গুমের তালিকা দীর্ঘ হচ্ছে কার দোষে? আজ গোটা দেশবাসী গুম-অপহরণ আতঙ্কে

সংখ্যা: ২১৫তম সংখ্যা | বিভাগ:

সব প্রশংসা মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত দুরূদ ও সালাম।

গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর রাতে মোহাম্মদপুর থেকে অপহƒত হন যশোরের ঝিকরগাছা থানা বিএনপির সভাপতি নাজমুল ইসলাম। পরদিন সকালে তার লাশ পাওয়া যায় গাজীপুরের সালনায়। মিরপুরের ইলেক্ট্রনিক্স ব্যবসায়ী মাসুম হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের ছাত্র, সূর্যসেন হল ছাত্রদলের সাহিত্য ও গবেষণা সম্পাদক শামীম হাসান ওরফে সোহেল ও ঢাকা মহানগর ৫০ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ইসমাইল হোসেনকে ২৮ নভেম্বর হাতিরপুল থেকে অপহরণ করা হয়। ওই অপহরণের সঙ্গে র‌্যাবের সোর্স ও যুবলীগ নেতা টু-া রহিম জড়িত আছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ৮ ডিসেম্বর মুন্সীগঞ্জের ধলেশ্বরী নদীতে দুটি লাশ পাওয়া যায়। এর একটি ইসমাইল হোসেনের বলে শনাক্ত করেন তার স্বজনরা। সোহেল ও মাসুম এখনও নিখোঁজ। ঢাকা সুপার মার্কেটের মালিক ও মার্কেটের দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হাজী মোহাম্মদ ওয়াজিউল্লাহ ৯ মাস ধরে নিখোঁজ রয়েছেন। তার পরিবার বলছে, র‌্যাব পরিচয়ে দুর্বৃত্তরা তাকে অপহরণের পর হত্যা করেছে। নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের সানারপাড়ের ইউনুস মুন্সী, তার ভাই মঞ্জু মুন্সী ও তাদের মামাতো ভাই শেখেন মাতবর এবং তাদের এক ব্যবসায়িক পার্টনার ৭ ডিসেম্বর কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে নিখোঁজ হন। ১২ ডিসেম্বর মুন্সীগঞ্জের ধলেশ্বরী নদী থেকে তিনটি লাশ উদ্ধার করা হয়। এর একটি মনজু মুন্সীর বলে শনাক্ত করেন তার স্ত্রী। পুরানা পল্টন লাইন থেকে অপহৃত হন ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সহ-সভাপতি শামীম আকতার। সাভার থেকে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ৪১ নম্বর ওয়ার্ড সভাপতি হাজী নূর মোহাম্মদ ওরফে নূর হাজীকে অপহরণ করা হয়। তার অপহরণের এক সপ্তাহ আগে নূর হাজীর জামাতা আবদুল মান্নান এবং তার সঙ্গী ইকবাল হোসেনও র‌্যাব পরিচয়ে অপহৃত হন। আজও তাদের খুঁজে পাওয়া যায়নি। ডিবি পুলিশ পরিচয়ে গেণ্ডারিয়া থেকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয় জুয়েল সরদার এবং তার চাচাতো ভাই রাজীব সরদারকে। একইসঙ্গে যাত্রাবাড়ী থেকে তাদের পরিচিত মিজানুর রহমান নামে অপর এক যুবককে অপহরণ করা হয়। জুয়েল ও মিজানের লাশ পাওয়া যায় গাজীপুরের পুবাইলে। আর রাজীবের লাশ পাওয়া যায় সিরাজদিখানের নিমতলীতে। ক্যান্টনমেন্ট থানা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হক খানকে অপরহণের পর হত্যা করা হয়। ৮৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি কাজী আতাউর রহমান লিটু নিখোঁজ রয়েছেন। র‌্যাব পরিচয়ে তাকে অপহরণ করা হয়। ফকিরাপুল থেকে অপহৃত হন ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার যুবলীগ নেতা সারোয়ার জাহান বাবুল। সাভারের কলমা এলাকার ব্যবসায়ী হাফিজুল ইসলাম স্বপন প্রায় আট মাস ধরে নিখোঁজ। ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে একসঙ্গে ৬ ব্যক্তিকে একটি সাদা মাইক্রোবাসে তুলে অপহরণ করা হয়। এদের মধ্যে আসাদ সিকদার নামে একজনকে পথিমধ্যে নামিয়ে দেয়া হলেও এখনও ৫ জন নিখোঁজ আছে। চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক এলাকার বাসিন্দা কোটিপতি ঠিকাদার মোজাফফর আহমদ চৌধুরীও নিখোঁজ রয়েছেন প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে। চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলা বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলামকে এক বছর আগে র‌্যাব পরিচয়ে অপহরণ করা হয়। এখন পর্যন্ত তার কোন হদিস মেলেনি। মালিবাগ থেকে একসঙ্গে ৭ জনকে অপহরণ করা হয়। এদের মধ্যে ২ জনকে পথিমধ্যে ছেড়ে দেয়া হয়। একজনের লাশ পাওয়া যায়, বাকি ৪ জন এখনও নিখোঁজ। কাঁচামাল ব্যবসায়ী ইউনুস মুন্সী, শেখেন মাতবর, সাভারের কলমা এলাকার ব্যবসায়ী হাফিজুল ইসলাম স্বপন, সাভার সিটি সেন্টারের কসমেটিক ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম ধলুর হদিস মিলছে না।

খোদ পুলিশ সদর দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে সারা দেশে অপহরণের ঘটনা ঘটে ৬৬টি। ফেব্রুয়ারি মাসে এর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭১-এ। গত বছরের জানুয়ারি মাসে অপহরণ হয় ৪৫টি, ফেব্রুয়ারি মাসে ৬৩টি, মার্চ মাসে ৭৪টি, এপ্রিলে ৮২টি, মে মাসে ৬৫টি, জুন মাসে ৪৮টি, জুলাইয়ে ৮০টি, আগস্ট মাসে ৬৯টি, সেপ্টেম্বরে ৭১টি, অক্টোবরে ৮০টি, নভেম্বরে ৬৯টি ও ডিসেম্বরে ৬৭টি।

সংশ্লিষ্টরা জানান, কখনো দুর্বৃত্ত আবার কখনো আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে এসব ঘটনা ঘটছে। অপহরণের পর কারো লাশ মিলছে, আবার কেউ কেউ বছরের পর বছর ধরে নিখোঁজ। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলেও উদ্ধার হচ্ছে না অপহৃতরা।

ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অপহরণ ও গুমের ঘটনা আশংকাজনকভাবে বেড়ে যাওয়ায় আতংকিত হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নামে প্রতিদিনই দেশের কোথাও না কোথাও রাজনীতিবিদ থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী, ছাত্র ও সাধারণ মানুষ অপহরণের শিকার হচ্ছে। কারও কারও লাশ উদ্ধার হলেও অনেকেরই কোন হদিসই মিলছে না।

মহাজোট সরকারের ক্ষমতা নেয়ার পর থেকে অনেকে গুম হয়েছেন। বিএনপি নেতা চৌধুরী আলম গুম হওয়ার মধ্য দিয়ে এ সন্ত্রাস ছড়িয়ে পড়ে দেশজুড়ে। সর্বশেষ গত ১৭ এপ্রিল মঙ্গলবার রাতে গাড়ির চালকসহ ‘নিখোঁজ’ হন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ইলিয়াস আলী। এক সময়ের ডাকসাইটের এ ছাত্রনেতার ‘নিখোঁজ’ হওয়ার খবরে দেশে ও দেশের বাইরের প্রবাসী বাংলাদেশীদের মধ্যে বিরাজ করছে আলোচনা-ক্ষোভ-আতঙ্ক।

সরকারের উচিত পুরনো কেসগুলো দ্রুত মিটিয়ে ফেলা, দায়ীদের খুঁজে বের করা এবং তাদের শাস্তি নিশ্চিত করা। নইলে অতীত ও বর্তমানের চেয়ে ভবিষ্যতে এ পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে পারে।

-মুহম্মদ জিসান আরিফ

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৬৪

ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-১৩

চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-৩২

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২২ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস