কুরআন শরীফ-এ ঘোষিত মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু ইহুদীদের দ্বারা  ফিলিস্তিনে অব্যাহত বর্বরতায় আর নির্মম হত্যাকাণ্ডে আর কতকাল নির্বাক থাকবে মুসলিম বিশ্ব- (১)

সংখ্যা: ১৯৮তম সংখ্যা | বিভাগ:

ওসমানিয়া সাম্রাজ্য পতনের মাধ্যমে মুসলিম জগতের গৌরব অস্তমিত হচ্ছিল। পতনোন্মুখ ওসমানিয়া সাম্রাজ্যের দুর্বল অবকাঠামোর কারণে আগ্রাসী পশ্চিমা শক্তিগুলো মুসলিম সাম্রাজ্যে আধিপত্য বিস্তারের সুযোগ পায় এবং মুসলমানদের সম্পদ লুটপাটে মেতে উঠে। তবে এশিয়া থেকে ইউরোপ ও আফ্রিকা মহাদেশ পর্যন্ত বিস্তৃত ওসমানিয়া সাম্রাজ্যকে পুরোপুরি ধ্বংসের জন্য দুটি কাজ করার প্রয়োজন ছিল। ওসমানিয়া সাম্রাজ্য ভেঙে টুকরো টুকরো করে দেয়া এবং এসব ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দেশে পশ্চিমাদের তাঁবেদার সরকারকে ক্ষমতায় বসানো।

এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে এশিয়া, ইউরোপ ও আফ্রিকা মহাদেশের মিলনস্থলে অবস্থিত কৌশলগত দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ফিলিস্তিনের ওপর তৎকালীন পশ্চিমা শাসকদের দৃষ্টি পড়ে। একই সাথে ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দে সুইজারল্যান্ডের ব্যাল শহরে থিওডর হার্জ্জেলের নেতৃত্বে এবং ব্রিটিশ পুঁজিপতিদের পৃষ্ঠপোষকতায় প্রথম ইহুদীবাদী মতাদর্শের জন্ম হয়। ফিলিস্তিনে ষড়যন্ত্রের বীজ বপন করে ওই ভূখ- দখল করে সেখানে ইহুদীদের জন্য একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাই ছিল ইহুদীবাদী গোষ্ঠীর মূল উদ্দেশ্য।

ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে উগ্র ইহুদীবাদের ভিত্তিতে জায়নবাদী আন্দোলন বিশ্বব্যাপী মাথা চাড়া দিয়ে উঠে। ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দে ইহুদী নেতা থিওডোর হার্জ্জল এক আন্তর্জাতিক ইহুদী সম্মেলন আহ্বান করে। এতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ১৫০ জন ইহুদী পন্ডিত, দার্শনিক ও রাজনীতিবিদ অংশ নেয়। সুইজারল্যান্ডের বেলসে অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনে ইহুদীদের জন্য একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত হয়। সেই অনুযায়ী ইহুদীরা ফরাসী সেনাপতি নেপোলিয়ান বোনাপার্টের মাধ্যমে, প্রথমে সাইপ্রাস, ল্যাটিন আমেরিকা, উগান্ডা, কিংবা দ: সুদানে ইহুদী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত হয়। তারা তুর্কী সুলতান আব্দুল হামিদের কাছ থেকে ফিলিস্তিনে ভূমি কেনার প্রস্তাব দিলে সুলতান নাকচ করে দেয়। অবশেষে তারা ব্রিটেনের দ্বারস্থ হলে ব্রিটেন ২য় বিশ্বযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ইহুদীদের প্রস্তাবে সম্মতি দেয়। ব্রিটেনের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বেলফোর নিজে খ্রিস্টান হলেও জায়নবাদী ছিলেন। তিনি নিজে পুণ্যের কাজ মনে করে ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব নেন।

যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রিটেনের সহায়তায় ১৯৪৮ সালে বেলফোর ঘোষণার মাধ্যমে ফিলিস্তিনী ভূখণ্ডে ইসরাইল রাষ্ট্রের সূচনা হয়। ১৮৯৭ সালে থিউডোর হার্জ্জলের দেয়া নকশা অনুযায়ী মিসরের নীলনদ থেকে ইরাকের ফোরাত নদী পর্যন্ত বৃহত্তর ইসরাইল প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জায়নবাদী অপতৎপরতা আজো পরিচালিত হচ্ছে। ওদের নীল নকশা বাস্তবায়ন এবং দখলদার অবৈধ রাষ্ট্রটির অস্তিত্ব রক্ষায় যুগের পর যুগ ধরে তারা মানবতার বিরুদ্ধে হত্যা, নির্যাতন, উচ্ছেদসহ হাজারো অপরাধ নিয়মিতভাবে করে যাচ্ছে।

১৯৪৮ সালে ব্রিটেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতায় ইসরাইল রাষ্ট্রের গোড়াপত্তনের সঙ্গেই শুরু হয়েছে ফিলিস্তিনী জনগণের উপর জায়নবাদী ইসরাইলের নির্যাতন নিপীড়ন।

বিগত ৬ দশক যাবৎ তাদের নির্মমতা পৃথিবীর যে কোন পৈশাচিকতাকে হার মানিয়েছে। প্রথমেই তারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে লাখ লাখ ইহুদীদেরকে এনে ইসরাইল তথা ফিলিস্তিনে পুনর্বাসিত করেছে এটা করতে গিয়ে তারা ফিলিস্তিনের আদি বাসিন্দাদেরকে তাদের ভিটেমাটি থেকে নির্মমভাবে শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে উচ্ছেদ করেছে। ফলে লাখ লাখ ফিলিস্তিনী নারী-পুরুষ-শিশু কপর্দকহীনভাবে পার্শ্ববর্তী জর্ডান, সিরিয়া, লেবাননসহ বিভিন্ন আরব দেশে আশ্রয় নিয়ে শরণার্থীর জীবন গ্রহণে বাধ্য হয়। যারা এ নির্মমতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছে তাদেরকে প্রাণ হারাতে হয়েছে ইসরাইলী সৈন্যদের লাঠি কিংবা বুটের আঘাতে অথবা স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রের গুলিতে।

১৯৬৭ সালে ইসরাইলী অপতৎপরতার প্রতিবাদের প্রেক্ষিতে আরব ইসরাইল যুদ্ধ সংগঠিত হয়। যুদ্ধে ইসরাইলী নৃশংসতা গোটা আরব বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। ইসরাইল মিশর, সিরিয়া, জর্ডান এবং লেবাননের বিস্তীর্ণ ভূমি দখল করে নেয়। সিনাই মালভূমি, গাজা উপত্যকা, জেরুজালেমসহ জর্ডান নদীর পশ্চিম তীরসহ বিশাল এলাকায় ইসরাইলী দখল প্রতিষ্ঠিত হয়। এ যুদ্ধে হাজার হাজার আরব নারী, শিশু, বৃদ্ধ ইসরাইলী বাহিনীর হাতে নির্মমভাবে প্রাণ হারায়। দখলকৃত এলাকাসমূহ থেকে আরব মুসলমানদেরকে উচ্ছেদ করে ওই স্থানে বিভিন্ন  দেশ থেকে ইহুদীদেরকে এনে পুনর্বাসিত করা হয়। তাদের সকল অপরাধ অপকর্মে সহায়তা ও মদদ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও তাদের কতিপয় মিত্র রাষ্ট্র। ইসরাইল জন্মলগ্ন থেকে পরিকল্পিতভাবে ফিলিস্তিনী জনগণের উপর তাদের নির্যাতন নিপীড়ন অবিরামভাবে চালিয়ে যাচ্ছে। ৬৭’র যুদ্ধের পরে বিভিন্ন ক্ষেত্রে নির্যাতনের মাত্রা আরো বেড়ে যায়। তাদের পৈশাচিকতার নির্মম শিকার হয়ে হাজার হাজার ফিলিস্তিনীকে প্রাণ হারাতে হয়েছে, পঙ্গুত্ব বরণ করতে হয়েছে কিংবা নিজের প্রাণপ্রিয় স্বদেশ থেকে নির্বাসিত হতে হয়েছে। ফলে জেরুজালেমসহ ফিলিস্তিনের প্রায় সকল শহরে ফিলিস্তিনীরা বর্তমানে দুর্বল সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীতে পরিণত হয়েছে।

-মুহম্মদ মাহবুবুর রহমান

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৬৪

ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-১৩

চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-৩২

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২২ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস