অ্যাকর্ডের গভীর ষড়যন্ত্রে বন্ধ হচ্ছে একের পর এক কারখানা, সর্বস্বান্ত হচ্ছে দেশীয় পোশাক শিল্প, বেকার হচ্ছে লাখ লাখ শ্রমিক। ওরা দাম দেবে না শুধু মায়াকান্না দেখাবে। সরকারের উচিত- ওদেরকে শক্ত হাতে প্রতিহত করা

সংখ্যা: ২৬৫তম সংখ্যা | বিভাগ:

দেশের প্রধান রফতানি খাত তৈরী পোশাক শিল্প নিয়ে দীর্ঘস্থায়ী ষড়যন্ত্র চলছে। গত ১১ অক্টোবর-২০১৭ বুধবার বিজিএমইএ আয়োজিত ‘পোশাক শিল্পের বর্তমান ও করণীয়’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে খোদ বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের বক্তব্যেও এ কথা প্রতিধ্বনিত হয়েছে। তার বক্তব্য, দেশের পোশাক খাত নিয়ে বহুমুখী ষড়যন্ত্র হচ্ছে। যেদিন এ খাতে ৫০ বিলিয়ন ডলার রফতানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়, সেদিন থেকেই পোশাক খাত নিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। কারণ এখানে অনেক প্রতিযোগী দেশ আছে। তাদেরও এক্ষেত্রে স্বার্থ জড়িত। বাণিজ্যমন্ত্রী আরো বলেছে, নির্ধারিত মেয়াদ ২০১৮ সালের ৩০ মে’র পর বাংলাদেশে অ্যাকর্ড-অ্যালায়েন্সের কার্যক্রম অব্যাহত রাখার কোনো প্রয়োজন নেই।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের পোশাক খাতকে ধ্বংস করার একমুখী ষড়যন্ত্রে নেমেছে বিদেশী ক্রেতা জোট অ্যাকর্ড। বর্তমানে তাদের নব্য হয়রানিমূলক আচরণে ক্ষুব্ধ শিল্প উদ্যাক্তা ও পোশাক কারখানা মালিকরা। ভুক্তভোগীদের মতে- একটি গার্মেন্টস ভবন নির্মাণে সরকারের কথা অনুযায়ী দেশের শীর্ষ প্রকৌশলীদের নিয়ে নকশা নির্মাণ, ভবন নির্মাণের মানদ-, ভূমিকম্পের রিখটাল স্কেলের মাত্রা ইত্যাদি সবই সঠিকভাবে করা হয়েছে। কিন্তু সব ঠিক থাকার পরও অ্যাকর্ড এসব গার্মেন্টস মালিকদের চাপ দিচ্ছে তথাকথিত সংস্কারের জন্য। ওই গার্মেন্টস মালিককে বলা হয়, ভবনগুলোর স্ট্যাকচারাল রেট্রোফিটিং বা অবকাঠামোগত নিরাপত্তা ত্রুটি দূর করতে হবে। তাদের থেকে বলা হয় তাদের একজন প্রকৌশলী নিয়োগ দিতে হবে। ব্যবসায়ীক স্বার্থে একজন প্রকশৌলীকে নিয়োগ দিলেও পরবর্তীতে তারা ওই গার্মেন্টসের প্রত্যেকটি ভবনের জন্য আলাদা আলাদা প্রকৌশলী নিয়োগ দিতে চাপ দেয় মালিকদের। এক হিসেবে প্রতি প্রকৌশলীর পেছনে একজন গার্মেন্টস মালিকের খরচ হয় ১ লাখ ৬৮ হাজার টাকা। এতে করে অ্যাকর্ডভুক্ত সব গার্মেন্টসের উদ্যোক্তা ও মালিকদেরকেই অ্যাকর্ডের কমবেশি স্বেচ্ছাচারিতার শিকার হতে হচ্ছে।

অপরদিকে তাদের দাবি যদি কোনো গার্মেন্টস মালিক না মানে, তাহলে তার সাথে ব্যবসায়ীক সম্পর্ক ছিন্ন করে ২১৮টি ব্র্যান্ড বায়ারের সঙ্গে ব্যবসার পথ বন্ধ করে দেয় অ্যাকর্ড। ইতোমধ্যে অ্যাকর্ডের জোটের রোষানলে পড়ে বিদেশী ক্রেতা হারিয়েছে দেশের ২৪৩ উৎপাদনমুখী কারখানা। অ্যাকর্ডের প্ররোচনায় ব্যবসা হারিয়েছে ৮৪ কারখানা। ক্রেতা না থাকায় এসব গার্মেন্টের উৎপাদন এখন বন্ধ। এমনকি তারা দেশের অন্য রফতানিকারকের হয়ে সাব কন্টাক্টিংয়েও পোশাক তৈরির সুযোগ পাচ্ছে না। এর বাইরে পরিদর্শনে নানাবিধ ত্রুটির অজুহাত দেখিয়ে অ্যাকর্ডের অযাচিত হস্তক্ষেপের কারণে কারখানা বন্ধ হয়েছে ২০৭টি। যার মধ্যে ১০৪টিই স্থানান্তরের অজুহাতে বন্ধ করা হয়। এছাড়া অ্যাকর্ড-অ্যালায়েন্সের সব শর্ত ও সংস্কারের চাপ সামলে ব্যবসায় টিকে থাকা এসব কারখানার পক্ষে কঠিন হয়ে পড়ে। সেইসাথে এই অ্যাকর্ড সেসব গার্মেন্টস কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষ উস্কে দিচ্ছে বলেও জানা গেছে।

প্রসঙ্গত, রানা প্লাজার ধস এবং তাজরিন গার্মেন্টে অগ্নিকা-ের ঘটনার প্রেক্ষাপটে ইউরোপ ও আমেরিকার ক্রেতাদের দুটি জোট অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্স- বাংলাদেশ সরকার এবং গার্মেন্ট মালিকদের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছিল ২০১৩ সালে। সে অনুযায়ী অ্যালায়েন্স ইতোমধ্যেই তাদের কাজ শেষ করেছে। আর ২০১৮ সালের মে মাসে শেষ হবে অ্যাকর্ডের কাজ। কিন্তু তা সত্ত্বেও তারা গার্মেন্ট শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে ২০২১ সাল পর্যন্ত কাজ করতে চায়। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তাদের দেশে রাখা আর দেশের পোশাক খাতকে ধ্বংস করা একই কথা। কারণ এদের উদ্দেশ্য দেশের পোশাক খাতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা নয়। ওরা চাইছে তৃতীয় কোনো গোষ্ঠীর এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে। যারা বাংলাদেশের পোশাক খাত দাবিয়ে রাখতে ষড়যন্ত্র করছে, ওরা তাদেরই সহযোগী। তবে সচেতন মহলের প্রচ্ছন্ন সন্দেহ ভরতকে।

তদারকির নামে এ প্রতিষ্ঠান দুটি বাংলাদেশে গার্মেন্টস ব্যবসায়ীদের উপর অনেকটা ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মতো হামলে পড়েছে। কমপ্ল্যায়েন্স বা পূর্ণ সক্ষমতা যাচাইয়ের অজুহাতে ব্রিটিশ বেনিয়াদের মতো অ্যাকোর্ড দেশের অগ্রসরমান এ সেক্টরের উদ্যোক্তাদের পদে পদে হয়রানি ও নাজেহাল করে যাচ্ছে।

গার্মেন্টস পণ্য কেনার সময় গুণগত মানের চুলচেরা বিশ্লেষণ আর দরকষাকষিতে এক রত্তি ছাড় না দিলেও তাদের সব মাথাব্যথা শ্রমিকদের নিয়ে। অথচ শ্রমিকদের কল্যাণে তাদের কোনো ভূমিকাই নেই। যে শার্ট আমেরিকার বাজারে ২৫-৩০ ডলারে বিক্রি হয়, তা বাংলাদেশ থেকে রফতানি করা হয় মাত্র ৩-৪ ডলারে। এ ৩ ডলারের মধ্যে কাপড়, সুতা, বোতাম, প্যাকিং সামগ্রী বাদে সেলাই মজুরি ০.৭৫ ডলারের বেশি নয়! ক্ষেত্রবিশেষে আরো কম। এর মধ্যেই রয়েছে ভাঁজ করা, ইস্ত্রি করা, প্যাকিং, হ্যান্ডলিং; ফ্যাক্টরি ভাড়া/স্থাপনা ব্যয়, বিদ্যুৎ-গ্যাস-পানি, মান নিয়ন্ত্রণসহ আরো সব উপযোগ। অতঃপর মালিকের মুনাফা।

এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, নিউইয়র্কের একজন ব্যবহারকারী যে শার্টটি ৩০ ডলার বা বাংলাদেশী ২৪০০ টাকা দিয়ে কিনছে, সেটি সেলাইয়ের জন্য সর্বশেষ প্রান্তে শ্রমিকের সেলাই মজুরি মাত্র ০.২৫ ডলার অর্থাৎ ২০ টাকা।

অর্থাৎ বিদেশীরা নিজেরা বাংলাদেশী শ্রমিকদের মজুরি দিতে রাজি নয়; কিন্তু বাংলাদেশী গার্মেন্টস শ্রমিকদের মজুরী বাড়ানো হচ্ছে না বলে মায়াকান্না জুড়ে এদেশের গার্মেন্টস খাতকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য মরিয়া।

আমরা মনে করি, দীর্ঘদিন যাবৎ বাংলাদেশী পোশাকখাতকে এভাবে ঠকিয়ে আমেরিকা, ইউরোপ আন্তর্জাতিক শ্রমিক অধিকার আইন ও মানবাধিকার চূড়ান্তভাবে লংঘন করছে। এ বিষয়ে সরকারের আরো শক্ত অবস্থান এবং বাংলাদেশ গার্মেন্টসের ন্যায্য পাওনা আদায়ে সরকারের আরো সক্রিয় ভূমিকা একান্তভাবে কাম্য।

আমরা মনে করি, অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্সসহ গার্মেন্টস সেক্টরে ষড়যন্ত্রী-মহল দেশের সরকারের চেয়ে শক্তিশালী ও প্রভাবশালী নয়। কাজেই শুধু ষড়যন্ত্রের কথা মুখে বললেই হবে না; এ শিল্প খাত রক্ষায় প্রয়োজনীয় ও শক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে সরকারকেই। নচেৎ সরকার হবে কুচক্রী মহলের ষড়যন্ত্রের নীরব অংশীদার।

-আল্লামা মুহম্মদ ওয়ালীউল্লাহ, ঢাকা

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৬৪

ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-১৩

চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-৩২

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২২ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস