সুওয়াল-জাওয়াব বিভাগ

সংখ্যা: ২৯৩তম সংখ্যা | বিভাগ:

মুহম্মদ জাহিদ হাসান

মাদারীপুর

সুওয়াল: এক আহালের দুই আহলিয়া, প্রথম আহলিয়া অনেক বছর আহাল থেকে আলাদা। অবশেষে প্রথম আহলিয়া একাধিকবার তালাক নিতে চাইলে আহাল তালাক দিতে রাজি হয় না। পরে আহলিয়া তার আহালকে মোবাইলে কল করে, আহালকে এক প্রকার বাধ্য করে মৌখিকভাবে তালাক দিতে। অবশেষে আহাল তার অনিচ্ছাসত্বেও আহলিয়ার শিখিয়ে দেওয়া তরতীব অনুযায়ী মোবাইল কলে তালাক দেয়। তার বক্তব্য ছিলো এমন- আমি অমুক (আহালের নাম) অমুকের (আহলিয়ার বাবার নাম) অমুককে (আহলিয়ার নাম) স্বজ্ঞানে, স্ব-ইচ্ছায় তালাক দিচ্ছি, এক তালাক, দুই তালাক, তিন তালাক। এভাবে আহাল তালাক প্রদান করে। মোবাইল কলে একজন মেয়ে ও একজন ছেলে সাক্ষী হিসেবে ছিলো। এটা কি শরীয়ত সম্মতভাবে তালাক হয়েছে?

জাওয়াব: তালাকের জন্য কোন সাক্ষী থাকা শর্ত নয়। অর্থাৎ তালাকের জন্য কোন সাক্ষী প্রয়োজন হয় না। সে নিরিবিলি একা একা তালাক দিয়ে দিলেও তালাক হয়ে যাবে। তার আহলিয়াকে শুনানো শর্ত না। এখন মোবাইলে বলুক, যেভাবে বলুক। কেউ শুনুক অথবা না শুনুক। তিন তালাক দিলে তিন তালাক হয়ে যাবে।

শর্ত হলো আওয়াজের সাথে উচ্চারণ করে যদি বলে তাহলে তালাক হয়ে যাবে। কতগুলো বিষয়ে সাক্ষী প্রয়োজন হয় না। যেমন: সন্তানটা জিন্দা, না মূর্দা হলো। যে দাই থাকে সেখানে তার সাক্ষীই যথেষ্ট। অন্য সাক্ষী প্রয়োজন নাই। এরকম কতগুলো বিষয় রয়েছে। যেমন ঈমান, ইসলাম গ্রহণ করা মান্নত করা, উচ্চারণ করে আওয়াজের সাথে বলতে হবে এবং জবেহ এর সময়ও উচ্চারন করে আওয়াজের সাথে বিছমিল্লাহ বলতে হবে। তাহলে গ্রহনযোগ্য হবে। অন্যথায় হবে না। এ সমস্ত ক্ষেত্রে সাক্ষীর প্রয়োজন হয় না। এখন তালাক্ব সে যেভাবেই বলুক। তাকে শিখিয়ে দিক অথবা না দিক এটা কোন শর্ত শারায়িত নয়। শর্ত শারায়িত হচ্ছে, কেউ যদি তালাক দেয় তাহলে এটা স্ব-ইচ্ছায় বলাও শর্ত না। সে (আহাল) যদি পাগল না হয় অর্থাৎ যদি সুস্থ থাকে, তাহলে তালাক দিলে তালাক হয়ে যাবে। সে যদি তিনবার তালাক বলে তাহলে তার নিয়ত অনুযায়ী তালাক হয়ে যাবে। এখানে আলাদা কোন শর্ত শারায়িত নাই। এখানে অনেকে মনে করে, তালাক দিলো সাক্ষীতো নাই। তালাকের ক্ষেত্রে সাক্ষীর কোন শর্ত শারায়িত নাই। তার আহলিয়াকে শুনানোও কোন শর্ত নাই। সে (আহাল) একা একা, উচ্চারণ করে বললেই চলবে অথার্ৎ আহলিয়ার প্রতি তালাক পতিত হবে।

 

মুহম্মদ আতিকুল্লাহ

চাঁদপুর

সুওয়াল: নামাযরত অবস্থায় নামাযী ব্যক্তির সামনে আয়না থাকায় তার ছবি দেখা যায়। এমতাবস্থায় নামাযের কোন ক্ষতি হবে কি-না?

জাওয়াব: না। এতে নামাযের ক্ষতি হবে না। তবে তার হুযূরীর ক্ষতি হতে পারে। এজন্য আয়নার উপর কাপড় দিয়ে রাখা উচিত। আয়নাতে যা দেখা যায় এটা আসলে ছবি না। এতে মানুষ চেহারা দেখে, ছবি দেখে না। আয়না দেখা তো সুন্নত। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি দেখেছেন। এটাতো ছবি না। এটার জন্য হুযূরীর বেঘাত ঘটতে পারে। আয়না থাকলে একটা কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখলেই চলে।

 

মুহম্মদ ফরহাদ হুসাইন

চট্টগ্রাম

 

সুওয়াল: মৃত ব্যক্তির লাশের কাছে কান্নাকাটি করা, দোয়া-কালাম পড়া, কথাবার্তা বলা হয়।  এগুলো মৃত ব্যক্তি শুনতে পায় কি না? বুঝতে পারে কি না?

জাওয়াব: শুনতে পারে, বুঝতে পারে। এ বিষয়টি বদরের জিহাদের ওয়াক্বেয়াতে রয়েছে। বদরের জিহাদের পর আবু জেহেলসহ কতগুলি মৃত কাফেরকে কূপের মধ্যে ফেলা হয়েছিল। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সেখানে তিনদিন ছিলেন। তিনি শেষদিন লাশগুলিকে নাম ধরে বললেন, হে কাফির অমুক অমুক অমুক, আমি যা বলেছি তোমরা কি সত্য হিসেবে পেয়েছো? এটা শুনে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা বললেন, ইয়া রসূলল্লাহ ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! এরাতো মরে গেছে, পঁচে গেছে। এরা কি এসব শুনতে পারতেছে? নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, আপনাদের থেকে তারা স্পষ্ট শুনতেছে। কারণ মৃত ব্যক্তি সবই দেখে, শুনে।  সে মারা গেলে কে কি কাজ করতেছে সব দেখে, সব শুনে। কে ভালো বললো, কে খারাপ বললো, কে কোনটা করলো, না করলো, তার খেদমতের আন্জাম  কে দিলো, কে দিলো না, সব দেখে। সে শুধু বলতে পারে না। কিন্তু সে সব শুনে এবং দেখে। এখন মৃত ব্যক্তির লাশের সামনে কান্না-কাটি করা ঠিক না। বেশী বেশী দোয়া-কালাম পড়া এবং বেশী বেশী ইস্তিগফার-তওবা করা উচিত।

 

মুহম্মদ আলমগীর হুসাইন

নূরানীবাদ

 

সুওয়াল: যার জাররা পরিমাণ ঈমান আছে সেও একদিন জান্নাতে যাবে। ইহা পবিত্র হাদীছ শরীফ কি-না? যদি পবিত্র হাদীছ শরীফ হয় তাহলে জাররা পরিমাণ বলতে কি বুঝানো হয়েছে?

জাওয়াব: হঁ্যা, পবিত্র হাদীছ শরীফে তো আছে, এক জাররা পরিমাণ ঈমান থাকলে জান্নাতী হবে। জাররা হচ্ছে শেষ বিন্দু। যার পরে টুকরা করা যায় না সেটাকে জাররা বলা হয়। এক কথায় সহজে বুঝার জন্য যেটার পরে আর টুকরা করা যায় না সেটা হচ্ছে জাররা। এখানে আসলে জাররা অর্থ টুকরা না অর্থাৎ যার ঈমান আছে সেটা। সোজা কথায়, ঈমানের তো আর ভাগ করা যায় না। ঈমানকে তো আর টুকরা টুকরা করা যায় না। এক জাররা ঈমান বলতে যার শুধু ঈমান আছে। আমল আখলাক বলতে কিছুই নাই। অর্থাৎ যার আমল আখলাক কিছুই নাই, শুধু ঈমান আছে এই লোকটা একদিন বেহেশ্তে যাবে। কারণ সে শাস্তি ভোগ করার পরে বেহেশ্তে যাবে। আর যার ঈমান নাই সে কোনদিন বেহেশ্তে যেতে পারবে না। আমাদের  ফতওয়া হচ্ছে-

اَلْاِيْمَانُ لَايَزِيْدُ وَلَايَنْقُصُ

“ঈমান বাড়েও না, কমেও না।” ঈমান যা আছে তাই। ঈমানের কুওওয়াতটা বাড়ে। অর্থাৎ ঈমানী কুওওয়াত তার নাই। একদম দুর্বল ঈমান। দুর্বল ঈমান যার আছে সে লোকটা একদিন বেহেশ্তে যাবে। তার বদ আমলের কারণে শাস্তি পাবে তারপরে জান্নাতে যাবে। জাররা বলতে টুকরা বললে চলবে না। অর্থাৎ একদম দুর্বল ঈমান। সে ঈমানদার, তার আমল আখলাক কিছুই নাই। কাফির, মুশরিক, ফাসিক ফুজ্জারের কারণে সারাদিন শরীয়ত উনার খেলাফ কাজ করে, কিন্তু সে ঈমানদার। সে একদিন জান্নাতে যাবে।

 

মুহম্মদ ফারুক হুসাইন

কিশোরগঞ্জ

 

সুওয়াল: আমাদের এক পীরবোন জেদের বশে তার ফুফাতো ভাইয়ের সাথে বিবাহ বসতে চায়। তার ফুফাতো ভাই খারেজী লাইনে লেখা-পড়া করা। তাকে আমাদের সিলসিলায় আসতে দাওয়াত দেয়া হয়েছে। সে এখনও আসে নাই। এ অবস্থায় অভিভাবকগণ কি করবেন? জানতে বাসনা রাখি।

জাওয়াব: এখন তাহক্বীক্ব করতে হবে। তার আক্বীদাটা কি? নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে যদি তার মত মনে করে তাহলে সে মুসলমান না। তার সাথে তো বিবাহ শুদ্ধ হবে না। আর যদি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সে মনে করে তিনি হায়াতুন্নবী, মুত্তালা’ আলাল গইব, হাযির- নাযির তাহলে ঠিক আছে। আর না হলে সে মুসলমানই না। তার সাথে বিবাহ  জায়িয হবে না। মুসলমান আর কাফেরের মধ্যে বিবাহ হয় না।  তার এভাবে বিবাহ করা ঠিক হবে না। এখন যদি ঐ মেয়েটা ঐ আক্বীদার হয়ে যায় তাহলে ঐ দলের  হয়ে গেলো। ঈমানদার থাকলো কেমন করে? আক্বীদা দেখতে হবে। এজন্য বিবাহ শাদীর জন্য আমরা প্রায়ই বলি-

عَنْ حَضْرَتْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تُنْكَحُ الْمَرْأَةُ لِأَرْبَعٍ لِمَالِـهَا وَلـِحَسَبِهَا وَلِـجَمَالِـهَا وَلِدِيْنِهَا فَاظْفَرْ بِذَاتِ الدِّيْنِ تَرِبَتْ يَدَاكَ (متفق عليه، مشكوة شريف)

এখানে কতগুলি শর্ত দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ চারটা শর্ত দেয়া হয়েছে। এটা পুরুষ-মহিলা, ছেলে-মেয়ে দু’জনের জন্য। দু’জন যদি বিবাহ-শাদী করতে চায়, তাকে চারটা জিনিস দেখতে হবে। এক নম্বর- তার অবস্থাটা কি? দুই নম্বর হলো- তার নসবটা বা বংশটা কি? তিন নম্বর দেখতে হবে- তার ছূরতটা কি, তার পছন্দ হয়েছে কি-না? স্বচ্ছল, না অস্বচ্ছল, কেমন? চার নম্বর হচ্ছে- তার দ্বীনদারী দেখতে হবে। আর দ্বীনদারী হচ্ছে মূল। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, তোমরা দ্বীনদারীকে প্রাধান্য দিবে। অন্যটা কিছু যদি কমও থাকে দ্বীনদারী যদি থাকে তাহলে তুমি ইতমিনান থাকবে। আর দ্বীনদারী না থাকলে তুমি শান্তি জিবনেও পাবে না।

কাজেই দ্বীনদারীকে প্রাধান্য দিতে হবে। আর আক্বীদাতো দ্বীনদারীর বিষয়। আক্বীদা যার নষ্ট তার সাথে বিবাহ শুদ্ধ হবে না। আর সে নিজে মুসলমান হয়ে পরে যদি কাফির হয়ে যায় নাউযুবিল্লাহ! তখন করার কিছু থাকবে না। এজন্য বিবাহ-শাদী করার আগে এই বিষয়গুলি দেখতে হবে। এক্ষেত্রে অবশ্যেই তাকে দ্বীনদারীটা দেখতে হবে। তার দ্বীনদারী আছে কি-না? যদি দ্বীনদারী থাকে বাকিগুলি কম থাকে তাহলে হয়ে যাবে। আর দ্বীনদারী না থাকলে বাকিগুলি বেশী থাকলেও শান্তি হবে না। নানান ফেতনা-ফাসাদ হবে। অনেক রকম সমস্যা হবে। কাজেই এইভাবে জবরদস্তী বিবাহ বসতে চাওয়াটা ঠিক হবে না। এটা তাহক্বীক্ব করতে হবে। আক্বীদা যদি শুদ্ধ হয় তাহলে ঠিক আছে। সে খারেজী লাইনে পড়াশুনা করছে, কিন্তু তার আক্বীদা শুদ্ধ এবং অন্যান্য শর্ত শারায়িত সব ঠিক হয় তাহলে কোন অসুবিধা নেই। আর আমাদের এখানে বাইয়াত করাতে হবে।  ছেলে হোক, মেয়ে হোক আক্বীদা এক রকম না হলে জীবনে সুখ পাবে না। ছেলে একটা বলবে, মেয়ে আরেকটা বলবে। দু’জনের মধ্যে গণ্ডগোল হবে। এটা ঠিক হবে না।

 

মুহম্মদ মাহমুদুল হাসান

মুন্সীগঞ্জ

 

সুওয়াল: একজন ব্যক্তি সফরে রওয়ানা দেওয়ার পূর্বে ইশার নামাযের ওয়াক্ত হয়ে গিয়েছিলো। কিন্তু নামায আদায় না করে সফরে রওয়ানা হয়েছে। সেই সফরকারী ব্যক্তি মুসাফির হওয়ার পরেও ইশার নামাযের ওয়াক্ত রয়েছে। এখন সেই মুসাফির ব্যক্তি ইশার নামায কত রাকায়াত আদায় করবে?

জাওয়াব: মুসাফির ব্যক্তি যে স্থানে গিয়ে নামায আদায় করবে সে স্থানের হুকুম হবে। যদি মুসাফির হয় তাহলে মুসাফিরের নামায পড়তে হবে। আর যদি মুকীম হয় তাহলে মুকীমের নামায পড়তে হবে। এখন ওয়াক্ত যখনই শুরু হোক, নামায যেখানে আদায় করবে সেখানে তার কি হুকুম। সে কি মুকীম, না মুসাফির? যদি মুসাফির হয় তাহলে মুসাফির হয়ে নামায পড়বে। আর যদি মুকীম হয় তাহলে মুকীম হয়ে নামায পড়বে। ওয়াক্ত শুরু হওয়া, না হওয়ার সাথে কোন সম্পর্ক নেই। যেখানে নামায আদায় করবে সেখানে যদি সে মুসাফির থাকে তাহলে মুসাফির হিসেবে কছর পড়বে। আর যদি মুকীম থাকে তাহলে পুরা নামায পড়তে হবে।

 

মুহম্মদ আরীফুর রহমান

নূরপুর

 

সুওয়াল: এক বিঘা জমি ১২ বছরের জন্য চুক্তিতে দেওয়া আছে। প্রতি বছর জমি দাতাকে ২৫,০০০ টাকা দেওয়া হয়। এখন ২৫,০০০ টাকা এগুলোর উশর, নাকি যাকাত দিতে হবে? জানতে বাসনা রাখি।

জাওয়াব: টাকা-পয়সার উশর নাই। টাকা-পয়সার যাকাত দিতে হবে। যে ফসল পায়, তার জন্য উশর। আর যে ফসল পায় না, তার জন্য উশর নাই। আর যার টাকা-পয়সা আছে তার নিকট যদি তা একবছর জমা থাকে আর তা নিসাব পরিমাণ হয় তখন তাকে যাকাত দিতে হবে। টাকার তো উশর নাই। উশর তো হলো ফল ফসলের। আমাদের হানাফী মাযহাবে, কম হোক বেশী হোক ফসল পেলেই তার উশর দিতে হবে। ফল-ফসল যদি বিনা পরিশ্রমে হয় তাহলে দশ ভাগের এক ভাগ আর পরিশ্রম করে করলে তাহলে বিশ ভাগের এক ভাগ দিতে হবে। আর টাকা-পয়সা, স্বর্ণ যদি থাকে তাহলে যাকাত দিতে হবে। এটার কোন উশর নাই। এখন ২৫,০০০ টাকা পেয়ে যদি সে খরচ করে ফেলে তাহলে তার যাকাত হবে কোথা থেকে। যদি জমা করে, নিসাব পরিমাণ হয়, এক বছর থাকে তখন তার জন্য সেটার যাকাত দিতে হবে, এর আগে তো যাকাত হবে না। টাকা-পয়সার কোন উশর নাই। টাকা-পয়সার হচ্ছে যাকাত। আর ফসলের হচ্ছে উশর।

মুহম্মদ আবূ খুবাইব

শহীদবাগ, ঢাকা

 

সুওয়াল:  নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হাযির-নাযির এ সম্পর্কে পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ থেকে দলীল জানিয়ে বাধিত করবেন।

জাওয়াব:  নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হাযির-নাযির এ সম্পর্কে যিনি খলিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

اِنَّــاۤ اَرْسَلْنٰكَ شَاهِدًا وَّمُبَشِّرًا وَّنَذِيْــرًا

অর্থ: “(আমার মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) নিশ্চয়ই আমি আপনাকে প্রেরণ করেছি শাহিদ অর্থাৎ সাক্ষ্যদাতা, উপস্থিত বা হাযির-নাযির হিসেবে, সুসংবাদ দানকারী এবং সতর্ককারীরূপে।” (পবিত্র সূরা ফাত্হ শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৮)

আলোচ্য পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখিত شَاهِدٌ (শাহিদ) শব্দ মুবারক উনার অর্থ মুবারকই হচ্ছেন ‘হাযির-নাযির’। যেমন পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বিদায় হজ্জের সময় খুতবা মুবারক দানকালে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদেরকে উদ্দেশ্য করে ইরশাদ মুবারক করেছেন-

فَـلْـيُـبَلِّغِ الشَّاهِدُ الغَائِبَ

অর্থ: “যারা এখানে উপস্থিত রয়েছেন উনারা গইব বা অনুপস্থিত ব্যক্তিদেরকে (আমার নছীহত মুবারক সমূহ) পৌঁছিয়ে দিবেন। (বুখারী শরীফ)

شَاهِدٌ (শাহিদ) শব্দ মুবারক উনার অর্থ যে উপস্থিত বা হাযির এ বিষয়টি লুগাত বা অভিধানের কিতাব সমূহেও বর্ণিত হয়েছে।

আর এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, যিনি উপস্থিত তিনিই হাযির এবং যিনি হাযির তিনি নাযির বা প্রত্যক্ষকারী, প্রত্যক্ষদশীর্। অর্থাৎ যিনি হাযির তিনিই নাযির আবার যিনি নাযির তিনিই হাযির।

পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ اَبِـىْ جُرَىٍّ جَابِـرِ بْنِ سُلَـيْمٍ رَضِىَ اللهُ تَـعَالـٰى عَنْهُ قَالَ اَتَــيْتُ الْمَدِيْــنَةَ فَـرَاَيْتُ رَجُلًا يَّصْدُرُ النَّاسُ عَنْ رَاْيِهٖ لَا يَـقُوْلُ شَيْـئًا اِلَّا صَدَرُوْا عَـنْهُ قُـلْتُ مَنْ  هٰذَا قَالُوْا  هٰذَا رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَـيْهِ وَسَلَّمَ قُـلْتُ عَلَـيْكَ السَّلَامُ يَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَـيْهِ وَسَلَّمَ مَرَّتَــيْـنِ قَالَ لَا تَـقُلْ عَلَـيْكَ السَّلَامُ فَاِنَّ عَلَـيْكَ السَّلَامُ تَـحِيَّةُ الْمَيِّتِ قُلْ اَلسَّلَامُ عَلَـيْكَ قُـلْتُ اَنْتَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَـيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ اَنَا رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَـيْهِ وَسَلَّمَ اَلَّذِىْ اِذَا اَصَابَكَ ضُرٌّ فَدَعَوْتَهٗ كَشَفَهٗ عَـنْكَ وَاِنْ اَصَابَكَ عَامُ سَنَةٍ فَدَعَوْتَهٗ اَنْـبَـتَـهَا لَكَ وَاِذَا كُنْتَ بِاَرْضٍ قَـفْرٍ اَوْ فَلَاةٍ فَضَلَّتْ رَاحِلَــتُكَ فَدَعَوْتَهٗ رَدَّهَا عَلَـيْكَ

অর্থ: “হযরত আবূ জুরাই জাবির ইবনে সুলাইম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি একবার পবিত্র মদীনা শরীফ আসলাম। তখন আমি দেখতে পেলাম যে, একজন মহাসম্মানিত ব্যক্তিত্ব উনার তা’লীম-তালকীন, নির্দেশনা মুবারক অনুযায়ী মানুষ চলে থাকেন। তিনি যা বলেন, যা আদেশ-নির্দেশ মুবারক করেন সকলে হুবহু সেটাই আমল করেন। আমি বললাম, তিনি কোন মহাসম্মানিত ব্যক্তিত্ব? উনারা বললেন, (তিনি হচ্ছেন) মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। আমি ‘আলাইকাস সালাম’ ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! দুই বার বললাম। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আপনি ‘আলাইকাস সালাম’ বলবেন না, ‘আলাইকাস সালাম’ মৃত ব্যক্তিদের সম্বোধন। আপনি বলুন, ‘আস সালামু আলাইকা’। আমি (আস সালামু আলাইকা বললাম। তারপর) বললাম, আপনি কি মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম? তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, (হ্যাঁ) আমি ঐ মহাসম্মানিত রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যখন তুমি কোন বিপদে-আপদে, দুঃখ-দুর্দশায় পতিত হও তখন তুমি উনার নিকট দো‘আ করলে তিনি তোমার বিপদ-আপদ, দুঃখ-দূর্দশা দূর করে দেন। সুবহানাল্লাহ! যখন তোমার জমিনে ফসল হয় না, দূর্ভিক্ষ দেখা দেয়, তখন তুমি উনার নিকট দো‘আ করলে তিনি তোমার জমিতে ফসল ফলিয়ে দেন, দূর্ভিক্ষ দূর করে দেন। সুবহানাল্লাহ! যখন তুমি কোন জনমানবহীন শূন্য স্থানে, (খাল-বিল, নদী-নালা, সমুদ্রে,) নির্জন প্রান্তরে, মরুভূমিতে অথবা বনে, ঝোপ-ঝার, জঙ্গলে থাকো আর তোমার বাহন হারিয়ে যায় বা বাহন না থাকে, তখন তুমি উনার নিকট দো‘আ করলে তিনি তোমার বাহন ফিরিয়ে দেন, বাহনের ব্যাবস্থা করে দেন।” সুবহানাল্লাহ! (আবূ দাউদ শরীফ, আল কুনা’ ওয়াল আসমা’ ১/৫৫, আস সুনানুল কুবরা লিল বাইহাক্বী ১০/২৩৬, মেশকাত শরীফ, মিরকাত শরীফ ৪/১৩৪৪, জামী‘উল উছূল ১১/৭৪৬ ইত্যাদি)

উপরোক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ সহ আরো অসংখ্য পবিত্র বিশুদ্ধ হাদীছ শরীফ দ্বারা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কায়িনাতের সর্বত্র হাযির-নাযির।

সম্মানিত আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদাহ্ হচ্ছে- মহান আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত ইলিম মুবারক ও সম্মানিত কুদরত মুবারক দ্বারা সর্বত্র হাযির-নাযির। জাত হিসেবে নয়। আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইলিম মুবারক ও মু’জিযা শরীফ উনাদের মাধ্যমে এবং সম্মানিত নূর মুবারক ও সম্মানিত রহমত মুবারক হিসেবে কায়িনাতের সর্বত্র হাযির-নাযির এবং জাত হিসেবে যেকোনো সময়, যেকোনো স্থানে হাযির ও নাযির হতে পারেন। সুবহানাল্লাহ!

হাযির-নাযির সংক্রান্ত বিষয়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের ব্যাখ্যায় হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা উনাদের কিতাব সমূহে এ বিষয়ে বিভিন্ন বর্ণনা মুবারক উল্লেখ করেছেন। যেমন, হযরত আলী নূরুদ্দীন ইবনে বুরহানুদ্দীন হালাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন-

قُـلْتُ وَاَمَّا كَلَامُنَا وَالَّذِىْ نَـقُوْلُهٗ اِنْ شَاءَ اللهُ تَـعَالـٰى اِنَّ الْاَمْرَ كَمَا قَالَهُ الْـجَلَالُ السُّيُـوْطِـىُّ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَـيْهِ وَاَخَصُّ مِنْ ذٰلِكَ اَنَّ الَّذِىْ اَرَاهُ اَنَّ جَسَدَهُ الشَّرِيْفَ لَا يـَخْلُوْ مِنْهُ زَمَانٌ وَّلَا مَكَانٌ وَّلَا مَـحَلٌّ وَّلَا اِمْكَانٌ وَّلَا عَرْشٌ وَّلَا لَوْحٌ وَّلَا كُرْسِـىٌّ وَّلَا قَـلَمٌ وَّلَا بَـحْرٌ وَّلَا بَــرٌّ وَّلَا سَهْلٌ وَّلَا وَعْـرٌ وَّلَا بَــرْزَخٌ وَّلَا قَــبْـرٌ كَمَا اَشَرْنَا اِلَـيْهِ اَيْضًا. وَاَنَّهُ امْتَلَاَ الْكَوْنُ الْاَعْلـٰى بِهٖ كَاِمْتِلَاءِ الْكَوْنِ الْاَسْفَلِ بِهٖ وَكَاِمْتِلَاءِ قَــبْـرِهٖ بِهٖ فَـتَجِدُهٗ مُقِيْمًا فِـىْ قَــبْـرِهٖ طَائِفًا حَوْلَ الْـبَــيْتِ قَائِمًاۢ بَـيْـنَ يَـدَىْ رَبِّهٖ لِاَدَاءِ الْـخِدْمَةِ تَامَّ الْاِنْبِسَاطِ بِـاِقَامَتِهٖ فِـىْ دَرَجَةِ الْوَسِيْـلَةِ اَلَا تَـرٰى اَنَّ الرَّائِــيْـنَ لَهٗ يَـقَظَةً اَوْمَنَامًا فِـىْ اَقْصَى الْـمَغْرِبِ يُـوَافِقُوْنَ فِـىْ ذٰلِكَ الرَّائِـــيْـنَ لَهٗ كَذٰلِكَ فِـىْ تِلْكَ السَّاعَةِ بِعَـيْـنِهَا فِـىْ اَقْصَى الْـمَشْرِقِ فَمَتٰـى كَانَ كَذٰلِكَ مَنَامًا كَانَ فِـىْ عَالَـمِ الْـخَـيَالِ وَالْـمِثَالِ وَمَـتٰـى كَانَ يَــقْظَـةً كَانَ بِصِفَتَـىِ الْـجَمَالِ وَالْاِجْلَالِ وَعَلـٰى غَايَـةِ الْكَمَالِ كَمَا قَالَ الْقَائِلُ لَـيْسَ عَلَى اللهِ بـِمُسْتَــنْـكَرٍ. اَنْ يَّـجْمَعَ الْعَالَـمَ فِـىْ وَاحِدٍ

অর্থ: “আমি বলি, আমার যে বক্তব্য ইংশাআল্লাহ আমি তা ব্যক্ত করছি- নিশ্চয়ই আমার কথাও হযরত ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূত্বী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার অনুরূপ। তবে উনার কথার উপর আমার বিশেষ বক্তব্য এই যে- আমি এটা দেখতে পাচ্ছি যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত  মহাপবিত্র নূরুল মুজাসসাম মুবারক (মহাসম্মানিত মহাপবিত্র জিসিম মুবারক) থেকে কোনো সময় ও স্থান, কোনো আশ্রয় ও স্থিতি, সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক ও সম্মানিত লাওহ মুবারক, সম্মানিত কুরসী মুবারক ও সম্মানিত কলম মুবারক, পানি ও স্থল, যমীন ও আসমান, বারযাখ ও কবর কোন কিছুই খালি নেই। সুবহানাল্লাহ! এ বিষয়ের দিকে আমি আগেই ইশারা করেছি। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত মহাপবিত্র রওযা শরীফ উনাকে দিয়ে যেরূপ পরিপূর্ণ, নিশ্চয়ই ঠিক একইভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে দিয়ে পরিপূর্ণ আছে সৃষ্টির সর্বোচ্চভাগ ও সর্বনিম্নভাগ। সুবহানাল্লাহ! আপনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে উনার মহাসম্মানিত  মহাপবিত্র রওযা শরীফ-এ অবস্থানকারীরূপে যেমন পাবেন, অনুরূপ পাবেন সম্মানিত বাইতুল্লাহ শরীফ উনার চারিদিকে তাওয়াফকারীরূপে, তেমনি পাবেন মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মুখে ছানা-ছিফত মুবারক করা অবস্থায় উপস্থিত থাকতে, আবার সম্মানিত দরজায়ে উসীলা মুবারক-এ পরিপূর্ণ সন্তুষ্টি মুবারক উনার সাথে অবস্থান মুবারক করতে। সুবহানাল্লাহ! আপনি কি একথা জানেন না যে, একই সময়ে একই সাথে পৃথিবীর সুদূর পশ্চিমপ্রান্তের কতক লোক এবং সুদূর পূর্বপ্রান্তের কতক লোক নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে স্বপ্নে অথবা জাগ্রত অবস্থায় দেখে থাকেন? সুবহানাল্লাহ! স্বপ্নের দ্বারা এরূপ হলে আলমে খেয়াল ও আলমে মেছালের মাধ্যমেই হয়ে থাকে। আর জাগ্রত অবস্থায় হলে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত মহাপবিত্র জামালী এবং মহাসম্মানিত মহাপবিত্র জালালী ছিফত মুবারকসহ হয়ে থাকে। এটা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত চূড়ান্ত কামালিয়াত মুবারক উনার বহিঃপ্রকাশ মুবারক। সুবহানাল্লাহ! যেমন একজন বুযূর্গ ব্যক্তি বলেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি যদি একের মধ্যে সারা বিশ্বকে জমা করেন, উনার অসীম শক্তি মুবারক উনার তুলনায় তা আদৌ বিস্ময়কর ব্যাপার নয়।” সুবহানাল্লাহ! (তা’রীফু আহলিল ইসলামি ওয়াল ঈমান বিআন্না মুহাম্মাদান ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম লা ইয়াখলূ মিনহু যামানুন ওয়ালা মাকান, হাক্বীক্বতে মুহম্মদী ও মীলাদে আহমদী ১৪০-১৪১, মুন্তাহাস সূল ‘আলা ওয়াসায়িলিল উছূল ৪/৩৬১)

সুপ্রসিদ্ধ ‘মাজমাউল বারাকাত’ গ্রন্থে হযরত শায়েখ আব্দুল হক মুহাদ্দিছ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেছেন-

وی صلی اللہ علیہ وسلم بر احوال واعمال امت مطلع است بر مقربان وخاصان درکاہ خود مفیض وحاضر وناظر است

অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজ উম্মতের যাবতীয় অবস্থা ও আমল সম্পর্কে অবগত এবং উনার মহান দরবারে উপস্থিত সকলকেই ফয়েজ প্রদানকারী এবং তিনি ‘হাযির ও নাযির’।” সুবহানাল্লাহ!

হযরত মোল্লা আলী ক্বারী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ‘শরহুশ শিফা শরীফ’ উনার মধ্যে বলেছেন-

لِاَنَّ رُوْحَهٗ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَاضِرٌ فِـىْ بُيـُـوْتِ اَهْلِ الْاِسْلَامِ

অর্থ: “ নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত মহাপবিত্র নূরুল আমর মুবারক (মহাসম্মানিত মহাপবিত্র রূহ মুবারক) অর্থাৎ তিনি মুসলমানদের ঘরে ঘরে হাযির বা উপস্থিত।”  সুবহানাল্লাহ!

হযরত ইমাম গাজ্জালী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন-

سَلِّمْ عَلَـيْهِ اِذَا دَخَلْتَ فِـى الْـمَسْجِدِ فَاِنَّهٗ صَلَّى اللهُ عَلَـيْهِ وَسَلَّمَ يَـحْضُـرُ فِـى الْمَسْجِدِ

অর্থ: “আপনি যখন পবিত্র মসজিদ সমূহে প্রবেশ করবেন তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সালাম দিবেন। কারণ তিনি পবিত্র মসজিদ সমূহে হাযির আছেন।” সুবহানাল্লাহ!

উপরোক্ত দলীলভিত্তিক বর্ণনাসমূহ দ্বারা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন ইমামুল মুরসালীন খ¦াতামুন নাবিয়্যীন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কায়িনাতের সর্বত্র হাযির-নাযির। সুবহানাল্লাহ!

আহমদ উম্মু ছফওয়ান

রাজারহাট, কুড়িগ্রাম

 

সুওয়াল: নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হযরত আব্বাজান আলাইহিস সালাম এবং উনার মহাসম্মানিতা হযরত আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনাদের শ্রেষ্ঠত্ব ও বৈশিষ্ট্য মুবারক পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের বর্ণনা থেকে জানতে ইচ্ছুক।

জাওয়াব:  মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের ৩টি স্তর মুবারক। উনাদের মধ্যে প্রথম স্তর মুবারকের অন্তর্ভুক্ত হচ্ছেন সম্মানিত ওয়ালিদাই রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অথার্ৎ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হযরত আব্বাজান আলাইহিস সালাম এবং উনার মহাসম্মানিতা হযরত আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনারা। সুবহানাল্লাহ!

হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সৃষ্টি এবং মনোনীত হওয়ার বিষয়টি সম্পর্কে পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

إِنَّـمَا يُرِيْدُ اللهُ لِيُذْهِبَ عَنْكُمُ الرِّجْسَ أَهْلَ الْبَيْتِ وَيُطَهِّرَكُمْ تَطْهِيْرًا

অর্থ: “হে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম! নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি চান আপনাদের থেকে সমস্ত প্রকার অপবিত্রতা দূর করে আপনাদেরকে পবিত্র করার মতো পবিত্র করতে। অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনাদেরকে পবিত্র করার মতো পবিত্র করেই সৃষ্টি মুবারক করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৩)

এ প্রসঙ্গে মহাপবিত্র হাদীছে কুদসী শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার মহাসম্মানিত হাবীব ও মাহবূব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে উদ্দেশ্য মুবারক করতঃ ইরশাদ মুবারক করেন-

فَخَلَقْتُكَ وَاَهْلَ بَيْتِكَ مِنَ الْقِسْمِ الْاَوَّلِ

অর্থ: “আমি আপনাকে এবং আপনার মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে প্রথম ভাগ পবিত্র নূর মুবারক দ্বারা অর্থাৎ মহাপবিত্র একই নূর মুবারক থেকে সৃষ্টি মুবারক করেছি।” সুবহানাল্লাহ! (নুয্হাতুল মাজালিস, আল বারাহীন)

অথার্ৎ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা একই পবিত্র নূর মুবারক থেকে সৃষ্টি। সুবহানাল্লাহ!

পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ اَنَسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَـحْنُ اَهْلُ بَيْتٍ لَّا يُقَاسُ بِنَا اَحَدٌ

অর্থ: “হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমরা হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। আমাদের সাথে অন্য কাউকে ক্বিয়াস বা তুলনা করা যাবে না।” (দায়লামী শরীফ ৪/২৮৩, জামি‘উল আহাদীছ ২২/২১৯, কানযুল উম্মাল ১২/১০৪, জাম‘উল জাওয়ামি’ ১/২৪৯৫০, যখায়েরুল ‘উক্ববাহ ফী মানাক্বিবে যাওইল কুরবা লিমুহিব্বে ত্ববারী ১/১৭, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১১/৭ ইত্যাদি)

পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

وَتَـقَلُّبَكَ فِى السّٰجِدِيْنَ

অর্থ: “(আমার মহাসম্মানিত হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! মহান আল্লাহ পাক) তিনি আপনাকে সিজদাকারীগণ উনাদের মাধ্যমে স্থানান্তরিত করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা শুআরা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ২১৯)

পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

لَـمْ اَزَلْ اَنْقُلُ مِنْ اَصْلَابِ الطَّاهِرِيْنَ اِلٰى اَرْحَامَ الطَّاهِرَاتِ

অর্থ : “আমি সর্বদা পূত-পবিত্র পিতা-মাতা উনাদের মাধ্যমেই স্থানান্তরিত হয়েছি।” সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে কবীর- ১৩/৩৯)

তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-

لَـمْ يَلْتَقِ اَبَوَىْ قَطُّ عَلٰى سِفَاحٍ

অর্থ : “আমার পিতা-মাতা (পূর্বমাতা-পিতা) কেউই কখনও কোন অন্যায় ও অশ্লীল কাজে জড়িত হননি।” (কানযুল উম্মাল শরীফ, ইবনে আসাকীর, বারাহিনে  কাতিয়াহ)

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আব্বাজান-হযরত আম্মাজান আলাইহিমাস সালাম উনাদের বে-মেছাল শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক প্রসঙ্গে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন-

عَنْ حَضْرَتْ طَلْقِ بْنِ عَـلِــىٍّ رَضِىَ اللهُ تَـعَالـٰى عَنْهُ قَالَ سَـمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَـقُوْلُ لَوْ اَدْرَكْتُ وَالِدَىَّ اَوْ اَحَدَهُـمَا وَاَنَا فِىْ صَلَاةِ الْعِشَاءِ وَقَدْ قَـرَاْتُ فِيْهَا بِفَاتِـحَةِ الْكِتَابِ تُـنَادِىْ يَا سَيِّدُنَا مُـحَمَّدٌ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَاَجَبْـتُـهَا لَبَّـيْكِ

অর্থ: “হযরত ত্বলক্ব ইবনে আলী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি শুনেছি, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, যদি আমি আমার মহাসম্মানিত হযরত আব্বা আলাইহিস সালাম উনাকে এবং মহাসম্মানিত হযরত আম্মা আলাইহাস সালাম উনাকে অর্থাৎ উনাদের দু’জনকে অথবা উনাদের দু’জনের একজনকে দুনিয়ার যমীনে পেতাম, আর আমি সম্মানিত ইশার নামাযে (ফরয নামায) দাঁড়িয়ে পবিত্র সূরা ফাতিহা শরীফ পাঠ করতে থাকতাম। এমতাবস্থায় উনারা যদি আমাকে নাম মুবারক বলে আহ্বান করতেন তাহলে অবশ্যই ওই অবস্থা থেকেই (নামায ছেড়ে দিয়ে) আমি উনাদের আহ্বান মুবারকে সাড়া দিয়ে ইরশাদ মুবারক করতাম লাব্বাইক অথার্ৎ আমার মহাসম্মানিত আব্বাজান আলাইহিস সালাম! আমার মহাসম্মানিতা আম্মাজান আলাইহাস সালাম! আমি উপস্থিত।” সুবহানাল্লাহ!

অপর বর্ণনায় এসেছে-

لَوْ دَعَانِىْ وَالِدَىَّ اَوْ اَحَدُهُـمَا وَاَنَا فِى الصَّلَاةِ لَاَجَبْـتُهٗ

অর্থ: “যদি আমার মহাসম্মানিত হযরত আব্বা আলাইহিস সালাম তিনি এবং হযরত আম্মা আলাইহাস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারা দু’জন অথবা উনাদের দু’জনের একজন আমাকে সম্মানিত নামায (ফরয নামায) আদায় করা অবস্থায় আহ্বান মুবারক করতেন, তাহলে আমি অবশ্যই ওই অবস্থায় থেকেও (নামায ছেড়ে দিয়ে) উনাদের আহ্বান মুবারকে সাড়া দিতাম।” সুবহানাল্লাহ! (শুয়াবুল ঈমান ১০/২৮৪, দায়লামী শরীফ ৩/৩৪৫, জামিউল আহাদীছ ১৮/৭৪, কাশফুল খফা ২/১৬০, আল মাক্বাছিদুল হাসানাহ ১/৫৫১, কানযুল উম্মাল ১৬/৪৭০, জামউল জাওয়ামি’ ১৬৮/১৩, মাসালিকুল হুনাফা ফী হুকমি ঈমানি ওয়ালিদাইল মুছত্বফা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ৩৭ পৃষ্ঠা, আল হাওই শরীফ ২/২৮১ ইত্যাদি)

উপরোক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ এবং পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের মাধ্যমে প্রতিভাত হয়েছে যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হযরত আব্বাজান আলাইহিস সালাম উনার এবং মহাসম্মানিত হযরত আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক এবং পবিত্রতা মুবারক কত বেমেছাল ও সীমাহীন। সুবহানাল্লাহ!

 

সাইয়্যিদাহ ত্বাক্বিয়াহ আহমদ

রাজারবাগ শরীফ, ঢাকা

 

সুওয়াল: হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা কতজন ছিলেন? পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের আলোকে উনাদের শ্রেষ্ঠত্ব ও বৈশিষ্ট্য মুবারক জানিয়ে বাধিত করবেন।

জাওয়াব: মালিকাতুদ দুন্ইয়া ওয়াল আখিরাহ, মালিকাতুল জান্নাহ, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, আল মুতহ্হারাহ, আল মুতহ্হিরাহ, নূরে মুকার্রমাহ, হাবীবাতুল্লাহ হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা ছিলেন সর্বমোট ১৩ জন। উনাদের মধ্যে দু’জন অথার্ৎ হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম এবং হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছানিয়াহ আশার ক্বিবতিয়্যাহ আলাইহাস সালাম উনারা ছিলেন কুমারী। আর বাকী এগারো জন ছিলেন অকুমারী। উনারা সকলেই স্বাধীন ছিলেন। কেউই বাঁদী বা দাসী ছিলেন না। এটা বিশ্বাস করা প্রত্যেকের জন্য ফরয। এর বিপরীত আক্বীদা পোষণ করা গোমরাহী ও কাট্টা কুফরী।

হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা সৃষ্টির কারো মতো নন। উনাদের মেছাল বা দৃষ্টান্ত উনারা নিজেরাই। মহাসম্মানিত হাবীব, মাহবূব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানেই উনারা সম্মানিত ও পবিত্র এবং উনার পরেই উনাদের মর্যাদা বা শ্রেষ্ঠত্ব। সুবহানাল্লাহ!

মূলতঃ কায়িনাত মাঝে মহাসম্মানিত হাবীব, মাহবূব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সমকক্ষ যেরূপ কেউ নেই তদ্রƒপ হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের সমকক্ষও কেউ নেই। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজেই ইরশাদ মুবারক করেন-

يَا نِسَآءَ النَّبِىِّ لَسْتُنَّ كَاَحَدٍ مِّنَ النِّسَآءِ

অর্থ: নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিতা আযওয়াজে মুতহ্হারাত হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম! আপনারা কোন মহিলাদের মতো নন। সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৩২)

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, উম্মু রূহিল্লাহ হযরত মারইয়াম আলাইহাস সালাম উনার সম্পের্ক পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

لَيْسَ الذَّكَرُ كَالْاُنْثٰى

 

৯হত

অর্থাৎ, তিনি এমন এক সম্মানিতা মহিলা উনার সমকক্ষ কোন পুরুষও নেই। সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৬)

কিন্তু পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ উনার ৩২ নং পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের শ্রেষ্ঠত্ব মুবারক যখন ঘোষণা করা হলো তখন প্রতিভাত হলো যে, হযরত উম্মু রূহিল্লাহ আলাইহাস সালাম তিনি সহ কোন মহিলা-ই হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের সমকক্ষ নেই। আর না থাকাটাই স্বাভাবিক। কেননা হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা হচ্ছেন মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত। উনাদের সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ اَنَسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَـحْنُ اَهْلُ بَيْتٍ لَّا يُقَاسُ بِنَا اَحَدٌ.

অর্থ: “হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমরা মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। আমাদের সাথে কারো ক্বিয়াস বা তুলনা করা যাবে না।” সুবহানাল্লাহ! (দায়লামী ৪/২৮৩, জামি‘উল আহাদীছ ২২/২১৯, কানযুল উম্মাল ১২/১০৪

স্মরণীয় যে, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা শুধুমাত্র যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ব্যতীত এবং উনার মহাসম্মানিত হাবীব ও মাহবূব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ব্যতীত কায়িনাতবাসী সকলেরই মহাসম্মানিতা মাতা আলাইহিন্নাস সালাম। অথার্ৎ সৃষ্টিরাজী সকলের জন্য মহাসম্মানিত রসূল এবং মহাসম্মানিত পিতা হচ্ছেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি। আর সৃষ্টিরাজী সকলের জন্য মহাসম্মানিতা মাতা বা মা হচ্ছেন হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা। এ মর্মে পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

اَلنَّبِـىُّ اَوْلـٰى بِالْمُؤْمِنِيْـنَ مِنْ اَنْفُسِهِمْ وَاَزْوَاجُهٗۤ اُمَّهٰتُهُمْ.

অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং উনার মহাসম্মানিতা ‘আযওয়াজুম মুত্বহ্হারাত’ অথার্ৎ হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা হচ্ছেন মু’মিনদের নিকট উনাদের জানের চেয়ে অধিক প্রিয়। (নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন মু’মিনদের মহাসম্মানিত পিতা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং উনার মহাসম্মানিতা ‘আযওয়াজুম মুত্বহ্হারাত’ (হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম) উনারা হচ্ছেন সমস্ত মু’মিনদের মহাসম্মানিতা মাতা আলাইহিন্নাস সালাম।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৬)

স্মরণীয় যে, বর্তমানে হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের একক এবং অদ্বিতীয় ক্বায়িম-মাক্বাম হচ্ছেন হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!

মুহম্মদ আব্দুর রহমান

মাহিগঞ্জ, রংপুর

সুওয়াল: ২০০ টাকার মাল কত টাকায় বিক্রি করা যাবে? ৪০০ টাকায় বিক্রি করা যাবে কি? কেউ বলেছেন, ৫ টাকা দামের জিনিস ১০ টাকায় বিক্রয় করা যাবে, তবে ১১ টাকায় যাবে না। এটা কতটুকু সঠিক?

জাওয়াব: এই কথাটা শুদ্ধ না। দুশ টাকার মাল আনতে কত টাকা খরচ হয়েছে, কত পরিশ্রম হয়েছে ইত্যাদি সব দেখতে হবে। এটা খালি টাকা দেখলে হবে না?  একটা প্রেসের মালিককে আমি ডাকিয়েছিলাম। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, কিভাবে তারা দাম রাখে কিতাবের। সে আমাকে হিসাব দিল। কাগজটা ছাপাতে লাগে পাঁচ টাকা, আবার লেখককে দিতে হয় পাঁচ টাকা, আর আমার এখানে খরচ আছে পাঁচ টাকা, পনের টাকা মিনিমাম খরচ। তারপরে আমার সংসার চলবে কিভাবে, তারজন্য আরও পাঁচ টাকা। তাহলে কাগজের দাম পাঁচ টাকা খরচ পরলে আমার বিশ টাকা বিক্রি করতে হবে। আমি চলব কিভাবে, আমারতো এটা চালাতে হবে। দুইশত টাকার মাল আনতে খরচ কি সেটা দেখতে হবে। সব মিলে যদি দুইশত টাকা হয় তাহলে সেই হিসেবে তার কত টাকা লাভ করলে তার প্রতিষ্ঠানটা চালু রাখা সম্ভব হবে, কতটুকু খরচ, অর্থাৎ আয় ব্যয় হিসাব করে বিক্রয় মূল্য নির্ধারণ করতে হবে। অতএব জালিম হওয়াও যাবে না আবার মাজলূম হওয়াও যাবে না।

শেখ মুহম্মদ মা’শুক আল হিকাম ইবনে মাসুম

বগুড়া

সুওয়াল: নাবালক ছেলের আযান-ইকামত শুদ্ধ হবে কি?

জাওয়াব: সাধারণত নাবালক ছেলে যদি বুঝদার হয়, সব বুঝে, নামাযের সময় ইত্যাদি তাহলে তার আযান-ইক্বামত শুদ্ধ হবে। আর বুঝদার না হলে তার দ্বারা আযান-ইক্বামত না দেয়াই উচিৎ। যদি বুঝদার হয়, সব বুঝে, সমঝ আছে তাহলে সে দিতে পারে।  আর না হলে না দেয়াই ভালো।

আর মসজিদে ছোট ছেলে বা বাচ্চাদের আনার কয়েকটি নিয়ম আছে। যদি খুব ছোট হয় সে যখন তখন ইস্তিঞ্জা করতে পারে, হৈ-চৈ, চিল্লা চিল্লি করতে পারে তাহলে, তাকে আনা ঠিক হবে না। যদি বুঝদার হয়, সে নামায পড়া না বুঝলেও হৈ চৈ করবে না, ঠিক ঠাক মত থাকবে, বসিয়ে বা দাঁড় করিয়ে দিলে সেভাবেই থাকবে, তাহলে তাকে আনা যেতে পারে। আর যারা নামাযের উপযুক্ত হয়েছে, সাত, আট বছর হয়ে গেছে, তাদের জন্য তো কোন অসুবিধা নেই। আর ছোট বাচ্চা আনলে সে কান্নাকাটি করলো, চিৎকার করলো, হৈচৈ করলো, একজনের জন্য দশ জনের নামাযের ফযীলত নষ্ট হয়ে গেল।  এমন ছোট বাচ্চা আনা ঠিক হবে না। আর যাদের নামাযের বয়স হয় নাই, পাঁচ বছর বয়স হয়েছে সে হৈচৈ করবে না, সে চুপ-চাপ থাকবে, তাকে আনা যেতে পারে।

মুহম্মদ ইমরান

পলাশ বাড়ী, গাইবান্ধা।

  সুওয়াল: কেউ প্রথম রাকায়াতে একটি সূরা মিলিয়ে দ্বিতীয় রাকায়াতে সেই সূরার পূর্বের একটি সূরা মিলানো শুরু করে এবং এক আয়াত শরীফ বা আংশিক পড়ে ফেলে। অতঃপর তার স্মরণ হয় যে, সে পূর্বের সূরা পড়ছে।  এক্ষেত্রে সে কি সেই সূরা শরীফ-ই পড়ে ফেলবে, নাকি সেটা বাদ দিয়ে পরের একটি সূরা শরীফ পড়বে?  নামাযে সূরা মিলানোর তারতীব আয়াত শরীফ হলে বড়-ছোট এর পরিমাণ কতটুকু হবে? এ বিষয়ে জানতে বাসনা রাখি।

জাওয়াব: আসলে নিয়ম হলো তরতীব রক্ষা করা। সূরা ফাতিহা শরীফ পড়ে সূরা ফীল শরীফ অর্থাৎ أَلَمْ تَرَ শরীফ পাঠ করলো, এরপরে সে সূরা কুরাইশ অথার্ৎ লিই-লা-ফি কুরইশ لِإِيْلَافِ قُرَيْشٍ  পাঠ করবে। এখন সে যদি তার আগেরটা পড়ে, ভুলে শুরু করে তাহলে পড়ে ফেলুক। তরতীব রক্ষা করা সুন্নত। তরতীবের খেলাফ করা হচ্ছে মাকরূহ তানযিহী। সূরা শরীফ মিলানোর ক্ষেত্রে কমপক্ষে বড় একটি আয়াত শরীফ পাঠ করা অথবা ছোট তিনটি আয়াত শরীফ পাঠ করা। বড় আয়াত শরীফ উনার পরিমাণ হচ্ছে আঠারো অক্ষর বিশিষ্ট হতে হবে। আর ছোট আয়াত শরীফ উনার পরিমাণ হচ্ছে ছয় অক্ষর বিশিষ্ট হতে হবে। অথার্ৎ এক আয়াত শরীফ হোক অথবা দুই বা তিন আয়াত শরীফ হোক তা কমপক্ষে আঠারো অক্ষর বিশিষ্ট হতে হবে।

আহমদ ছিদ্দীক্বা মেহরীন বিনতে আব্দুর রহমান

মুহব্বতপুর, বগুড়া

 

সুওয়াল: নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সূর্যের তাপে গরম করা পানি দিয়ে ওযূ করতে বা গোসল করতে নিষেধ করেছেন এবং ইরশাদ মুবারক করেছেন- তাতে শ্বেতরোগের সৃষ্টি হয়। এই বিষয়টা কতটুকু সত্য? দয়া করে জানাবেন।

জাওয়াব: এটা সত্য। এটা পবিত্র হাদীছ শরীফে রয়েছে। এ বিষয়ে অনেক পবিত্র হাদীছ শরীফ রয়েছে। এটা নিষেধ করা হয়েছে। আসলে সাধারণ মানুষ তারা মাসয়ালা জানে না। তারা সূর্যের তাপের মধ্যে পানি গরম করে সেই পানি দ্বারা বাচ্চাদের গোসল করায়। এটা না করে চুলাতে পানি গরম করে সেই পানি দ্বারা বাচ্চাদের গোসল করাতে হবে। আর গরম পানি দিয়ে ওযূ করতে চাইলে সেক্ষেত্রেও চুলাতে বা আগুনের সাহায্যে পানি গরম করে ওযূ করতে হবে।

মুহম্মদ আনোয়ারুল ইসলাম (সোহেল)

চাঁদপুর

 সুওয়াল: আমরা যারা মাদরাসায় পড়িনি। আমরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে পূর্ববর্তী (আউলিয়া কিরাম), আলিম-উলামা উনারা কারা হক বা কারা না-হক সেটাতো জানিনা। পূর্ববর্তী যারা হক্কানী আলিম-উলামা উনাদের এবং না-হক কথিত আলিম-উলামাদের যদি তালিকা বা নাম জানা থাকতো তাহলে বিষয়টা সহজ হয়তো।

জাওয়াব: এখন তো আখিরী যামানা বিষয়টা সহজ হয়ে গেছে, সহজ হয়েছে এইভাবে, এখন হক্কানী আলিম চেনার জন্য যেটা আমরা বলি, প্রথম হচ্ছে, যে লোকটা হক্কানী দাবি করে, আলিম দাবি করে বা ইসলামী চিন্তাবিদ দাবি করে, এক নম্বর সে ছবি তুলে কি-না, দুই নম্বর সে বেপর্দা হয় কি-না, তিন নম্বর সে কোন দল মত করে কি-না এবং এই বিষয়ে সে সংশ্লিষ্ট কি-না, এই তিনটা দেখলে যথেষ্ট। এখন তো সহজ হয়ে গেছে। নামের তালিকা কত দিবে মানুষ? তালিকার তো শেষ নেই। হাজার হাজার আছে উলামায়ে সূ। এদের সব তালিকা দেয়া তো কঠিন। তবে সহজ হচ্ছে, এই তিনটা লক্ষণ দেখতে হবে। এছাড়া হাদীছ শরীফে যেটা বলা হয়েছে, মহান আল্লাহ পাক তিনি তো বলেছেন  كُونُوْا مَعَ الصَّادِقِيْنَ ছদিকীনদের সঙ্গী হয়ে যাও। এটা হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত হাদীছ শরীফে রয়েছে, তিনি বলেছেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ মুবারক করেন-

مَنْ ذَكَّرَكُمُ اللهَ رُؤْيَتُهٗ ، وَزَادَ فِيْ عِلْمِكُمْ مَنْطِقُهٗ ، وَذَكَّرَكُمْ بِالاٰخِرَةِ عَمَلُهٗ

অথার্ৎ যাকে দেখলে মহান আল্লাহ পাক উনার কথা স্মরণ হয়, যার কথা শুনলে দ্বীনি ইলিম বৃদ্ধি হয় এবং যার আমল দেখলে আখিরাতের বা পরকালের আমল করতে ইচ্ছে হয়। এমন গুণসম্পন্ন ব্যক্তিই হচ্ছেন ছদিক্বীন বা আল্লাহওয়ালা। উনার বা উনাদের ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করার জন্য আদেশ মুবারক করা হয়েছে।

মুহম্মদ আইয়ুব আলী

নূরানীবাদ

 

সুওয়াল: পাম তেল একটি বালতিতে ছিল, রৌদ্রে গলাতে দেয়া হয়েছিল, পামতেল গলে তরল হয়ে গিয়েছিল। হটাৎ করে একটি কুকুর এসে মুখ দেয়। এখন এই পাম তেল কি হুকুম?

জাওয়াব: সেটাতো নাপাক হয়ে গেছে। কুকুর মুখ দিলে তো নাপাক হয়ে যায়, সেটা তো পাক থাকবে না। পাক করার কোন ব্যবস্থা নেই। সেটা খাওয়া বা ব্যবহার করা যাবে না।

মুহম্মদ শহীদুল্লাহ

সদর, চাঁদপুর

সুওয়াল: মাটির প্লেটে খাওয়া সুন্নত এ বিষয়ে দলীল আছে কি?

জাওয়াব: মাটির প্লেটে খাওয়া সুন্নত। এর দলীল রয়েছে। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ خَوْلَةَ بِنْتِ قَيْسِ بْنِ فَهِدٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهَا وَكَانَتِ امْرَأَةَ حَمْزَةَ بْنِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ عَلَيْهِ السَّلَامُ فَقُتِلَ عَنْهَا فَجَاءَتْ نَبِيَّ اللّٰهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَزُوْرُهٗ قَالَتْ يَا نَبِيَّ اللّٰهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَدْ كُنْتُ اُحِبُّ اَنْ اَلْقَاكَ فَاَسْاَلُكَ عَنْ شَيْءٍ ذُكِرَ لِيْ اِنَّكَ تَذْكُرُ اَنَّ لَكَ حَوْضًا مَا بَيْنَ كَذَا اِلٰى كَذَا فَقَالَ لَهَا اَجَلْ وَاَحَبُّ النَّاسِ اِلَيَّ اَوْ اَحَبُّ النَّاسِ اِلَيَّ اَنْ يَرِدَهٗ قَوْمَكِ فَقَالَتْ فَقَرَّبْتُ لَهٗ عَصِيْدَةً فِيْ تَوْرٍ فَلَمَّا وَضَعَ يَدَهٗ فِيْهَا اِحْتَرَقَتْ فَقَالَ حَسِّ ثُمَّ قَالَ اِنَّ ابْنَ اٰدَمَ عَلَيْهِ السَّلَامُ اِنْ اَصَابَهٗ حَرٌّ قَالَ حَسِّ وَاِنْ اَصَابَهٗ بَرْدٌ قَالَ حَسِّ.

অর্থ: হযরত খাওলাহ বিনতে ক্বইস ইবনে ফাহিদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা উনার থেকে বর্ণিত। আর তিনি ছিলেন সাইয়্যিদুনা হযরত সাইয়্যিদুশ শুহাদা (হামযা) আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিতা আহলিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা। অতঃপর সাইয়্যিদুনা হযরত সাইয়্যিদুশ শুহাদা (হামযা) আলাইহিস সালাম তিনি যখন শাহাদাতী শান মুবারক গ্রহণ করেন, অর্থাৎ সম্মানিত শাহাদাতী শান মুবারক গ্রহণ করার মাধ্যমে উনার থেকে বিদায় গ্রহন করেন, তখন একদিন হযরত খাওলাহ বিনতে ক্বইস ইবনে ফাহিদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত খিদমত মুবারকে আগমন করেন উনার সাথে সাক্ষাত মুবারক করার জন্য। তিনি এসে বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ! ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি আপনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র যিয়ারত মুবারক লাভ করতে চাই। এবং আপনাকে এমন বিষয়ে জিজ্ঞাসা করতে চাই যা আমার নিকট বর্ণনা করা হয়েছে। তা হচ্ছে, নিশ্চয়ই আপনি ইরশাদ মুবারক করেছেন যে, আপনার এমন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাউজে কাউছার মুবারক রয়েছেন যার দূরত্ব অমুক জায়গা থেকে অমুক জায়গা পর্যন্ত। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাকে ইরশাদ মুবারক করেন, হ্যাঁ, মানুষের মধ্যে আমার নিকট যিনি অধিক প্রিয় অথবা তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন আপনার সম্প্রদায়ের মাঝে যিনি আমার নিকট অধিক প্রিয় তিনি সেখানে অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাউজে কাউছার মুবারকে উপস্থিত হবেন। অতঃপর হযরত খাওলাহ বিনতে ক্বইস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা তিনি বলেন, আমি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খিদমত মুবারকে একটি মাটির পাত্রে (সম্মানিত সুন্নতী খাবার) আছীদা (যব এবং ঘি দ্বারা তৈরীকৃত খাদ্য) পেশ করলাম। যখন তিনি সম্মানিত আহার মুবারক করার জন্য খাবার মুবারক-এ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মাগফিরাত মুবারক (হাত মুবারক) রাখলেন তখন তিনি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মাগফিরাত মুবারকে গরম অনুভব করলেন। অর্থাৎ খাবার মুবারক তখনও গরম ছিলো। অত:পর তিনি হাস্সি শব্দ উচ্চারণ মুবারক করে ইরশাদ মুবারক করেন, নিশ্চয়ই আদম সন্তান যখন কোন গরম অনুভব করে তখন সে বলে “হাস্সি”। আবার যখন কোন ঠান্ডা অনুভব করে তখনও সে বলে ‘হাস্সি’। (আল মু’জামুল কাবীর লিত ত্ববারানী-১৭তম খণ্ড ৪৭০ পৃষ্ঠা, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ নং ২০০৫৬)

উক্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত تَوْرٌ শব্দের ব্যাখ্যায় বিখ্যাত মুহাদ্দিছ মুহম্মদ ইবনে ইউসুফ ছালেহ আশ শামী রহমতুল্লাহি আলাইহি (বিছাল শরীফ ৯৪২ হিজরী) উনার প্রসিদ্ধ সীরাতগ্রন্থ “সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ফী সীরাতি খইরিল ইবাদ” গ্রন্থের ৯ম খণ্ড ৪৮১ পৃষ্ঠায় উল্লেখ রয়েছে-

اَلتَّوْرُ: بِـمُثَنَّاةٍ فَوْقِيَّةٍ اِنَاءٌ مِّنْ مَدَرٍ.

অর্থ: اَلتَّوْرُ (শব্দের تَاء হরফ উনার) উপরে দুই নোক্তা বা ফোঁটা দিয়ে। তা এমন পাত্র যা মাটি থেকে তৈরীকৃত।

 

মুহম্মদ আব্দুল করীম

নূরানীগঞ্জ

 সুওয়াল: মহান আল্লাহ পাক এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের হাকীকী দায়েমী রেযামন্দি, সন্তুষ্টি, মুহাব্বত, মা’রিফত, নিছবত, কুরবত মুবারক পাওয়ার জন্য তো যিকির আছে, সবক আছে। সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার এবং সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার হাকীকী দায়েমী ছোহবত, রেযামন্দী, সন্তুষ্টি, মুহাব্বত, মা’রিফত, নিছবত, কুরবত মুবারক পাওয়ার জন্য কি আলাদা কোনো যিকির বা আমল আছে? জানতে বাসনা রাখি।

জাওয়াব: ছোহবত মুবারকের জন্য তো আলাদা আমল নেই, যিকির নেই। যিকির যেটা দেওয়া হয় সেটাই করতে হবে আর ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করতে হবে। আমলগুলো করতে হবে সুন্নত মুবারক অনুযায়ী। আর সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ মাহফিলে উপস্থিত থাকতে হবে। যতটুক সম্ভব। আমভাবে বলা হয়, বাইরে যারা দুইদিন দুইদিনতো কমপক্ষে ছোহবত ইখতিয়ার করতে হবে। পারলে সাত দিনই ছোহবত মুবারকে থাকবে অসুবিধার কি আছে। যদি কাজ না থাকে যত বেশী সম্ভব ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করবে। ছোহবত মুবারক ইখতিয়ারের জন্য আলাদা কোন আমল নেই। আমল হচ্ছে, সবকের কিতাবে যে সবকগুলি দেওয়া হয় সেগুলি করতে হবে। বা’দ ইশা বা’দ ফজর একশ একশ দুরূদ শরীফ, পাস-আনফাস যিকির জারী করতে হবে, সবক করতে হবে কমপক্ষে এক ঘন্টা। আর বেশি করলে ভালো। আর এরপর ছোহবত ইখতিয়ার করতে হবে এটা হলো মূল বিষয়।

মুহম্মদ মুনীরুল ইসলাম

পলাশ, নূরানীবাদ

 সুওয়াল: অনেক সময় দেখা যায়, আমরা কারও কথা ভাবছি অথবা তার কথা বলছি এমতাবস্থায় সেই ব্যক্তি উপস্থিত হলো আর ওমনি আমরা বলে থাকি “আপনি অনেক দিন বাঁচবেন!”এমনটা বলা কতটুকু শরীয়তসম্মত?

জাওয়াব: কারো বাঁচার জন্য দোয়া করতে পারে। উপস্থিত হলেই যে বাঁচতে হবে এটা শর্ত না। হঁ্যা আপনি আরো বাঁচবেন দোয়া করুক ভালো। এটার জন্য বাঁচতে হবে এটা শর্ত না। এটা আমভাবে মানুষের মধ্যে প্রচলিত আছে। মানুষ মনে করে তার নাম স্মরণ করলে, সে আসলে, সে অনেক দিন বাচঁবে। এটা শর্ত না। তবে দোয়া করাতো ভালো, অর্থাৎ দোয়া করুক সে, মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনার নেক হায়াত  দান বা দারাজ করুন। স্মরণ করামাত্র আপনি আসছেন।

আহমদ হুমায়রা নওরীন

মুহব্বতপুর, বগুড়া

 সুওয়াল: এক ছেলে ইসলামী শরীয়াহ অনুযায়ী তার পরিবারের অনুমতিবিহীন অবস্থায় বাল্যবিবাহ করেছে।  এমতাবস্থায়, কোন প্রকার আইনগত ডকুমেন্ট না থাকায় এই বিবাহ পরিবার তরফ থেকে মেনে নিতে অসম্মতি জানায়। পরিবারের প্রশ্ন, ছেলের আহালিয়ার মাতা (ছেলের শাশুড়ী) তিনি উনার আহাল বা স্বামীকে তালাক প্রদান করেন। যার কারণে ছেলের পরিবার এই বিষয়টি দৃষ্টিকটু মনে করছেন এবং এইসব যাবতীয় বিষয়ের উপর ভিত্তি করে ছেলের পরিবারবর্গ সকলেই ছেলেকে তার আহালিয়াকে তালাক প্রদান করতে চাপ প্রয়োগ করছে। এবং জোরপূর্বক অন্যত্র বিবাহ করাতে চাচ্ছে। কিন্তু ছেলে তার আহালিয়াকে তালাক প্রদান করতে অনিচ্ছুক। এমতাবস্থায়, ইসলামী শরীয়াত উনার সঠিক ফায়সালা জানার বাসনা রাখছি।

জাওয়াব: শরঈ ফায়সালা হচ্ছে, ছেলের শাশুড়ী কি করেছে এটা মূল বিষয় না। এখন যে মেয়েটাকে সে বিবাহ করেছে সে মেয়েটা যদি আল্লাহওয়ালী হয়ে থাকে তাহলে কোন সমস্যা নাই। তাকে তালাক দিবে কেন? এখন যদি শরঈ কোন ত্রুটি থাকে তখন তালাকের প্রশ্ন আসবে। আর যদি শরঈ কোন ত্রুটি না থাকে তাহলে তালাকের প্রশ্ন আসবে কেন? পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত রয়েছে, হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেছেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, এটা মেয়েদের জন্য বলা হয়েছে, কোন মেয়েকে বিবাহ করতে হলে চারটা ছিফত দেখতে হবে, তার মাল দেখতে হবে, তার জামাল বা ছূরত দেখতে হবে, তার নসব বা বংশ দেখতে হয়, তারপর দ্বীনদারী দেখতে হবে। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তোমরা দ্বীনদারীকে প্রাধান্য দিও। যদি দ্বীনদার হয় তাহলে তো তালাক দেয়ার প্রশ্ন আসে না। এখন যারা চাপ প্রয়োগ করতেছে এটাতো শরঈ কোন কারণে না। কাজেই এখানে তালাক দেয়ার কোন প্রশ্নই আসে না। এখন যদি মেয়ের মধ্যে শরীয়তের দৃষ্টিতে কোন ত্রুটি থাকে তাহলে সেটা চিন্তার বিষয়। কিন্তু যদি শরীয়তের দৃষ্টিতে কোন ত্রুটি না থাকে তাহলে তালাক দেয়াটা জায়িয হবে না। এটা মনে রাখতে হবে।

আহমদ মা’রূফা জান্নাত

নূরানীবাদ

  সুওয়াল: ইদানিং কিছু কথিত আলেম প্রচার করছে, সারাবিশ্বে এক দিনে রোযা ও ঈদ করতে হবে। এ বিষয়ে জানতে বাসনা রাখি।

জাওয়াব: এটাতো আমাদের পত্রিকায়  সুওয়াল আকারে গেছে, ফতওয়া আকারেও গেছে। একদিনে ঈদ করে কিভাবে? এটা যারা প্রচার করছে এদের আসলে ভৌগলিক কোন জ্ঞান নেই। পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের জ্ঞানও এদের নেই। সারা পৃথিবীতে একদিনে ঈদ হবে কি করে? কমপক্ষে ধরা হয় ১২ থেকে ১৪ ঘন্টা পার্থক্য পৃথিবীর এক মাথা থেকে আরেক মাথা পর্যন্ত। একদিকে সকাল আরেকদিকে সন্ধ্যা। যদি এ রকমই হয় তাহলে একসাথে ঈদ হবে কি করে? যারা চাঁদ দেখলো সন্ধ্যার সময় আরেকদিকে ফজরে মানুষ নাস্তা খাচ্ছে তখন সে রোযা রাখবে কি করে? তার ছলাতুত তারাবীহ হবে কখন? তারপর যারা রোযা রেখে রোযা ভাঙ্গলো কিন্তু আরেক জায়গায়তো রোযা ভাঙ্গার সময় নয় তখনতো তারা রোযা রেখেছে তখন তারা কি করবে? আসলে তাদের ভৌগলিক জ্ঞানের অভাবতো আছেই এর সাথে সাথে পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনার ইলিমেরও অভাব রয়েছে। পবিত্র কুরআন শরীফ এবং পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের মধ্যে কোথাও বলা হয় নি যে, একদিনে ঈদ করতে হবে, একদিনে রোযা রাখতে হবে। এটা বলা হচ্ছে, রোযা এবং ঈদের ব্যাপারটা পবিত্র হাদীছ শরীফে বলা হচ্ছে

صُوْمُوْا لِرُؤْيَتِهٖ وَأَفْطِرُوْا لِرُؤْيَتِهٖ

 “চাঁদ দেখে রোযা রাখো, চাঁদ দেখে ঈদ করো।” এখন যদি ২৯ তারিখে চাঁদ দেখা যায় তাহলে পরের দিন তাকে  রোযা রাখতে হবে। আর ঈদের চাঁদ দেখা গেলে ঈদ করতে হবে। আর যদি চাঁদ দেখা না যায়

فَإِنْ غُمَّ عَلَيْكُمْ فَأَكْمِلُوْا عِدَّةَ شَعْبَانَ ثَلَاثِيْنَ

“চাঁদ না দেখা গেলে ৩০ দিন পুরা করতে হবে।”

কাজেই ‘সারাবিশ্বে এক দিনে রোযা ও ঈদ করতে হবে’ এটা পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনার কোথাও নাই। এটা যারা বলে থাকে, তাদের আসলে দ্বীনি ইলিমও নেই, দুনিয়াবী ইলিমও নেই। এটা একটা তাদের অজ্ঞতা। তাদের ফতওয়া কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়। তারা সুস্পষ্ট গোমরাহীতে নিমজ্জিত।

মুহম্মদ আসিফুর রহমান

চট্টগ্রাম

 

সুওয়াল: জামায়াতে নামায আদায়কালে কাতারের ফাঁক বন্ধ করা কি? জানার আরজু করছি।

জাওয়াব: জামায়াতে নামায আদায়কালে কাতারের ফাঁক বন্ধ করাতো ওয়াজিব। ফাঁক রাখলেতো শয়তান প্রবেশ করে নামাযে ওয়াসওয়াসা দিবে। কাতারের ফাঁক বন্ধ করা, কাতার সোজা করা ওয়াজিব।

 

সুওয়াল-জাওয়াব

সুওয়াল-জাওয়াব বিভাগ

সুওয়াল-জাওয়াব

সুওয়াল-জাওয়াব

সুওয়াল-জাওয়াব