সমাজের স্রোত বা সময়ের সাথে আপোসকারীরা উলামায়ে হক্ব নয়

সংখ্যা: ২৫০তম সংখ্যা | বিভাগ:

মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন, “সময়কে আমি পর্যায়ক্রমে মানুষের মাঝে পরিবর্তন করি।”

মূলত, সময় বহতা নদীর মতো। সাধারণ মানুষ সময় দ্বারা প্রভাবিত হয়।

সময়ের প্রবাহে পুষ্ট অধিকাংশের বিশ্বাস এরূপ যে, ‘চলমান পরিস্থিতিতে প্রচলিত অনৈসলামিক আচারও অনৈসলামিক থাকে না। তাদের ধারণা- খেলাধুলা, গান-বাজনা, সুদ, ঘুষ, টিভি, সিনেমা, বেপর্দা, বেহায়া এগুলো বর্তমান সময়ের দাবি। যা সময়ের প্রেক্ষিতে জায়িয ও সহনীয়।’ নাউযুবিল্লাহ!

আওয়ামুন নাসের ভিতরে এমন বিশ্বাস শক্ত করে এঁটে বসার কারণে তাদের সে অনুভূতির বিপরীতে চালিত হতে ভয় পায় স্বার্থান্বেষী আলিম সমাজ তথা উলামায়ে সূ’রা। চলমান আবহের প্রতিকূলে সম্মানিত ইসলামী আদর্শকে প্রকাশ ও প্রচার করা নয়; বরং তার উপর সম্মানিত ইসলামী লেবেল আঁটার অপচেষ্টার প্রেক্ষিতে ছবি তোলা, ভিডিও, টেলিভিশন জায়িয করা হয়েছে বহু পূর্বেই। এ ধারাবাহিকতায় যাবতীয় অনৈসলামিক কাজের প্রতি বাধাদান এবং পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাকে কায়িম করার পথটিকেও করা হয়েছে বিকৃত, কলঙ্কিত। অনৈসলামিক কাজে বাধাদানের পদ্ধতি হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে- মুশরিকদের হরতাল, মজুসীদের মশাল মিছিল, গোঁড়া নাছারাদের ব্লাসফেমী আইন ইত্যাদি। আবার সম্মানিত ইসলামী দাবি আদায়ের জন্য অবতারণা করা হয়েছে- কমিউনিস্টদের লংমার্চ, খ্রিস্টানদের মৌলবাদ, গণতন্ত্র তথা নির্বাচন।

মূলত, এসব কিছুই বিধর্মীদের থেকে উৎপত্তি লাভ করে সাধারণভাবে সমাজে সম্পৃক্ত হয়েছে। কিন্তু এসবের বিপরীতে স্বকীয় আদর্শে পরিচালিত হওয়াই ছিল সম্মানিত ইসলামী মূল্যবোধের দাবি। সম্মানিত ইসলামী আদর্শ সম্পর্কে অজ্ঞতা, চলমান মানসিকতার প্রতিকূলে চলার গভীর শঙ্কা, সংশ্লিষ্ট স্বার্থান্বেষী মালানাদেরকে পরাভূত করেছে। সময়ের স্রোতে এরা ভেসে চলেছে। পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার পরিভাষায় এদেরকে আখ্যা দেয়া হয়- ‘ইবনুল ওয়াক্ত’ বা ‘সময়ের সন্তানরূপে।’

সময়ের প্রকৃতি ও প্রবাহে যারা চলবে, সময়ের দোহাই যারা দিবে তাদের জন্য মূলত পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার ধারক ও বাহক হওয়া সম্ভব নয়। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “সময়ের শপথ! নিশ্চয়ই মানুষ ক্ষতিগ্রস্ততার মধ্যে লিপ্ত। তবে উনারা নয়, যাঁরা ঈমান এনেছেন ও নেক কাজ করেছেন।” (পবিত্র সূরা আছর শরীফ)

এখানে শপথ করা হয়েছে সময়ের। আর এর তাফসীর হচ্ছে, সময়ের স্রোতে নির্বিচারে যারা গা ভাসিয়ে দিবে অর্থাৎ যারা ইবনুল ওয়াক্ত তারা মূলত ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

বলাবাহুল্য, সমঝদার না হলে এসব ইবনুল ওয়াক্ত মালানাদের অন্তঃসার শূন্যতা উপলব্ধি করা কষ্টকর। বিশেষতঃ তাদের অনুসারীদের জন্য তা আরো দুরূহ। যেহেতু তারা দৃশ্যতঃ সমজাতীয়দের বিরাট সমাবেশ দেখতে পায়।

স্মর্তব্য, বিরাট সমাবেশ বা বেশি সংখ্যাই কিন্তু হক্বের মাপকাঠি নয়। বরং তা নাহক্বের সূচকও বটে। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “আর আপনি যদি পৃথিবীর অধিকাংশ লোকের কথা মেনে নেন, তবে তারা আপনাকে মহান আল্লাহ পাক উনার পথ থেকে বিপথগামী করে দিবে। তারা শুধু অলীক কল্পনার অনুসরণ করে এবং সম্পূর্ণ অনুমানভিত্তিক কথাবার্তা বলে থাকে। আপনার প্রতিপালক তাদের সম্পর্কে জ্ঞাত রয়েছেন, যারা উনার পথ থেকে বিপথগামী হয়।” (পবিত্র সূরা আনয়াম শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১১৬)

এ পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে স্পষ্টভাবে ব্যক্ত যে, পৃথিবীর অধিকাংশ লোক নাহক্ব। সুতরাং যেসব নামধারী মালানারা তাদেরকে তোয়াজ করে, তাদের মুখাপেক্ষী যারা হয়, তারাও মূলত নাহক্ব। আর উভয়ের সম্মিলিত শক্তিটি ধাবিত হয় হক্ব ওলীআল্লাহগণ উনাদের প্রতি তথা যামানার মহান মুজাদ্দিদ আলাইহিস সালাম উনার বিরুদ্ধে। কারণ সময়ের নাহক্ব গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে কেবল তিনিই হক্ব কথা উচ্চারণ করেন।

পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাকে ইসলামী তর্য-তরীক্বায় প্রতিষ্ঠা করার মতো নীতিবোধ, আকল, হিম্মত ও তাওয়াক্কুল থাকায় পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাকে পরিপূর্ণভাবে ইসলামী কায়দায় রূপায়ণে কেবলমাত্র (যামানার মহান মুজাদ্দিদ আলাইহিস সালাম) তিনিই হন যোগ্য ও নিবেদিত। অর্থাৎ সম্মানিত ইসলামী মূল্যবোধের বিপরীতে সময় বা সমসাময়িক তর্জ-তরীক্বা, মানসিকতা উনার উপর প্রভাব বিস্তার করতে পারে না মোটেই। বরং সেসবের উপর তিনিই হন জয়ী। তাই সম্মানিত ইসলামী পরিভাষায় তিনি “আবুল ওয়াক্ত” বা সময়ের উপর প্রাধান্য বিস্তারকারী রূপে অতীব সম্মানিত।

উল্লেখ্য, সময়ের বিপরীতে চলা তথা সময়ের সন্তান-উলামায়ে সূ’রা ও তাদের দ্বারা প্রভাবিত সাধারণ মানুষের মানসিকতার বিরুদ্ধে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার কথা বলা মূলত খুবই দুরূহ। কারণ সবাই তখন ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। অপবাদ রটনা করে, বিরোধিতা করে। তারপরেও আবুল ওয়াক্ত তথা যামানার মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি সময়ের বিপরীতে সত্য দ্বীনের কথা বলেন। তিনি ওহীর মাধ্যমে নাযিলকৃত দ্বীনকে উঁচ্চে তুলে ধরেন। কারণ ইহা যে মহান আল্লাহ পাক উনার আদেশ এবং ইহা উনার হক্ব হওয়ার ও যোগ্যতার বিশেষ পরিচায়ক।

পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “অতএব, আপনার পালনকর্তার আদেশ পালনের জন্য ধৈর্যসহকারে অপেক্ষা করুন এবং ওদের মধ্যকার কোনো পাপিষ্ঠ ও কাফিরের আনুগত্য করবেন না।” (পবিত্র সূরা আদ দাহর শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ২৪)

এ বিষয়টি আরো স্পষ্ট করে ‘পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ’ মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “হে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! মহান আল্লাহ পাক উনাকে ভয় করুন ও মুনাফিকদের অনুসরণ করবেন না। নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। আপনার পালনকর্তার পক্ষ থেকে যা অবতীর্ণ হয় আপনি তার অনুসরণ করুন। নিশ্চয়ই আপনি যা করেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি সে বিষয়ে জ্ঞাত।” (পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১)

মূলত, মুজাদ্দিদে আ’যম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে মনোনীত বলে, উনাকে সেই কুওওয়াত দিয়েই মহান আল্লাহ পাক তিনি প্রেরণ করেন। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন, “নিশ্চয়ই এই উম্মতের মাঝে মহান আল্লাহ পাক তিনি প্রত্যেক হিজরী শতকের শুরুতে একজন ‘মুজাদ্দিদ’ পাঠাবেন। যিনি বিরাজমান সময়ে সংস্কার করবেন।”

‘ইবনুল ওয়াক্ত’ না হয়ে ‘আবুল ওয়াক্ত’রূপে যিনি মহান আল্লাহ পাক উনার রহমত বিকশিত করবেন। সময়ের স্রোতে ঢুকে পড়া বেশরা, বিদ্য়াত থেকে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাকে তিনি মুক্ত করবেন।

-আল্লামা মুহম্মদ ওয়ালীউল্লাহ

খতমে নুবুওওয়াত প্রচার কেন্দ্র খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারীরা কাফির “ইসলামী শরীয়তের হুকুম মুতাবিক যারা মুসলমান থেকে খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত হয় যেমন-  কাদিয়ানী, বাহাই ইত্যাদি তাদের তওবার জন্য নির্ধারিত সময় ৩ দিন এরপর তওবা না করলে তাদের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।”

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৬২

ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-১১

চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-৩০

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২০ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস ওহাবী ফিরক্বাসহ সবগুলো বাতিল ফিরক্বা ইহুদী-নাছারাদের আবিষ্কার! তাদের এক নম্বর দালাল