মুসলিম ভ্রাতৃপ্রতীম দেশ ও মজলুম জনগণ ফিলিস্তিনীদের প্রতি শুধু বাণিজ্যিক সহায়তাই নয়, বরং উদার হাতে সব সহযোগিতার অবাধ দুয়ার খুলুন। বঙ্গবন্ধুর ইতিহাস থেকে মুসলিম ভ্রাতৃত্বে উজ্জীবীত হোন। ফিলিস্তিনকে স্বাধীন করতে অগ্রণী হোন

সংখ্যা: ২৫৮তম সংখ্যা | বিভাগ:

গত ১১ নভেম্বর/২০১৬ ঈসায়ী সালে প্রকাশিত এক তথ্য সূত্রে জানা গেছে, ঢাকায় নিযুক্ত ফিলিস্তিন দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ইউসুফ এস ওয়াই রামাদান জানিয়েছেন ‘বাংলাদেশের সাথে বাণিজ্য বাড়াতে চায় ফিলিস্তিন’। তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে ফিলিস্তিনের সম্পর্ক ঐতিহাসিক। যার কারণে ফিলিস্তিনের জনগণও বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে চায়’। এর আগে গত ১১ মার্চ/২০১৬ ঈসায়ী সালে প্রধানমন্ত্রীর সাথে এক বিশেষ সাক্ষাতে তিনি বাংলাদেশের কাছে ফিলিস্তিনের শুল্কমুক্ত বাণিজ্যিক সুবিধা চান।

উল্লেখ্য, বিশ্বের ২৩০টি দেশের মধ্যে নিজ ভূমে পরবাসী একমাত্র দেশ হলো ফিলিস্তিন। এক সময় ফিলিস্তিন একটি স্বাধীন রাষ্ট্র ছিলো। ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী আর্থার জেমস বেলফোর ১৯১৭ সালে ফিলিস্তিন ভূখ-ে যে ইহুদী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়েছিলো তার প্রতিফলন হিসেবে পরবর্তীতে সম্রাজ্যবাদী মার্কিন শক্তি এবং ইহুদীবাদী শক্তি ধীরে ধীরে ফিলিস্তিনের উপর নির্যাতন ও নিপীড়নের দ্বারা আজ ফিলিস্তিনকে একটি ভঙ্গুর ও যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে পরিণত করেছে।

প্রসঙ্গত, বঙ্গবন্ধু সবসময় মুসলিম দেশের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের কথা ভাবতেন। তিনি বিষয়টিকে এতটাই গুরুত্ব দিতেন যে- যেই পাকিস্তানের সাথে ১৯৭১ সালে যুুদ্ধ হলো, সেই পাকিস্তানেই মাত্র ৩ বছর পর (১৯৭৪) গেলেন মুসলিম দেশগুলোর সম্মেলন ওআইসিতে যোগ দিতে। মুসলিম দেশগুলোর সাথে সম্পর্ক খারাপ হবে, এটা চিন্তা করে তিনি ১৯৭২ সালে ইসরাইলের স্বীকৃতি পর্যন্ত গ্রহণ করেননি।

ইসরাইলী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের সংগ্রামের প্রতি বাংলাদেশের সহানুভূতি বাস্তব প্রমাণ দেয়ার প্রথম সুযোগ এসেছিলো ১৯৭৩ সালে আরব-ইসরাইল যুদ্ধের সময়। এ যুদ্ধের শুরু থেকে বাংলাদেশের জনগণ ইসরাইলের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠেছিলো। বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হয়েছিলো প্রতিবাদ সভা আর বিক্ষোভ মিছিল। আরবদের প্রতি শুভেচ্ছা নির্দেশ হিসেবে ফিলিস্তিনে পাঠানো হয়েছিলো ২৮ সদস্যের একটি ডাক্তার দল, এটি ছিলো বিদেশ থেকে পাঠানো সংগ্রামরত আরবদের জন্য দ্বিতীয় বৃহত্তম ডাক্তার দল। একই সময় এই যুদ্ধে গুরু দায়িত্ব বহনকারী মিশরের জন্য পাঠানো হয়েছিলো ১ লক্ষ পাউন্ড চা। উপরন্তু আরবদের পাশপাশি যুদ্ধ করার জন্য ফিলিস্তিনের পিএলও মধ্যে ৫ হাজার সদস্য বিশিষ্ট একটি যোদ্ধাবাহিনী পাঠানো হয়েছিলো, যাদের প্রায় সবাই ছিলেন ভূতপূর্ব মুক্তিযোদ্ধা। বাংলাদেশের এ ভূমিকা আরবদের বিশেষ করে ফিলিস্তিনিদের জন্য ছিলো বিমুগ্ধ বিস্ময়। মনে রাখা দরকার বাংলাদেশ তখনও প্রধান ইসলামী রাষ্ট্রগুলোর স্বীকৃতি পায়নি।

স্মর্তব্য, বঙ্গবন্ধুর নিজেই মুক্তিযুদ্ধের পুরোধা হয়ে দেখিয়ে গেছেন, কিভাবে মুসলিম বিশ্বের সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন করতে হয়। কিন্তু আজকে যারা বঙ্গবন্ধুর চেতনার কথা বলে তারা এ বিষয়গুলো মোটেই মেনে চলে না, বরং উল্টো করে থাকে। এক্ষেত্রে অভিজ্ঞমহল মনে করেন, ক্ষমতাসীন দলটি নিজেই বঙ্গবন্ধুর চেতনা থেকে সরে এসেছে, মুসলিম দেশের সাথে সম্পর্কের বিষয়টি বিশেষ করে ফিলিস্তিনী মুসলমানদের দুরবস্থার প্রতি তারা তেমন গুরুত্ব দেয় না। অথচ অতীত থেকে বর্তমান পর্যন্ত বাংলাদেশের জনগণ সবসময় ফিলিস্তিনের প্রতি সহানুভূতিশীল মনোভাব পোষণ করে থাকে। ফিলিস্তিনের নিরীহ মুসলিমদের উপর বর্বর ইসরাইলের অত্যাচার, যুলুম নির্যাতনের বিরুদ্ধে সবসময় বাংলাদেশের জনগন সোচ্চার থেকেছে। এছাড়া বিভিন্ন সময় নানা কর্মসূচির মাধ্যমে প্রতিবাদ জানিয়েছে। আরব অঞ্চলের শান্তি পরিকল্পনা ও রোডম্যাপ অনুযায়ী ফিলিস্তিন প্রসঙ্গে জাতিসংঘ গৃহীত প্রস্তাবনার সঙ্গে বাংলাদেশ একমত পোষণ  করেছে।

তবে আমরা মনে করি, এক্ষেত্রে বাংলাদেশের শুধু একমত প্রকাশ করলেই চলবে না। সেই সাথে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার জন্য দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম রাষ্ট্র বাংলাদেশকে বিশ্বের ৫৭টি মুসলিম দেশকে সাথে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ওআইসি শক্তিশালী করে আরব লীগ, জিসিসি, ডিএইট জোটগুলাকে সাথে নিয়ে জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার জন্য প্রস্তাব পেশ করতে হবে। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ এবং নিরাপত্তা পরিষদে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার ইস্যুটি বারবার তুলে ধরতে হবে। তার পূর্বে তাৎক্ষণিক এবং বর্তমান সমযোপযোগী পদক্ষেপ হিসেবে ফিলিস্তিনকে বাণিজ্যিকভাবে সাহায্য করতে ফিলিস্তিনের জনশক্তিকে বাংলাদেশের শ্রমবাজারে কাজ করার সুযোগ প্রদান করতে হবে। কারণ ফিলিস্তিনের অর্ধেক জনগোষ্ঠীই বিভিন্ন আরব দেশে কাজ করে এবং তারা অত্যন্ত সুপ্রশিক্ষিত ও দক্ষ। প্রসঙ্গত, ভারতের নাগরিকরা যদি বাংলাদেশে কাজ করার সুযোগ পায় এবং ৩০ হাজার কোটি টাকা নিয়ে যায় তাহলে ফিলিস্তিনের জনশক্তিও বাংলাদেশে প্রয়োগ করা শুধু আবশ্যিকই নয়, বরং পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে অগ্রণী ভিত্তিতে আবশ্যিক। বলার অপেক্ষা রাখে না, ফিলিস্তিনীদের প্রতি বাংলাদেশ বাণিজ্যিক সহায়তাসহ সব সহায়তার দরজা খুলে আহ্বান করুক এটাই বাংলাদেশের ৯৮ ভাগ মুসলিম জনগোষ্ঠী ক্ষমতাসীন সরকারের কাছ থেকে আশা করে থাকে।

প্রসঙ্গত, পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “নিশ্চয়ই মু’মিনগণ তো একে অপরের ভাই।” (পবিত্র সূরা হুজরাত শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ-১০)

আর পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে। “মুসলিমগণ সকলে মিলে যেন একটি মানুষ- যার চোখে ব্যথা হলে গোটা দেহ অস্থির হয়, মাথায় ব্যথা হলেও গোটা দেহ অস্থির হয়।” (ছহীহ মুসলিম শরীফ)।

-আল্লামা মুহম্মদ মাহবূবুল্লাহ, ঢাকা

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২২ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস

‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’ সম্পর্কিত ‘দৈনিক যুগান্তর’ পত্রিকার মন্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিস্ময় প্রকাশ গোয়েন্দা শীর্ষ কর্মকর্তারাও অবহিত নয় খোদ যুগান্তর সম্পাদকের দুঃখ প্রকাশ

‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’কে নিয়ে – মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নামে দৈনিক জনকণ্ঠের মিথ্যাচার ‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’ নিষিদ্ধ হচ্ছে- এ কথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শুধু অস্বীকারই করলেন না, বললেন: ‘সম্পূর্ণ বাজে কথা।’ প্রসঙ্গতঃ সোহেল তাজ বিবৃত কালো তালিকা অসম্পূর্ণ ও আংশিক ভুল। এর সংশোধন আশু দরকার

মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সমীপে- সোহেল তাজ বিবৃত ১২টি জঙ্গি সংগঠন তালিকা যথার্থ নয় এর মধ্যে যেমন অনেক জঙ্গি সংগঠনের নাম আসেনি তেমনি জঙ্গিবাদ বিরোধী সংগঠনের (উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত) নামও জামাত-জোট ভূতের কারণে এসেছে। সঙ্গতঃ কারণেই বে-হেড সোহেল তাজের বেফাঁস মন্তব্য থেকে বেরিয়ে এসে বর্তমানের যোগ্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে প্রকৃত জঙ্গি সংখ্যা যেমন নির্ধারণ করতে হবে, প্রকৃত জঙ্গিদের যেমন চিহ্নিত করতে হবে পাশাপাশি জঙ্গিবাদী, মৌলবাদী ও ধর্মব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে একান্ত নিবেদিত ‘আল বাইয়্যিনাত’কে মূল্যায়ন করতে হবে।