আহলান-সাহলান! সুমহান পহেলা শাওওয়াল!! মুবারক হো ঈদে বিলাদতে তাহিরাহ, তাইয়িবাহ, মাহবুবাহ, ফাক্বীহা, মাশুক্বাহ, তাওশিয়াহ, তাকরীমাহ, তাক্বিয়্যাহ, তাযকীয়্যাহ, নূরে হাবীবা, লখতে জিগারে মুজাদ্দিদে আ’যম, কুতুবুল আলম, উম্মু আবিহা, ক্বায়িম-মাক্বামে হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম, সাইয়্যিদাতুন নিসা, আওলাদে রসূল, হযরত শাহযাদী উলা ক্বিবলা আলাইহাস সালাম

সংখ্যা: ২২৭তম সংখ্যা | বিভাগ:

সব প্রশংসা মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত দুরূদ মুবারক ও সালাম মুবারক।

এক মাস সিয়াম সাধনার পর আনন্দ আর খুশি হিল্লোলে পালিত হয় পবিত্র ঈদুল ফিতর। পবিত্র ঈদুল ফিতর আসলে আপেক্ষিক। যারা সিয়াম সাধনা করেননি তাদের জন্য পবিত্র ঈদুর ফিতর নয়। পাশাপাশি যাদের সিয়াম সাধনা কবুল হয়নি তাদের জন্যও পবিত্র ঈদুল ফিতর নয়।

পবিত্র ঈদুল ফিতর উনার দিনই একবার দেখা গিয়েছে আমীরুল মু’মিনীন হযরত উমর বিন খত্তাব আলাইহিস সালাম তিনি ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ করে জার জার হয়ে কাঁদছেন। অনুনয়-বিনয় করে জানা গেলো, এক মাস সিয়াম সাধনা অথবা ত্রিশ রোজা পালন, তা মহান আল্লাহ পাক উনার দরবারে কবুল হয়েছে কি-না সে চিন্তায় উনি কান্নাকাটি করছেন। প্রতিভাত হচ্ছে পবিত্র ঈদুল ফিতর আসলে একটি প্রশ্নবিদ্ধ বিষয়।

অপরদিকে আবহমানকালের সামাজিক বৈষম্যের প্রেক্ষিতে পবিত্র ঈদুল ফিতর সত্যিকার অর্থে সবার জন্য আনন্দবহ নয়। বন্যাদুর্গত, সিডর আক্রান্ত, যুদ্ধবিধ্বস্ত, রোগগ্রস্ত, স্বজনহারাদের বেদনায় ভারাক্রান্তদের জন্যও পবিত্র ঈদুল ফিতর আনন্দঘন নয়। কাজেই পবিত্র ঈদুল ফিতর আসলে সার্বজনীন সুখের আবহ নয়।

সূক্ষ্ম অর্থে পবিত্র ঈদুল ফিতর উনার মাঝে রয়ে গেছে শূন্যতা, আহাজারি আর আর্তমানবতার বিলাপ। এ অর্থে ঈদুল ফিতর নিজেই এক অপূর্ণতা। আর এ অপূর্ণতাকেই ইতিহাসের সিঁড়িতে বেমেছালভাবে প্রথম ও পরিপূর্ণ পূর্ণতা দিয়েছেন ঈদে বিলাদতে ত্বহিরাহ, ত্বয়্যিবাহ, নূরে হাবীবা, লখতে জিগারে মুজাদ্দিদে আ’যম, কুতুবুল আলম, উম্মু আবিহা, ক্বায়িম-মাক্বামে যাহরা আলাইহাস সালাম, সাইয়্যিদাতুন নিসা, আওলাদে রসূল, নাক্বীবাতুল উমাম হযরত শাহযাদী উলা ক্বিবলা আলাইহাস সালাম। মহা-মহিমান্বিত এ দিনটি পবিত্র ঈদুল ফিতর উনার দিন হওয়ায় তা মূলত পবিত্র ঈদুল ফিতর উনারও ঈদ বলে বিবেচ্য।

পবিত্র ঈদুল ফিতর মূলত গোলাম, আর ঈদে বিলাদতে নাক্বীবাতুল উমাম হযরত শাহযাদী উলা আলাইহাস সালাম মহিমান্বিত মালিক।

সঙ্গতকারণেই পহেলা শাওওয়াল আজ শুধু পবিত্র ঈদুল ফিতর নয় বরং ঈদে বিলাদতে নাক্বীবাতুল উমাম হযরত শাহযাদী উলা আলাইহাস সালাম হিসেবে সমধিক অগ্রগামী ও প্রাধান্য বিস্তারকারী। নতুনরূপে আত্মপ্রকাশকারী ও প্রতিষ্ঠা লাভকারী। পহেলা শাওওয়াল বেমেছালভাবে নতুন মাত্রা লাভকারী।

এতদিন পবিত্র ঈদুল ফিতর আগে আলোচিত হতো কিন্তু এখন পহেলা শাওওয়াল শরীফ ঈদে বিলাদতে নাক্বীবাতুল উমাম আলাইহাস সালাম হিসেবে সর্বাগ্রে আলোচিত হবার সমধিকযোগ্য।

যে বুভুক্ষু মানুষের জন্য, যে বাস্তুহারাদের জন্য, যে বস্ত্রহীনদের জন্য, যে পথশিশুর জন্য, যে ইয়াতীমের জন্য, যে মিসকীনদের জন্য, যে প্রতিবন্ধীর জন্য, যে যুদ্ধাহতের জন্য, যে রোগগ্রস্তের জন্য, যে সম্ভ্রম লুণ্ঠিতের জন্য, যে অবলা নারীর জন্য, যে কন্যাদায়গ্রস্তের জন্য, যে আর্তমানবতার জন্য, যে মজলুম, নিপীড়িত জনগোষ্ঠীর জন্য- পবিত্র ঈদুল ফিতর শব্দ উপহাসমূলক, অপ্রাসঙ্গিক। তাদের জন্য পহেলা শাওওয়াল শরীফ তথা ঈদে বিলাদতে নাক্বীবাতুল উমাম আলাইহাস সালাম অবর্ণনীয় এবং পরিপূর্ণ ও বেমেছাল রহমত, বরকত, সাক্বীনা ও ফযীলতমূলক। ঈদে বিলাদতে নাক্বীবাতুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার স্মরণে, পালনে, মূল্যায়নে তারা ভাগীদার হয়, অঢেলভাবে পায় খোদায়ী রহমত-বরকত। কুদরতীভাবে মিটে তাদের অন্তঃজ্বালা। আসে আত্মতৃপ্তি। দিল হয় ইতমিনান। হয় প্রকৃত ঈদ।

কাজেই ঈদে বিলাদতে নাক্বীবাতুল উমাম হযরত শাহযাদী উলা আলাইহাস সালাম আসলে হাক্বীক্বী সার্বজনীন ঈদ।

প্রসঙ্গত মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “মহান আল্লাহ পাক উনার নিদর্শন সম্বলিত দিবসসমূহকে স্মরণ করিয়ে দিন সমস্ত কায়িনাতকে। নিশ্চয়ই এর মধ্যে ধৈর্যশীল ও শোকরগুজার বান্দা-বান্দীদের জন্য ইবরত ও নছীহত রয়েছে।” (পবিত্র সূরা ইবরাহীম শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৫)

মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে পবিত্র সূরা মারইয়াম উনার ১৫ নম্বর আয়াত শরীফ উনার মধ্যে হযরত ইয়াহইয়া আলাইহিস সালাম উনার শানে ইরশাদ মুবারক করেন, “উনার প্রতি শান্তি সালাম অবারিত ধারায় বর্ষিত হোক যেদিন তিনি দুনিয়ায় আগমন করেন অর্থাৎ বিলাদত শরীফ লাভ করেন ও যেদিন তিনি বিছাল শরীফ লাভ করেন আবার যেদিন তিনি জীবিত অবস্থায় পুনরুত্থিত হবেন।” সুবহানাল্লাহ!

