উজানে অভিন্ন নদীতে ৩ হাজার ৬০০টি বাঁধ দিয়েছে ভারত আরো ১ হাজার বাঁধ তৈরি করছে অধিকাংশ নদীতে বাঁধ দিয়ে পানি প্রত্যাহার করে নিচ্ছে ভারত বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষ চরম বিপর্যয়ের মুখে আন্তর্জাতিক চাপ প্রয়োগ করে পানি দিতে ভারতকে বাধ্য করতে হবে।

সংখ্যা: ২১৪তম সংখ্যা | বিভাগ:

সব প্রশংসা মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত দুরূদ ও সালাম।

পানিসম্পদ মন্ত্রী সম্প্রতি সংসদে জানিয়েছে, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অভিন্ন ৫৪টি নদীর মধ্যে সাতটি নদীর উজানে ভারত বাঁধ নির্মাণ করেছে। ভারত গঙ্গা নদীর উজানে ফারাক্কা ব্যারেজ, মহানন্দা নদীর উজানে মহানন্দা ব্যারেজ ও তিস্তা নদীর উজানে তিস্তা ব্যারেজ নির্মাণ করেছে। এ ছাড়া ভারত কর্তৃক মনু নদীর উজানে মনু ব্যারেজ, খোয়াই ব্যারেজ, গোমতী নদীর উজানে মহারানী ব্যারেজ নির্মাণ করা হয়েছে বলে জানা যায় এবং মুহুরী নদীর উজানে কালসি ব্যারেজ নির্মাণাধীন রয়েছে বলে জানা গেছে।

ভারত পরিকল্পিতভাবে প্রকল্প ও বাঁধ তৈরি করায় বাংলাদেশের বৃহত্তর সিলেট বিভাগে নদীগুলোর বুকে ধু ধু বালুচর। ফলে নৌপথে দেখা দিয়েছে চরম সঙ্কট। আর এতে প্রায় এক কোটি মানুষ চরম বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে।

ধলাই, মনু, পিয়াইন ও সুরমার দুই পাড়ের মানুষের জীবন-জীবিকা অনেকটা বদলে যাচ্ছে। দেখা দিয়েছে পরিবেশ বিপর্যয়। বিলীন হচ্ছে জীববৈচিত্র্য, কমছে মাছের উৎপাদন, ব্যাহত হচ্ছে সেচকাজ। পাহাড়ি ঢলে উজান থেকে নেমে আসা পলিমাটি, নদীভাঙন আর মানুষের লোভের গ্রাসে দুর্বল স্রোতের নদীগুলো দখল, গতিপথ পরিবর্তন, নাব্য হ্রাসসহ বিভিন্ন কারণে সাম্প্রতিক কয়েক দশকে মানচিত্র থেকে হারিয়ে গেছে অনেক কিছু। বর্ষা মৌসুমে উজান থেকে নেমে আসা বন্যার পানির সঙ্গে লাখ লাখ টন পাহাড়ি বালু ও পলিমাটি আসছে। এসব বালু ও পলি নদীতে স্রোত না থাকায় নদীগুলোর তলদেশে জমাট হয়ে ভরাট হয়ে যাচ্ছে নদীগুলো। এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে সিলেট বিভাগের বিভিন্ন জনপদে। নদীতীরবর্তী জনপদে তৈরি হচ্ছে মরুময় পরিবেশ।

পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অব্যাহত এ পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে সিলেটের এক কোটি মানুষ চরম মানবিক বিপর্যয়ের মুখে। বছরের পর বছর ধরে সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার, সিলেট, হবিগঞ্জ এবং সুনামগঞ্জে চারটি জেলার নদ-নদী অস্বাভাবিকভাবে ভরাট হয়ে যাওয়ায় অদূর ভবিষ্যতে এ অঞ্চলটিতে পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন তারা।

সিলেট বিভাগের প্রধান নদীগুলোর উৎস হচ্ছে ভারতের বিস্তীর্ণ পাহাড়ি এলাকা। এসব নদ-নদীর উৎস এলাকায় বিভিন্ন সময়ে ভারত সরকার পরিকল্পিতভাবে প্রজেক্ট ও বাঁধ তৈরি করায় পানিপ্রবাহের নিয়ন্ত্রণ চলে গেছে সেখানকার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হাতে। ফলে শুকনো ও বর্ষা মৌসুমে নদীর স্বাভাবিক স্রোত ব্যাহত হচ্ছে।

ভারত থেকে আসা অধিকাংশ নদীতেই বাঁধ দিয়েছে ভারত। পানিবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য কোথাও এসব বাঁধ দেয়া হয়েছে। আবার কোথাও কৃত্রিম খাল খননের মাধ্যমে পানি প্রত্যাহার করে সেচ কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। ভারত হয়ে বাংলাদেশের ভেতরে প্রবেশ করা আরও একাধিক নদীর উপর বাঁধ নির্মাণের প্রক্রিয়া চলছে। প্রথমে ভারত ড্যাম তৈরি করে পানিবিদ্যুৎ উৎপাদনের কথা বললেও অধিকাংশ নদীতে বাঁধ দিয়ে পানি প্রত্যাহার করে নেয়া হচ্ছে। এসব নদীর মধ্যে ৫৪টি নদী সরাসরি ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। এই ৫৪টি নদী যেসব উৎস থেকে পানি পেয়ে থাকে সেখানেও বাঁধ দেয়া হয়েছে। এক হিসেবে দেখা গেছে, ভারতে দৃশ্যমান নদ-নদীগুলোর উপর ৩ হাজার ৬শটি বাঁধ রয়েছে। আরও ১ হাজার বাঁধ নির্মাণ কাজ চলছে পুরোদমে। গজলডোবা বাঁধের মাধ্যমে তিস্তার পানি প্রত্যাহার করার কারণে তিস্তা নদী শুকিয়ে যাচ্ছে। পাহাড়ি জনপদের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত একাধিক স্রোতের মিলিত শক্তির নাম তিস্তা। গজলডোবার বাঁধ ছাড়াও তিস্তামুখে পতিত হওয়ার আগে এর বিভিন্ন শাখা নদীতেই বাঁধ রয়েছে ৬৮টি।

এদিকে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন বাপা সূত্রে জানা গেছে, উত্তর-পূর্ব ভারতের পাহাড়ি জনপদের ৭টি রাজ্যে ভারত ইতোমধ্যে ২৮টি বাঁধ ও ব্যারেজ নির্মাণ করেছে। সিদ্ধান্ত রয়েছে আরও ১৬৮টি বাঁধের। অন্য সূত্রমতে বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব এই অংশে ভারত ২০৫০ সালের মধ্যে এক লাখ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। এজন্য তারা বিভিন্ন নদীর উৎসমুখে ২২৬টি বাঁধ ও ব্যারেজ নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। এসব পরিকল্পনার মধ্যে টিপাইমুখ অন্যতম। ভারতীয় আন্তঃসংযোগ নদী সংযোগ প্রকল্পের মাধ্যমে গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্র থেকে ১৭৩ বিলিয়ন ঘনমিটার পানি সরিয়ে নেয়ার পরিকল্পনাও ভারত সরকারের রয়েছে।

জানা গেছে, পদ্মা-যমুনা বেসিনেই ভারতের রয়েছে অর্ধশত মূল সেচ ও বিদ্যুৎ অবকাঠামো। এ কারণে বাংলাদেশের শত শত নদী ও খালবিল পানিশূন্য হয়ে পড়ছে। ফলে বাংলাদেশের বৃহত্তর রাজশাহী, খুলনা, ঢাকা ও সিলেট অঞ্চলের প্রায় ৩০টি জেলার ৭০ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকার লাখ লাখ হেক্টর কৃষি জমি হারাতে বসেছে আবাদের যোগ্যতা।

বিশেষজ্ঞদের মতে, নদী প্রশ্নে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের রেকর্ড কখনই ভাল ছিল না। ১৯৭২ সালে পরীক্ষামূলকভাবে ফারাক্কা বাঁধ চালু করেছিল। সে পরীক্ষা আজও শেষ হয়নি। কিন্তু ফারাক্কা বাঁধের ফলে শেষ হয়ে গেছে উত্তর ও দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের প্রমত্ত পদ্মা ও তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ২০/২৫টি অন্যান্য নদী, অসংখ্য খাল জলাশয়, জমির উর্বরতা, ফসল মাছসহ প্রকৃতি ও পরিবেশ।

ভারতের ষড়যন্ত্রে নদীর পানি প্রবাহে বর্তমানে যে অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নিলে পানির উৎস হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। মূল নদী ও উপনদীতে বাঁধ দেয়ার ফলে দীর্ঘমেয়াদি প্রতিক্রিয়ায় ভয়াবহ পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা করা হচ্ছে। এর প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশের বহু প্রাকৃতিক উৎস চিরতরে হারিয়ে যাবে।

পানির অভাবে বাংলাদেশে বড় ধরনের সামাজিক সমস্যার উদ্ভব হবে, যা আক্রান্ত করতে পারে। সঙ্গতকারণেই সর্বপ্রথম ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে তাদের আগ্রাসী নীতি পরিত্যাগ করতে হবে। পানি সমস্যা মূলত ভারতের সাথে দ্বিপাক্ষিকভাবেও সমাধান করা যাবে না। এর জন্য আন্তর্জাতিক চাপ প্রয়োগ করতে হবে। প্রয়োজনে নেপালে পানির আধার নির্মাণ করে হিমালয়ের পানি ধরে রাখার ব্যবস্থা করা গেলে শুষ্ক মওসুমে ফারাক্কায় পানির প্রবাহ এক লাখ ৩০ হাজার কিউসেক থেকে এক লাখ ৯০ হাজার কিউসেক পর্যন্ত বৃদ্ধি করা সম্ভব। তাতে সবাই লাভবান হবে। তা ছাড়া পানির আধারের সাহায্যে নেপাল প্রতিবছর প্রায় সাড়ে ১০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম, যা নেপাল বাংলাদেশেও রফতানি করতে পারে।

তবে গঙ্গার পানিবণ্টনের সাথে ব্রহ্মপুত্রসহ অন্যান্য নদীর বিষয়ও আলোচনাভুক্ত করতে হবে। আন্তর্জাতিক নদীর পানির সুষ্ঠু ব্যবহারের স্বার্থে বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও চীনের পানি বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি আন্তর্জাতিক পানি ফোরাম গঠন করে তার মাধ্যমে ভারতকে চাপ প্রয়োগ করতে হবে। মনে রাখতে হবে পানি বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তার সাথে সম্পৃক্ত হয়ে গেছে। এই নিরাপত্তার বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে।

মূলত এসব অনুভূতি ও দায়িত্ববোধ আসে ইসলামী অনুভূতি ও প্রজ্ঞা থেকে। আর তার জন্য চাই নেক ছোহবত তথা ফয়েজ, তাওয়াজ্জুহ। যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, যামানার মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবতেই সে মহান ও অমূল্য নিয়ামত হাছিল সম্ভব। মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের তা নছীব করুন। (আমীন)

-মুহম্মদ ওয়ালীউল্লাহ

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৬৪

ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-১৩

চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-৩২

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২২ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস