শুধু ভারতীয় বা পশ্চিমা নয়, দেশীয় টিভি চ্যানেলেই চরম অশ্লীলতার সমাহার। দেহ প্রদশর্নীমূলক টিভি চ্যানেল কোনো সময়ই উপকারী হতে পারে না। যা পবিত্র দ্বীন ইসলামেরই শিক্ষা। সরকারের উচিত- দেশের সমাজ ও সামাজিক মূল্যবোধ অক্ষুণ এবং সঠিক ইসলামী চেতনা বজায় রাখতে টিভি চ্যানেলগুলো নিষিদ্ধ ঘোষণা করা।

সংখ্যা: ২৫৯তম সংখ্যা | বিভাগ:

বাংলায় ডাবিংকৃত তুরস্কের মেগা সিরিয়াল ‘সুলতান সুলেমান’ সম্প্রচার বন্ধ না করায় টেলিভিশন চ্যানেল দীপ্ত টিভির লাইসেন্স বাতিলের দাবি করেছে শিল্পী-কলাকুশলীদের সংগঠন ফেডারেশন অব টেলিভিশন প্রফেশনালস অর্গানাইজেশন-এফটিপিও। গত সোমবার সকালে রাজধানীর কারওয়ানবাজারে দীপ্ত টিভির কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচিতে এফটিপিও’র আহ্বায়ক অন্যান্য টিভি চ্যানেলেও বিদেশী সিরিয়াল ও অনুষ্ঠান সম্প্রচার বন্ধের দাবি জানিয়েছে। এফটিপিও’র অবস্থান কর্মসূচি থেকে এসব সিরিয়ালকে বাংলাদেশের সমাজ, কৃষ্টি ও সংস্কৃতির জন্য ‘অবমাননাকর’, ‘কুরুচিকর’ ও ‘অসামাজিক’ হিসেবে আখ্যা দেয়া হয়। সিরিয়ালটি নারীদেরও ‘হেয় প্রতিপন্ন’ করছে বলে অভিযোগ করা হয়। তাদের ভাষায়- “বিদেশী ভাষার সিরিয়াল এনে এক অশুভ ব্যবসা চলছে। এসব সিরিয়ালের উপাদানগুলো আমাদের ধর্মীয়, সামাজিক মূল্যবোধবিরোধী।”

এই শিল্পী-কলাকুশলীরা বলেছে- ‘এসব ডাবিংকৃত বিদেশী সিরিয়াল বাংলাদেশের সমাজ-সংস্কৃতির জন্য অবমাননাকর। তারা বলেছে- ‘এসব সিরিয়াল ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধবিরোধী। বিদেশী চ্যানেলগুলো অশ্লীলতা করছে, সমাজে অশ্লীলতার ভাইরাস ছড়াচ্ছে।

প্রসঙ্গত আমরা মনে করি, যে অভিযোগ এফটিপিও পক্ষ থেকে করা হয়েছে, একই অশ্লীলতা ও বেহায়পনার ভাইরাস ছড়ানোর একই অভিযোগ খোদ দেশীয় টিভি চ্যানেলগুলোর ক্ষেত্রেও। সুতরাং এফটিপিও তাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন না করলেও তাদের বিরুদ্ধে গণমানসে ঠিকই আন্দোলন হচ্ছে। বিশেষ করে ধর্মপ্রাণ মুসলমানের অন্তরে দেশীয় টিভি চ্যানেলগুলোর বিরুদ্ধেও ক্ষোভের আগুন তুষের আগুনের মতো জ্বলছে।

অধিকাংশ নাটকে যুবক-যুবতীদের হারাম প্রেম করার কলা-কৌশল শেখানোর কুপ্রচেষ্টা বিদ্যমান থাকে। পরকীয়া, অবৈধ সম্পর্ক, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, মিথ্যা কথা ও প্রতারণা করার বিভিন্ন কায়দা ছাড়া আর কোনো বিষয় টিভি চ্যানেলড়গুলোতে প্রচার করা হয় না। তাছাড়া বিজ্ঞাপনের নামে মুর্হুমুহু প্রায় বিবস্ত্র নারী দেহের অবাধ প্রদর্শনী চলে। নাউযুবিল্লাহ!

মূলত, এদেশের টিভি চ্যানেলগুলো ভারতীয় ও পশ্চিমা বিধর্শীদের টিভির হুবহু অনুকরণেই চলছে। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ছোট শিশুদের মধ্যে অশ্লীলতার বীজ প্রবেশ করানো হয়। নাচ-গানের মাধ্যমে মেয়ে ও ছেলে শিল্পীর ধরাধরি, জড়াজড়ি এবং ঢলাঢলি করে অভিনয় ও নাচানাচি শৈশবেই ওদের লাজ-লজ্জাকে কেড়ে নিচ্ছে; আর যেসব শিশু ওইসব বেহায়াপূর্ণ অনুষ্ঠান দেখছে তারাও লজ্জাহীন হয়ে বেড়ে উঠছে। ইদানীং আবার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বিজয়ী হলে নারী-পুরুষ শিল্পীদের একে অপরের সঙ্গে কোলাকুলি ও ওপেন চুম্বন দিয়ে আনন্দ প্রকাশ করার অপসংস্কৃতি চালু হয়েছে। কাজেই এরকম চলতে থাকলে ইউরোপ-আমেরিকার কাফিরদের মতো আমাদের দেশের মুসলমান সন্তানরাও কুকুর-শূকর-বিড়ালের মতো যেখানে-সেখানে ওপেন কামপ্রবৃত্তি চরিতার্থ করার প্রয়াস পাবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। নাউযুবিল্লাহ!

এদিকে এসব কলাকুশলীরা দাবি করছে, বিদেশী টিভি চ্যানেল ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধ বিরোধী। কিন্তু পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে সর্বপ্রকার টিভি চ্যানেলই ধর্মীয় মূল্যবোধ বিরোধী। পাশাপাশি বাঙালি ঐতিহ্যের চরম বিরোধী। বাঙালি বধুরা ঘোমটা আচ্ছাদিত থাকে এটাই বাঙালি ঐতিহ্য। কিন্তু দেশীয় টিভি চ্যানেল তার সম্পূর্ণ খিলাফ। অর্থাৎ দেশীয় চ্যানেলগুলোও বেপর্দা ও অশ্লীলতা বিস্তারের জঘন্যতম মাধ্যম। আর বেপর্দা ও অশ্লীলতা পবিত্র দ্বীন ইসলামে সম্পূর্ণ হারাম ও নাজায়িয। পবিত্র কুরআন শরীফ উনার পবিত্র সূরা নিসা শরীফ, নূর শরীফ, আহযাব শরীফ ইত্যাদি পবিত্র সূরাসমূহে এবং অসংখ্য পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের মাধ্যমে পর্দা করার ব্যাপারে কঠোরভাবে আদেশ-নির্দেশ করা হয়েছে। যেমন খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন- “(হে হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) আপনি মু’মিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে অবনত রাখে এবং তাদের ইজ্জত আবরু হিফাযত করে। এটা তাদের জন্য পবিত্রতার কারণ। নিশ্চয়ই খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি তারা যা করে তার খবর রাখেন। আর আপনি মু’মিনাদেরকে বলুন, তারাও যেন তাদের দৃষ্টি অবনত রাখে এবং তাদের ইজ্জত আবরু হিফাযত করে ও তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে।” (পবিত্র সূরা নূর শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৩০, ৩১)

মোটকথা ভিসিআর, টিভি, নাটক, সিনেমা মানেই হলো ছবি আর চরম স্তরের অশ্লীলতা তথা নগ্নতা। আর এরূপ নগ্নতা তথা ছবি ছাড়া এগুলো অস্তিত্বহীন। আর ছবি মানেই হলো- বেপর্দা, বেহায়াপনা, অশ্লীলতা ইত্যাদি। আর বেপর্দা থেকেই সমস্ত কুফরী, শিরকী, ইত্যাদি অরাজকতা ও অশান্তির জন্ম। আর ইত্যাদি কারণেই টিভি, নাটক, সিনেমা দেখা সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে হারাম। আর ‘বুখারী শরীফ’ উনাতে হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়ল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, “চোখের ব্যভিচার হলো দৃষ্টি করা, কানের ব্যভিচার হলো শ্রবণ করা, মুখের ব্যভিচার হলো খারাপ কথা বলা, হাতের ব্যভিচার হলো স্পর্শ করা, পায়ের ব্যভিচার হলো ধাবিত হওয়া।”

উল্লেখ্য, এই টিভি, নাটক, সিনেমা ইত্যাদি পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে হারাম বিধায় এর রয়েছে ভয়ঙ্কর নানা কুপ্রভাব। বাংলাদেশে বতমানে টিভি, নাটক, সিনেমার অশ্লীলতার কারণে পরকিয়া অস্বাভাবিক হারে বেড়ে গেছে। মা এখন সন্তানকে পরকীয়ার জন্য হত্যা করছে। বিবাহবহির্ভূত অবৈধ সম্পর্ক এখন যুবসমাজের মধ্যে ছেয়ে গেছে। আত্মহত্যা বেড়ে গেছে। সমাজে নৈতিকতার পরাজয় ঘটছে। খুন, শ্লীলতাহানী এখন নিত্যনৈমেত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। নাউযুবিল্লাহ!

প্রসঙ্গত, সংস্কৃতিবাদী ও নামধারী প্রগতিবাদীরা বলে থাকে- ‘টিভি চ্যানেল ছাড়া চলবে কিভাবে?। তাদের উদ্দেশ্যে আমরা বলতে চাই, বাংলাদেশ ৯৮ ভাগ মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ একটি মুসলিমপ্রধান দেশ। সাংবিধানিকভাবে এদেশের রাষ্ট্রধর্ম পবিত্র দ্বীন ইসলাম। আর পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে তথা পবিত্র কুরআন ও হাদীছ শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সমস্ত প্রকার টিভি চ্যানেল হারাম ও নাজায়িয।

সুতরাং সাংবিধানিকভাবেই পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার এই মূল্যবোধ রাষ্ট্র ও সমাজ জীবনের সর্বত্র প্রতিফলিত হওয়া উচিত। সেইসাথে সমস্ত ইসলামবিদ্বেষীদের প্রতি আমাদের চ্যালেঞ্জ রইলো- পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের আলোকে তারা টিভি চ্যানেলগুলোর কার্যক্রম জায়িয বলে প্রমাণ করুক। উপকারী বলে প্রমাণ করুক। ইনশাআল্লাহ আমরা নিশ্চিন্ত যে- তারা এটা প্রমাণ করতে পারবে বা।

আমরা দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলছি যে- এই টিভি চ্যানেল কোনো সময় উপকারী হতে পারে না। বরং তা সমাজ  ও সামাজিক মূল্যবোধ বিধ্বংসী। কারণ পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যেই ইরশাদ মুবারক হয়েছে- ‘নিশ্চয়ই নাপাকী থেকে নাপাকীই তৈরি হয়’।

তাই আমরা দেশের ইসলামবান্ধব দাবিদার সরকারের কাছে আশা করবো- তারা যেন অতিশীঘ্রই পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার আলোকে দেশ পরিচালনার্থে টিভি চ্যানেল বিলুপ্ত করে ইসলামী মূল্যবোধের প্রতিফলন ঘটায়।

-আল্লামা মুহম্মদ ওয়ালীউর রহমান, ঢাকা

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২২ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস

‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’ সম্পর্কিত ‘দৈনিক যুগান্তর’ পত্রিকার মন্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিস্ময় প্রকাশ গোয়েন্দা শীর্ষ কর্মকর্তারাও অবহিত নয় খোদ যুগান্তর সম্পাদকের দুঃখ প্রকাশ

‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’কে নিয়ে – মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নামে দৈনিক জনকণ্ঠের মিথ্যাচার ‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’ নিষিদ্ধ হচ্ছে- এ কথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শুধু অস্বীকারই করলেন না, বললেন: ‘সম্পূর্ণ বাজে কথা।’ প্রসঙ্গতঃ সোহেল তাজ বিবৃত কালো তালিকা অসম্পূর্ণ ও আংশিক ভুল। এর সংশোধন আশু দরকার

মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সমীপে- সোহেল তাজ বিবৃত ১২টি জঙ্গি সংগঠন তালিকা যথার্থ নয় এর মধ্যে যেমন অনেক জঙ্গি সংগঠনের নাম আসেনি তেমনি জঙ্গিবাদ বিরোধী সংগঠনের (উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত) নামও জামাত-জোট ভূতের কারণে এসেছে। সঙ্গতঃ কারণেই বে-হেড সোহেল তাজের বেফাঁস মন্তব্য থেকে বেরিয়ে এসে বর্তমানের যোগ্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে প্রকৃত জঙ্গি সংখ্যা যেমন নির্ধারণ করতে হবে, প্রকৃত জঙ্গিদের যেমন চিহ্নিত করতে হবে পাশাপাশি জঙ্গিবাদী, মৌলবাদী ও ধর্মব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে একান্ত নিবেদিত ‘আল বাইয়্যিনাত’কে মূল্যায়ন করতে হবে।