প্রদত্ত আয়াত শরীফ উনার মধ্য থেকে প্রত্যেক ঈমানদার মুসলমানসহ কায়িনাতের সকলের জন্যই জানা জরুরী যে, ত্বাহিরাহ, তাইয়্যিবাহ, মাহবুবাহ, ফাক্বীহা, মাশুক্বাহ, তাওশিয়াহ, তাকরীমাহ, তাক্বিয়্যাহ, তাযকীয়্যাহ, নূরে হাবীবা, লখতে জিগরে মুজাদ্দিদে আ’যম, কুতুবুল আলম, উম্মু আবিহা, ক্বায়িম-মাক্বামে যাহরা আলাইহাস সালাম, সাইয়্যিদাতুন নিসা, আওলাদে রসূল, হযরত শাহযাদী উলা ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ উম্মতের তথা কায়িনাতের জন্য বেমেছাল রহমত, ফযীলত, ইতমিনান হাছিল এবং খুশির বিষয়। তাদের সব দুঃখ আসানের কারণ। সব প্রয়োজন মেটানোর পাথেয়। দুনিয়াবী ও উখরবী কামিয়াবীর অনিবার্য উসীলা।

তিনি এমন এক মহিমান্বিত বেমেছাল অজুদ মুবারক, যা মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনাদের গুণে গুণান্বিত এবং উনাদের তরফ থেকে যমীনবাসীর জন্য রহমত-বরকত, রিযিকসহ সব নিয়ামতের আধার। বণ্টনের উছীলা, মালিকা।

উনাদের মূলত কোনো কাজ করার প্রয়োজন হয় না। উনাদের আগমন, আবির্ভাব, বিলাদত শরীফই যমীনবাসীর জন্য সবচেয়ে বড় রহমত, বরকত তথা ঈদ বা সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম উনার শামিল। কাজেই পহেলা শাওওয়ালের দিন গোটা কায়িনাতের জন্য সাইয়্যিদে ঈদে আ’যমস্বরূপ।

বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন, “হে হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি (বান্দা-বান্দী, উম্মতদেরকে) বলুন, আমি তোমাদের নিকট কোনো প্রতিদান চাই না, (আর উম্মতদের পক্ষে প্রতিদান দেয়াও অসম্ভব) তবে তোমাদের দায়িত্ব-কর্তব্য আমার যারা হযরত আহলে বাইত শরীফ রয়েছেন উনাদেরকে তোমরা মুহব্বত করবে।” (পবিত্র সূরা শুরা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ২৩)

সঙ্গতকারণেই তাই বলতে হয়, ঈদে বিলাদতে শাহযাদীয়ে উলা ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনার মুবারক পরিসর কেবল রাজারবাগ শরীফ উনার মধ্যে অথবা রাজারবাগ শরীফ উনার সিলসিলাভুক্ত পরিম-লেই পরিশেষ হবার নয় বরং অনিবার্য কারণেই তথা নিজস্ব প্রয়োজনেই গোটা বিশ্বপরিসরেই এর পর্যালোচনা করতে হবে। গোটা বিশ্বব্যাপীই এই সুমহান বিলাদত শরীফ ব্যাপক শান-শওকত ও জওক-শওক তথা যথাযোগ্য ভাবগাম্ভীর্য এবং সর্বশেষ প্রচেষ্টার প্রতিফলন ঘটিয়ে পালন করতে হবে এবং দিন দিন উত্তরোত্তর এটার ব্যাপকতা বিস্তর বিস্তার ঘটাতে হবে ইনশাআল্লাহ।

মূলত এর উপরই নির্ভর করবে ভক্ত মুরীদ-মুতাক্বিদ, আশিকীন-মুহিব্বীন বিশেষত আনজুমানে আল বাইয়্যিনাত তথা আন্তর্জাতিক আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত উনার মূল্যায়ন অথবা অর্জিত সফলতা বা ব্যর্থতা।

মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন তিনি মহান ত্বাহিরাহ, তাইয়্যিবাহ, মাহবুবাহ, ফাক্বীহা, মাশুক্বাহ, তাওশিয়াহ, তাকরীমাহ, তাক্বিয়্যাহ, তাযকীয়্যাহ, ত্বহিরাহ, ত্বয়্যিবাহ, নূরে হাবীবা, লখতে জিগারে মুজাদ্দিদে আ’যম, নাক্বীবাতুল উমাম, হাদীয়াতুল মাদানী, হাদীয়ে মাদারজাত, ক্বায়িম-মাক্বামে ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম, ক্বায়িম-মাক্বামে সাইয়্যিদাতুন নিসা ফিল জান্নাহ, সাইয়্যিদাতুনা হযরত শাহযাদী উলা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনার মুবারক উসীলায় এ ঈদে বিলাদত শরীফ যথাযথভাবে ও পরিপূর্ণ খুলুছিয়াতের সাথে করার তাওফিক দান করুন। (আমীন)

-মুহম্মদ মাহবুবুর রহমান

শোক সংবাদ: সাইয়্যিদাতুন নিসা, সুলতানাতুল আরিফীন, কুতুবুল ইরশাদ, কুতুবুল আক্বতাব, আওলাদে রসূল মুহতারামা হযরত দাদী হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনি বিছাল শরীফ লাভ করেছেন

আমীরুল মু’মিনীন হযরত সাইয়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী আলাইহিস সালাম তিনি নিঃসন্দেহে আল্লাহ পাক উনার খাছ ওলী উনার প্রতি অপবাদকারী যালিম গং নিঃসন্দেহে গুমরাহ, বাতিল, লা’নতপ্রাপ্ত, জাহান্নামী ও সুন্নী নামের কলঙ্ক রেজাখানীরা আয়নায় নিজেদের কুৎসিত চেহারা দেখে নিক ॥ ইসলামী শরীয়ার আলোকে একটি দলীলভিত্তিক পর্যালোচনা-১২

বিশেষ প্রবন্ধ: সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত নিসবত মুবারকই মুহব্বত-মা’রিফাত, কুরবত, রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারকসহ সমস্ত কিছুর মূল, কাজেই যে যতটুকু উনার সম্মানিত নিসবত মুবারক হাছিল করতে পারবে, সে ততটুকু কামিয়াবী হাছিল করবে

বিশেষ কলাম: পবিত্র লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান মশহূর পবিত্র শবে বরাত এবং উনার আমলসমূহ বিশুদ্ধ বর্ণনা দ্বারা প্রমাণিত হওয়া প্রসঙ্গে-পবিত্র লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান সম্পর্কে বর্ণিত হাদীছ শরীফ একদম ছহীহ- এ বিষয়ে সকল আসমাউর রিজাল বিশারদগণ একমত

বিশেষ কলাম: ছবি, মূর্তি-ভাস্কর্য ও বাদ্যযন্ত্র নিশ্চিহ্ন করা, ভেঙ্গে ফেলা খাছ সুন্নত তো অবশ্যই, বরং ফরযে আইন। কেননা এগুলো তৈরি করা ইবলীস শয়তানের কাজ যারা মহান আল্লাহ পাক উনার সৃষ্টির সদৃশ্য কোনো প্রাণীর মূর্তি-প্রতিমা, ভাস্কর্য ও ছবি তুলবে, আঁকবে বা বানাবে তাদেরকে ক্বিয়ামতের দিন ওইগুলোর মধ্যে প্রাণ দিতে বলা হবে, কিন্তু তারা তাতে প্রাণ দিতে কখনোই পারবে না, বরং মহান আল্লাহ পাক তিনি সেগুলোর মধ্যে প্রাণ দিয়ে প্রস্তুতকারীকে কঠিন শাস্তি দিবেন। নাউযুবিল্লাহ! (১ম পর্ব)