পাঠ্যবইয়ে পবিত্র দ্বীন ইসলাম বিরোধী শিক্ষা এবং চরম দলীয়করণ কৌশলে বাদ দেয়া হয়েছে মুসলিম কবি সাহিত্যিকদের ঐতিহ্যনির্ভর লেখা

সংখ্যা: ২২৯তম সংখ্যা | বিভাগ:

সব প্রশংসা মুবারক যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত দুরূদ মুবারক ও সালাম মুবারক।

নিম্নমাধ্যমিকের পাঠ্যবইয়ে পরতে পরতে আওয়ামীকরণ করা হয়েছে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ব্যাপারে সব ক্ষেত্রেই আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য দলগুলোকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, পাঠ্যবইয়ে বিখ্যাত মুসলমান কবি ও সাহিত্যিক এবং তাদের জনপ্রিয় লেখাগুলো বাদ দেয়া হচ্ছে। তাদের বদলে বিভিন্ন হিন্দু লেখকের লেখাকে সবার আগে স্থান দেয়া হয়েছে পাঠ্যবইয়ে। এসব হিন্দু লেখকের বেশির ভাগই ভারতের। নিম্নমাধ্যমিকের পাঠ্যবই বিশেষ করে সপ্তম, অষ্টম ও নবম-দশম শ্রেণীর পাঠ্যবইয়ে রয়েছে নানা অসঙ্গতি। এসব শ্রেণীর পাঠ্যবইয়ের বিভিন্ন অধ্যায় বা গল্পের সাথে প্রশ্নের কোনো মিল নেই। আবার কোনো কোনো পাঠ্যবইয়ে বাংলাদেশের স¦াধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস নিয়েও করা হয়েছে নজিরবিহীন দলীয়করণ। এতে করে বিভ্রান্তিতে পড়েছে কোমলমতি নিম্নমাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা। যে কারণে অভিভাবক ও সচেতন মহলেও প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।

নবম-দশম শ্রেণীর একটি পাঠ্যবই হলোÑ মাধ্যমিক বাংলা সাহিত্য। বইটিতে কবিতা ও সাহিত্য একত্রে সম্পাদনা করা হয়েছে। বইটির গদ্যাংশে একত্রিশজন লেখকের মধ্যে বারোজন হিন্দু লেখকের লেখা স্থান পেয়েছে। যবন মেøচ্ছ ঠাকুরের এককভাবে তিনটি লেখা স্থান পেয়েছে। এ ছাড়া ২০১৩ সালের সিলেবাসে প্রখ্যাত মুসলিম লেখকদের লেখাকে স্থান দেয়া হয়নি। বরং আগের বছর যেসব লেখা সিলেবাসের অন্তর্ভুক্ত ছিল তাও বাদ দেয়া হয়েছে।

ওদিকে বইটির কবিতাংশে সমসংখ্যক লেখকের মধ্যে ১৬ জন হিন্দু লেখকের কবিতা স্থান পেয়েছে পাঠ্যবইয়ে। মুসলমান লেখকদের লেখাগুলোকে হিন্দু লেখকদের পরে স্থান দেয়া হয়েছে। যেমনÑ বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের গত বছরের লেখাগুলো বাদ দিয়ে অন্য দুটি কবিতা একজন হিন্দু লেখকের পর স্থান দেয়া হয়েছে।

বইটির ১৯৭ ও ২০০ নম্বর পৃষ্ঠায় কবি নজরুলের আগের বছরের লেখা কবিতা পরিবর্তন করে এ বছর সিলেবাসে ‘আজ সৃষ্টি সুখের উল্লাসে’ ও ‘মানুষ’ কবিতার স্থান দেয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, কবিতাংশে আরো পরিবর্তন করা হয়েছে।

অথচ ২০১২ সালের নবম-দশম শ্রেণীর মাধ্যমিক বাংলা সঙ্কলন বইয়ের কবিতাংশে যেসব কবিতা ছিল বর্তমান সিলেবাসে এর বেশির ভাগই নেই। যেমন গত বছর কবিতাংশে প্রথমে বন্দনা ও হামদ সংবলিত কবিতা ছিল। এরপর বিভিন্ন বিখ্যাত মুসলিম লেখকের কবিতা স্থান পেয়েছিল। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ব্যাপক সাড়া জাগানো ‘উমর ফারুক’ ও ‘কা-ারি হুঁশিয়ার’ এবং ফররুখ আহমদের ‘সাত সাগরের মাঝি’ কবিতাটি স্থান পেয়েছিল। কিন্তু ২০১৩ সালের সিলেবাসে মুসলিম লেখকদের বাদ দিয়ে হিন্দু লেখকের লেখাকে স্থান দেয়া হয়েছে।

এ ছাড়া অষ্টম শ্রেণীর একটি পাঠ্যবই সাহিত্য কণিকা। এ বইটিতেও বিখ্যাত মুসলিম লেখক ভালো লেখাগুলোকে স্থান না দিয়ে ভিন্ন প্রসঙ্গের লেখাগুলোকে স্থান দেয়া হয়েছে।

বলার অপেক্ষা রাখেনা কবি নজরুল ইসলামের ‘উমর ফারুক’ ও ‘কা-ারি হুঁশিয়ার’ এবং ফররুখ আহমদের ‘সাত সাগরের মাঝি’ কবিতাগুলো ছিল মুসলানদের ঐতিহ্য ও গর্ব নিয়ে লেখা। কিন্তু মুসলমানদেরকে তাদের ঐতিহ্য থেকে দূরে রাখতেই কৌশলে বর্তমান সরকার এসব ঐতিহ্যনির্ভর লেখা বাদ দিচ্ছে।

এভাবে চলতে থাকলে দশ বছর পর একজন শিক্ষার্থী যখন উচ্চমাধ্যমিক পাস করে বের হবে তখন সে ইসলাীম জ্ঞানশূন্য হয়ে বের হবে। ইসলাম উনার ন্যূনতম জ্ঞান তার থাকবে না।

অপরদিকে নবম-দশম শ্রেণীর জন্য পাঠ্য ‘বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা’ বইয়ে লেখা হয়েছে ‘ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম করা ছিল মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থী’। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড কর্তৃক প্রণীত ইতিহাস বইটি ২০১৩ সালের শিক্ষার্থীদের জন্য প্রণীত।

ইতিহাস বইয়ে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম করা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থী আখ্যায়িত করায় এ নিয়ে সচেতন শিক্ষক-অভিভাবকেরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এ বিষয়ে কয়েকজন বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তারাও এর বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা এবং ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এ রূপ বিভ্রান্তিকর শিক্ষা দেয়ার অধিকার তাদেরকে দিয়েছে। তাদের মতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সাথে ইসলাম উনার কোনো বিরোধ ছিল না। ইসলাম উনার বিরোধিতার জন্য কেউ মুক্তিযুদ্ধ করেনি।

ইতিহাস পর্যালোচনার নামে চরম দলাদলি, হিংসা-বিদ্বেষ এবং সংঘাতকে উসকে দেয়া হয়েছে পাঠ্য বইয়ের মাধ্যমে বলে মন্তব্য করেছেন সচেতন শিক্ষক এবং অভিভাবকেরা। তারা জানিয়েছেন বইটির ১৯৭৫-১৯৯০ ইতিহাস অধ্যায় পড়ে মনে হয় এটি কোনো পাঠ্যবই নয়, বরং দলীয় পুস্তিকা। কোনো পাঠ্যবইয়ের ভাষা, শব্দচয়ন এবং বাক্য গঠন যে এমন হতে পারে সেটি ভেবে তারা বিস্মিত। এসব পড়ে কোনো শিক্ষার্থী সুস্থ মন-মানসিকতা নিয়ে বেড়ে উঠতে পারে না বলে জানিয়েছেন তারা।

বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা বইয়ের ‘সামরিক শাসন ও পরবর্তী ঘটনা প্রবাহ (১৯৭৫-১৯৯০)’ অধ্যায়ের ২০২ নম্বর পৃষ্ঠায় তিন লাইনের একটি বিষয় হলো ‘রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম’। এখানে লেখা হয়েছে-

‘জেনারেল এরশাদ সংবিধানের অষ্টম সংশোধনীর মাধ্যমে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম বলে ঘোষণা করেন। এই সংশোধনীর মাধ্যমে তিনি ইসলামপন্থী দলগুলোর সমর্থন লাভের চেষ্টা করেন। মূলত রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এরশাদ এই সংশোধনী আনেন। বলার অপেক্ষা রাখে না ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম করা ছিল মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থী।’

মূলত মুক্তিযুদ্ধ ছিল ইসলাম প্রতিষ্ঠার পক্ষে বিরাট একটা সুযোগ। ইসলাম উনারর বিরোধিতা করে মুক্তিযুদ্ধ হয় না। ইসলাম মানুষের জন্য। আর মুক্তিযুদ্ধও ছিল মানুষের জন্য। দেশের আপামর মানুষ মুক্তিযুদ্ধ করেছে। তারা ইসলামবিরোধী ছিলেন না।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ কখনোই ইসলামবিরোধী কোনো কর্মকা- ছিল না। বরং যারা মুক্তিযুদ্ধে অংগ্রহণ করেছেন তারা ইসলাম ধর্ম বিশ্বাস মতেই অংশগ্রহণ করেছিলেন। কারণ ইসলাম উনার শিক্ষা হলো অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা। কাজেই যারা বলেন, ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম করা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরোধী তাদের কথা সম্পূর্ণ ভুল। মূলত এরূপ মহাভুল ও কুফরী মতবাদের উপরই চলছে বর্তমান শিক্ষা-পাঠ্যক্রম; যা ৯৭ ভাগ মুসলমান উনাদের দেশে কোনোমতেই চলতে পারেনা। এর অবশ্যম্ভাবী পরিবর্তন ঘটাতে হবে।

-মুহম্মদ তা’রীফুর রহমান

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৬৪

ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-১৩

চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-৩২

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২২ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস