুগুলোর বর্ণনা মহান আল্লাহ পাক উনার কালাম পাক উনার মধ্যে দিয়েছেন। এগুলো হলো মৌলিক বা মুল। শাখা প্রশাখা আরো অনেক থাকতে পারে। সবগুলো পরিত্যাগ করা আবশ্যক। তবে এগুলোর আকর্ষন মুক্ত হতে পারলে বাকীগুলো বাদ দেয়া সহজ হবে। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
زين للناس حب الشهواة من النساء والبنين والقناطير الـمقنطرة من الذهب والفضة والـخيل الـمسومة والانعام والحرث ذلك متاع الحياة الدنيا والله عنده حسن الماب.
অর্থ : কাম্যবস্তুর মুহব্বতকে মানুষদের জন্য সুশোভিত বা সৌন্দর্যম-িত করা হয়েছে। কাম্যবস্তুগুলোর অন্যতম হচ্ছে- স্ত্রী-পরিবার, সন্তান-সন্ততি, রাশি রাশি স্বর্ণ-রৌপ্য বা স্বর্ণ, রোপ্যের স্তুপকৃত ধনভাণ্ডার চিহ্নিত বা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত অশ্ব বা ঘোড়া (বাহন), গবাদি পশুসমূহ এবং ক্ষেত-খামার। এগুলো পার্থিব জীবনে ভোগের বস্তু। আর মহান আল্লাহ পাক উনার নিকটই রয়েছে উত্তম আশ্রয়স্থল। (পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১৪)
প্রত্যেক ব্যক্তি একটু চিন্তা করলেই বুঝতে পারেন তার প্রিয় বা পছন্দনীয় বিষয় বা বস্তুসমূহ কি? তাছাড়া সাধারণত দেখা যায়, যে বিষয়, বস্তু, ব্যক্তি ইত্যাদির মুহব্বত বেশি থাকে তার কথা বেশি বলে থাকে।
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
من احب شيئا اكثر ذكره
অর্থ : “যিনি যাকে বেশি মুহব্বত করেন তার কথা তিনি বেশি স্মরণ করেন।” (অসমাপ্ত)

ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছার: মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে- (১৫১)

ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছারল: মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে- (১৫২)

ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছার: মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে- (১৫৩)

ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছার মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে- (১৫৪)

ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছার মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে- (১৫৫)