আইন লঙ্ঘন করে সরকার জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়েছে সরকার পাবে আড়াই হাজার কোটি টাকা কিন্তু জনগণের ভোগান্তি হবে পনের হাজার কোটি টাকা। সরকার জনগণকে শুঁষে শুঁষে খাচ্ছে।

সংখ্যা: ২২২তম সংখ্যা | বিভাগ:

সব প্রশংসা খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত দুরূদ ও সালাম মুবারক।

জ্বালানি তেলের দাম ৭ দশমিক ৮ শতাংশ বৃদ্ধিতে সরকারের সঞ্চয় বাড়বে জিডিপির ৪ দশমাংশ। তবে এর ফলে উৎপাদন কমবে ৪ দশমাংশ, সমপরিমাণ কমবে রফতানি, আমদানি হ্রাস পাবে তার দ্বিগুণ; পাশাপাশি কর্মসংস্থান কমবে ৮ দশমাংশ। অর্থনীতিতে এ নেতিবাচক প্রভাবের কারণে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ২ থেকে ৩ দশমাংশ কমে যাবে।

প্রাপ্ত তথ্য মতে, এক বছরের ব্যবধানে সপ্তমবারের মতো জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে আড়াই হাজার কোটি টাকা। এর বিপরীতে গুনতে হবে দেশবাসীকে ১৫ হাজার কোটি টাকা। মধ্যস্বত্বভোগীদের পকেটে যাবে সরকারি আয়ের অন্তত পাঁচ গুণ বেশি অর্থ। দাতাদের শর্ত মানার পাশাপাশি নির্বাচনী খরচ ওঠানোর জন্য সরকার এমন আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মূলত এর মাধ্যমে সরকার অবর্ণনীয় ভোগান্তিতে ফেলে জনগণের সাথে নিষ্ঠুর ও নির্মম পরিহাস করছে।

কারণ, জ্বালানি তেলের দাম বাড়লে শুধু তেলের দামই বাড়েনা বরং গোটা জীবনযাত্রার সবকিছুর দাম জ্যামিতিক হারে বেড়ে যায়। উদাহরণত: বলা যায়, ঢাকা-কক্সবাজার-ঢাকা ৮৪০ কিলোমিটার যাতায়াতে ভলবো মানের একটি গাড়িতে প্রয়োজন হয় ৩০০ থেকে ৩৫০ লিটার ডিজেল। লিটার প্রতি ৬২ থেকে বাড়িয়ে ৬৭ টাকা করায় একটি গাড়ি থেকে সরকারের আয় বাড়বে এক হাজার ৭৫০ টাকা। সেই হিসেবে ৪০ সিটের গাড়িতে গড়ে প্রতি ট্রিপে ৩০ জন যাত্রী ধরলেও জনপ্রতি ভাড়া বৃদ্ধির কথা ২৯ টাকা ১৭ পয়সা। অথচ প্রতিটি কোম্পানিই ইতোমধ্যে ঢাকা-কক্সবাজারের বাস ভাড়া ১ হাজার ৪০০ টাকা থেকে ১০০ টাকা বাড়িয়ে দেড় হাজার টাকা করে ফেলেছে। এই হিসেবে সারা দেশের বাসযাত্রীদের বাড়তি গুনতে হবে অন্তত ১০ হাজার কোটি টাকা।

একই অবস্থা দেখা দিয়েছে পণ্য পরিবহন খরচের বেলায়ও। বগুড়া থেকে ঢাকায় এক ট্রাক সবজি আনতে এক সপ্তাহ আগেও যেখানে ভাড়া লাগত ১১ থেকে ১২ হাজার টাকা, সেখানে সরকারিভাবে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর সাথে সাথে ট্রাকের ভাড়া দুই হাজার টাকা বেড়ে গেছে। অথচ জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধিজনিত কারণে ট্রাক মালিকের খরচ বেড়েছে মাত্র ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। আর এ সুযোগে মধ্যস্বত্বভোগীরা সবজির দাম বাড়িয়ে দিয়েছে কেজিপ্রতি তিন থেকে পাঁচ টাকা। অথচ ট্রাকের ভাড়া বৃদ্ধির কারণে কেজিপ্রতি পণ্যের পরিবহন খরচ বেড়েছে ৫০ থেকে ৭৫ পয়সা। মূলত সরকারের অদূরদর্শী সিদ্ধান্তকে পুঁজি করে ফায়দা লুটে নিচ্ছে সুবিধাভোগী মহল।

রাজশাহীর মাস্টারপাড়া পাইকারী সবজির বাজারেও ডিজেলের দামের প্রভাব দেখা গেছে। ব্যবসায়ীরা জানান, দু’দিন আগে যে ভাড়া দিয়ে কাঁচামাল গ্রাম থেকে নিয়ে এসেছেন এখন তা আনতে প্রায় দেড়গুণ বেশি টাকা গুণতে হচ্ছে। ট্রাক মালিকরা জানান, যেহেতু ডিজেলের দাম বেড়েছে স্বাভাবিক কারণে তাদের ভাড়া বাড়ানো ছাড়া আর উপায় নেই। পরিবহন খরচ বেশি হবার কারণে বাজারে শাকসবজি, মাছের দাম আরেক দফা বাড়লো। ব্যবসায়ীরা বলে, দাম আরো বাড়বে। সব কিছুরই দাম বাড়বে।

উল্লেখ্য, কেরোসিন ব্যবহারকারীরা এমনিতেই সমাজের সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠী। তাদের আয় খুবই সীমিত। অথচ তারা রাষ্ট্রের কোনো ধরনের সুবিধা পান না। এর উপর কেরোসিনের দাম বাড়ানো হলে তা তাদের জীবনযাত্রার ওপর মহা অন্যায় চাপ হয়ে দেখা দিচ্ছে।

কেরোসিনের দাম বৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে সর্বত্র। গ্রামীণ জনপদে এ নিয়ে ক্ষোভের অন্ত নেই মানুষের। এখনো গ্রামের মানুষ কেরোসিনের উপর নির্ভরশীল। তানোরের কৃষক মধু ক্ষোভের সাথে বলেন, রাতের বেলা আর কুপি জ্বালাবো না। সূর্য ডোবার আগে রাতের খাবার খেয়ে অন্ধকারে ঘুমিয়ে যাবো। চান্দিনার আনোয়ার বলেন, আমরা আলো নয় অন্ধকার যুগে ফিরে যাচ্ছি।

অনেক অঞ্চলের মানুষ এখনো রান্নাবান্না কাজে খড়ির পাশাপাশি কেরোসিন বেশি ব্যবহার করে। শহর গ্রাম সর্বত্র হোটেল রেস্তোরাঁয় ব্যবহার হয় কেরোসিনের স্টোভ ও চুলা। শহরের বেশ ক’জন রেস্টুরেন্ট মালিক বলে, তারা খুব শীঘ্রই সিঙ্গাড়া, পুরি, চা, মিষ্টির দাম বাড়াবে। এমনিতে বেশ কিছুদিন ধরে আটার দাম বেড়ে যাচ্ছে। এরপর কেরোসিনের দাম বৃদ্ধি মড়ার উপর খাঁড়ার ঘায়ের মতো। এসব পণ্যের দাম বাড়ানো ছাড়া আর কোন বিকল্প নেই।

ফুটপাতের চা দোকানি সালাম জানায়, তাকে প্রতি কাপ চায়ে আরো এক টাকা বাড়াতে হচ্ছে। ইতোমধ্যে চা পাতার দাম বেড়েছে। এরপর কেরোসিনের দাম বৃদ্ধি আরো বিপাকে ফেলছে। পরিবহন খরচের কারণে চিনির দাম বাড়লে এক কাপ লাল চা দশ টাকায় উঠবে। জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে আয় ব্যয়ের হিসাব নিয়ে উদ্বিগ্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষ। জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির প্রভাব পড়ছে সর্বত্র। ফলে তাদের ব্যয় আরো বাড়বে।

বলতে গেলে জনগণের কথা বিন্দুমাত্র না ভেবে শুধুমাত্র নিজের স্বার্থে জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়েছে সরকার। কিন্তু এতে করে সরকার আইনও ভঙ্গ করেছে। কারণ বিইআরসির আইন অনুযায়ী সরকার হঠাৎ করে নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে জ্বালানি তেলের দাম বাড়াতে পারে না। এভাবে দাম বাড়িয়ে সরকার নিজেই আইন লঙ্ঘন করেছে।

এখন কথা হচ্ছে যে, সরকার বিচার বিভাগ চালনা করে সে সরকারই যদি আইন লঙ্ঘন করে তাহলে দেশ চলে কীভাবে? মূলত দেশ চলছে জনগণকে শোষণ করে। কিন্তু জনগণ মুখ খুলছেনা। জনগণ তার প্রতিবাদও করছেনা। অথচ পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “তোমরা জালিমও হয়োনা, মজলুমও হয়োনা।”

মূলত এসব অনুভূতি ও দায়িত্ববোধ আসে  পবিত্র ঈমান ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাদের অনুভূতি ও প্রজ্ঞা মুবারক থেকে। আর তার জন্য চাই নেক ছোহবত মুবারক তথা ফয়েজ-তাওয়াজ্জুহ মুবারক। যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, যামানার মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারক-এ সে মহান ও অমূল্য নিয়ামত হাছিল সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের তা নছীব করুন। (আমীন)

মুহম্মদ ওয়ালীউল্লাহ

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৬৪

ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-১৩

চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-৩২

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২২ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস