ভারতে মুসলমানদের জন্য নয়া আতঙ্ক গণসম্ভ্রমহরণ ভারতে রাজনীতিবিদদের জন্য মুসলমান ওদের কথিত বলির পাঁঠা। মুসলমানদের পবিত্র ঈমানী জজবা প্রয়োজন

সংখ্যা: ২২৯তম সংখ্যা | বিভাগ:

সব প্রশংসা মুবারক যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত দুরূদ মুবারক ও সালাম মুবারক।

সেক্যুলার আদর্শের বাহক একটি দৈনিকে গত ৩রা অক্টোবর খবর হেডিং হয়েছে, “মুজাফফরনগরের নয়া আতঙ্ক গণসম্ভ্রমহরণ!”

খবরে বলা হয়, ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গাপীড়িত মুজাফফরনগরে গণসম্ভ্রমহরণের অভিযোগ দায়ের করেছেন পাঁচ মুসলিম নারী।

গত মাসের ওই দাঙ্গায় বহু মুসলমানকে শহীদ করে সন্ত্রাসী উগ্র হিন্দুরা, ঘর ছাড়া হয় প্রায় সোয়া লক্ষ মুসলমান।

মুজাফফরনগর জেলার ফুগানা ও শামলি গ্রামের ওই পাঁচ নারী অভিযোগ করেছেন, তিন সপ্তাহ আগে দাঙ্গা শুরু হওয়ার পরপরই উগ্র হিন্দুদের হাতে গণসম্ভ্রমহরণের শিকার হয়েছেন তারা।

ভারতের বেসরকারি নিউজ চ্যানেল এনডিটিভি জানিয়েছে, পুলিশ এসব মুসলিম নারীর অভিযোগের ব্যাপারে তদন্ত শুরু করেছে। অভিযোগকারীরা বলেছেন, এতদিন তারা আতঙ্কে মুখে খোলেননি। নির্যাতনকারীদের অনেককেই তারা চিনতে পেরেছেন। পুলিশ এ ধরনের অন্তত ১৭ জনের নাম তালিকাভুক্ত করেছে।

উল্লেখ্য, ভারতে দাঙ্গাগুলোতে হিন্দু সন্ত্রাসীরা গণহারে মুসলিম মেয়েদের সম্ভ্রমহরণ ও সীমাহীন নিপীড়ন করে থাকে বরাবরই। সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া মুজাফফরনগরের দাঙ্গায়ও এর ব্যতিক্রম হয়নি। বহু মুসলিম মহিলা সম্ভ্রমহরণ ও গণসম্ভ্রমহণের শিকার হয় ভারতের উত্তর প্রদেশের মুজাফফরনগর, শামিলী ও পাতিপাত জেলার লিসার, লঙ্ক, বাহাওয়াদি, হাসনাপুর, মুহম্মদপুর, ভগোপাতসহ আশেপাশের আরো অনেক মুসলিম অধ্যুষিত গ্রামগুলোতে।

ক্ষতিগ্রস্ত ও নির্যাতিত মুসলিমরা জানান, এই ঘটনাগুলো তখনই হয়, যখন মুসলমানরা মানসম্মান ও জান বাঁচাতে গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র যাচ্ছিল। এ দাঙ্গায় হাজার হাজার মুসলমান নারী-পুরুষ-শিশুকে শহীদ করেছে যালিম হিন্দু ও শিখ সন্ত্রাসীরা।

পালিয়ে বেঁচে আসা শরণার্থী শিবিরের মুসলমানরা এখন ভীত-সন্ত্রস্ত। তারা ভিটেমাটিতে আর ফিরে যেতে সাহস পান না। তাদের আশঙ্কা, ফেরত গেলে তাদের উপর আবারো যুলুম-নির্যাতন নেমে আসতে পারে। কেয়রানা ও কান্ডহালাতে স্থানীয়দের তৈরি করা শরণার্থী শিবিরগুলো ঘুরে ‘ডেইলি ভাস্কর’ এই রিপোর্ট তৈরি করে। শরণার্থী শিবিরগুলো ঘুরে মুসলিম মেয়েদের নির্যাতিত হওয়ার যে বর্ণনা পাওয়া যায়, তা সত্যিই প্রচ- ভয়াবহ, নির্মম এবং মর্মস্পর্শী ও লোমহর্ষক।

নির্যাতিত মুসলমান মেয়েরা জানান, স্থানীয় জাত সম্প্রদায়ের হিন্দু ও শিখ সন্ত্রাসীরা তাদের বাড়িঘরে আক্রমণ করে এবং গণসম্ভ্রমহরণ চালায়।

এক মুসলিমা মা জানান, “আমার চোখের সামনে আমার পরিবারের চার মেয়ের (তিন মেয়েসহ, মেয়েদের বয়স ১৭, ১৮ ও ২১) সম্ভ্রম লুণ্ঠন করে ১০-১৩ জন দাঙ্গাকারী সন্ত্রাসী, আমাকে জোর করে এই নারকীয় দৃশ্য দেখানো হয়।

আরেক নির্যাতিত মুসলিম মহিলা আরো জানান, “সন্ত্রাসীরা আমাদের নির্যাতন করার সময় বলছিল— আমরা সুন্দরীদের বিয়ে করে হিন্দু সন্তান উৎপাদন করবো, বাকিদের টুকরা টুকরা করে হত্যা করব।”

উল্লেখ্য, ভারতের উত্তর প্রদেশ- এমন এক জায়গা, যেখানকার হিন্দুরা অকল্পনীয় হিং¯্র। তাদের ক্ষেত্রে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে ছেদ ফেলার জন্য একটি উস্কানিই যথেষ্ট। তাদের এমন উত্তেজনা ও মাথা গরম স্বভাব শুধু যে মুসলমানদের উত্তেজিত করে তা নয়; বরং মারাত্মক দাঙ্গার সৃষ্টি করে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর নোংরা পরিকল্পনার ফাঁদে তারা নিজেই যেন পা দেয়।

এবার মুজাফফরনগরের উদ্ভূত পরিস্থিতির গভীরে পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, এটি শুধু দাঙ্গা নয়, বরং একটা রাজনৈতিক চক্রান্ত। দাঙ্গা ছড়ানোর পেছনে যেমন বিজেপি নেতাদের উস্কানি ছিল, তেমনি আড়ালে থেকে কাজ করেছে কংগ্রেস নেতারাও।

প্রশ্ন হলো হত্যাকা- যখন সংঘটিত হলো, তখন প্রশাসন বসে বসে কী করছিল? বেআইনিভাবে ‘খাপ’ কমিটি বসাতে গিয়ে যখন ছয়জন আহত হলো, তখনো কেন পুলিশ নিশ্চুপ ছিল? কেন্দ্রীয় প্রশাসন কি চাচ্ছিল যে, ঘটনাটা আরো বাড়–ক, দাঙ্গা লাগুক, আরো তুমুল আকার ধারণ করুক; যাতে করে মুসলমানদের আরো নতুন করে বোঝানো যায় যে, ‘বিজেপি কট্টর হিন্দু ও সাম্প্রদায়িক দল। তারা তোমাদের উপর অত্যাচার করে, তাদের বয়কট কর আর আমাদের গ্রহণ কর।’ যাতে ভারতের প্রধান সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর একচ্ছত্র ভোট কংগ্রেসের ঝুলিতে পড়–ক। যদিও সত্য হলো বিজেপি কী আর কংগ্রেসই বা কী। কারো আমলেই ভারতের মুসলমানদের ভাগ্য পরিবর্তন হয়নি। সেটি অর্থনৈতিক, সামাজিক কিংবা শিক্ষা খাতেই হোক না কেন? এ দিকে ভারতে এটি যেন রীতিই হয়ে গেছে যে, নির্বাচনের আগে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হবে, যা মূলত হয়ই কিছু নেতার রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলে। এ দিকে নির্বাচন-পূর্ববর্তী এমন রাজনৈতিক নোংরা পরিস্থিতির বর্ণনা দিতে গিয়ে ভারতের এক মুসলিম রবিউল ইসলাম বলেন, ‘ভারতে হিন্দু-মুসলমানদের দাঙ্গা নতুন কিছু নয়। স্বাধীনতার পর থেকেই এমন চক্রান্ত চলছে।

প্রায়ই দেখা যায় লোকসভা কিংবা সাধারণ নির্বাচনকে সামনে রেখে কংগ্রেস এমন ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে, যাতে মুসলমানদের ভোট তাদের পক্ষে পড়ে।’ ভারতের স্বাধীনতার (১৫ আগস্ট, ১৯৪৭) পর থেকে সংঘটিত প্রধান হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গাগুলো এ দিকে নির্বাচন সামনে রেখে রাজনীতিবিদদের এমন অপতৎপরতা জ্যামিতিক হারে বাড়ছে। দাঙ্গা সৃষ্টির কয়েক দিন পর্যন্ত রাজ্য সরকার তথা সমাজবাদী পার্টির চরম নিষ্ক্রিয়তাও গাফিলতি লক্ষ্য করা যায়। তাই সাম্প্রতিক দাঙ্গায় শুধু কংগ্রেস নয়, বরং এটিকে কংগ্রেস-সমাজবাদী পার্টি-বসপার (সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মায়াবতীর দল-বহুজন সমাজ পার্টি) ‘ত্রিমুখী ষড়যন্ত্র’ হিসেবেই দেখছে দিল্লিতে বিজেপি মুখপাত্র মুখতার আব্বাস নকভি। তার মতে, মুসলিম সম্প্রদায়ের ভোট পাওয়ার জন্যই মূলত এসব দল এমনটি করছে, কারণ তারা জানে, আগামী নির্বাচনে তারা ভোট পাবে না। এ দিকে রাজ্যের গাফিলতি নিয়ে খোদ কংগ্রেসকেও উচ্চবাচ্য করতে দেখা যায়নি, কারণ আগামী নির্বাচনে এই রাজ্যে তাদের সমাজবাদী পার্টির সমর্থন দরকার। সুতরাং স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন ওঠে, ভারতে মুসলমানদের জন্য রাজনীতি? নাকি রাজনীতির জন্য শহীদ হয় মুসলিম জনসাধারণ? ‘সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়–ক, মানুষ মরে যাক, তাতে কী? নির্বাচনে জিততে চাই’ এমনই ধারণা ভারতীয় রাজনীতিবিদের।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, উত্তরপ্রদেশ সরকার চরম মুসলিম বিদ্বেষী হওয়ার পরও এবং বিশেষত দাঙ্গা দমনে নির্মম নিষ্ক্রিয় থাকার পরও যদি দেড় হাজার দাঙ্গাকারী আটক করা হয় তাহলে প্রকৃত দাঙ্গাবাজ কত হাজার হাজার ছিল, দাঙ্গাটা সত্যিকার অর্থে কত নির্মম ও নিষ্ঠুর ছিল তা কী বাস্তবে কল্পনা করা যায়। মূলত শুধু ভারতে নয় বাংলাদেশের হিন্দুরাও মুসলমানদের জন্য নিরপেক্ষ নয়। ধর্মনিরপেক্ষতা, অসাম্প্রদায়িকতা, শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান সব প্রতারণা, মিথ্যা, ছলনা, ধোঁকা। মুসলমানদের উচিৎত এ প্রতারণা থেকে নিজেদের আত্মরক্ষা করা। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “মু’মিন এক গর্তে দু’বার পড়ে না।”

-মুহম্মদ মাহবুবুর রহমান

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৬৪

ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-১৩

চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-৩২

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২২ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস