প্রসঙ্গ : হরতাল ও সহিংসতা দেশ ও জাতির জিম্মি দশা এবং মিডিয়ার দায়িত্বহীনতা ও স্বার্থবাদিতা মিডিয়া ক্যুর কারণে সরকারের সফলতা ছিনতাই করেছে শাহবাগ।

সংখ্যা: ২২৩তম সংখ্যা | বিভাগ:

সব ছানা-ছিফত খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য। এমন ছানা-ছিফত যাতে তিনি সন্তুষ্ট হন। অপরিসীম, অকৃত্রিম, অগণিত দুরূদ ও সালাম মুবারক নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি। এমন দুরূদ ও সালাম মুবারক যা তিনি পছন্দ করেন।

এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে কলকাতার আশপাশে দাঙ্গা হয়েছিল। একজন ইমাম সাহেবকে খুন করার পর ওই দাঙ্গা বাধে। খোদ বিবিসি এ খবর দেয়। কিন্তু তার পরেও কলকাতার কোন প্রিন্ট মিডিয়া এমনকি অনলাইন পত্রিকা বা সংবাদ সংস্থাও এ খবরটি প্রকাশ করেনি। যদিও কলকাতার এই মিডিয়া ক্যু হয়েছিল নিহত ব্যক্তি মুসলমান বলে। কিন্তু এর পাশাপাশি এ ঘটনা থেকে এদেশের মিডিয়ার অনেক কিছুর শেখার আছে। একটি নেতিবাচক খবর প্রকাশ করলে এর বিপরীতে যে হাজার নেতিবাচক ঘটনা ঘটতে পারে বাংলাদেশের মিডিয়া সেকথা ভেবে দেখেনা। কারণ, বর্তমান মিডিয়ার কোন দায়বদ্ধতা নেই। গভীরতা নেই। দূরদর্শিতা নেই। মনে হয় সমস্যা তৈরিতেই তারা উদগ্রীব। সমস্যাকে ফুলে ফেঁপে প্রচার করে সংঘাতকে আরো প্রসারিত করাই তাদের উদ্দেশ্য। সংঘাত তৈরির জন্য মিডিয়া নিজেই উসকানি দেয়। হরতালে ভাংচুর, বোমাবাজি, মারামারি না হলে মিডিয়া শিরোনাম করে “ঢিলে ঢালা হরতাল পালিত।” অর্থাৎ মিডিয়ার হেডিং অনুযায়ী মারামারি তথা দাঙ্গা-হাঙ্গামার কথিত কড়া হরতাল হলেই মিডিয়ার শিরোনাম অনুযায়ী ভালো হতো। মিডিয়া মূলত সন্ত্রাসকে এভাবে উসকিয়ে দিচ্ছে।

অপরদিকে হরতালে যখন ব্যাপক হারে গাড়ি ভাংচুর, আগুন, ককটেল বিস্ফোরণ, পুলিশের সাথে সংঘর্ষ, গ্রেফতার কিংবা রাস্তা অবরোধের মতো ঘটনা ঘটে, তখন মিডিয়া লীড নিউজ করে ‘ব্যাপক বোমাবাজি, গাড়ি ভাংচুর ও ধরপাকড়ের মধ্য অমুক দলের সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালিত’। এতে নিজেদের খুব সফল মনে করে হরতাল আহ্বানকারী দলটি। কিন্তু এতে করে সাধারণ মানুষের কত যে বিরাট ক্ষতি হয়ে গেলো, সে খবর মিডিয়া বলে না। মিডিয়া এভাবেই সন্ত্রাসীদেরকে উৎসাহিত করে।

আবার হরতাল আহ্বানকারী দলের কর্মীরা যদি খুব বেশি রাস্তায় না নামে, তখন মিডিয়া বলে ‘হরতাল ডেকে মাঠে নেই অমুক দল’। এরকম নিউজ থেকে রক্ষা পেতো হরতাল আহবানকারী। নিজেদের উপস্থিতি জানান দিতে মাঠে নামে। হয় সংঘর্ষ, সংঘাত থেকে আহত-নিহত হওয়ার ঘটনা। তখন মিডিয়ায় হেডলাইন হয়- ‘অমুক দলের হরতালে ব্যাপক সংঘর্ষ, সারাদেশে নিহত ১০/২০ কিংবা ১০০।’ অপরদিকে রিপোর্টার লেখে- ‘হরতালকারী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষে নিহত হয় এত জন।’ কিন্তু কার গুলিতে কে মরলো, কার ঢিলে কে মরলো; হরতাল আহ্বানকারী মারলো নাকি হরতাল বিরোধীরা মারলো; যে মরলো তার পরিচয়ই বা কি সেসব জানলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্রকাশ করে না মিডিয়া। আর এই সুবাদে শুরু হয় দোষারোপের প্রতিযোগিতা। এক দল বলে- আমার লোক মরেছে, অন্য দল বলে ওদের লোক মেরেছে। লাশ নিয়েও চলে টানাটানি।

প্রসঙ্গত অপরদিকে হরতালের দিন রাস্তায় কিছু গাড়ি চললে মিডিয়া বলে- ‘হরতালের তেমন প্রভাব পড়েনি, জনজীবন অনেকটাই স্বাভাবিক কিংবা অন্য হরতালের চাইতে আজ গাড়ি বেশি চলছে।’ কিন্তু, স্বাভাবিক কর্ম দিবসের তুলনায় ওইদিন যে ৯৯ শতাংশ গাড়ি কম চলেছে, সেটা জেনেও বলতে চায় না। ফলে কাভারেজ পাওয়ার আশায় গাড়ি চলাচলে বাধা দেয় হরতালকারীরা, ভাংচুর করে, আগুন দেয়। হরতালকে দিনকে দিন সহিংস করে তোলার পেছনে মিডিয়ার এমন চেতন-অবচেতন উসকানি কম দায়ী নয়। তাই হরতাল এখন শুধু এক আতঙ্কের নাম, যার ভয়ে বেশিরভাগ অফিস-আদালত, স্কুল-কলেজ দোকান-পাট আর গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকে।

মিডিয়া শুধু সন্ত্রাস আর সহিংসতার কথা ছেপে থাকে। কিন্তু মুদ্রার উল্টো পিঠ মিডিয়া দেখতে পায়না । প্রতিটি সাধারণ মানুষ, প্রতিটি পরিবার, প্রতিটি প্রতিষ্ঠান যে এ সহিংসতার বিরুদ্ধে সে অনুভূতি, সে খবর, সে শিরোনাম মিডিয়া করেনা। জনজীবনে সে প্রভাব ফেলতে পারেনি। বাংলার মানুষ যে হরতাল চায়না সে বিষয় মিডিয়া প্রতিফলিত করতে পারেনি।

অপরদিকে সহিংসতাকারী, সন্ত্রাসীরা যে নগণ্য সে বিষয়টিও মিডিয়া প্রকাশ করতে পারেনি। বরং মিডিয়া এমনভাবে প্রচার করেছে, মনে হয়েছে যেন গুটি কতক সন্ত্রাসী গোটা দেশ দখল করে ফেলেছে। এটা মিডিয়ার অর্বাচীনতা, অজ্ঞতা, মূর্খতা তথা স্বার্থবাদী প্রবণতা। মিডিয়ার এই কূপম-ুকতা সম্পর্কে সর্বাগ্রে সাধারণ মানুষকেই সচেতন হতে হবে।

মিডিয়া বিশেষত কর্পোরেট মিডিয়া যে সরকারের ভেতরে নয় বরং সরকারের চেয়েও শক্তিশালী এটা এখন দম্ভভরে উচ্চারিত হচ্ছে। শাহবাগে উচ্চারিত হয়ে শাহবাগ সরকারের চেয়েও শক্তিশালী। কারণ শাহবাগ ভোট দিয়ে সরকার বানায়। মূলত এটাও মিডিয়ারই অর্জন। কারণ মিডিয়া শাহবাগকে এমনভাবে ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে তুলেছে যেন ৫৬ হাজার বর্গমাইল বাংলাদেশের গোটা মানুষ শাহবাগে হাজির হয়েছে। মিডিয়ার গাণিতিক জ্ঞান খুবই কম। মিডিয়া আনুপাতিক হিসেবে জানে না। শাহবাগে সর্বোচ্চ ষোলো হাজার লোক হয়েছে কীনা সন্দেহ? তাহলে ষোল কোটি লোকের তুলনায় তা দশ হাজারে একজন মাত্র। কিন্তু এই কিঞ্চিৎ উপস্থিতির নগণ্যতা কী মিডিয়ায় প্রকাশ পেয়েছে? মিডিয়া এমনভাবে প্রকাশ করছে যেন মনে হচ্ছে শাহবাগই গোটা বাংলাদেশ। (নাঊযুবিল্লাহ)

অপরদিকে সরকারের ধারাবাহিক সফলতা শাহবাগের পক্ষে পরিকল্পিতভাবে ছিনতাই করেছে মিডিয়া। কারণ কসাই কাদেরের রায়ের বিরুদ্ধে মন্ত্রী পরিষদে বিল অনুমোদন, সংসদে বিল আনয়ন ও পাস এবং আপিল করা সব সরকারের কৃতিত্ব। কিন্তু মিডিয়া এখানে মিডিয়া ক্যু করে সরকারের সফলতাকে ম্লান করে শাহবাগকে হাইলাইট করেছে। অথচ সরকারের সফলতা মানে জনগণেরই সফলতা। মিডিয়া জনগণকে বয়কট ও বঞ্চিত করেছে।

অপরদিকে মিডিয়া ‘গণহত্যা’ শব্দের অপব্যাখ্যারও জবাব দেয়নি। পুলিশ গুলি ছুড়েছে মিডিয়া সেটাই ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে তুলেছে। কিন্তু জামাতী মওদুদীরা যে পুলিশকে আক্রমণ করেছে এবং পুলিশ আত্মরক্ষার্থে গুলি করেছে মিডিয়া তা প্রচার করেনি। অপরদিকে ষোল কোটি লোকের দেশে কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনাকেই মিডিয়া দেশের সামগ্রিক চেহারা হিসেবে প্রচার করেছে। কিন্তু এসব ঘটনার ঊর্ধ্বে যে দেশ-জাতি ও রাষ্ট্রের স্বার্থ তা আদৌ মিডিয়া বিবেচনা করেনি। মিডিয়া দেশের সাধারণ মানুষের মনোভাব, সমাধানকল্পে বিশিষ্টজনদের ভাবনা, সর্বমহলের পরামর্শ ইত্যাদি পত্রস্থ করে সব অরাজকতা নিরসনে ভূমিকা রাখতে পারতো। কিন্তু মিডিয়া তা করেনি। মিডিয়ার এ ব্যর্থতা যুগপৎ দুঃখজনক ও আত্মঘাতীমূলক।

মূলত সব সমস্যা সমাধানে চাই সদিচ্ছা ও সক্রিয়তা তথা সততা। কিন্তু এর জন্য প্রয়োজন নেক ছোহবত মুবারক, নেক সংস্পর্শ মুবারক তথা রূহানী ফয়েজ-তাওয়াজ্জুহ মুবারক।

যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারক-এ কেবলমাত্র তা পাওয়া সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। (আমীন)

-মুহম্মদ তা’রিফুর রহমান

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৬৪

ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-১৩

চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-৩২

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২২ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস