পুলিশ থেকে প্রশাসক আজ সম্ভ্রমহরণকারী, শোষক, দুর্নীতিবাজ ও জালেম। রাষ্টযন্ত্র সে অধর্মের পৃষ্ঠপোষকতা করে। তাকে প্রতিহতকরণের জন্য সামাজিকভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে হবে।

সংখ্যা: ২১১তম সংখ্যা | বিভাগ:

সব প্রশংসা মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত দুরূদ ও সালাম।

দুবেলা পেট পুরে খেতে পারবে, এ আশায় রোমেলাকে পুলিশের এক উপপরিদর্শকের (এসআই) বাসায় কাজ করতে পাঠান তার গরিব বাবা-মা। অভিযোগ পাওয়া গেছে, ওই দম্পতি তার উপর চালিয়েছে নির্মম নির্যাতন। গরম পানি ঢেলে পুড়িয়ে দিয়েছে রোমেলার পুরো শরীর। গরম খুন্তির ছ্যাঁকা দিয়েছে তার মুখে, পিঠে। গুরুতর অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

রোমেলাদের বাড়ি পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার কাশীনাথপুর ইউনিয়নের গোটেংরা গ্রামে। বাবা মুহম্মদ ইয়াজ উদ্দিন দিনমজুর। মা অন্যের বাড়িতে কাজ করেন। তিন ভাই বোনের মধ্যে রোমেলা সবার ছোট।

ইয়াজ উদ্দিন জানান, অভাবের সংসারে সন্তানদের ঠিকমতো খাওয়াতে-পরাতে পারেন না। গত বছরের মার্চ মাসে পাশের গ্রামের আনছার আলী রোমেলার জন্য জেলার বেড়া উপজেলার নান্দিয়ারা গ্রামের মুহম্মদ শাহেদ আলীর বাসায় কাজ ঠিক করেন। শাহেদ আলী পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই)। তিনি চট্টগ্রামের সীতাকু-ু থানায় কর্মরত আছেন।

পুলিশ দম্পতির নির্মম নির্যাতনের শিকার পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসাধীন গৃহকর্মী শিশুকন্যা রোমেলা খাতুনের (৮) জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে।

জবানবন্দিতে রোমেলা তদন্তকারী কর্মকর্তাকে জানায়, অবিশ্রাম কাজ করার পরেও ছোটখাটো ব্যাপারে দারোগার বউ তাকে বেদম মারতেন। রুটি বানানোর বেলুন ও খুন্তি দিয়ে পেটাতেন, খোঁচাতেন। একবার খুন্তির আঘাতে মাথা ফেটে রক্ত বের হয়। সে কাপড় দিয়ে মাথা ঢাকার পর রক্তে কাপড় ভিজে যায়। রক্ত শুকানোর পর আবার মার শুরু করতেন। একদিন প্লেট ভাঙার কারণে তার পিঠে গরম খুন্তি দিয়ে ছ্যাঁকা দেয়া হয়। রোমেলা আরো জানায়, মারের আঘাতে একবার তার ঠোঁট ফেটে গিয়ে রক্ত ঝরছিল। তখন দারোগার বউ সুইটি খাতুন নিজেই কাপড় সেলাইয়ের সুঁই-সুতা দিয়ে তার ঠোঁট সেলাই করে দেন। মারধরের কথা দারোগাকে (শাহেদ আলী) জানালে দারোগার বউ আরো বেশি মারপিট করতেন।

উল্লেখ্য, এর আগে সম্প্রতি পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিবের বাসায় নির্মম নির্যাতনে এক কিশোরী গৃহকর্মীর করুণ মৃত্যু হয়। এর আগে-পরে ঘটেছে এমন অমানবিক নির্যাতনের আরও ঘটনা।

তবে প্রণিধানযোগ্য যে, যারা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত অথবা আইন-শৃঙ্খলা বাস্তবায়নের কাজে নিবেদিত তারাই আইন-শৃঙ্খলা ভঙ্গকারী কতটুকু নির্মম ভয়ঙ্কর পশুতে পরিণত হয়েছে তা পুলিশ অথবা প্রশাসনের উচু পদে কর্মরত কর্মকর্তাদের এহেন ন্যক্কারজনক কার্যাবলীতেই স্পষ্টভাবে প্রকাশিত হয়, সমাজ আজ কোন পর্যায়ে পৌঁছেছে তা প্রতিভাত হয়।

প্রসঙ্গত ঈদুল আযহার সময় আরো দুটি ঘটনা এক্ষেত্রে উল্লেখ্য।

ঈশারাত জাহান ইভা। ছয় বছরের স্কুলছাত্রী। ঈদুল আযহার ছুটিতে মামার বাসায় বেড়াতে এসেছিল অবুঝ শিশুটি। ঈদের আগের রাতে টেলিভিশনে কার্টুন দেখার সময় পাশের বাসার ভাড়াটে জাকির শিশুটিকে ফুঁসলিয়ে ঘরের বাইরে ডেকে নিয়ে যায়। সম্ভ্রমহরণ করে শিশুটিকে। তার পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করে জাকির। এমনকি লাশের পরিচয় নিশ্চিহ্ন করতে ফুটন্ত পানি ঢেলে দেয় তার শরীরে। ঈদের দিন সকালে বাড়ির পাশের ডোবায় ইভার মৃত দেহ ভাসমান অবস্থায় পাওয়া যায়। মর্মান্তিক এ ঘটনা ঘটেছে রাজধানীর খিলক্ষেতের নামাপাড়া এলাকায়। পরে র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার জাকির শিশুটিকে অপহরণ ও সম্ভ্রমহরণের পর নির্যাতনের কথা স্বীকার করে।

