১০ বছরে বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়েছে ৩ লাখ ৫৭ হাজার কোটি টাকা। যে দেশে ৩ কোটি জনগোষ্ঠী না খেয়ে থাকে, সেদেশ থেকে এভাবে টাকা পাচার হয় কী করে? সরকারের জোর কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে এসব অর্থ ফিরিয়ে আনা দরকার

সংখ্যা: ২৬১তম সংখ্যা | বিভাগ:

গত ১ মে ২০১৭ ঈসায়ী ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি (জিএফআই) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, ১০ বছরে বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়েছে ৩ লাখ ৫৭ হাজার কোটি টাকা (৪ হাজার ৪৬১ কোটি ৫৩ হাজার মার্কিন ডলার), যা দেশের বর্তমান মোট জাতীয় বাজেটের চেয়েও বেশি। প্রতিবছর গড়ে পাচার হয়েছে ৩৫ হাজার ৯৯২ কোটি টাকা। প্রতিবেদনে ২০০৫ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ১৪৯টি দেশের অর্থ পাচারের তথ্য রয়েছে।

বাংলাদেশ এখন একটি সমৃদ্ধশালী দেশে পরিণত হয়েছে। তবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাথে এদেশের আর্থিক সামর্থ্যরে ব্যবধান ক্রমান্বয়ে হ্রাস করতে হলে, বর্তমান ‘খোলা বাজার অর্থনীতির’ বৈশ্বিক ব্যবস্থায়, যে অর্থ-সম্পদ দেশ থেকে বিদেশে যায়, তার চেয়ে বেশি অর্থ-সম্পদ বিদেশ থেকে দেশে আনা নিশ্চিত করতে হবে। এটি না করতে পারলে, আমাদের দেশের অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক বিকাশ ও জিডিপি’র প্রবৃদ্ধি অর্জন যতোই বৃদ্ধি পাক না কেন, তা অন্যান্য দেশের সাথে আমাদের আর্থিক শক্তির ব্যবধান কমানোর বদলে আরো বাড়াতে থাকবে। ফলে আমাদের অভ্যন্তরীণ আর্থিক সাফল্যের বড় অংশটিই চলে যাবে বিদেশে। আমরা কার্যতঃ হয়ে থাকবো ধনী দেশগুলোর সম্পদ বৃদ্ধির যোগানদাতা।

উল্লেখ্য, প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার হচ্ছে, তার সঙ্গে সমাজের উঁচু স্তরের ব্যক্তিরাই জড়িত। বড় বড় ব্যবসায়ী ও শিল্পপতি, যাদের কাছে দেশবাসী ভালো কিছুই প্রত্যাশা করে, তারাই আজ অর্থ পাচারের সঙ্গে জড়িত। তারা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে সেই ঋণের একটি অংশ বিভিন্ন দেশে পাচার করছে। সেখানে বাড়ি কিনছে, গাড়ি কিনছে এবং সম্পত্তি কিনছে। সেখানেই তারা ব্যবসা-বাণিজ্য গড়ে তুলছে। ফলে বাংলাদেশের অর্থে বিদেশ উন্নত হচ্ছে। এ অর্থ পাচারের প্রধান অংশ সম্পাদিত হচ্ছে আমদানি-রফতানীর মাধ্যমে। আমেরিকা-ব্রিটেনসহ বিশ্বের প্রায় ৫০টি দেশে বাংলাদেশীরা এসব অর্থ পাচার করে সেসব দেশেই দুনিয়াবী বেহেশত গড়ে তুলছে। গড়ে তুলছে কানাডায় ‘বেগম পাড়া’র মতো সেকেন্ড হোমের আবাসিক এলাকা।

বিদেশে পাচারকৃত অর্থের অর্ধেকেরও বেশি অর্থ ব্যাংকিং চ্যানেলকে ব্যবহার করে পাচার হচ্ছে। অনেক ব্যবসায়ী পণ্য আমদানির সময় ওভার ইনভয়েসিং করে, অর্থাৎ পণ্যের মূল্য বেশি দেখিয়ে অতিরিক্ত অর্থটা বিদেশে পাচার করে। আবার পণ্য রফতানীর সময় আন্ডার ইনভয়েসিং করে, অর্থাৎ পণ্যের মূল্য কম দেখিয়ে রফতানী পণ্যের মূল্যের একটি অংশ বিদেশেই রেখে দেয়। এদিকে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে সেই ঋণের একটি অংশ বিদেশে পাচার করার কারণে অনেক ঋণগ্রহীতা ঠিকমতো ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করতে পারে না বা পরিশোধ করে না। ফলে ঋণখেলাপি বাড়ছে।

পাশাপাশি দেশ থেকে বর্তমানে মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানির নামে ব্যাপকভাবে টাকা পাচার হয়েছে। দেশে তেমন একটা বিনিয়োগ হচ্ছে না। শিল্প উৎপাদন বাড়ছে না, তারপরও শিল্পের যন্ত্রপাতি আমদানির এলসি বেড়েছে। এতে করে সমাজের বিত্তশালী ব্যক্তিরা দেশের বাইরে বিনিয়োগ করাকেই শ্রেয় মনে করছে।  কিছু ব্যক্তি ও বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন কৌশলে তাদের আয় ও মুনাফা ফাঁকি দিয়ে এসব অর্থ দেশ থেকে সরিয়ে নিয়েছে। তবে এই হিসাবে শুধু আর্থিক সম্পদকেই বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। বিভিন্ন অ-আর্থিক সম্পদ, যেমন: স্বর্ণ, জমি-বাড়ি ইত্যাদি বিবেচনায় নেয়া হয়নি। যেহেতু অ-আর্থিক সম্পদ বিবেচনায় নেয়া হয়নি, সেহেতু কর ফাঁকি দিয়ে স্থানান্তর করা অর্থের প্রকৃত পরিমাণ আরো অনেক বেশি হবে।

অর্থ পাচারের ফলে সরকারের রাজস্ব আহরণের পরিমাণ কমে যাচ্ছে। ফলে দেশের বাজেটে বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতির সৃষ্টি হচ্ছে। এই ঘাটতি মেটাতে সরকারকে বৈদেশিক ঋণ-অনুদানের উপর নির্ভর করতে হয়। এই প্রবণতার ফলে তুলনামূলকভাবে সরকার দরিদ্র হয়ে যায়। সরকারের চেয়ে ব্যক্তির সম্পদের পরিমাণ বেড়ে যায়। যা সমাজে বড় ধরনের ভারসাম্যহীতার সৃষ্টি করে। ধনী আরো ধনী হয়। আর গরিবের সংখ্যা ব্যাপকহারে বাড়ে। গরিব তিলে তিলে নিষ্পেষিত হয়।

বলাবাহুল্য, প্রতি বছরই যে পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার হয়েছে, তা যদি বিদেশে পাচার না হয়ে দেশে বিনিয়োগ হতো, তাহলে বাংলাদেশ ধাপে ধাপে উন্নতির দিকেই এগিয়ে চলতো। আমরা এখন একটি শিল্পসমৃদ্ধ দেশেই পরিণত হতাম। দেশেই কর্মসংস্থান হতো। অপরদিকে এসব অর্থ পাচার না হলে, তথাকথিত উন্নত দেশগুলোয় এত শিল্প-কারখানা প্রতিষ্ঠা হতো না। ওইসব দেশে এত কর্মসংস্থান হতো না। তাদের রফতানী আয় কমতো। আমাদের সঙ্গে তাদের ব্যবধান কমতো। তারা আমাদের উপর এত খবরদারি করতে পারতো না। আমরাই বিশ্ব অর্থনীতিতে নেতৃত্ব প্রদান করতে পারতাম। সুবহানাল্লাহ!

সঙ্গতকারণেই তাই আমরা মনে করি, অর্থ পাচার বন্ধ করতে হলে এবং সেই অর্থ দেশে বিনিয়োগ করাতে হলে সবার আগে বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। রাজনৈতিক অস্থিরতা বন্ধ এবং সহনশীলতা সৃষ্টি করতে হবে। ব্যবসায়ীদের নির্বিঘ্নে ব্যবসা করার সুযোগ দিতে হবে। সেই সাথে দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে। দুর্নীতি বন্ধ না হলে টাকা পাচার বন্ধ হবে না। দুর্নীতি বন্ধ করতে হলে ‘দুর্নীতির মা’ ‘গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক ব্যবস্থা’ বা ‘গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা’ পরিহার করে ‘সম্মানিত ইসলামী অনুশাসন’ বা ‘খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ’ গ্রহণ করতে হবে। গণতন্ত্রের কুফল সম্পর্কে সবাইকে সম্যক সচেতন হতে হবে। গণতন্ত্র পরিহারে সক্রিয় হতে হবে।

-আল্লামা মুহম্মদ ওয়ালীউল্লাহ, ঢাকা

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২২ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস

‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’ সম্পর্কিত ‘দৈনিক যুগান্তর’ পত্রিকার মন্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিস্ময় প্রকাশ গোয়েন্দা শীর্ষ কর্মকর্তারাও অবহিত নয় খোদ যুগান্তর সম্পাদকের দুঃখ প্রকাশ

‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’কে নিয়ে – মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নামে দৈনিক জনকণ্ঠের মিথ্যাচার ‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’ নিষিদ্ধ হচ্ছে- এ কথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শুধু অস্বীকারই করলেন না, বললেন: ‘সম্পূর্ণ বাজে কথা।’ প্রসঙ্গতঃ সোহেল তাজ বিবৃত কালো তালিকা অসম্পূর্ণ ও আংশিক ভুল। এর সংশোধন আশু দরকার

মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সমীপে- সোহেল তাজ বিবৃত ১২টি জঙ্গি সংগঠন তালিকা যথার্থ নয় এর মধ্যে যেমন অনেক জঙ্গি সংগঠনের নাম আসেনি তেমনি জঙ্গিবাদ বিরোধী সংগঠনের (উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত) নামও জামাত-জোট ভূতের কারণে এসেছে। সঙ্গতঃ কারণেই বে-হেড সোহেল তাজের বেফাঁস মন্তব্য থেকে বেরিয়ে এসে বর্তমানের যোগ্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে প্রকৃত জঙ্গি সংখ্যা যেমন নির্ধারণ করতে হবে, প্রকৃত জঙ্গিদের যেমন চিহ্নিত করতে হবে পাশাপাশি জঙ্গিবাদী, মৌলবাদী ও ধর্মব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে একান্ত নিবেদিত ‘আল বাইয়্যিনাত’কে মূল্যায়ন করতে হবে।