চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-৩৯

সংখ্যা: ১৯৮তম সংখ্যা | বিভাগ:

-আল্লামা আবুল বাশার মুহম্মদ রুহুল

বর্তমান সংখ্যার আলোচনা: ইহুদীদের মদদপুষ্ট হয়ে এবং সউদী ওহাবী শাসকগোষ্ঠীর অর্থে সাহায্যপ্রাপ্ত হয়ে সারা বিশ্বে একটি হিজরী ক্যালেন্ডার অনুসরণের অলিক স্বপ্ন নিয়ে একটি ভুঁইফোঁড় সংগঠন সারা দেশে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।

Real Hizri Calendar Implementation Council Bangladesh  নামে এই সংগঠনটি সারা বিশ্বে একটি হিজরী ক্যালেন্ডার অনুসরণের পক্ষে নানা প্রচারণা চালাচ্ছে। সারা বিশ্বে একটি হিজরী ক্যালেন্ডার অনুসরণের পক্ষে (অর্থাৎ সারা বিশ্বে একদিনে ঈদ পালন করার পক্ষে) তারা ৯০টি খোঁড়া যুক্তি দাঁড় করিয়েছে। আমরা ধারাবাহিকভাবে তাদের বর্ণিত শরীয়তের খিলাফ এই মনগড়া যুক্তির শরীয়তসম্মত এবং সঠিক মতামত প্রকাশ করবো ইনশাআল্লাহ। যেন সাধারণ মুসলমানগণ চাঁদের তারিখ নিয়ে বিভ্রান্তিতে না পড়ে। তারা লিখেছে-

পূর্ব প্রকাশিতের পর

১৭. অনুবাদ: মহান আল্লাহ পাক উনার এই পৃথিবীতে কোন এক বান্দা রোযা রাখবে এবং অন্য এক বান্দা একই তারিখে ঈদ পালন করবে এই ত্রুটিপূর্ণ পদ্ধতি কখনো মহান আল্লাহ পাক উনার পদ্ধতি হতে পারে না। উনার পদ্ধতি সকল ত্রুটিমুক্ত।

১৮. কোন একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান সারা পৃথিবীতে ২-৩ দিন ধরে মুসলিম উম্মাহ পালন করতে পারে না।

১৭ নম্বর মন্তব্যের জবাব: এই তথাকথিত ইঞ্জিনিয়ার ক্রমাগত প্রলাপ বকে যাচ্ছে। কখনো কখনো উত্তর দিতে গিয়ে মনে হয় এত উদ্ভট, অর্থহীন বিষয়ের উত্তর দেয়া শুধু সময়ের অপচয়মাত্র। কিন্তু সকল শ্রেণীর পাঠকদের কথা বিবেচনা করেই আমরা উত্তর দিয়ে যাচ্ছি। নতুবা এই অপপ্রচারকারীরা মনে করবে আমরা উত্তর দিতে সক্ষম নই। প্রথমেই আসুন মহান আল্লাহ পাক কুরআন শরীফ-এ ইরশাদ করেছেন, æএই রাত এবং দিনের আবর্তনের মধ্যে জ্ঞানীদের জন্য নিদর্শন রয়েছে।” আমরা দেখতে পাই পৃথিবীর সকলস্থানে একসাথে রাত নামে না আবার একসাথে দিনের আলোও থাকে না। যখন পৃথিবীর এক অংশের মানুষ ঘুমিয়ে থাকে তখন অন্য অংশের মানুষ জেগে থাকে, কাজকর্মে ব্যস্ত থাকেন। এটাই নিয়ম, এটাই স্বাভাবিক। চাঁদ-সূর্যাস্তের সময় ছাড়া দেখা যায় না। আর কোন অঞ্চলের লোক দেখতে পেলে, সেই অঞ্চলের লোকজন ঘুমিয়ে থেকে পরের দিন সকালে ঈদের নামায পড়তে যান। এভাবে দেখা যায় কোন অঞ্চলের মানুষ যখন ঈদের নামায পড়তে যাচ্ছেন তখন পৃথিবীর কোন এক প্রান্তের মানুষ গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। সেই ঘুমন্তবাসীরা তাদের দিনের সকালে ঈদের নামায পড়তে যাবেন। আবার দেখা যায় কোন অঞ্চলের লোক যারা তাদের সন্ধ্যায় ঈদের চাঁদ দেখতে পাননি তারা পরবর্তী সন্ধ্যার জন্য অপেক্ষা করবেন। এতে দেখা যায় যখন কোন দেশের মানুষ ঈদ পালন করবে তখন যারা পূর্বের দিন সন্ধ্যায় ঈদের চাঁদ দেখতে পাননি উনারা রোযা রাখবেন। এটাই স্বাভাবিক নিয়ম। এটাই আল্লাহ পাক-উনার ইচ্ছা। এখন তথাকথিত ভ্রাতৃত্বের নামে যখন কেউ ঈদ পালন করবেন সেই সময় অন্য অঞ্চলে যারা ঘুমিয়ে আছেন তাদের ঘুম থেকে উঠে সেই মধ্যরাত্রিতে ঈদ পালন করতে হবে? নাঊযুবিল্লাহ! যা শরীয়তে কখনো সম্ভব নয়।

১৮ নম্বর মন্তব্যের জবাব: চাঁদ যখন কোন অঞ্চলের কোন মাসের ২৯তম দিনে প্রথম দৃশ্যমান হয় তারপর থেকে পশ্চিমে সন্ধ্যা নামতে থাকে এবং চাঁদের দৃষ্টিগ্রাহ্যতা বাড়তে থাকে। তারপরেও কোন অঞ্চলে চাঁদ দেখা যাবার পর তার পশ্চিমের একটি দেশের চাঁদ দেখার সম্ভাবনা থাকলেও আকাশ মেঘলা থাকলে চাঁদ দেখা যাবেনা। এক্ষেত্রে খুব স্বাভাবিকভাবেই একদিনের পার্থক্য হয়ে যাবে। ২-৩ দিন ধরে সারা পৃথিবীতে বিশেষ কোন ধর্মীয় অনুষ্ঠান যেমন ঈদ পালন হবার নেপথ্যে থাকে এরকম তথাকথিত ইঞ্জিনিয়ারদের অপব্যাখ্যা। কেননা পৃথিবীর সকল দেশে চাঁদ দেখে আরবী মাস শুরু হলে ১ দিনের পার্থক্য হবে আর আন্তর্জাতিক তারিখ রেখার পার্থক্যের কারণে তিনটি ভিন্ন তারিখ হতে পারে। কিন্তু অনেক তথাকথিত মুসলিম দেশ যেমন সউদী আরব, লিবিয়া, নাইজেরিয়া, (যাদের উচ্ছিষ্টভোগী এই তথাকথিত ইঞ্জিনিয়ার) অমাবস্যা অনুযায়ী কখনো অমাবস্যার পূর্বেই মাস শুরু করে বলে পৃথিবীতে ঈদ পালনে বা অন্য কোন ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করার ক্ষেত্রে ২-৩ দিনের পার্থক্য হয়ে যায়।

আর সারা পৃথিবীতে একটি নির্দিষ্ট হিজরী ক্যালেন্ডার অনুসরণের পক্ষে তারা যে সব যুক্তি দিয়ে যাচ্ছেন সেগুলো অবান্তর, যুক্তিহীন।

বিশ্বের জন্য ১৪৩১ হিজরীর পবিত্র রমাদ্বান

মাসের চাঁদের রিপোর্ট

জিরো মুন (অমাবস্যা) সংঘটিত হবে ১০ই আগস্ট, ২০১০, মঙ্গলবার,  ভোর ৩টা ০৮ মিনিটে (আন্তর্জাতিক সময় অনুযায়ী)।

অমাবস্যার দিন সউদী আরবে পবিত্র রমাদ্বান মাসের চাঁদ দেখা যাবার কোন সম্ভাবনা নেই।

বাংলাদেশের জন্য ১৪৩১ হিজরীর পবিত্র রমাদ্বান

মাসের চাঁদের রিপোর্ট

বাংলাদেশের স্থানীয় সময় অনুযায়ী জিরো মুন (অমাবস্যা) সংঘটিত হবে ১০ই আগস্ট, ২০১০, মঙ্গলবার সকাল ৯টা ০৮ মিনিটে।

বাংলাদেশে পবিত্র রমাদ্বান মাসের চাঁদ তালাশ করতে হবে ১১ই আগস্ট, ২০১০, বুধবার সন্ধ্যায়।

সেদিন ঢাকায় সূর্যাস্ত ৬টা ৩৫ মিনিটে এবং চন্দ্রাস্ত ৭টা ২১ মিনিটে। অর্থাৎ সূর্যাস্ত এবং চন্দ্রাস্তের সময়ের পার্থক্য ৪৬ মিনিট। সূর্যাস্তের সময় চাঁদ দিগন্তরেখার প্রায় ১০.৫ ডিগ্রি উপরে অবস্থান করবে এবং চাঁদ খুঁজতে হবে ২৭০ ডিগ্রি আজিমাতে। সেদিন চাঁদ দেখার কিছুটা সম্ভাবনা রয়েছে। তবে চাঁদ দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। কেননা একটু বিলম্বে চাঁদ দৃশ্যমান হতে পারে।

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৬৪

ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-১৩

চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-৩২

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২২ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস