হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে (২২৯) ক্বানায়াত বা অল্পে তুষ্টির মাক্বাম উনার ফাযায়িল-ফযীলত- আল্লামা মুফতী সাইয়্যিদ মুহম্মদ আব্দুল হালীম

সংখ্যা: ২৭০তম সংখ্যা | বিভাগ:

পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-

عَنْ حَضْرَتْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّ اللهَ يُـحِبُّ عَبْدَهُ الْمُؤْمِنَ الْفَقِيْرَ الْمُتَعَفِّفَ أَبَا الْعِيَالِ.

অর্থ: হযরত ইমরান ইবনে হুছাইন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি অনেক আল আওলাদ সম্পন্ন ঈমানদার ব্যক্তি, যে অল্পে পরিতৃপ্ত, পরহেযগার তাকে মুহব্বত করেন। সুবহানাল্লাহ! (ইবনে মাযাহ শরীফ)

উল্লেখ্য যে, অল্পে পরিতুষ্ট ব্যক্তি, যে নিজের প্রয়োজনের কথা গোপন রাখেন তাকে ইলমে তাছাওউফের পরিভাষায় فَقِيْرٌ (ফকীর) বলা হয়। এরূপ ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার প্রিয়তম রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অত্যন্ত প্রিয় মাহবূব। উনারা উনাদেরকে তরবিয়ত-প্রতিপালন করেন। উনার কুদরত মুবারক উনার অধীন। সুবহানাল্লাহ!

উনাদের ফযীলত-বুযুর্গী সম্মান প্রসঙ্গে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

يَدْخُلُ الْفُقَرَاءُ الْـجَنَّةَ قَبْلَ الأَغْنِيَاءِ بِخَمْسِ مِائَةِ عَامٍ نِصْفَ يَوْمٍ

অর্থ: অল্পে পরিতুষ্ট ব্যক্তিবর্গ অর্থ-সম্পদশালী ব্যক্তিদের পাঁচশত বছর পূর্বে জান্নাতে প্রবেশ করবেন। যা ক্বিয়ামতের অর্ধ দিনের সমান হবে। সুবহানাল্লাহ! (তিরমিযী শরীফ)

ক্বানায়াতের মাক্বামে অধিষ্ঠিত ব্যক্তিদের জীবন-যাপন পদ্ধতি সম্পর্কে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

كُنْ فِي الدُّنْيَا كَأَنَّكَ غَرِيبٌ أَوْ عَابِرُ سَبِيلٍ وَعُدَّ نَفْسَكَ مِنْ أَهْلِ الْقُبُوْرِ

অর্থ: তুমি দুনিয়াতে এমনভাবে বসবাস করো যেনো মুসাফির বরং চলন্ত মুসাফির। এবং নিজেকে কবরবাসীদের মধ্যে গণ্য করো। (বুখারী শরীফ)

ক্বানায়াত উনার মাক্বামে অধিষ্ট ব্যক্তির হাল বা অবস্থা অনুরূপই হয়ে থাকে। উনারা দুনিয়াবী সামান-আসবাব যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু গ্রহণ করে থাকেন। অধিক সম্পদ, বাড়ী, গাড়ী, নারী তাও প্রয়োজনানুযায়ী গ্রহণ করে থাকেন এবং ব্যবহার করে থাকেন। উল্লেখ্য, যে বা যারা মহান আল্লাহ পাক উনাকে এবং উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ভয় করেন, উনাদের আদেশ নির্দেশ অনুযায়ী জীবন যাপন করেন উনাদের অধিক অর্থ-সম্পদশালী হওয়া, বাড়ী, গাড়ী, নারী থাকায় কোন দোষ নেই।  বরং তা অতি উত্তম ও ফযীলতের কারণ। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

لاَ بَأْسَ بِالْغِنٰـى لِمَنِ اتَّقَى اللهَ عَزَّ وَجَلَّ

অর্থ: যে ব্যক্তি মহাপরাক্রমশালী মহান আল্লাহ পাক উনাকে ভয় করেন তার সম্পদশালী হওয়াতে কোন দোষ নেই। সুবহানাল্লাহ! (আহমদ শরীফ)

পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবাক হয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ سَعْدِ بْنِ أَبِي وَقَّاصٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ  إِنَّ اللهَ يـُحِبُّ الْعَبْدَ التَّقِيَّ الْغَنِيَّ الْـخَفِيَّ

অর্থ: হযরত সা’দ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি পরহেযগার, সম্পদশালী এবং চুপে চুপে বা গোপনে ইবাদতকারী বান্দাকে মুহব্বত করেন। (মুসলিম শরীফ)

ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছার: মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে- (১৫১)

ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছারল: মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে- (১৫২)

ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছার: মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে- (১৫৩)

ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছার মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে- (১৫৪)

ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছার মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে- (১৫৫)