প্রতি বছরই পহেলা বৈশাখ পালনকারীরা প্রার্থনা ও প্রত্যাশা করে। কিন্তু প্রতি বছরই দুর্ভোগ আরো বাড়ে। প্রকৃতি ও পহেলা বৈশাখের কাছে মুসলমানদের প্রার্থনা ও প্রত্যাশা করার কিছু নেই। মুসলমানকে ইবলিস ও নফসের পথ থেকে তওবা করে ফিরে আসতে হবে।

সংখ্যা: ২১৪তম সংখ্যা | বিভাগ:

সব প্রশংসা মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত দুরূদ ও সালাম।

জাতি হিসেবে আমাদের বাঙালি বলা হলেও সরকারি ভাষায় নাগরিক হিসেবে সবাই বাংলাদেশী। সাতানব্বই ভাগ বাংলাদেশীই মুসলমান। ইসলাম তাদের দ্বীন। রব লা-শরীক আল্লাহ পাক।

সব চাওয়া-পাওয়ার মালিক আল্লাহ পাক। সবকিছুর সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহ পাক। আসমান-যমীন প্রভৃতি চাঁদ-সূর্য সবকিছুর সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহ পাক। মুসলমান সবসময় দোয়া করে- ‘রব্বনা আতিনা ফিদদুনিয়া হাসানাতাও ওয়াফিল আখিরাতি হাসানাতাঁও ওয়াক্বিনা আজাবান্নার’ অর্থাৎ æহে আল্লাহ পাক! আমাদের দুনিয়ার ভালাই দান করুন এবং পরকারের ভালাই দান করুন এবং জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করুন।” অর্থাৎ দুনিয়ায় হোক আখিরাতের হোক সবকিছুর ভালো দান করার মালিক আল্লাহ পাক।

মুসলমান মহান আল্লাহ পাক উনার কাছেই সব প্রার্থনা করে। অন্য কথায় মহান আল্লাহ পাক উনার কাছে প্রার্থনা না করে অন্য কারো কাছে প্রার্থনা করলে তিনি মুসলমান থাকতে পারেন না। পাশাপাশি উল্লেখ্য যে, অন্য কারো সে প্রার্থনা কবুল করার ক্ষমতা নেইও।

তার প্রমাণ অবশ্য প্রতি পহেলা বৈশাখেই প্রতিভাত হচ্ছে। কারণ প্রতি পহেলা বৈশাখে গতায়ু বছরের হতাশা-ক্লান্তি, অপ্রাপ্তি-বেদনা, পাপাচার-অনাচারসহ সব হাহাকারের পালা সাঙ্গ করে আগামী বছর নতুন আমেজ নতুন প্রত্যাশা যার সম্ভবনা আকাঙ্খা করে সব পহেলা বৈশাখ পালনকারীরা। কিন্তু দেখা যায় প্রতি বছরই গত বছরের থেকে অবস্থা আরো খারাপ হয়।

নারী টিজিং, সম্ভ্রমহরণ, খুন-রাহাজানি, পারিবারিক থেকে সামাজিক বিবাদ আরো বাড়ে। দলবাজি আরো চাঙ্গা হয়। দুর্নীতি প্রশাসন থেকে বিচারবিভাগ সর্বত্র আরো বিস্তৃত হয়। বাড়ে দারিদ্র্য। দারিদ্র্যের চরম সীমা লঙ্ঘিত হয়। বাড়ে ক্ষুধার্তের সংখ্যা। আর্তের সংখ্যা। বস্ত্রহীনের সংখ্যা।

বাড়ে লোভীর সংখ্যা। নারী দেহ ভোগকারীদের সংখ্যা। ব্যভিচারের সংখ্যা। দেহ ব্যবসায়ীদের সংখ্যা। চরিত্রহীনদের সংখ্যা। মাদকসেবীদের সংখ্যা। সন্ত্রাসীদের সংখ্যা। বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীদেহ ভোগ করে ফার্স্টক্লাস পাইয়ে দেবার শিক্ষকের সংখ্যা। ভাল নাম্বার দেয়ার প্রলোভনে ছাত্রীদেরকে ঘরের বউয়ের মতো ব্যবহারকারী শিক্ষকের সংখ্যা।

স্বামী-সন্তান ফেলে রেখে অন্য পুরুষের হাত ধরে চলে যাওয়া স্ত্রীদের সংখ্যা। এমনকি পরকীয়ার কারণে আপন সন্তান হন্তারক মায়ের সংখ্যা। বাড়ে ভোগবাদী লালসা। বাড়ে পুঁজিবাদী প্রবণতা। বাড়ে মূল্যবোধের অবক্ষয়।

বলাবাহুল্য, এ আঙ্গিকে দেখা যাবে ১৯৬৭ সালে যখন ছায়ানট প্রথম আনুষ্ঠানিকতা করে পহেলা বৈশাখের কাছে প্রত্যাশা করেছে তাদের প্রত্যাশা তথা প্রার্থনার বিপরীতে দিন দিন উল্টো ফলই ক্রমবৃদ্ধিহারে প্রকাশিত হয়েছে। অর্থাৎ পহেলা বৈশাখ প্রার্থনাকারীদের প্রার্থনা কোনদিনই কবুল হয়নি। কারণ যে প্রকৃতির কাছে তারা প্রার্থনা করেছে সে প্রকৃতি নিজেই খোদা-তায়ালার সৃষ্টি। সুতরাং তার দেবার কোন ক্ষমতা নেই এবং তাই কোনদিন দিতেও পারেনি।

বলাবাহুল্য এ তথ্যে সব মুসলমানই বিশ্বাসী। সুতরাং মুসলমান তো প্রচলিত ভাবধারায় পহেলা বৈশাখ পালন করতে পারে না এবং ইসলামের আলোকে কোনভাবেই পারে না। কারণ ইসলামের আলোকে কোন নওরোজই পালন করা জায়িয নেই।

প্রসঙ্গত যদি মুসলিম বিদ্বেষী ইসলাম বিদ্বেষী মহল মনে করেন যে, মুসলমান প্রকৃত অর্থে পহেলা বৈশাখ পালন করছে তাহলে তারা ভুল করবেন। কারণ যে মুসলমান ঈদ পালন করে সে মুসলমান মহান আল্লাহ পাক উনাকে বিশ্বাস করে।

আর মহান আল্লাহ পাক উনাকে যারা বিশ্বাস করে তারা অন্য কোন প্রকৃতি বা সংস্কৃতিতে বিশ্বাসী নয়। যদিও নফসের প্ররোচনায় অথবা ইবলিসের কুমন্ত্রণায় তারা পহেলা বৈশাখের হুজ্জোতিতে শামিল হয় তারপরেও অন্তরে তারা ওইসব কাজকে নাজায়িয ও অনৈসলামি মনে করে। প্রকৃত অর্থে আত্মিকভাবে কখনও করে না। যদি করতো তাহলে তারা মুসলমান থাকতো না। পরিচয় দিতনা। আর মুসলমান সব গুনাহ করেও তওবা করলে মহান আল্লাহ পাক তিনি ক্ষমা করে দেন। পাপী মুসলমান তখন মু’মিন হয়।

এখানেই ইবলিসের অনুচর তথা পহেলা বৈশাখ প্রতিভূদের করুণ ব্যর্থতা তথা মৃত্যু।

এক্ষেত্রে সরকারের উচিত মুসলমান যাতে মুসলমান থাকতে পারে সে পরিবেশ ও শিক্ষার পৃষ্ঠপোষকতা করা। পাশাপাশি মুসলমানদেরও উচিত জেনে শুনে শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ না করা। কারণ শয়তান আমাদের প্রকাশ্য শত্রু।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ইসলামে এমন দুটি ধারণা আছে যা অন্য কোনো ধর্মে নেই। তা হলো ‘ইবলিস’ ও ‘নফস’। এই ইবলিস ও নফস বিভিন্ন মোড়কের আদলে মানুষকে পাপ কাজ করায়। নারী-দৃষ্টি, নারীসঙ্গ, গান-বাজনা, বেপর্দা, বেশরা ইত্যাদিতে তথা কঠিন গোনাহে লিপ্ত করে। এক্ষেত্রে কখনও ‘পহেলা বৈশাখ’, কখনও ‘থার্টি ফার্স্ট নাইট’ কখনও ‘ভ্যালেন্টাইন ডে’, কখনও ‘বন্ধু উৎসব’, কখনও ‘বাসন্তি উৎসব’ ইত্যাদি মুখরোচক বিষয় তাদের আবরণ হয়। কিন্তু মূল- যা ওই নফস ও ইবলিসের সমন্বয়ে পাপ কাজ। যার অবশ্যম্ভাবী পরিণতি জাহান্নাম। কিন্তু মুসলমান জাহান্নামের অধিবাসী হতে পারেনা। কারণ তা অতি নিকৃষ্ট আবাসস্থল। কাজেই মুসলমানকে তওবা করে ইবলিস ও নফসের সব পথ থেকে সরে আসতে হবে।

মূলত এসব অনুভূতি ও দায়িত্ববোধ আসে ইসলামী অনুভূতি ও প্রজ্ঞা থেকে। আর তার জন্য চাই নেক ছোহবত তথা ফয়েজ, তাওয়াজ্জুহ। যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, যামানার মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবতেই সে মহান ও অমূল্য নিয়ামত হাছিল সম্ভব। মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের তা নছীব করুন। (আমীন)

-মুহম্মদ জিসান আরীফ

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৬৪

ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-১৩

চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-৩২

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২২ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস