সাড়ে ৯৮ হাজার কোটি টাকার তরঙ্গ মাত্র ৫ হাজার কোটি টাকায় বিক্রি কেন? রাষ্ট্রের অমূল্য সম্পদ মোবাইল তরঙ্গ পছন্দের কোম্পানিকে পাইয়ে দেবার জন্যই কি পানির দরে বিক্রির এ ব্যবস্থা?

সংখ্যা: ২৪২তম সংখ্যা | বিভাগ:

সাড়ে ৯৮ হাজার কোটি টাকার তরঙ্গ মাত্র ৫ হাজার কোটি টাকায় বিক্রি কেন? রাষ্ট্রের অমূল্য সম্পদ মোবাইল তরঙ্গ পছন্দের কোম্পানিকে পাইয়ে দেবার জন্যই কি পানির দরে বিক্রির এ ব্যবস্থা?


১৫ বছর আগে মোবাইলফোন অপারেটর ‘একটেল’ পরবর্তীতে ‘রবি আজিয়াটা’ নামে তাদের ব্যবসা শুরু করে। শুরুতে ‘রবি’ ১৭ দশমিক ৮ মেগাহার্টজ ফ্রিকোয়েন্সি (তরঙ্গ) নিয়ে ব্যবসা শুরু করলেও কোনো তরঙ্গ চার্জ দেয়নি।

এ ধরনের কোনো আইন না থাকার সুযোগ নিয়ে রবি ওই সময় বিনা পয়সায় তরঙ্গ ব্যবহার করে হাজার হাজার কোটি টাকা আয় করলেও সরকারকে এজন্য কোনো ফি দেয়নি। ১ টাকার কল মিনিট বিক্রি করেছে ৭-৮ টাকায়। অথচ সে আমলে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, পাকিস্তান, নেপালসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশ মিলিয়ন-বিলিয়ন ডলার আয় করেছিল এই ফ্রিকোয়েন্সি বিক্রি করে। দেখা গেছে, ভারত ওই সময় প্রতি মেগাহার্টজ ফ্রিকোয়েন্সি বিক্রি করে আয় করছিল ১১৩ মিলিয়ন রুপি। অথচ বাংলাদেশ হাজার হাজার কোটি টাকার মুনাফা লাভকারী প্রতিষ্ঠানের কাছে এই তরঙ্গ দিয়েছিল স্রেফ শূন্য টাকায়। সোজা কথায় ‘মাগনা’।

শুধু অতীতে নয়, বর্তমানেও সরকারের যুগোপযোগী টেলিযোগাযোগ নীতিমালার অভাবে হাজার হাজার কোটি টাকা দামের তরঙ্গ (স্পেকট্রাম) পানির দরে বিক্রি হয়ে যাচ্ছে।

বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনের (বিটিআরসি) কাছে থাকা অবশিষ্ট টুজির ১০ দশমিক ৬ মেগাহাটজ এবং থ্রিজির আরও ১৫ মেগাহার্টজ স্পেকট্রাম বা তরঙ্গ নিলামের চূড়ান্ত তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। নীতিমালা অনুসারে আগামী ৩০ এপ্রিল (২০১৫) এ নিলাম অনুষ্ঠিত হবে। আর উভয় ধরনের ব্যান্ডের স্পেকট্রামের এ নিলামে অংশ নিতে ২৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে আবেদন করতে বলা হয়। কিন্তু পর্যবেক্ষক মহল মনে করছেন, মূল্য অনেক কম ধরে ও ‘প্রতিযোগিতাহীন’ নিলামের মাধ্যমে অ্যববহৃত থ্রি-জি ও টু-জি তরঙ্গ নিলামে বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। খাত সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের মতে, এতে প্রায় লাখ কোটি টাকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হবে সরকার।

নতুন গাইড লাইনে এ তরঙ্গের ভিত্তিমূল্য প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় বিশেষ করে ভারতের তুলনায়ও অনেক কম ধরা হয়েছে। ভারতে চলতি ২০১৫ সালের নিলাম অনুযায়ী ১৮০০ মেগাহার্টজ ব্যান্ডের প্রতি মেগাহার্জ তরঙ্গের ভিত্তিমূল্য যেখানে ২ হাজার ৭৩৮ কোটি টাকা সেখানে আমাদের দেশে ধরা হয়েছে মাত্র ২৩০ কোটি (৩ কোটি ইউএস ডলার), অন্যদিকে ভারতে ২১০০ মেগাহার্জ ব্যান্ডের তরঙ্গের ভিত্তিমূল্য যেখানে ৪৬৩১ কোটি টাকা সেখানে আমাদের দেশে মাত্র ১৬৫ কোটি টাকা (২.২০ কোটি ইউএস ডলার) ধরা হয়েছে।

বিটিআরসি ঘোষিত নিলামে প্রতিবেশী ভারতের প্রতি মেগাহার্টজ তরঙ্গের মূল্যকে ভিত্তিমূল্য ধরে নিলাম করলেও টুজি’র ক্ষেত্রে প্রতি মেগাহার্টজে ২৭৩৮ কোটি টাকা করে ১০.৬ মেগাহার্টজে পাওয়া যেত ২৯০২২ কোটি টাকা। আবার থ্রিজি’র ৪৬৩১ কোটি টাকা করে ১৫ মেগাহার্টজে পাওয়া যেত ৬৯৪৯৫ কোটি টাকা। নিলামে সরকারের মোট আয় দাঁড়াত ৯৮৫১৭ কোটি টাকা। অথচ বিটিআরসি’র বর্তমান ঘোষিত মূল্যে নিলামে পাওয়া যাবে সর্বোচ্চ ৫০০০ কোটি টাকা। ফলে সরকার প্রায় সাড়ে ৯৩ হাজার কোটি টাকার আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

উল্লেখ্য, ফ্রিকোয়েন্সি ও মেগাহার্টজ জনগণের সম্পত্তি। এজন্য দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা থাকতে হবে। কিন্তু এসব অসঙ্গতি তুলে ধরতে কোনো সিটিজেন ফোরাম নেই। কেউ কথা বলে না।

ফ্রিকোয়েন্সি ও মেগাহার্টজ সীমিত। অথচ ফ্রিকোয়েন্সি বরাদ্দের কোনো ম্যাপিং নেই। এজন্য মাস্টারপ্ল্যান থাকতে হবে। সবার অংশগ্রহণে এটি করা জরুরী। সস্তায় তরঙ্গ বিক্রির বিষয়টি চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে যে, জনগণ ও দেশের সম্পদের সঠিক ব্যবহার সম্পর্কে সরকার কত উদাসীন।

টেলিযোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারের সমন্বয়হীনতা ও দূরদর্শিতার অভাবেই দেশের ব্যবহারযোগ্য সম্পদ মোবাইলফোন ‘তরঙ্গ’ পানির দরে বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। মোবাইল তরঙ্গ সীমিত সম্পদ। সীমিত যেকোনো কিছুই বেশ মূল্যবান, আর তাই উচিত- সে সম্পদ থেকে সর্বোচ্চ মুনাফা আদায় করা। বিশেষ করে যদি তৃতীয় পক্ষ কেউ যদি সে সম্পদকে পুঁজি করে ব্যবসা করে। উদাহরণ হিসাবে বলা যায় যে- সরকার বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলোর কাছে গ্যাস বিক্রি করছে, আবার বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলো নাগরিকদের বিদ্যুৎ বিক্রি করছে। ঠিক তেমনি সরকার তরঙ্গ বিক্রি করবে আর মোবাইল কোম্পানিগুলো তা ব্যবহার করে মোবাইল সার্ভিস বিক্রি করে মুনাফা করবে। মোবাইল কোম্পানীর ব্যবসার মুনাফা যতটা বেশি হবে সরকারকেও তার কাঁচামাল তরঙ্গ তত বেশি মূল্যে বিক্রি করতে হবে। কিন্তু যথাযথ নীতিমালা ছাড়াই চলছে তরঙ্গ ব্যবসা। আর এর সুযোগ নিচ্ছে মোবাইল অপারেটররা। এতে দেশ বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। পাশাপাশি টেলিযোগাযোগ খাতে বড় বিনিয়োগ হওয়ার সম্ভাবনা হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে।

টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি’র তথ্যমতে, দেশে মোবাইল গ্রাহক ১২ কোটি ছাড়িয়েছে। দেশে মোবাইলের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৩ কোটি ৯০ লাখ ৫২ হাজার।

অর্থাৎ টেলিযোগাযোগ খাত, বিশেষ করে মোবাইলফোন খাত হতে পারে বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম মূল চালিকাশক্তি। এ খাত দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে চলেছে। খাতটি কর্মসংস্থান ও বৈদেশিক বিনিয়োগের (এফডিআই) বৃহত্তম সংস্থানকারী এবং সরকারের কর রাজস্বের সবচেয়ে বড় উৎস। কিন্তু সরকারের উদাসীনতায় এক্ষেত্রে কাঙ্খিত সমৃদ্ধি আসছে না, জনগণ বঞ্চিত হচ্ছে আর বিদেশীরা লুটপাট করছে। এক্ষেত্রে সরকারের উদাসীনতা ও নিষ্ক্রিয়তার বিপরীতে জনগণকে সচেতন হতে হবে। নিজেদের হক্ব যাতে নষ্ট না হয়, সে সম্পর্কে সচেতন ও সক্রিয় থাকতে হবে।


-আল্লামা মুহম্মদ আশরাফুল মাহবূবে রব্বানী

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২২ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস

‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’ সম্পর্কিত ‘দৈনিক যুগান্তর’ পত্রিকার মন্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিস্ময় প্রকাশ গোয়েন্দা শীর্ষ কর্মকর্তারাও অবহিত নয় খোদ যুগান্তর সম্পাদকের দুঃখ প্রকাশ

‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’কে নিয়ে – মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নামে দৈনিক জনকণ্ঠের মিথ্যাচার ‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’ নিষিদ্ধ হচ্ছে- এ কথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শুধু অস্বীকারই করলেন না, বললেন: ‘সম্পূর্ণ বাজে কথা।’ প্রসঙ্গতঃ সোহেল তাজ বিবৃত কালো তালিকা অসম্পূর্ণ ও আংশিক ভুল। এর সংশোধন আশু দরকার

মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সমীপে- সোহেল তাজ বিবৃত ১২টি জঙ্গি সংগঠন তালিকা যথার্থ নয় এর মধ্যে যেমন অনেক জঙ্গি সংগঠনের নাম আসেনি তেমনি জঙ্গিবাদ বিরোধী সংগঠনের (উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত) নামও জামাত-জোট ভূতের কারণে এসেছে। সঙ্গতঃ কারণেই বে-হেড সোহেল তাজের বেফাঁস মন্তব্য থেকে বেরিয়ে এসে বর্তমানের যোগ্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে প্রকৃত জঙ্গি সংখ্যা যেমন নির্ধারণ করতে হবে, প্রকৃত জঙ্গিদের যেমন চিহ্নিত করতে হবে পাশাপাশি জঙ্গিবাদী, মৌলবাদী ও ধর্মব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে একান্ত নিবেদিত ‘আল বাইয়্যিনাত’কে মূল্যায়ন করতে হবে।