ইতালি থেকে বাঙালি সবার অস্তিত্ব রক্ষার্থে দরকার ‘বোরকার’। শুধু বিবাহ বিচ্ছেদ ঠেকানো নয়; ‘বিবাহ’ নামক মানব ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখার জন্য অনিবার্য ইসলাম তথা পর্দা পালন সমাজবিজ্ঞানী থেকে তথাকথিত প্রগতিবাদীরা সমস্যা স্বীকারে বাধ্য হবেন; অশ্লীলতার কু-প্রভাবে কু-পরিণতি উল্লেখ করবেন- কিন্তু সমাধান উচ্চারণে, স্বীকারে কপটচারিতা করবেন, পর্দা তথা বোরকার বিষয়ে নীরব থাকবেন; এভাবে আর কতদিন?

সংখ্যা: ১৯৭তম সংখ্যা | বিভাগ:

ইতালি সরকার বোরকা নিষিদ্ধ করেছে। কিন্তু দিগন্ত উন্মোচিত করেছে চরিত্রহীনতার। কারণ ঘটিয়েছে অগাধ বিবাহ বিচ্ছেদের। খোদ প্রধানমন্ত্রীর মাঝেও ঘটছে এর প্রতিফলন। বিবিসি ও টেলিগ্রাফ সূত্রে জানা যায়-

“ইতালির প্রধানমন্ত্রী সিলভিও বার্লুসকোনি ও তার সাবেক স্ত্রী ভেরোনিকা ল্যারিওর বিবাহ বিচ্ছেদ মামলা নোংরা দিকে মোড় নিচ্ছে। মামলার সাক্ষী হিসেবে সাবেক এক পতিতা ও উঠতি মডেলকে আদালতে হাজির করতে যাচ্ছেন ভেরোনিকা। ঘনিষ্ঠ সূত্র থেকে প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী, ডি অ্যাডারিও ও লেতিজিয়াকে আদালতে তলব করতে পারে ভেরোনিকা। ২০০৯ সালের মে মাসে বার্লুসকোনির সঙ্গে ১৯ বছরের বৈবাহিক সম্পর্ক বিচ্ছেদের আবেদন করে ভেরোনিকা। কারণ হিসেবে তিনি কমবয়সী মেয়েদের প্রতি বার্লুসকোনির আকর্ষণের কথা উল্লেখ করে।”

বলার অপেক্ষা রাখে না, এভাবে যাতে কমবয়সী থেকে যে কোনো বয়সী মেয়ে লোকদের দিকে আকর্ষিত হয়ে ঘরের স্ত্রীর মনোঃবেদনার কারণ না ঘটে

তার অধিকার হরণ না হয়

সেজন্য ইসলাম বোরকার ব্যবস্থা করেছে।

কিন্তু সে বোরকা নিষিদ্ধ করে ইতালিতে এখন তার ফল প্রথমেই ভোগ করলো খোদ প্রধানমন্ত্রী নিজেই। অথচ এ বোরকাই ঠেকাতে পারতো তার বিবাহ বিচ্ছেদ।

এদিকে গত বৃহস্পতিবার এমটিভি মুভি অ্যাওয়ার্ডে বছরের সেরা এন্টারটেইনারের পুরস্কার নেন বুলক। এ বছর অস্কার জেতেন এ অভিনেত্রী।

অভিনেত্রী স্বভাবতই বোরকা বিরোধী। আর অনিবার্যভাবেই তার বিরুদ্ধেও অনেক চরিত্রহীনতার অভিযোগ এনেছে তার স্বামী।

সম্প্রতি অনৈতিক সম্পর্ক রাখার দায়ে তার স্বামী টিভি স্টার জেসি জেমসের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্নের অর্থাৎ বিবাহ বিচ্ছেদের আবেদন করে।

কথিত অভিনয় থেকে গোটা পশ্চিমা সংস্কৃতির প্রভাব এই যে, বিয়ে বিচ্ছেদটাও এখন পর্যন্ত ওদের গর্বের বিষয়।

কারণ, বিয়ে বিচ্ছেদ অন্তত এটা প্রমাণ করে, বিয়ে অন্তত হয়েছিলো।

কিন্তু ওদের লালিত সংস্কৃতি চরিত্রহীনতা, অনৈতিকতা এতই বিস্তার করেছে যে,

এখন আর ওরা বিয়েটাতেও আগ্রহী নয়।

সেক্ষেত্রে ওদের জন্য বিয়ে বিচ্ছেদ সন্তানদের কী হবে?

সে বেদনার বিষয়ের চেয়ে বিয়ে না করার মনোবৃত্তি জেঁকে বসার কারণে

আর নতুন সন্তান তথা নাগরিকই জন্ম লাভ করবে না এটাই বড় মাথাব্যথার কারণ তথা ওদের অস্তিত্বের জ্বলন্ত প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

****

কিন্তু একইভাবে সে প্রশ্ন নিবদ্ধ হচ্ছে, বাংলাদেশের প্রতিও। এমনকি এক গবেষণায় বলা হয়েছে যে, ২০২৫ সালের পর থেকে বাংলাদেশের তরুণ-তরুণীরাও বিয়ের প্রতি অনাগ্রহী হবে। সন্তান জন্মদান তথা জনসংখ্যা আশঙ্কাজনকহারে কমতে থাকবে।

বলাবাহুল্য, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে অবাধ মেলামেশা এগুলো ছিলো শুধু বল্গাহারা উচ্চবিত্তের মাঝে।

কিন্তু পাশ্চাত্য সংস্কৃতির অবাধ প্রচার এখন এতটাই প্রভাবিত করেছে যে, খোদ মধ্যবিত্তও এখন পাশ্চাত্য সংস্কৃতির নীল দংশনে বিপর্যস্ত।

মধ্যবিত্তেও এখন নৈতিক মূল্যবোধ হারিয়ে ফেলেছে। সঞ্চালিত হয়েছে পরকীয়া তথা অবাধ চরিত্রহীনতা। আর তার অনিবার্য ফলস্বরূপ ভাঙছে মধ্যবিত্তের সংসার। অকল্পনীয় হারে বাড়ছে বিবাহ বিচ্ছেদ।

ডিসিসি সূত্রে জানা যায়, সিটি করপোরেশনের নিয়ন্ত্রণাধীন সালিশী পরিষদের মাধ্যমে গত ৪ বছরে ১৫ হাজারেরও বেশি বিয়ে ভাঙছে। এর মধ্যে ৬০ ভাগ রয়েছে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, ইন্সুরেন্স কোম্পানি, ব্যাংকিং সেক্টর ও বিভিন্ন করপোরেট হাউসের কর্মজীবী নারীদের ক্ষেত্রে বিয়ে ভাঙার ঘটনা বেশি ঘটছে।

সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, ২০০৬ সালের সেপ্টেম্বর থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত ডিসিসির আইন বিভাগ কর্তৃক সংগৃহিত আংশিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী ১২ হাজার দম্পত্তির মধ্যে বিয়ে ভাঙার তথ্য পাওয়া গেছে।

তার মধ্যে ২০০৬ সালে আগস্ট পর্যন্ত ২ হাজার ৬২৭টি এবং আগস্টে নগর ভবন থেকে কার্যক্রম অঞ্চলে ভাগ করে দেয়ার পর ওই বছরের ৩ মাসে অঞ্চল-৫ ও ৭-এ ২৩৪টি বিয়ে ভাঙার তথ্য পাওয়া গেছে। ২০০৭ সালে অঞ্চল-৪ ও ১০ বাদে মোট ৮ অঞ্চলে ৪ হাজার তালাকের কার্যক্রম পরিচালনা করেছে ডিসিসি।

২০০৮ সালে ৪টি অঞ্চল তাদের কার্যক্রমের কোন তথ্য দেয়নি আইন বিভাগে। অন্য ৬ অঞ্চলে ২ হাজারের বেশি দম্পত্তির মধ্যে বিয়ে বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটেছে। তবে ৪, ৬ এবং ৭ অঞ্চলের তালাক কার্যক্রমের ওই সময়ের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এছাড়াও চলতি বছর ৪টি অঞ্চলে প্রায় ১ হাজার তালাক কার্যকর করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সূত্রটি।

তবে ২০০৩ সালের তালাকের নোটিশের মোট সংখ্যা ছিলো ৩ হাজার ২০২টি। এর মধ্যে ৯৩ ভাগ তালাক কার্যকর করা হয়েছে, যার মোট সংখ্যা ২ হাজার ৯৬১টি। এ সময় স্ত্রী কর্তৃক দেয়া তালাকের শতকরা হার ছিল ৬৫ দশমিক ৯ ভাগ। ২০০৪ সালে তালাকের নোটিশ সংখ্যা ছিলো ৩ হাজার ৩৩৮। তার মধ্যে কার্যকর করা হয়েছে ২ হাজার ৮১৪টি। এ সময় স্ত্রী কর্তৃক দেয়া তালাকের শতকরা হার ছিল ৭০ ভাগ। ২০০৪ সাল থেকে স্ত্রী কর্তৃক দেয়া তালাকের হার ৭০ ভাগ থেকে বেড়ে বর্তমানে ৭৫ ভাগ

হয়েছে।

ডিসিসির সালিশী পরিষদ জানায়, বর্তমানে ৭৫ শতাংশই স্ত্রী কর্তৃক তালাকের নোটিশ দেয়া হচ্ছে। স্বামী ও স্ত্রী উভয়ের একই অভিযোগ, পরকীয়ার জের ধরে বনিবনা না হওয়া।

ডিসিসির আইন কর্মকর্তা জানান, গত ৫ বছরে ডিভোর্সের সংখ্যাও বেড়েছে এবং স্ত্রী কর্তৃক দেয়া নোটিশের সংখ্যাও বেড়েছে। যেমন ২০০৪  বা ২০০৫ সালে যে সংখ্যক তালাকের নোটিশ আসত নগর ভবনে, গত এ বছরে তা শুধু একটি জোনেই আসে। যেমন, ২০০৯ সালে শুধু অঞ্চল-৫ এ প্রায় দুই হাজার তালাকের নোটিশ কার্যকর করা হয়েছে। এ বছর গত ৩ মাসেই ৫০০ এর বেশি নোটিশ এসেছে ওই অঞ্চলে। এর কারণ হিসেবে তিনি জানান, সামাজিক অস্থিরতা আর উন্নত প্রযুক্তির যাচ্ছেতাই ব্যবহারই অন্যতম কারণ।

অঞ্চল-৫ এর সালিশী পরিষদের চেয়ারম্যান জানান, গত ৪ বছরে তার এ ধরনের কার্যক্রম পরিচালনার অভিজ্ঞতায় শিক্ষিত, মধ্যবিত্ত শ্রেণীতেই বেশি তালাক কার্যকর হচ্ছে।

এ বিষয়টি এখন তথাকথিত প্রগতিবাদীরাও অস্বীকার করতে পারছে না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইকোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মেহতাব খানম ‘বর্তমান দিনকাল’ শীর্ষক একটি সাপ্তাহিক-এ বলেছেন,

মোবাইল কোম্পানিগুলোর সহজলভ্য অফার, ইন্টারনেট, ওয়েবসাইট, ফেসবুক, পর্নোগ্রাফির মতো সহজলভ্য উপাদান থেকে আকৃষ্ট হয়ে মূল্যবোধ ও নৈতিকতাবোধ হারাচ্ছে। ফলে বিয়ের মতো সুদৃঢ় সম্পর্ক ও নৈতিক বিষয়টিও তারা ধরে রাখতে পারছে না।

বলাবাহুল্য, পাশ্চাত্য সংস্কৃতি এই মুসলমান অধ্যুষিত বাঙালিদের মাঝে ঘর ভাঙার সর্বনাশা বীজ অঙ্কুরিত করে যাচ্ছে। যাতে প্রগতিবাদী মহিলারও আতঙ্কিত হয়ে উঠছে।

জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির নির্বাহী পরিচালক বলেছেন, বাঙালি নারীরা দুটি কারণে তাদের ঘর ভাঙতে চায়না। তার একটি হলো সম্মান হারানোর ভয়ে, অন্যটি অসহায়দের স্বামী ছাড়া পথ থাকে না। কিন্তু তারপরও তালাক দেয়ার ক্ষেত্রে নারীদের হার বেশি। কারণ, উন্নত প্রযুক্তির যুগে সুস্থ ধারায় সংস্কৃতি না থাকায় মানুষ নৈতিকতাবোধ হারিয়ে পরকীয়া বা নেশার দিকে ঝুঁকছে। অন্যদিকে নারীরা সমাজ, রাষ্ট্র, পরিবারের কাছ থেকেই সহানুভূতি, সহমর্মিতা ও সহযোগিতা না পেয়ে তালাকের দিকে ঝুঁকছে।

পরকীয়ার বিষয়টি উভয়পক্ষের জন্যই আপেক্ষিক। সমাজটা অস্থিরতার মধ্যদিয়ে যাচ্ছে। ফলে আর্থ-সামাজিক পরিবর্তন ও নির্যাতনের প্রতিবাদের ভাষা এখন তালাক। তবে শুধু পরকীয়াই নয়, পরিবারও দায়ী। তবে এটা রোধ করা দরকার। আমাদের দেশ ইউরোপ বা অন্যান্য দেশ নয়। এ দেশের পরিবারের বন্ধন জোরালো করার জন্য বোধশক্তি তৈরি করা উচিত। আরও একটি সামাজিক আন্দোলনের দরকার। তা না হলে সমাজের জন্য এটা অশনি সঙ্কেত।

বলাবাহুল্য, তথাকথিত প্রগতিবাদীরা দেরিতে হলেও দুটি বিষয় স্বীকার করেছে।

তা হলো-

(এক) সংস্কৃতির নামে অশ্লীলতার প্রভাব।

(দুই) এভাবে অবাধ অশ্লীলতা চলতে পারে না। এর জন্য সামাজিক আন্দোলন দরকার।

বলার অপেক্ষা রাখেনা, তাদের এ কথাটা ঠিক ‘প-িত মূর্খের’ মত।

তারা সামাজিক আন্দোলনের কথা বলছে? কিন্তু তারা নিজেরা কোন্ সমাজের অংশ?

তারা কী জানেনা যে, এদেশে শতকরা ৯৫ ভাগ মুসলমান অধ্যুষিত সমাজ। সেক্ষেত্রে এ সমাজের সামাজিক আন্দোলনের জন্য যে সামাজিক মূল্যবোধ দরকার তা যে ইসলাম ছাড়া অন্য কিছুই নয়? সে কথা খোলামেলা স্বীকারে তাদের এত রাখঢাক কেন?

আরো সহজভাবে বলতে গেলে সমাজে পর্দা তথা বোরকার ব্যবহার না থাকায়ই যে পশ্চিমা বিশ্বের মত এদেশেও বিবাহ বিচ্ছেদ বাড়ছে, সে কথা স্পষ্টভাবে উচ্চারণে তাদের এত উৎকন্ঠা, দ্বিধা-দ্বন্দ্ব কেন?

মূলত পশ্চিমা সংস্কৃতির যে করাল গ্রাস এ জাতিকে তলিয়ে দিচ্ছে তা এক্ষণি রোধ করতে না পারলে অদূর ভবিষ্যতে সব বাঙালি সংস্কৃতিবাদী তথা কর্মীদেরও ভাত পাবার কোন ব্যবস্থা থাকবে না।

এভাবে চললে বাঙালি বলে কোন মনোভাবই থাকবে না।

সুতরাং ইতালি থেকে বাঙালি সবারই অস্তিত্ব রক্ষার স্বার্থেই দরকার ইসলাম। দরকার পর্দা পালন। দরকার বোরকার প্রচলন।

মুহম্মদ ওয়ালীউর রহমান

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৬৪

ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-১৩

চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-৩২

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২২ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস