যুগে যুগে ধর্মব্যবসায়ীদের চরিত্র একই। আজকের কমিনী-হদছরাই নয়; অতীতের ওহাবী-দেওবন্দী গুরু মাহমুদ-মাদানীরাও ছিলো একই তবকার ধর্মব্যবসায়ী।

সংখ্যা: ১৯৮তম সংখ্যা | বিভাগ:

কথাটি দু’ভাবে বলা যায়।

এক. অতীতের ধর্মব্যবসায়ী দেওবন্দী, ওহাবী, খারিজী মাদানী ওরফে নাদানীরাও  ছিলো সাক্ষাৎ ধর্মব্যবসায়ী। ধর্মের নামে ক্ষমতালোভী। ধর্মের লেবাসধারী।

দুই. আজকের দারুল উলুম দেওবন্দের মুহতামিম থেকে এদেশের শাইখুল হদস থেকে কমিনী অথবা চর্মনাই তারা সবাই ধর্মের নামে এত অধর্ম করার প্রবণতা তাদের পূর্বপুরুষ তথা মুরুব্বীদের থেকেই উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছে।

নি¤েœ চারটি ঘটনা এ বিষয়টি যুগপৎ প্রতিভাত ও প্রমাণিত করে:

প্রথম ঘটনা: উত্তর প্রদেশের প্রাদেশিক জমিয়তে উলামা হিন্দের এককালীন সেক্রেটারি সৈয়দ মুহম্মদ মিয়া দেওবন্দী ‘উলামায়ে হক কে মুজাহেদানা কারনামে’ নামক  একখানা তথ্যবহুল বই লিখেছেন। তাতে লেখা আছে যে, জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের প্রতিষ্ঠাতা হযরত মাওলানা শাইখুল হিন্দ মাহমুদ হাসান দেওবন্দী ভারতবর্ষ থেকে ইংরেজ সরকারের পতন ঘটিয়ে একটি দেশীয় সরকার কায়েম করার জন্যে একটি গোপন আন্দোলন চালিয়েছিলেন। সেই পরিকল্পিত রাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় কাঠামোর বর্ণনা দিতে গিয়ে উল্লেখ করা হয়েছে যে, উক্ত রাষ্ট্রের প্রথম রাষ্ট্র প্রধান হবেন রাজামহেন্দ্র প্রতাপ নামক জনৈক হিন্দু ভদ্রলোক আর তার প্রধানমন্ত্রী হবেন মাওলানা উবাইদুল্লাহ সিন্ধী।

এখন পাঠকের কাছে বিনীত আরজ যে, রাষ্ট্রের প্রধান হতো একজন হিন্দু, সেটি কি কোন কালে ইসলামী খিলাফত হতে পারতো? আর হিন্দুকে হুকমতের প্রধান চাওয়া এই কী মাহমুদ হাসানের ইসলামী অনুভূতি তথা ঈমানী জজবার নিদর্শন?

দ্বিতীয় ঘটনা: ১৯৪৫ সালে মোমেনশাহী জেলায় জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের  উদ্যোগে একটি কনফারেন্স হয়েছিলো। উক্ত কনফারেন্সে স্বয়ং হযরত মাওলানা হোসাইন আহমদ মাদানী যোগদান করেছিলো।

তাতে যারা স্বেচ্ছাসেবকরূপে কাজ করেছিলো তাদের একজন ছিলেন ফুলপুর উপজেলাধানী বাঙ্কী গ্রামের মৌলভী আবুল কাসেম। তিনি বালিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক ছিলেন। তিনি বর্ণনা করেছেন যে, তখন আমরা দারুণ অসুবিধায় পড়েছিলাম। থাকা খাওয়ার সুযোগ বলতে কিছুই ছিলো না। কেননা তদানীন্তনকালে এখানে মুসলিম লীগের জনপ্রিয়তা তুঙ্গে ছিলো। আর জমিয়ত ছিলো মুসলিম লীগ বিরোধী।

অতঃপর একদিন সন্ধ্যের পর উলামায়ে হিন্দের স্থানীয় নেতা মাওলানা আলতাফ হুসাইন আমাদেরকে নিয়ে তদানীন্তন হিন্দু জমিদার শশীকান্ত মহারাজার বাসভবনে গিয়ে হাজির হয়ে বললেন, শ্রদ্ধেয় মহাশয়- এরা সবাই হচ্ছে উলামায়ে হিন্দ করফারেন্সের স্বেচ্ছাসেবক। এরা যতদিন থাকবে ততদিন পর্যন্তই এদের থাকা খাওয়ার ইত্যাদির যাবতীয় ব্যয়ভার আপনাকেই বহন করতে হবে। এতদ্বশ্রবণে রাজা মহাশয় অম্লান বদনে উক্ত প্রস্তাব মেনে নিয়ে যাবতীয় ব্যয়ভার বহন করেছিলেন।

পাঠকগণ বলুন, শশীকান্ত মহা রাজা যাদের সহায়তা করেন তারা কী ইসলামী সৈনিক অভিহিত হতে পারে? অথবা যারা হিন্দু রাজ অনুগ্রহ করে তারা কী ইসলামী চেতনা ভাস্বর দাবী করতে পারে?

তৃতীয় ঘটনা: জামিয়া প্রকাশনী থেকে ১৯৮১ সালে প্রকাশিত হাফিয মাওলানা মুহম্মদ নূরুল ইসলাম তার এক কিতাবে লেখেন, ১৯৪৬ সালে যখন পাকিস্তান আন্দোলনকারী মুসলিম লীগ মুসলিম জনমত যাচাই করার জন্যে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলো তখন উত্তর প্রদেশের মীরাট ডিভিশন কেন্দ্রে মুসলিম লীগ নমিনি ছিলো নবাবজাদা লিয়াকত আলী খান এবং হিন্দু মুসলিম একজাতির প্রবক্তা জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের নমিনি ছিলেন সৈয়দ আহমদ কাজেমী। উলামায়ে হিন্দ কাজেমী সাহেবের পক্ষে প্রাণপণে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়েছিলো। ঠিক ভোট গ্রহণের পূর্ব দিনে দারুল উলুম দেওবন্দ মাদ্রাসার একশতজন ছাত্রকে পুলিং স্টেশনে বিভিন্ন দায়িত্ব পালনের জন্যে সাহারানপুর পৌঁছার পর পঞ্চাশজন সাহারানপুরেই থেকে গেল। এ পঞ্চাশের একজন আমি ছিলাম। বাকি পঞ্চাশন দেরাধুন চলে গিয়েছিলো।

আমরা সাহারানপুর মিউনিসিপ্যাল কংগ্রেসের হিন্দু সেক্রেটারির বাড়িতে গিয়ে উঠলাম। সেই হিন্দু ভদ্রলোক আমাদের পানাহারের ব্যবস্থা করেছিলেন। আমরা সেখানে দুই দিন অবস্থান করেছিলাম।

পাঠকদের কাছে বিনীত আরজ, আপনারা বলুন, হিন্দু ভদ্রলোক বা হিন্দু কংগ্রেস কী ইসলামের খেদমতের নিয়তে জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের কর্মীদের খানাপিনার ব্যয়ভার বহন করেছিলো?

এহেন কংগ্রেস সমর্থক আলিমগণই তো ভারতীয় ‘র’ এর ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েই জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ করেছিলো। (নাউযুবিল্লাহ)

চতুর্থ ঘটনা: জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের নেতা সৈয়দ আসাদ মাদানী ১৯৫৫ সালে তার এক বক্তৃতায় বলেছিলো, æইসলাম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত করার জন্য আসেনি। ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম করুন যেখানে শতকরা ৯৯ জন  মুসলমান বাস করে।” তার এ বক্তৃতাটি দিল্লির ‘আল জমিয়ত’ পত্রিকার বরাত দিয়ে ‘দৈনিক পাসবান’ পত্রিকায় ছাপা হয়েছিলো।

শুধু তাই নয় বরং পাকিস্তানে যখন ভুট্টোর সমাজতান্ত্রিক আন্দোলন তুঙ্গে ছিলো তখন উলামায়ে হিন্দের পাকিস্তানী সংস্করণ উলামায়ে ইসলামের নেতা মাওলানা গোলাম গওস হাজারবী বলেছিলো, æভুট্টোর বাণী আমাদেরই বাণী। উক্ত জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মুখপত্র ‘সাপ্তাহিক তরজুমানে ইসলামের সম্পাদক ছিলেন কমিউনিস্ট ইন্টারন্যাশনাল সদস্য ডা: কে এম কামাল।

তারপর ১৯৭২ সালে মস্কোপন্থী ন্যাপের সাথে কোয়ালিশন করে উলামায়ে ইসলামের নেতা মুফতী মাহমুদ সীমান্ত প্রদেশের প্রধান মন্ত্রী হয়েছিলো।

ইত্যকার বহু ঘটনা রয়েছে, যেগুলো প্রমাণ করেছে যে, জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ ইসলাম আন্দোলনের ধারক বাহক কোনটাই ছিলো না।

কাজেই বীজ যদি খারাপ হয় তার ফল তো খারাপ হবেই।

আজকের শাইখুল হদস, কমিনী, চর্মনাই, আহমক শফি, ইজহার, বুলবুলি গংয়ের এত খারাপ তথা ইসলামের নামে এত জঘন্য আমল ও নিকৃষ্ট ধর্মব্যবসার কারণ তাদের মূলেই বিরাজমান।

-মুহম্মদ তা’রীফুর রহমান

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৬৪

ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-১৩

চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-৩২

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২২ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস