আমীরুল মু’মিনীন হযরত সাইয়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী আলাইহিস সালাম তিনি নিঃসন্দেহে খালিক্ব! মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার খাছ ওলী উনার প্রতি অপবাদকারী যালিম গং নিঃসন্দেহে গুমরাহ, বাতিল, লা’নতপ্রাপ্ত, জাহান্নামী ও সুন্নী নামের কলঙ্ক রেজাখানীরা আয়নায় নিজেদের কুৎসিত চেহারা দেখে নিক ॥ ইসলামী শরীয়া উনার আলোকে একটি দলীলভিত্তিক পর্যালোচনা-২১

সংখ্যা: ২২৭তম সংখ্যা | বিভাগ:

প্রিয় পাঠক, আমরা এ যাবৎ আলোচনা করে আসছিলাম, আমীরুল মু’মিনীন, খলীফাতুল মুসলিমীন হযরত সাইয়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী আলাইহিস সালাম উনার সুমহান পবিত্র ইলম হাসিল করা সম্পর্কে। যে সমস্ত বাতিল ফিরক্বার গুমরাহ দুনিয়াদার মৌলুভীরা উনার পবিত্র ইলম হাসিল করা সম্পর্কে এলোমেলো প্রলাপ বকে চু-চেরা, কিল-কাল করে তাদের জন্য শত সহস্র আফসুস! তাদের বুঝা উচিত তৎকালীন গোটা হিন্দুস্থানের সম্মানিত পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার জাহির-বাতিন ইলমী সিলসিলার প্রধান খান্দানের প্রধান দুই রতœ, যাঁদেরকে স্বয়ং ইমামুশ শরীয়ত ওয়াত্ব তরীকত, শায়খুল মাশায়িখ হযরত শাহ আবদুল আযীয মুহাদ্দিস দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি যথাক্রমে ‘শায়খুল ইসলাম’ এবং ‘হুজ্জাতুল ইসলাম’ লক্বব মুবারক-এ ভূষিত করেছিলেন, উনারাই যখন আমীরুল মু’মিনীন সাইয়্যিদুনা হযরত শহীদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ক্বদম মুবারক-এ আত্মসমর্পণ করে নিজেদের ইহ-পরকালকে ধন্য করেছিলেন তখন আমীরুল মু’মিনীন, খলীফাতুল মুসলিমীন হযরত সাইয়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী আলাইহিস সালাম উনার সুমহান পবিত্র ইলম হাসিল করা সম্পর্কে প্রশ্ন তোলাটা কি করে শোভনীয় হতে পারে?

ব্যায়াম ও শরীরচর্চা : পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন- “সর্বপ্রকার খেলাধুলাই হারাম। তবে তিনটা বিষয় খেলাধুলার অন্তর্ভুক্ত নয়। ১. তীর-ধনুক চালানো, ২. অশ্বকে প্রশিক্ষণ দেয়া, ৩. নিজ আহলিয়ার সাথে শরয়ী হাসিখুশি প্রকাশ করা।” সুবহানাল্লাহ!

উক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার ব্যাখ্যায় সম্মানিত ইমাম মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনারা বলেছেন, “খেলতামাশা বা খেলাধুলা সর্বাবস্থায় হারাম। তা কখনো ও কোন অবস্থাতেই জায়িয হবে না। তবে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনাকে বুলন্দ রাখার জন্য শরীয়তসম্মত বিষয়ে শরীয়তসম্মত পদ্ধতিতে প্রতিযোগিতা করা জায়িয ক্ষেত্রবিশেষে তা আবশ্যিক হয়ে যায়।” যা খেলাধুলা বা খেল-তামাশার অন্তর্ভুক্ত নয়। মূলত এমন শরীয়তসম্মত বিষয়ে মুবারক শিশুকাল থেকেই বীর প্রতিযোগী হিসেবে আমীরুল মু’মিনীন, খলীফাতুল মুসলিমীন হযরত সাইয়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী আলাইহিস সালাম তিনি অত্যন্ত উৎসাহী এবং জজবাহী ছিলেন। কিন্তু কতিপয় সীরাত লেখক ও অনুবাদক নিজেদের ইলমী সমঝের স্বল্পতার কারণে উনার মুবারক জীবনী বর্ণনার সময় হারাম খেলাধুলা শব্দের ব্যবহার করেছেন। নাউযুবিল্লাহ! অথচ হারাম খেলাধুলার সংশ্রব থেকে তিনি জাতগতভাবেই পবিত্র ও মুক্ত ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি যা করতেন সেগুলো মূলত ব্যায়াম বা শরীরচর্চামূলক ছিল। এ প্রসঙ্গে উনার বিশিষ্ট ভাগিনা সেনাপতি সাইয়্যিদ আবদুর রহমান রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, সূর্যোদয়ের পর এক ঘণ্টা পর্যন্ত হযরত সাইয়্যিদুনা হযরত শহীদে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি ব্যায়াম এবং কুস্তিতে অর্থাৎ শরীর চর্চায় সময় ব্যয় করতেন। উনার এই শরীর চর্চা ছিল জিহাদের ময়দানে কাফির-মুশরিকদের বিরুদ্ধে দৃঢ়তার সাথে জিহাদ করার প্রস্তুতিস্বরূপ। আমি তখন ছোট ছিলাম। আমি দেখতাম, উনার শরীর মুবারক-এ কাদা মাটি লেগে যেত, আবার পরে তা শুকিয়ে ঝরে যেত। আমাকে পায়ের উপর খাড়া করে পাঁচশবার ডন বৈঠক করতেন। তারপর কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে আবার পাঁচশবার করতেন। তিনি বিশ সের, ত্রিশ সের ও একমণ ওজনের গদা ঘুরাতেন। এতে সংখ্যা গণনা করা হতো না বরং সময়ের হিসাব করা হতো।

নদীর তীরে কবরস্থানের পার্শ্বে পাথরের একটি স্তম্ভ ছিল। এটি চার হাত লম্বা এবং অনেক পুরু। নিচের দিকে মোটা এবং উপরের দিকে পাতলা। এটা ছিল রাজকীয় বীরদের ব্যায়ামাগার। প্রত্যেক কুস্তিগীরই স্তম্ভের উপর দিক ধরে তা খাড়া করে ফেলতো। কিন্তু নিচের দিক ধরে কেউ শুধু হাঁটু পর্যন্ত এবং কেউ শুধু কোমর পর্যন্ত উঁচু করতে পারতো। কোন এক জ্যোৎস্না রাতে আমরা ওই পথ দিয়ে যাচ্ছিলাম। তখন হযরত শহীদে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, এই স্তম্ভটি উত্তোলন করা যাক। এ কথা বলেই তিনি কোর্তা মুবারক গুটিয়ে নিলেন এবং স্তম্ভের নিকট গিয়ে কিছুটা নিঁচু হয়ে মুহূর্তেই তা কাঁধের উপর উঠিয়ে নিলেন। এরপর বিশ ক্বদম অগ্রসর হয়ে সেটাকে এত জোরে মাটিতে ছুঁড়ে ফেললেন যে, প্রায় এক হাত পরিমাণ মাটির নিচে তা দেবে গেল। পরের দিন লোকেরা এসে পাথরের ওই স্তম্ভটিকে স্বস্থান থেকে এত দূরে মাটির নিচে গাড়া অবস্থায় দেখে ভড়কে গেল, তাদের গা শিউরে উঠলো এবং বলাবলি করতে লাগলো, হয়তো বা কোন দেও-দৈত্য জিন এটাকে এত দূরে এনে এভাবে ফেলে রেখেছে। অর্থাৎ মানুষের মাঝে কোন উচ্চশ্রেণীর বীর দ্বারাও যে এটা সম্ভব হতে পারে তা লোকজনের কল্পনাতেও আসছিল না। সুবহানাল্লাহ!

সাতার কাটা এবং খরস্রোতা নদীতে স্থির থাকা অর্থাৎ স্বাভাবিকভাবে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে থাকার ব্যাপারেও তিনি ছিলেন অতুলনীয় বেমেছাল। টুংকের গভর্নর নওয়াব উযীরুদ্দৌলা সাহেব আমীরুল মু’মিনীন, খলীফাতুল মুসলিমীন হযরত সাইয়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী আলাইহিস সালাম উনার সাতার কাটা সম্পর্কে ভূয়সী প্রশংসা করতেন। দিল্লির তৎকালীন বিখ্যাত একজন সাঁতারুর শিষ্য মাওলানা আলীমুল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, আমীরুল মু’মিনীন, খলীফাতুল মুসলিমীন হযরত সাইয়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী আলাইহিস সালাম উনাকে আমি দেখেছি, তীব্র স্রোতের বিপরীত দিকে তিনি নিমিষেই সাঁতার কেটে যেতেন। অথচ বহু চেষ্টা-প্রশিক্ষণ করেও তা করা আমার পক্ষে কোনদিনই সম্ভব হয়নি। সুবহানাল্লাহ!

-মুহম্মদ সালামাতুল্লাহ ইসলামাবাদী।

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৬৪

ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-১৩

চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-৩২

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২২ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস