হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে (২৩১) ক্বানায়াত বা অল্পে তুষ্টির মাক্বাম উনার ফাযায়িল-ফযীলত

সংখ্যা: ২৭২তম সংখ্যা | বিভাগ:

আল্লামা মুফতী সাইয়্যিদ মুহম্মদ আব্দুল হালীম

পূর্ব প্রকাশিতের পর

ধন-সম্পদ, মান-সম্মান কম হোক কিংবা বেশি হোক তাতে মনোযোগী না হওয়া। বরং প্রতিটি ক্ষেত্রে মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার সম্মানিত রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের ফায়সালা মুবারকের প্রতি সন্তুষ্ট থাকা আবশ্যক।

পবিত্র হাদীছ উনার মধ্যে বর্ণিত আছে-

عَنْ حَضْرَتْ سَعْدٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ‏مِنْ سَعَادَةِ ابْنِ اٰدَمَ رِضَاهُ بِمَا قَضَى اللهُ لَه وَمِنْ شَقَاوَةِ ابْنِ اٰدَمَ تَرْكُهُ اسْتِخَارَةَ اللهِ وَمِنْ شَقَاوَةِ ابْنِ اٰدَمَ سَخَطُهُ بِـمَا قَضَى اللهُ لَه

অর্থ: হযরত সা’দ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আদম সন্তানের সৌভাগ্য হলো মহান আল্লাহ পাক উনার ফায়সালার উপর সন্তুষ্ট থাকা। আর আদম সন্তানের দুর্ভাগ্য হলো, মহান আল্লাহ পাক উনার কাছে কল্যাণ কামনা বর্জন করা। আর আদম সন্তানের এটাও দুর্ভাগ্য যে, মহান আল্লাহ পাক উনার ফায়সালার উপর অসন্তুষ্টি প্রকাশ করা। নাউযুবিল্লাহ! (আহমাদ শরীফ, তিরমিযী শরীফ, মিশকাত শরীফ)

اَوْحَى اللهُ تَعَالٰـى اِلٰـى حَضْرَتْ دَاو  دَ عَلَيْهِ السَّلَامُ يَا دَاو دُ عَلَيْهِ السَّلَامُ اِنِّـىْ وَضَعْتُ خَمْسَةً فِـىْ خَمْسَةٍ وَالنَّاسُ يَطْلُبُوْنَـهَا فِـيْ خَـمْسَةِ غَيْرِهَا فَلَا يَـجِدُوْنَـهَا وَضَعْتُ الْعِلْمَ فِـي الْـجُوْعِ وَالْـجُهْدِ وَهُمْ يَطْلُبُوْنَه  فِـي الشَّبَعِ وَالرَّاحَةِ فَلَا يَـجِدُوْنَه  وَوَضَعْتُ الْعِزَّةَ فِـىْ طَاعَتِـيْ وَهُمْ يَطْلُبُوْنَه  فِـيْ خِدْمَةِ السُّلْطَانِ فَلَا يَـجِدُوْنَه  وَوَضَعْتُ الْغِنٰـى فِـي الْقَنَاعَةِ وَهُمْ يَطْلُبُوْنَه  فِـيْ كَثْرَةِ الْـمَالِ فَلَا يَـجِدُوْنَه  وَوَضَعْتُ رِضَاىَ فِـيْ سَخَطِ النَّفْسِ وَهُمْ يَطْلُبُوْنَه  فِـىْ رِضَا النَّفْسِ فَلَا يَـجِدُوْنَه  وَوَضَعْتُ الرَّاحَةَ فِـى الْـجَنَّةِ وَهُمْ يَطْلُبُوْنَـهَا فِي الدُّنْيَا فَلَا يَـجِدُوْنَـهَا.

অর্থ: মহান আল্লাহ পাক হযরত দাউদ খলীফাতুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে সম্মানিত ওহী মুবারক করলেন, হে খলীফাতুল্লাহ আলাইহিস সালাম! আমি পাঁচটি নিয়ামতকে পাঁচটি স্থানে রেখেছি। মানুষ তা অন্য স্থানে তালাশ করে। কিভাবে তা পাবে। ১। আমি ক্ষুধা ও রিয়াজত- মাশাক্কাতের মধ্যে ইলিম ও হিকমতকে রেখেছি। মানুষ তা পরিতৃপ্ত হয়ে খাওয়া এবং আরাম আয়েশের মধ্যে তালাশ করে। কিভাবে তা পাবে? ২। আমি ইজ্জত-সম্মান-মর্যাদাকে আমার আনুগত্যের মধ্যে রেখেছি। মানুষ তা রাজা-বাদশার খেদমত ও আনুগত্যের মধ্যে তালাশ করে। কিভাবে তা পাবে? ৩। আমি অল্পে তুষ্টির মধ্যে বেনিয়াজী ও সচ্ছলতা রেখেছি। মানুষ তা সম্পদের প্রাচুর্যতার মধ্যে তালাশ করে। কিভাবে তা পাবে? ৪। আমি আমার সন্তুষ্টিকে নফসের বিরোধিতার মধ্যে রেখেছি। মানুষ তা নফসের সন্তুষ্টির মধ্যে তালাশ করে। কিভাবে তা পাবে? ৫। আমি আরাম-আয়েশকে জান্নাতে রেখেছি। মানুষ তা দুনিয়াতেই তালাশ করে। কিভাবে তা পাবে? (বিহারুল আনওয়ার-৭৫/৪৫৩)

হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তিনি বর্ণনা করেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

كُنْ وَرِعًا تَكُنْ أَعْبَدَ النَّاسِ وَكُنْ قَنِعًا تَكُنْ أَشْكَرَ النَّاسِ وَأَحِبَّ لِلنَّاسِ مَا تُـحِبُّ لِنَفْسِكَ تَكُنْ مُؤْمِنًا

অর্থ: তুমি পরহেযগার বা পাপাচার মুক্ত হও, তাহলে তুমি সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদতকারীরূপে পরিণত হবে। তুমি অল্পে পরিতুষ্ট থাকো তাহলে তুমি সর্বাধিক শুকরিয়া আদায়কারীতে পরিণত হবে। নিজের জন্য যা পছন্দ করো তা অন্যদের জন্যও পছন্দ করবে তাহলে তুমি প্রকৃত মু’মিন বলে গণ্য হবে। (ইবনে মাজাহ)

হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি একদা মহান আল্লাহ পাক উনাকের জিজ্ঞাসা করলেন, হে বারে ইলাহী! আপনার বান্দাগণের মধ্যে কে সবচেয়ে বড় ধনী?

মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমি যতটুকু দিয়েছি ততটুকুর উপর যে ব্যক্তি সন্তুষ্ট থাকে।

তিনি আবার জিজ্ঞাসা করলেন, আপনার  বান্দাগণের মধ্যে, কে সর্বাধিক ইনসাফগার বা ন্যায় বিচারক?

মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি নিজের আত্মজীবনের প্রতি ইনসাফ করে। (মুকাশাফাতুল ক্বলূব-২৯৪)

 

ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছার মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে- (১৫৬)

ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছারল ল মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে- (১৫৭)

মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে- (১৫৮)

মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে (১৬৭)

মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে (১৬৮)