সাংবিধানিকভাবে ধর্মনিরপেক্ষ বলে কথিত ভারতে ৩৭টি উগ্র হিন্দুত্ববাদী দল নির্মম মুসলিম বিদ্বেষী তৎপরতা চালাচ্ছে। বর্তমান ভারতবান্ধব সরকারের উচিত- ভারতে মুসলিম নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা ও পদক্ষেপ গ্রহণ করা। সব প্রশংসা মুবারক যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত দুরূদ শরীফ ও সালাম মুবারক।

সংখ্যা: ২৩১তম সংখ্যা | বিভাগ:

সাংবিধানিকভাবে ভারত একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত। কিন্তু ভারত সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে কট্টর সাম্প্রদায়িক। পর্যবেক্ষক মহল মনে করেন, ভারত একটি কট্টর দাঙ্গাবাজ রাষ্ট্র। মুসলমানদের নির্বিচারে শহীদকারী এবং নির্যাতনকারী নির্মম রাষ্ট্র। যদিও ভারত বিশ্বময় দীর্ঘকাল থেকে প্রচার করে আসছে যে, ভারত হচ্ছে বৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশ।

ভারত বহুজাতি-ভাষা-সংস্কৃতি ও ধর্মীয় জনগোষ্ঠীর একটি উপমহাদেশকে ভারত ঔপনিবেশিক ধারায় একটি রাষ্ট্রের কঠোর কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণে নির্মাণ করার মধ্য দিয়ে এক ধরনের সামাজিক ও রাজনৈতিক অভিঘাত তৈরি করে রেখেছে। রাজনৈতিক বিবেচনা এবং সামাজিক নৃ-তাত্ত্বিক ও ধর্মীয় বিবেচনায় ভারতের জন্য এটি সত্যিকার ফেডারেল রাষ্ট্র কাঠামো অনিবার্যতা রয়েছে। ভারত নিজ রাষ্ট্রের নিরাপত্তা নিয়ে শুরু থেকেই স্পর্শকাতর এবং সংরক্ষণবাদী। এ কারণেই ভারত শক্তিশালী কেন্দ্রীয় শাসনের অধীনে জাতি-গোষ্ঠীর নৃ-তাত্ত্বিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক স¦াতন্ত্র্যের স¦ীকৃতি না দিয়ে সামরিক ও রাজনৈতিক দমন-পীড়ন চালিয়ে আসছে। এরই প্রতিবাদে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সাত রাজ্য ছাড়া জম্মু-কাশ্মীর, পাঞ্জাব, তামিলনাড়ুসহ বিভিন্ন রাজ্যে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন চলছে। এ আন্দোলন কোনো কোনো ক্ষেত্রে নিয়মতান্ত্রিকতার বৃত্ত অতিক্রম করে সশস্ত্র লড়াইয়ে রূপ নিয়েছে। এরই পটভূমিতে যুদ্ধ ছাড়াই ভারত এক অঘোষিত যুদ্ধে লিপ্ত। একমাত্র জম্মু-কাশ্মীরেই ভারত চার থেকে পাঁচ লাখ সৈন্য মোতায়েন রেখেছে।

এছাড়া উত্তর-পূর্ব ভারতসহ অন্যান্য সংঘাতময় রাজ্যে ভারত আরো কয়েক লাখ সেনা মোতায়েন করে তার রাষ্ট্রীয় সংহতি রক্ষা করছে। ভারতের অনেক রাজ্য শাসিত হয় সেনাবাহিনীর ছত্রচ্ছায়ায় গবর্নরের মাধ্যমে। যা কেন্দ্রীয় শাসনেরই নামান্তর। দুনিয়ায় ভারতই ইসরাইলের পর আর একটি নিরাপত্তা রাষ্ট্র। যে দেশের নীতিনির্ধারক ও শাসকরা দেশের অধিকাংশ নাগরিকের অ-হিন্দু হবার কারণে নাগরিক ও মানসিক অধিকার তথা রাষ্ট্র শাসনে সমঅধিকার অস¦ীকার করে রাষ্ট্রকে বিভক্ত করে রেখেছে। পশ্চাদপদ হরিজন-সিডিউল কাস্ট এবং মুসলিম জনগোষ্ঠীকে ভারত রাষ্ট্রের মূলধারায় স¦ীকৃতি দিতে পারেনি। এর অর্থ দাঁড়ায় গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা ভারতের সংবিধানের শোভাবর্ধন করলেও এটি রাষ্ট্র, সরকারের ব্যবহারিক নীতি-আদর্শে কোনো প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি।

সাংবিধানিকভাবে ধর্মনিরপেক্ষ দেশ ভারতে হিন্দু ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলই রয়েছে কমপক্ষে ৩৭টি। এর মধ্যে ১০টি সর্বভারতীয় ভিত্তিতে এবং বাকিগুলো আঞ্চলিক দল হিসেবে কর্মতৎপর বলে জানা গেছে। ভারতের সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা থাকলেও এসব রাজনৈতিক দল বৈধভাবেই কাজ করছে। সর্বভারতীয় হিন্দু ধর্মভিত্তিক দলগুলোর মধ্যে রয়েছে, অল ইন্ডিয়া হিন্দু মহাসভা, অখিল ভারত হিন্দু মহাসভা, রাষ্ট্রীয় স¦য়ং সেবক সংঘ, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, হিন্দু জনজাগ্রুতি সমিতি, অখিল ভারতীয় হিন্দু শক্তি দল, অখিল ভারতীয় জন সংঘ, অখিল ভারতীয় রাম রাজ্য পরিষদ, অখিল ভারতীয় শিবসেনা রাষ্ট্রবাদী, অখ- হিন্দুস্তান মোর্চা, আপনা হিন্দু রামভক্ত পার্টি, আর্য সভা, ভারতীয় হিন্দু সেনা, ভারতীয় জনশক্তি, ভারতীয় স¦দেশী সংঘ, হিন্দু একতা আন্দোলন পার্টি, হিন্দু প্রজা পার্টি, হিন্দু সমাজ পার্টি, হিন্দু শিব সেনা, হিন্দু স¦রাজ সংগঠন, রাষ্ট্রীয় হিন্দু সংগঠন, রাষ্ট্রীয় হিন্দু মোর্চা, রাম রাজ্য মার্গ, রাম সেনা রাষ্ট্রবাদী, সমরাথ ভারত, শিব রাজ্য পার্টি, শিব সেনা প্রভৃতি। অন্যদিকে, আঞ্চলিক হিন্দুবাদী সংগঠনগুলোর মধ্যে রয়েছে, অসম ভারতীয় জনতা পার্টি, নিখিল মনিপুরি হিন্দু মহাসভা, হিন্দু মুন্নানি (তামিলনাড়–), হিন্দু মাক্কাল কাচ্চি (তামিলনাড়–), জনথা পার্টি (দক্ষিণ ভারত ও মহারাষ্ট্র), তামিলনাড়– হিন্দু ভেল্লালার ইয়থ কাজাঘাম, শ্রী রাম সেনা (কর্ণাটক), ভারতীয় জন পাকসাম (কেরালা), সনাতন প্রভাত (মহারাষ্ট্র ও কেরালা), হিন্দু সংহতি (পশ্চিমবঙ্গ) প্রভৃতি। এসব দলের মধ্যে আরএসএস-এর মত কোন কোন দলের আধাসামরিক বাহিনীর মত বাহিনী রয়েছে। এসব দল প্রধানতঃ ভারতকে একটি হিন্দু দেশে পরিণত করতে কিংবা হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় ও রাজনৈতিক স¦ার্থ নিয়ে আন্দোলনসহ বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করে থাকে। ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) হিন্দু ধর্মভিত্তিক দল হিসেবে পরিচয় না দিলেও তারা নিয়ন্ত্রিত হয় এবং তাদের পেছনে শক্তি যোগায় রাষ্ট্রীয় স¦য়ং সেবক সংঘ (আরএসএস), শিবসেনা ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি)। বিজেপি ইতোমধ্যে একবার ভারত শাসন করেছে। আবোরো তারা ক্ষমতার দ্বারপ্রান্তে উপনীত বলে আভাস পাওয়া গেছে। এ দলের নেতা হবু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি চরম সাম্প্রদায়িক এবং গুজরাট দাঙ্গার নায়ক। এসব দল ভারতে এবং গোটা দুনিয়ায় মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক দল হিসেবেই ব্যাপক পরিচিত।

মূলত, ভারত শুধু মৌলবাদী নয়, তীব্র হিন্দুত্ববাদী সাম্প্রদায়িক সামাজিক কাঠামো নিয়ে পরিচালিত হয়। সেখানে প্রতিদিন কোন না কোন সংখ্যায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ঘটে। এসব দাঙ্গার প্রধান শিকার মুসলিম জনগোষ্ঠী। এর পরে রয়েছে শিখ ও খ্রিষ্টানরা। এছাড়াও নিম্নবর্গের নানা গোষ্ঠী এই দাঙ্গার কবলে পড়ে জানমাল ও সহায়-সম্পদ হারায়।

স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দী পরও ভারতে সংখ্যালঘু ও পশ্চাদপদ জনগোষ্ঠীর বঞ্চনা নিরসনে কমিশন গঠন করতে হয়। হিন্দুত্ববাদী আমলাতান্ত্রিক দৌরাত্ম্য ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার দাপটে এসব কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না। মন্ডল কমিশনের রিপোর্ট বাস্তবায়ন করতে গিয়ে ভিপি সিং সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত হতে হয়েছে। মন্ডল কমিশন রিপোর্ট বাস্তবায়নের বিরুদ্ধে শিবসেনা-হিন্দু মহাসভার উগ্রবাদী কর্মীরা গায়ে পেট্রোল ঢেলে আত্মহত্যার উদাহরণও তৈরি করেছে। ভারতীয় মুসলমানদের বিরুদ্ধে শিবসেনা ও সংঘ পরিবারের স্লোগান হচ্ছে : æহয় কুরআন ছাড়ো, নয় ভারত ছাড়ো।” নাঊযুবিল্লাহ! মুসলমানদের উন্নয়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে গঠিত ‘সাচার কমিটির’ সুপারিশ বাস্তবায়ন হচ্ছে না।

এদিকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুসলমানরা জনসংখ্যার ৫০ শতাংশ হলেও চাকরি ও অন্যান্য সামাজিক ক্ষেত্রে তাদের অংশীদারিত্ব মাত্র ২ শতাংশ। সরকারিভাবেই যেখানে ১০ শতাংশ সুযোগ মুসলমানদের পাবার কথা, সেখানে তারা পাচ্ছেন মাত্র ২ শতাংশ। গোটা ভারতে মুসলমানদের জনসংখ্যার অনুপাত প্রায় ৪০ শতাংশ কিন্তু তারপরও তারা অবদমিত ও চরমভাবে বঞ্চিত। সংঘ পরিবারের উগ্রবাদীরা বাবরী মসজিদ ধ্বংসের পর গুজরাটে মুসলিম নিধনযজ্ঞ চালিয়ে যে বিভীষিকার সৃষ্টি করেছে- ভারতের গণতান্ত্রিক ও সেক্যুলার সমাজ ও প্রতিরোধে ব্যর্থ হয়েছে। ব্যর্থ হয়েছে কংগ্রেস ও বাম রাজনীতিকরাও। হিন্দুত্বের সাম্প্রদায়িকতা লালন করে ভারত বাংলাদেশকে কিভাবে ধর্মনিরপেক্ষতার দীক্ষা দিতে চায়, সেটাই তাজ্জবের ব্যাপার। তবে দুঃখজনক হলেও সত্য বর্তমান ভারতবান্ধব সরকার এদেশে হিন্দুদের মুসলমানদের চেয়েও অনেক বেশি সুযোগ সুবিধা দিলেও ভারতে মুসলমানদের দমন-নিপীড়নের বিষয়ে একেবারে নির্বিকার। যা এদেশের ৯৭ ভাগ মুসলমানের বরদাশতের বাইরে। তারা এ নতজানু ও মুসলমানবিরোধী ভারত তোষণনীতির পরিবর্তন চায়।

মূলতঃ এসব অনুভূতি ও দায়িত্ববোধ আসে পবিত্র ঈমান ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাদের অনুভূতি ও প্রজ্ঞা থেকে। আর তার জন্য চাই নেক ছোহবত তথা মুবারক ফয়েজ, তাওয়াজ্জুহ। যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, যামানার মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবতেই সে মহান ও অমূল্য নিয়ামত হাছিল সম্ভব। মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের তা নছীব করুন। (আমীন)

-মুহম্মদ আশরাফুল মাহবূবে রব্বানী

খতমে নুবুওওয়াত প্রচার কেন্দ্র খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারীরা কাফির “ইসলামী শরীয়তের হুকুম মুতাবিক যারা মুসলমান থেকে খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত হয় যেমন-  কাদিয়ানী, বাহাই ইত্যাদি তাদের তওবার জন্য নির্ধারিত সময় ৩ দিন এরপর তওবা না করলে তাদের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।”

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৬২

ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-১১

চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-৩০

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২০ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস ওহাবী ফিরক্বাসহ সবগুলো বাতিল ফিরক্বা ইহুদী-নাছারাদের আবিষ্কার! তাদের এক নম্বর দালাল