এদিকে ঈদুল আযহার আগের রাতে নগরীর হাজারীবাগ এলাকায় সাত বছরের একটি শিশুকে সুলতানগঞ্জ এলাকার এক যুবক তার সম্ভ্রমহরণ করে। এ কথা কাউকে বললে হত্যারও হুমকি দেয়া হয়। পরে বিষয়টি প্রকাশ পাওয়ায় থানায় মামলা হয় এবং শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করা হয়।

বর্ণিত তিনটি ঘটনাই কিন্তু একই সূত্রে গাঁধা। দেশের সামাজিক অবক্ষয়ের মাত্রা কতটুকু বেড়েছে তার ব্যারোমিটার প্রকাশ করছে।

কোনরূপ রাখ-ঢাক না রেখেই এ সত্য আজ স্পষ্টরূপে সবাইকে স্বীকার করতে হবে যে উচ্চশিক্ষা, স্যুটেড-বুটেড পোশাক, সংষ্কৃতি চর্চা এগুলোর আড়ালে আসলে সমাজে মুখোশধারী পশু বসবাস করছে। আর সংষ্কৃতির নামে যে বিবস্ত্র দেহসৌন্দর্য প্রদর্শনীর প্রক্রিয়া চলছে তাতে করে সবাই ইজ্জত সম্ভ্রমহরণকারী এক একটা ক্ষুধার্ত নেকড়ে বা নেকড়ীতে পরিণত হচ্ছে। (নাঊযুবিল্লাহ)

বলার অপেক্ষা রাখেনা, সমাজ আজ মুখোশধারী ভদ্র মানুষের অন্তরালে আসলে নেকড়ে-নেকড়ীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। (নাঊযুবিল্লাহ)

এখানে নাই- দয়া, মায়া, মমতা, নেই মনুষ্যত্ব, নেই মানবিকতা, নেই ধর্মীয় মূল্যবোধ, নেই পরকালের চিন্তা; আছে কেবলি পুঁজিবাদী প্রবণতা।

জীবন-যৌবন-দেহ সংসার সন্তান সবই পুঁজির প্রক্রিয়ায় মূল্যায়নের প্রবণতা। যেনোতেনোভাবে খাও-দাও ফুর্তি করোর মানসিকতা। আরেকজনকে প্রতারণা করে, জুলুম করে নিজের ভোগবাদী লালসা পূরণ করা। (নাঊযুবিল্লাহ)

সমাজ তাই আজ শুধু শোষিত আর শোষক এ দুভাগেই বিভক্ত নয়। বরং সমাজের সবাই আজ বড়ই বিভ্রান্ত।

বলাবাহুল্য, সমাজ; রাষ্ট্রযন্ত্রের চেয়ে ব্যাপক ও বিশাল। তাই রাষ্ট্রযন্ত্র মূল্যবোধের অবক্ষয়ের, অধর্মের, অনৈতিকতার যে পৃষ্ঠপোষকতা ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা করে থাকে; তাকে সামাজিকভাবেই প্রতিহত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে হবে। আর এক্ষেত্রে সমাজের একমাত্র ও মোক্ষম হাতিয়ার হল দ্বীন ইসলাম।

বলাবাহুল্য, এদেশের মানুষ দ্বীন ইসলামের আবহের মধ্য দিয়ে জন্ম লাভ করে। জন্মের সময়ই আযান শ্রবণ করে। হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে- ‘প্রত্যেক শিশুই সত্যের উপর জন্মগ্রহণ করে।’ কিন্তু তার বাবা-মা- পরিবেশ তাকে বিভ্রান্ত করে।

প্রসঙ্গত: আমরা মনে করি, ধর্মনিরপেক্ষতা, বিশ্বায়ন, সংস্কৃতি ইত্যাদির নামে বর্তমান রাষ্ট্রযন্ত্র এদেশের ৯৭ ভাগ মুসলমানের প্রতি সে বিভ্রান্তমূলকই আচরণ করে যাচ্ছে। যার কারণেই রাষ্ট্রের পোষ্য বাহিনী পুলিশ থেকে প্রশাসকও হচ্ছে ইজ্জত সম্ভ্রমহরণকারী, শোষক, দুর্নীতিবাজ ও জালেম। এই যদি হয় অবস্থা তবে রাষ্ট্রযন্ত্রের ভেতরটাও যে ঘুনে ধরে কেবল ফাঁপা হয়ে আছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কথা হচ্ছে নির্বোধ রাষ্ট্রযন্ত্র তা বুঝবে কবে?

মূলত এসব অনুভূতি ও দায়িত্ববোধ আসে ইসলামী অনুভূতি ও প্রজ্ঞা থেকে। আর তার জন্য চাই নেক ছোহবত তথা ফয়েজ-তাওয়াজ্জুহ।

যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবতে তা খুব সহজেই পরিপূর্ণ হাছিল সম্ভব। মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। (আমীন)

-মুহম্মদ লিসানুল্লাহ

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৬৪

ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-১৩

চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-৩২

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২২ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস