২৫শে শাওওয়াল তারিখ ও শাওওয়াল মাস পেল নতুন আখাচ্ছুল খাছ মর্যাদা সম্পৃক্ত হল ছিদ্দীক্বা শ্রেণীর প্রথম পর্যায়ের ওলীআল্লাহ সাইয়্যিদাতুন নিসা, হাবীবাতুল্লাহ, কায়িম-মাক্বামে হযরত আমিনা আলাইহাস সালাম হযরত দাদী হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনার সুমহান বিছাল শরীফ-এর মর্যাদা-এর সাথে। উম্মাহর উচিত এদিনের মা’রিফাত অর্জন ও হক্ব আদায়ে নিবেদিত হওয়া।

সংখ্যা: ২০৯তম সংখ্যা | বিভাগ:

সব প্রশংসা মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত দুরূদ ও সালাম।

১লা শাওওয়াল শরীফ, ১৯শে শাওওয়াল শরীফ, ২১শে শাওওয়াল শরীফ, ২২শে শাওওয়াল শরীফ-এর পর ২৫শে শাওওয়াল শরীফ আলাদাভাবে মর্যাদাবান ও ফযীলতযুক্ত হল। ২১শে শাওওয়াল শরীফ উম্মুল মু’মিনীন হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার আক্বদ মুবারক-এর দিন। এই শাওওয়াল মাসের সাথে সঙ্গতি রেখে আরেকজন ছিদ্দীক্বা শ্রেণীর ওলীআল্লাহ তথা আখাচ্ছুল খাছ আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক বিছাল শরীফ সাধিত হল। পূর্বপুরুষের দিক থেকে উনি একদিকে সাইয়্যিদে শুহাদায়ে কারবালা হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনার বংশধর অপরদিকে উত্তরপুরুষে উনি, যামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, যামানার লক্ষ্যস্থল আওলাদে রসূল, মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার মুহতারামা মাতা আলাইহাস সালাম। (সুবহানাল্লাহ)

প্রসঙ্গত: আমভাবে একটি মশহুর হাদীছ শরীফ-ই উনার ফাযায়িল-ফযীলত অনুধাবনের জন্য যথেষ্ট। হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে- “যিনি ইলম শিক্ষা করলেন, সে অনুযায়ী আমল করলেন উনার সম্মানার্থে উনার পিতামাতাকে হাশরের ময়দানে সম্মানস্বরূপ এমন এক টুপী প্রদান করা হবে যার উজ্জলতা সূর্যের আলোর চেয়েও বহুগুণ বেশী হবে।” সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ উনারা শুধু জান্নাতীই হবেননা, মহা সম্মানিত জান্নাতীই হবেন।

তবে এটা যদি হয় সাধারণ আলিমের পিতা-মাতার ফযীলতের কথা তাহলে যিনি মুজাদ্দিদে আ’যম, যিনি লুপ্তপ্রায় সব সুন্নতের জিন্দাকারী, যিনি ইসলামের জিন্দাকারী, যার উসীলায় প্রতি মুহূর্তে শুধু লক্ষ-কোটি হক্ব আলিম নয় বরং হক্কানী-রব্বানী আলা দরজার ওলীআল্লাহ তৈরী হন; তাহলে সেই মহান ওলী, যিনি মুজাদ্দিদে আ’যম উনার পিতা-মাতা উনাদের তাহলে কী ফাযায়িল-ফযীলত থাকতে পারে। মূলত: এটা অকল্পনীয়, অব্যক্ত ভাষায় প্রকাশের অযোগ্য।

মূলত: উনারা শুধু মহা সম্মানিত জান্নাতীই নন বরং উনারা এমন অযুদ মুবারক-এর অধিকারী, যাদের জন্য জান্নাত ব্যাকুল হয়ে, অধীর আগ্রহে প্রতীক্ষা করছে, যাদের তাশরীফে জান্নাত নিজেই সম্মানিত হয়ে যায়। বলাবাহুল্য, উনারা এ সম্মানের চেয়েও মহামর্যাদাবান। এ মর্যাদা উনাদের অর্জন। উনাদের শান। উনাদের বৈশিষ্ট্য। উনারা শরহে সুদূরের কারণে কখনও মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম, উনাকে শুধু সন্তান হিসেবে দেখেননি। সব সময়ই দেখেছেন মুজাদ্দিদে আ’যম হিসেবে। যে কারণে উনারা স্বয়ং পিতা-মাতা হয়েও সম্বোধন করতেন ‘হুযূর ক্বিবলা বা মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম বলে’। সুবহানাল্লাহ!

শুধু তাই নয় উনারা অনেক বেশী মুহব্বত করতেন। সাইয়্যিদাতুন নিছা, কুতুবুল আকতাব, কুতুবুল ইরশাদ, হাবীবাতুল্লাহ, কায়িম-মাক্বামে হযরত আমিনা আলাইহাস সালাম হযরত দাদী হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনি  এজন্য খাওয়ার পূর্বে সব সময় বলতেন, “আমার মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম খেয়েছেন?” মুজাদ্দিদে আ’যম, মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনি অকল্পনীয় পরিশ্রমের সাথে তা’লীম-তালকীন দিতে ব্যস্ত থাকলে উনি প্রায় উৎকণ্ঠা প্রকাশ করতেন, আমার মুজাদ্দিদে আ’যম এসেছেন।” সুবহানাল্লাহ!

আজ গোটা উম্মাহ তথা কায়িনাতের জন্য এক স্পর্শকাতর দিন যে আজ যে, মহা মুহতারামা দাদী হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনি বিছাল শরীফ লাভ করলেন। তিনি যেভাবে আমার মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উচ্চারণ করতেন- সে মুহব্বত, অধিকারের সাথে উচ্চারণের জন্য আর কেউই থাকলেন না। সুবহানাল্লাহ!

প্রসঙ্গত: উল্লেখ্য, সুন্নত পালনে, ইলম অর্জনে, ইলমের পৃষ্ঠপোষকতায়, ইবাদত-বন্দেগীতে নিষ্ঠায় উনি ছিলেন বেমেছাল। সংক্ষেপ কথায় উনি ছিলেন মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার মুহতারামা মাতা আলাইহাস সালাম। তাই কাশফ ও কারামতেও উনি ছিলেন অনন্যা।

নির্দিষ্ট দিনটিতে উনি যেন নিজ থেকেই বিছাল শরীফ-এর জন্য প্রস্তুত হয়ে নিচ্ছিলেন। পবিত্র শুক্রবারে নখ মুবারক সব কেটেছিলেন। রাত প্রায় ১০ : ৫৫ মিনিটে বিছাল শরীফ-এর আগ মুহূর্তে ওযূ করে নিয়ে বলেছিলেন, আমি এখন মাবুদে মাওলার কাছে চলে যাচ্ছি। সুবহানাল্লাহ!

প্রসঙ্গত: উল্লেখ্য, “মৃত্যু হলো দুনিয়া হতে জান্নাতে যাওয়ার সেতু।”

আর আল্লাহওয়ালাগণ উনাদের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, “মৃত্যু আল্লাহ পাক উনার নিকট যাওয়ার সেতু।”

কাজেই আল্লাহওয়ালাগণ উনাদের ইন্তিকাল হচ্ছে, আল্লাহ পাক উনার সাথে মিলন সেতু বা আল্লাহ তায়ালার পবিত্র দীদার লাভের মাধ্যম। হাদীসে কুদসীতে বলা হয়েছে যে, “নিশ্চয় আল্লাহ পাক উনার ওলীগণ মৃত্যুবরণ করেন না, বরং উনারা অস্থায়ী আবাস থেকে স্থায়ী আবাসের দিকে ইন্তিকাল করেন অর্থাৎ প্রত্যাবর্তন করেন।”

কাজেই নিঃসন্দেহে আল্লাহ পাক উনার ওলীগণ উনাদের স্ব স্ব মাজার শরীফ-এর মধ্যে জীবিত রয়েছেন। মূলতঃ আল্লাহওয়ালাগণ উনাদের হাক্বীক্বী মর্যাদা সাধারণ লোকের পক্ষে কখনোই বোধগম্য নয়, যেটা আমরা গাউসুল আযম, মাহবূবে সুবহানী, কুতুবে রব্বানী হযরত বড় পীর আব্দুল ক্বাদির জিলানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মর্যাদাপূর্ণ জীবনী মুবারক হতে জানতে পারি। যেমন কিতাবে উল্লেখ করা হয় যে, মাহবূবে সুবহানী, কুতুবে রব্বানী, গাউসুল আযম শায়খ সাইয়্যিদ মুহীউদ্দীন আব্দুল ক্বাদির জ্বিলানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার দরবার শরীফ-এ একবার এক ব্যক্তি এসে বললো, “হুযূর” আপনি কি গাউসুল আযম? বড় পীর সাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, হ্যাঁ। আপনি কি কুতুবুল আলম? উনি বললেন, হ্যাঁ। আপনি কি সুলতানুল আরেফিন? উনি বললেন, হ্যাঁ। আপনি কি মুজাদ্দিদুজ্জামান? উনি বললেন, হ্যাঁ। অতঃপর প্রশ্নকারী চুপ হয়ে গেল। বড় পীর সাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, হে ব্যক্তি তুমি কি আমার সম্পর্কে আর কিছুই জান না? সে ব্যক্তি বললো, হুযূর আমার আর কিছুই জানা নেই। তখন বড় পীর সাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, অরাউল অরা, অরাউল অরা অর্থাৎ তুমি যা জেনেছ তার চেয়েও উপরে আমার মাক্বাম, তার চেয়েও উপরে আমার মর্যাদা, যেটা তোমার মত সাধারণ লোকের জ্ঞান ও সমঝের উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! (সীরতে গাউসুল আ’যম)

উপরোক্ত ঘটনা দ্বারা এটা সুস্পষ্টভাবেই প্রমাণিত হয় যে, আল্লাহওয়ালাগণ উনাদের শান-শওক্বত, মর্যাদা-মর্তবা, অভাবনীয় ও অপরিসীম, তা সাধারণ লোকের আক্বল ও দেমাগে বুঝে আসার মত নয়। আর তাই হাদীছে কুদসী শরীফ-এ বলা হয়েছে যে, “নিশ্চয় আমার ওলীগণ আমার ক্বাবার নীচে অর্থাৎ আমার কুদরতের মধ্যে অবস্থান করেন, আমি ছাড়া উনাদেরকে কেউ হাক্বীক্বীভাবে চিনে না।”

অতএব, আল্লাহওয়ালাগণ উনারা হায়াতে দুনিয়ায় যেরূপ তা’যীম-তাক্রীম ও মর্যাদার পাত্র, তদ্রুপ বিছাল শরীফ-এর পরও। কারণ আল্লাহ পাক উনার ওলীগণ আল্লাহ্ পাক উনার মুহব্বতে ইন্তিকাল করেন। এ প্রসঙ্গে বলা হয় যে, এক আল্লাহ পাক উনার ওলীকে প্রশ্ন করা হলো- হুযূর! আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ-এ ইরশাদ করেন, “যাঁরা আল্লাহ পাক উনার রাস্তায় কতল হয়েছেন (শহীদ হয়েছেন), উনাদেরকে তোমরা মৃত বলোনা, বরং উনারা জীবিত। কিন্তু তোমরা তা উপলব্ধি করতে পারছনা।”

মূলতঃ এ আয়াত শরীফ-এ মহান আল্লাহ পাক তিনি শহীদগণের মর্যাদা বর্ণনা করেছেন। তবে আল্লাহ্ ওয়ালাগণ উনাদের মর্যাদা-মর্তবা, ফযীলত কতটুকু? তখন আল্লাহ পাক উনার ওলী বললেন, দেখ, যাঁরা শহীদ, উনারা  অর্থাৎ আল্লাহ পাক উনার রাস্তায় ইন্তিকাল করেন। আর যাঁরা আল্লাহওয়ালা, উনারা অর্থাৎ আল্লাহ পাক উনার মুহব্বতে ইন্তিকাল করেন। যেমন- গরীবে নেওয়াজ, খাজা মুঈনুদ্দীন চিশতী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ইন্তিকাল করার পর উনার কপাল মুবারক-এ নূরানী অক্ষরে লিখিত হয়েছিল, অর্থাৎ ইনি আল্লাহ পাক উনার হাবীব, আল্লাহ পাক উনার মুহব্বতেই তিনি ইন্তিকাল করেছেন।” সুবহানাল্লাহ!

অতএব, প্রত্যেক আল্লাহ পাক উনার ওলীগণই আল্লাহ পাক উনার খাছ মুহব্বতে বিছাল শরীফ লাভ করেন। আল্লাহ পাক তিনি কারোটা প্রকাশ করেন, কারোটা প্রকাশ  করেন না। সুতরাং  যাঁরা অর্থাৎ আল্লাহ পাক উনার মুহব্বতে ইন্তিকাল করেন, উনাদের মর্যাদা-মর্তবা, ফাযায়িল-ফযীলত আরো অনেক বেশী, যা ভাষায় বর্ণনা করার মত নয়, অর্থাৎ বেমেছাল।

সঙ্গতকারণেই আজ উম্মাহর জন্য ফরয-ওয়াজিব হচ্ছে- সাইয়্যিদাতুন নিসা, কায়িম-মাক্বামে হযরত আমিনা আলাইহাস সালাম হযরত দাদী হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনার মা’রিফাত অর্জন করা উনাকে মুহব্বত করা। তা’যীম-তাকরীম করা। উনার শান মান আলোচনা করা। উনার সম্মানার্থে নেক কাজ করা এবং সমূহ হক্ব আদায় করা।

মহান মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম ও সম্মানিত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের উসীলায় মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের কবুল করুন ও কামিয়াব করুন এবং গায়েবী মদদ করুন। (আমীন)

-মুহম্মদ মাহবুবুল্লাহ

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২২ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস

‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’ সম্পর্কিত ‘দৈনিক যুগান্তর’ পত্রিকার মন্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিস্ময় প্রকাশ গোয়েন্দা শীর্ষ কর্মকর্তারাও অবহিত নয় খোদ যুগান্তর সম্পাদকের দুঃখ প্রকাশ

‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’কে নিয়ে – মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নামে দৈনিক জনকণ্ঠের মিথ্যাচার ‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’ নিষিদ্ধ হচ্ছে- এ কথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শুধু অস্বীকারই করলেন না, বললেন: ‘সম্পূর্ণ বাজে কথা।’ প্রসঙ্গতঃ সোহেল তাজ বিবৃত কালো তালিকা অসম্পূর্ণ ও আংশিক ভুল। এর সংশোধন আশু দরকার

মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সমীপে- সোহেল তাজ বিবৃত ১২টি জঙ্গি সংগঠন তালিকা যথার্থ নয় এর মধ্যে যেমন অনেক জঙ্গি সংগঠনের নাম আসেনি তেমনি জঙ্গিবাদ বিরোধী সংগঠনের (উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত) নামও জামাত-জোট ভূতের কারণে এসেছে। সঙ্গতঃ কারণেই বে-হেড সোহেল তাজের বেফাঁস মন্তব্য থেকে বেরিয়ে এসে বর্তমানের যোগ্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে প্রকৃত জঙ্গি সংখ্যা যেমন নির্ধারণ করতে হবে, প্রকৃত জঙ্গিদের যেমন চিহ্নিত করতে হবে পাশাপাশি জঙ্গিবাদী, মৌলবাদী ও ধর্মব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে একান্ত নিবেদিত ‘আল বাইয়্যিনাত’কে মূল্যায়ন করতে হবে।