ধর্মনিরপেক্ষতার দাবিদার ভারতে মুসলমানদের প্রতি নিরপেক্ষতার পরিবর্তে চলছে চরম নিপীড়ন। এদেশের হিন্দুরা ধর্মনিরপেক্ষতার নামে রামরাজত্ব চালাতে চায় কিন্তু ভারতে মুসলমানরা কতটুকু দলিত-মথিত সে খবর কী তারা রাখে? ভারতে মুসলমানদের প্রতি নির্যাতন ও নিপীড়নের ভয়াবহতার প্রকৃত খবর ক’জনে রাখে? অথচ মিডিয়ায়ও এসব খবরের সংখ্যা কম নয়। (৬)

সংখ্যা: ২১৫তম সংখ্যা | বিভাগ:

ভারতের গুজরাট রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০০২ সালের মুসলিমবিরোধী ভয়াবহ দাঙ্গার সময় দাঙ্গাবাজ হিন্দুদের না ঠেকাতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছিল বলে পদস্থ এক পুলিশ কর্মকর্তা ভারতের সুপ্রিমকোর্টে দেয়া এফিডেভিটে উল্লেখ করেছেন। ভারতীয় পুলিশ কর্মকর্তা সঞ্জিব ভাট সুপ্রিমকোর্টে দাঙ্গা সম্পর্কিত মামলায় এ এফিডেভিট দেন।

সঞ্জিব ভাট বলেন, ২০০২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি গোধরা দাঙ্গার পর নরেন্দ্র মোদি আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উচ্চপর্যায়ের এক বৈঠকে হিন্দুরা মুসলমানদের বিরুদ্ধে যেন তাদের ক্ষোভ মেটাতে পারে, পুলিশকে সে সুযোগ করে দেয়ার নির্দেশ দেন। ভাট এক্ষেত্রে নরেন্দ্র মোদির নির্দেশ সরাসরি তুলে ধরেন, যাতে গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, মুসলমানরা যাতে আবার ট্রেনে আগুন দেয়ার মতো ঘটনা ঘটাতে না পারে, সেজন্য তাদের উচিত শিক্ষা দেয়ার এটি মোক্ষম সময়।

গুজরাটের গোধরা স্টেশনে একটি ট্রেনে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় অর্ধশতাধিক হিন্দু নিহত হওয়ার পর মুসলিমবিরোধী দাঙ্গা শুরু করা হয়েছিল। গোধরার ট্রেনে আগুন লাগানোর জন্য মুসলমানদের দায়ী করা হলেও পরবর্তী সময়ে তদন্তে দেখা গেছে, উগ্র হিন্দুরাই মুসলিমবিরোধী দাঙ্গা বাধানোর অজুহাত সৃষ্টির উদ্দেশ্যে ট্রেনটিতে আগুন দিয়েছিল।

গুজরাটে ২০০২ সালের মুসলিমবিরোধী ভয়াবহ দাঙ্গায় দুই হাজারেরও বেশি মুসলমান নিহত হন। ওই দাঙ্গার সময় গুজরাটের পুলিশ দাঙ্গাবাজ হিন্দুদের থামানোর চেষ্টা তো করেইনি, বরং অনেক ক্ষেত্রে দাঙ্গাকারীদের সহায়তা করেছিল। মুসলিমবিরোধী ওই দাঙ্গায় উগ্র হিন্দুবাদী বিজেপি দলের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হাত ছিল বলে একাধিকবার অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু এবারই প্রথম একজন পুলিশ কর্মকর্তার পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হলো যিনি নরেন্দ্র মোদির নির্দেশের সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন।

সিআইডি কর্মকর্তা হিসেবে গোধরা দুর্ঘটনার তদন্ত করতে গুজরাটে পোস্টিং পেয়েছিলেন ১৯৮৮ ব্যাচের কর্মকর্তা সঞ্জিব ভাট। সে সময় তার উপস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রাজ্যের শীর্ষস্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তাদের দাঙ্গায় মুসলিম নিধনের পথ পরিষ্কার করে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন।

সুপ্রিমকোর্টে দেয়া এফিডেভিটে সঞ্জিব ভাট গুজরাট দাঙ্গা তদন্তের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশে গঠিত স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম বা এসআইটির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, এসআইটি তার দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেনি।

গত বছর এসআইটি দুই দফায় কয়েক ঘণ্টা নরেন্দ্র মোদিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল। সে সময় এসআইটি জানিয়েছিল, নরেন্দ্র মোদি তাদের বলেছে, ২০০২ সালের দাঙ্গা প্রতিহত করার জন্য সে যথাসাধ্য চেষ্টা করেছে।

গুজরাটের দাঙ্গায় সাবেক কংগ্রেস নেতা এহসান জাফরি নিহত হন। তাকে ঘরের মধ্যে আটকে রেখে আগুনে পুড়িয়ে মেরেছিল উগ্র হিন্দুরা। নিহত জাফরির স্ত্রী জাকিয়া জাফরি আদালতে তার অভিযোগে বলেছিলেন, গুজরাট সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে মুসলিমবিরোধী দাঙ্গা বন্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে সুপ্রিমকোর্টের নির্দেশে এসআইটি এর আগে আইপিএস কর্মকর্তা সঞ্জিব ভাটকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। জাকিয়া জাফরি তার অভিযোগে নরেন্দ্র মোদিসহ ৬২ জন কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করে বলেছিলেন, গুজরাট মন্ত্রিসভার সদস্যসহ পুলিশ কর্মকর্তা ও পদস্থ আমলাদের নির্দেশ ও তত্ত্বাবধানে গুজরাটে দাঙ্গা হয়েছিল।

কিন্তু ১০ বছর পর গুজরাট দাঙ্গা মামলায় সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছে, মামলার নিষ্পত্তি করবে রাজ্যের নিম্ন আদালত৷ সুপ্রিম কোর্ট আর এই মামলার নজরদারি করবে না৷ এতে উল্লেখিত মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং তার দল বিজেপি৷

২০০২ সালে গোধরা পরবর্তী গুজরাট দাঙ্গার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি করবে রাজ্যের ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের নিম্ন আদালত, এই মর্মে সম্প্রতি রায় দেয় সুপ্রিম কোর্ট৷ এই মামলায় আর নজরদারি করবেনা শীর্ষ আদালত৷ বিশেষ তদন্তকারী দলকে চূড়ান্ত রিপোর্ট আহমেদাবাদের নিম্ন আদালতে পেশ করতে বলেছে শীর্ষ আদালত৷

লবার্গ হাউজিং সোসাইটিতে গণহত্যায় যে ৬৩ জন প্রাণ হারিয়েছিলেন তাঁদের মধ্যে ছিলেন কংগ্রেস সাংসদ এহশান জাফরি৷ তাঁর পতœী জাকিয়া জাফরি দাঙ্গা প্রতিরোধে নিষ্ক্রিয় থাকার অভিযোগে মামলা করেন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও অন্যান্যদের বিরুদ্ধে৷ গুজরাট দাঙ্গায় মোট মারা যায় ১২০০ লোক৷

এই রায়ে হতাশা ব্যক্ত করে জাকিয়া জাফরি বলেছেন, ন্যায় বিচারের জন্য ১০ বছর অপেক্ষা করেছি৷ শেষ দেখে যাবো৷ বহু সাক্ষ্য প্রমাণ দিয়েছি৷ বহু লোককে গ্রেপ্তার করা হয় কিন্তু তাঁর কথায়, আসল অপরাধী বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন৷ স্বস্তিতে মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

এদিকে ভারতের গুজরাট রাজ্যে ২০০২ সালে যে দাঙ্গা হয়েছিল তার রেকর্ডপত্র নষ্ট করে দেয়া হয়েছে। ওই দাঙ্গা নিয়ে তদন্ত করছে এমন একটি প্যানেলকে সরকার এ তথ্য দিয়েছে। তারা বলেছে, ওই  রেকর্ডপত্র নষ্ট করা হয়েছে নিয়ম অনুযায়ী। ওইসব ডকুমেন্টের মধ্যে আছে টেলিফোন কল ও কিছু সরকারি কর্মকর্তার চলাফেরা। সরকার বলেছে, ওই ঘটনার পর ২০০৭ সালে সরকার ওই দাঙ্গার ডকুমেন্টগুলো নষ্ট করে ফেলেছে। সরকারি কর্মকর্তারা বলেছেন, এটাই আদর্শ নিয়ম। ২০০২ সালের ওই দাঙ্গায় এক হাজারের বেশি মানুষ নিহত হন। তাদের বেশির ভাগই মুসলমান। একটি ট্রেনে অগ্নিসংযোগের ফলে ৬০ জন হিন্দু নিহত হওয়ার ঘটনায় সৃষ্টি হয় ওই দাঙ্গা। হিন্দুদের অভিযোগ ছিল, ওই অগ্নিসংযোগ করেছে মুসলমান প্রতিবাদকারীরা। অভিযোগ ওঠে, গুজরাট সরকার ওই ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে খুব কমই ব্যবস্থা নিচ্ছে। ফলে বিষয়টি তদন্ত করতে ২০০৮ সালে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট একটি তদন্ত দল গঠন করে। সরকারি আইনজীবী এসবি ভাকিল নানাবতী প্যানেলের কাছে বলেছেন, ওই দাঙ্গার অনেক ডকুমেন্টই নষ্ট হয়ে গেছে। (ইনশাআল্লাহ চলবে)

-মুহম্মদ তা’রীফুর রহমান

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৬৪

ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-১৩

চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-৩২

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২২ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস